আপনি কি ইউটিউব ভিডিও তৈরি করে আয় করার চিন্তা করছেন? আর ভাবছেন ইউটিউবিং করতে কী কী লাগবে? তাহলে আজকের টিউনটি আপনার জন্য। অনেকেই মনে করেন প্রফেশনাল ভাবে ইউটিউবিং শুরু করতে প্রাথমিক অবস্থাতেই অনেক টাকা ইনভেস্ট করতে হয়৷ নয়তো প্রফেশনাল ইউটিউবার দের মতো ভিডিও ভাইরাল হবে না।
আসলে খুব বড় বড় ইউটিউবার যারা আছে তারা প্রাথমিক পর্যায়েই এতো লাখ লাখ টাকা ইনভেস্ট করেননি। শুরুতেই খুব সাধারণ কিছু Instrument ব্যবহার করেই মূলত বেশিরভাগের ইউটিউবিং যাত্রা শুরু হয়েছিল। তাই প্রাথমিক অবস্থায় আপনিও খুব সাধারণ ও কম বাজেটের কিছু Instrument দিয়ে ইউটিউবিং শুরু করতে পারবেন। একদম শুরুতে যে Instrument গুলো আপনার থাকতে হবে তার কিছুটা ধারনা নিয়ে নিন আজকের টিউন থেকে।
অনেকেই মনে করেন ইউটিউব চ্যানেল খুলে ভিডিও আপলোড করার জন্য চাই ল্যাপটপ বা কম্পিউটার। কিন্তু সঠিক ভাবে কাজ করলে আপনি মোবাইল দিয়েই ইউটিউব চ্যানেল খুলতে পারবেন, ভিডিও তৈরি করতে পারবেন, ভিডিও এডিটিং করতে পারবেন, থাম্বনেইল তৈরি করতে পারবেন এবং থাম্বনেইল সেট করা সহ সব ধরনের কাজ করতে পারবেন। তাই আপনার কাছে যদি মোটামুটি একটা ভালো মানের স্মার্টফোন থাকে তাহলে আপনি একজন ইউটিউবার হওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। কীভাবে আপনার ইউটিউব যাত্রা শুরু করবেন তার পুরে টিউটোরিয়াল পেয়ে যাবেন ইউটিউবে সার্চ করেই।
আসলে Instrument কোনো বিষয় না। ইচ্ছা থাকলে একটি সাধারণ মানের মোবাইল দিয়েও খুব চমৎকার ভিডিও তৈরি করতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে আপনার বিস্তর টেকনিক্যাল জ্ঞান অর্জন করতে হবে। এতে করে আলাদা ভাবে কোনো ক্যামেরা না কিনে শুধু মোবাইল এর ক্যামেরা দিয়েই প্রাথমিকভাবে কাজ চালিয়ে নিতে পারবেন।
আপনি যে ধরনের ভিডিও-ই তৈরি করেন না কেন আপনাকে কিন্তু ভিডিওর সাথে ভয়েস যোগ করতে হবে। আপনার ভিডিওর ভয়েস যতো সুন্দর হবে ভিডিও কোয়ালিটি ততোটাই ভালো হবে। আর মোবাইল দিয়ে ভিডিও তৈরি করলেও মোবাইলের মাইক্রোফোন দিয়ে ভয়েস কোয়ালিটি খুব বেশি ভালো হয় না। তাই আপনাকে একটি মাইক্রোফোন কিনে নিতে হবে। একজন প্রফেশনাল ইউটিউবার হিসেবে এটাই হবে আপনার প্রথম ইনভেস্টমেন্ট।
কেমন মাইক্রোফোন কিনবেন তা পুরোপুরি আপনার বাজেটের ওপরে নির্ভর করবে। তবে বাজেট সমস্যা থাকলে আপনি প্রাথমিক পর্যায়ে ৮০০ টাকা থেকে এক হাজার টাকার মধ্যে একটি মাইক্রোফোন কিনে নিতে পারবেন। এর কম বাজেটে গেলে অডিও কোয়ালিটি কখনোই আপনি প্রফেশনাল দের মতো করতে পারবেন না। আপনার ভিডিও গুলো যদি ইনডোর কোয়ালিটি হয় তাহলে তারযুক্ত মাইক্রোফোন কেনাই ভালো হবে। আর যদি আউটডোর ভিডিও তৈরি করতে চান সেক্ষেত্রে ব্লুটুথ মাইক্রোফোন এর কোনো বিকল্প নেই।
ঘরে বসে যারা ভিডিও তৈরি করার প্লান করছেন তাদের জন্য রিং লাইট অত্যন্ত জরুরি। কেননা ইনডোরে আপনার লাইটিং ব্যবস্থা খুব একটা ভালো হবে না বললেই চলে। রিং লাইট ব্যবহার করে ভিডিও তৈরি করলে ভিডিওর আউটকাম খুব ভালো পাবেন এবং এটি প্রফেশনাল ভিডিও হিসেবে বিবেচিত হবে৷ তাছাড়া আপনার ক্যামেরা স্ট্যান্ড এর জন্য আলাদা করে কোনো টাকাও খরচ করতে হবে না। একসাথে লাইট ও ক্যামেরা স্ট্যান্ড দুটোর কাজই করতে পারবেন।
তাই যারা টেক ভিডিও, রান্নার ভিডিও, এডুকেশনাল ভিডিও তৈরি করবেন তারা প্রথমেই একটি রিং লাইট কিনে নেবেন।
আউটডোর ভিডিও তৈরি করতে গেলে একটি ট্রাইপড কিনে নেয়া জরুরি। কেননা যে কোনো চ্যালেঞ্জিং পরিবেশে সরাসরি মোবাইল দিয়ে ভিডিও করলে তা কখনোই ভালো আউটকাম নিয়ে আসতে পারে না। ট্রাইপড ব্যবহার করলে মোবাইল তুলনামূলক বেশি স্থির থাকে এবং ভিডিও কোয়ালিটি ভালো হয়। বিশেষ করে ব্লগ ভিডিও তৈরি করতে চাইলে ট্রাইপড তো অবশ্যই কিনে নিতে হবে। খুব কম বাজেটের মধ্যেও বাজারে মোটামুটি মানের ট্রাইপড পেয়ে যাবেন।
ভিডিও তৈরি করে সেটাকে এডিট করার মাধ্যমে তা পরিপূর্ণ প্রফেশনাল লুকে চলে আসবে। আর একটি ভিডিও দর্শকদের কাছে গ্রহনযোগ্য করে তোলার জন্য ভিডিও এডিটিং এর বিকল্প নেই বললেই চলে। তাই আপনার কাছে যে কোনো একটি ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার থাকা চাই। তবে প্রথমে আপনাকে সহজ একটি সফটওয়্যার ব্যবহার করে এডিটিং এর কাজ শুরু করতে হবে।
যেহেতু আপনি মোবাইল দিয়ে ইউটিউবিং এর কাজ করবেন তাই মোবাইল দিয়ে সহজে Access যোগ্য একটি সফটওয়্যার বাছাই করে নিতে হবে। এক্ষেত্রে সবথেকে জনপ্রিয় মোবাইল App হলো Kinemaster, Capcut, Inshot। এই সফটওয়্যার গুলো ব্যবহার করে প্রফেশনাল দের মতো ভিডিও তৈরি করতে পারবেন। ইউটিউবে কয়েকটি ভিডিও এডিটিং টিউটোরিয়াল দেখলে খুব সহজেই আপনি এই সফটওয়্যার গুলোর কাজ বুঝে যাবেন।
আশাকরি এই সাধারণ কিছু Instrument এবং ফ্রি ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার ব্যবহার করে আপনি আপনার ইউটিবিং যাত্রা শুরু করতে পারবেন। পরবর্তীতে যখন একটু জনপ্রিয়তা অর্জন করবেন এবং কিছু টাকা ইউটিউব থেকে আয় করা শুরু করবেন তখন আরও প্রো লেভেলের ওয়েব Instrument কিনে নিলেই হবে। আাশাকরি টিউনটি আপনার জন্য উপকারী ছিল। ধন্যবাদ।
আমি শারমিন আক্তার। শিক্ষার্থী, ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, গাজীপুর। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 115 টি টিউন ও 29 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 6 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।