আমরা সকলেই কমবেশি জানি ইউটিউব থেকে আয় করার প্রধান উপায় হলো ইউটিউব ভিডিও ভাইরাল করা। ভিডিও রিচ হওয়ার পাশাপাশি Subscribe বাড়লে খুব দ্রুত আয় শুরু করা যায়। যে ভিডিও সবথেকে বেশি রিচ হবে ঐ ভিডিও থেকে আয় বেশি হবে৷ তবে আমি আজকে ইউটিউব ভিডিও থেকে আয় করার ভিন্ন একটি কৌশল সম্পর্কে আলোচনা করব।
বর্তমানে ভিডিও রিচ হওয়ার পাশাপাশি ইউটিউব থেকে আয় করতে আরও একটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সেটা হলো ইউটিউব চ্যালেরের সাথে Show হওয়া Advertisement। আজকের টিউনে ইউটিউব Advertisement এর ওপর ভিত্তি করে ইউটিউব চ্যানেল থেকে ইনকাম করার বিষয়গুলো তুলে ধরাবো।
এই টিউনের মাধ্যমে এমন পাঁচটি ভিডিও আইডিয়া সম্পর্কে জানতে পারবেন যেখানে হাই বাজেট Advertisement যুক্ত হয়। আর ভিডিওতে যতো বেশি হাই বাজেট Advertisement যুক্ত হবে ততো বেশি ইনকাম হবে। তাই ইউটিউব ভিডিও তৈরির আগে একটু রিসার্চ করে নেয়া উচিত যে কোন ধরনের ইউটিউব ভিডিওতে হাই বাজেট Advertisement যুক্ত করা যায়। জেনে নিন এমন পাঁচটি ভিডিও আইডিয়া সম্পর্কে।
আপনার ইউটিউব ভিডিওর সাথে যুক্ত হওয়া Advertisement এর কোম্পনি তার ব্যবসায়ের প্রচারের জন্য ইউটিউবকে একটা নির্দিষ্ট টাকা প্রদান করে। আবার সেই টাকার কয়েক পারসেন্ট ইউটিউব আপনাকে প্রদান করে। যে কোম্পানি Advertisement এর জন্য বেশি টাকা প্রদান করবে ঐ কোম্পানির Advertisement আপনার ভিডিওতে নিয়ে আসার চেষ্টা করবেন। কেননা যেহেতু কোম্পানি বেশি খরচ করছে ফলে আপনাকেও ইউটিউব তুলনামূলক বেশি টাকা পেমেন্ট করবে। তাই আগে চিহ্নিত করতে হবে কোন ধরনের কোম্পানি Advertisement এর ওপরে বেশি Invest করে।
এখানে ইনকাম রিলেটেড ভিডিও তৈরির কথা বলেছি। কারণ ইনকাম রিলেটেড ভিডিওতে বিভিন্ন ইনকাম সাইট গুলোর Advertisement যুক্ত করা হয়। আর এই সকল ইনকাম রিলেটেড সাইট তাদের কোম্পানির Advertisement এর জন্য বেশি খরচ করে। তাই ইনকাম রিলেটেড ভিডিও তৈরির মাধ্যমে আপনার ভিডিওতে একটি হাই বাজেট Advertisement যুক্ত করতে পারবেন এবং তুলনামূলক বেশি আয় করতে পারবেন।
আমরা টেলিভিশনে যে ভিডিও গুলো দেখি তার বেশিরভাগই Food Product সম্পর্কিত। আর এসকল Food Product কোম্পানি ব্যবসায়ের প্রচারের জন্য Advertisement এর ওপর সবথেকে বেশি ইনভেস্ট করে। তাই Food Product সম্পর্কিত Advertisement গুলো হাই বাজেট সমৃদ্ধ হয়। টেলিভিশনে প্রচার করা এই Advertisement কিন্তু আমরা ইউটিউবেও দেখতে পাই।
ইউটিউব ভিডিও তৈরির মাধ্যমে বেশি আয় করতে চাইলে রান্নার ভিডিও তৈরি করতে পারেন। কোননা রেসিপি বা রান্নার ভিডিওর সাথে Food Product কোম্পানির Advertisement সবথেকে বেশি সংযুক্ত করা হয়। যেহেতু এই ক্যাটাগরির Advertisement গুলোতে কোম্পানি বেশি ইনভেস্ট করে তাই এখান থেকে আয়ও বেশি হবে।
ফুড ব্লগিং বলতে কী বোঝায়? এই বিষয়টি অনেকের কাছেই পরিষ্কার না। আসুন আগে ফুড ব্লগিং সম্পর্কে একটু ধারনা দেয়া যাক। বিভিন্ন ধরনের খাবার টেস্ট করে তার রিভিউ দেয়া এবং দর্শকদের নিত্য নতুন খাবারের সাথে পরিচয় করানোর উদ্যেশ্যে কোনো ব্লগ ভিডিও তৈরি করাকেই ফুড ব্লগিং বলা হয়। অনেকেই কুকিং ভিডিও আর ফুড ব্লগিং এই দুটো বিষয়কে একত্রিত করে ফেলে।
তবে ফুড ব্লগিং আর রেসিপি ভিডিও দুটোই কিন্তু খাওয়া দাওয়া সম্পর্কিত। তাই এই ফুড ব্লগিং ভিডিওর সাথেও কিন্তু Food Product সম্পর্কিত Advertisement যুক্ত হয়। আর এসব Advertisement এ যেহেতু ইনভেস্ট বেশি তাই আয় তো বেশি হবে-ই। তাই ইউটিউব ভিডিও থেকে বেশি আয় করতে চাইলে ফুড ব্লগিং ভিডিও তৈরি করতে পারেন।
ইউটিউবে অসংখ্য নিউজ চ্যানেল আছে। একেকটা চ্যানেল একেক ভাবে নিউজ উপস্থাপন করে থাকে। তবে নিউজ চ্যানেল গুলোর মূল উদ্যেশ্য হলো তথ্যমূলক কনটেন্ট দর্শকদের কাছে পৌঁছে দেয়া৷ তাই এই চ্যানেলের ভিডিও গুলো সাধারনত Multiple ক্যাটাগরির হয়ে থাকে। অর্থাৎ এখানে মোটামুটি সব ধরনের বিষয় নিয়েই ভিডিও তৈরি করা যায়।
মজার বিষয় হলো এই নিউজ চ্যানেল গুলোতে ইউটিউব মোটামুটি সব ধরনের Advertisement যুক্ত করে থাকে। কোন ধরনের Advertisement আপনার নিউজ ভিডিওর সাথে যুক্ত করা হবে তা নির্ভর করবে আপনার নিউজ টপিকের ওপর। যেহেতু সব ধরনের Advertisement যুক্ত করার সুযোগ রয়েছে তাই এখান থেকে আয়ের সম্ভাবনাও সবথেকে বেশি।
তাই নিজের ইউটিউব ভিডিওতে হাই বাজেট Advertisement যুক্ত করে আয় করতে চাইলে কোয়িলিটি সম্পন্ন নিউজ ভিডিও তৈরি করুন। এক্ষেত্রেও চেষ্টা করবেন ইনকাম সাইট গুলোর Advertisement বেশি নিয়ে আসার জন্য।
যতো দিন যাচ্ছে ততোই নতুন নতুন গেজেট মার্কেটে নিয়ে আসছে বিভিন্ন কোম্পানি। আর এসকল গেজেট এর উপযোগিতা ভোক্তাদের কাছে তুলে ধরতে কোম্পানি আকর্ষনীয় বিজ্ঞাপণ তৈরি করছে। এসকল বিজ্ঞাপণ হয় অনেক হাই বাজেট সমৃদ্ধ। আর আধুনিক গেজেট গুলোর দামও অনেক বেশি তাই কোম্পানি এসকল পণ্যের বিজ্ঞাপণের পেছনে তুলনামূলক অনেক বেশি টাকা ইনভেস্ট করে।
ইউটিউবে বেশিরভাগ সময়ই এসকল Advertisement যুক্ত করা হয় গেজেট রিভিউ সম্পর্কিত ভিডিওর সাথে। তাই আপনি যদি গেজেট রিভিউ ভিডিও তৈরি করতে পারেন সেক্ষেত্রে তুলনামূলক বেশি আয় করতে পারবেন।
আমি সাজেস্ট করবো আধুনিক গেজেট ও প্রযুক্তি যদি আপনার আগ্রহের বিষয় হয়ে থাকে তাহলে এই দিকে চেষ্টা করতে থাকুন৷ দিন দিন এই সেক্টরের কনটেন্ট এর চাহিদা বাড়ছে। আর এসকল ভিডিও সব শ্রেণির দর্শকের কাছেই গ্রহনযোগ্যতা পায়।
তাছাড়া শর্ট ফিল্ম, নাটক কিংবা মিউজিক ভিডিও তৈরির Creativity থাকলে এই দিকে চেষ্টা করতে পারেন। এই সেক্টরে রিচ যেমন বেশি হয় তেমনই হাই বাজেট Advertisement যুক্ত হওয়ার সুযোগও বেশি।
ইউটিউব ভিডিও থেকে আয় করার জন্য ভিডিও টিপস সম্পর্কে তো জানতে পেরেছেন। এবার দেখে নিন ভিডিও কোয়ালিটি সম্পর্কে কিছু টিপস।
প্রথম কথা হলো ভিডিও Length ৮ মিনিট বা তার থেকে বেশি রাখা ভালো। কারন ৮ মিনিটের বেশি Duration হলে ঐ ভিডিওতে দুইটি Advertisement যুক্ত করতে পারবেন। ফলে একটা ভিডিও থেকেই আপনি ডবল আয় করতে পারবেন৷ তাছাড়া কম Duration ভিডিওতে View বেশি হলেও Watch Time কিন্তু Long Duration ভিডিওতেই বেশি হয়ে থাকে। তাই চেষ্টা করবেন ভিডিও Length তুলনামূলক বড় রাখতে।
ভিডিও ক্যাটাগরি অনুযায়ী ভিডিও করলেই যে তা রিচ হবে এমনটাও কিন্তু না। ভিডিওর টপিক হতে হবে Trendy। আপনার ভিডিও যতো বেশি রিচ হবে দর্শক কিন্তু ততো বেশি Advertisement দেখবে। ফলে আপনার আয়ও কিন্তু বেশি হবে। তাই হালনাগাদ বিষয়বস্তু নির্বাচন করে আকর্ষনীয় কনটেন্ট তৈরি করুন আর তুলনামূলক বেশি আয় করুন।
ইউটিউব ভিডিও থেকে আয় করার জন্য একটি কনটেন্ট তৈরি করার আগে উপরোক্ত বিষয়গুলো খুব ভালোভাবে পরিকল্পনা করে কাজ শুরু করুন। আশাকরি ইতোমধ্যে জেনে গেছেন ইউটিউব থেকে কীভাবে আয় করা যায়। সুতরাং হাতে যথেষ্ট সময় নিয়ে ঠান্ডা মাথায় একটি কনটেন্ট তৈরি করার চেষ্টা করুন। অবশ্যই একটি ভালো ফলাফল অর্জন করবেন। আপনার ইউটিউব চ্যানেলের জন্য শুভকামনা রইল। ধন্যবাদ।
আমি শারমিন আক্তার। শিক্ষার্থী, ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, গাজীপুর। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 115 টি টিউন ও 29 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 6 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।