আসসালামু আলাইকুম। টেকটিউনস এর নতুন আরো একটি টিউনে আপনাকে স্বাগতম। আমি স্বপন আছি আপনাদের সাথে, আশাকরি সকলেই অনেক ভালো আছেন। বন্ধুরা বর্তমানে অনলাইন থেকে ইনকাম করাটা অনেক জনপ্রিয় একটি মাধ্যম হয়ে দাড়িয়েছে। অনলাইন থেকে ইনকাম করার সেরা মাধ্যমগুলোর মধ্যে একটি সেরা মাধ্যম হলো ইউটিউব মার্কেটিং করা। তো বন্ধুরা আজকে আমরা ইউটিউব মার্কেটিং এর সেরা ৫ টি উপায় সম্পর্কে জানবো। তো চলুন তার আগে জেনে নেই ইউটিউব মার্কেটিং আসলে কি?
ইউটিউব মার্কেটিং হলো ইউটিউব প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে প্রোডাক্ট, সেবা বা ব্র্যান্ডের প্রচার করা এবং প্রমোশন করার একটি ডিজিটাল মাধ্যম। ভিডিও রূপে বিভিন্ন ধরনের পন্য সামগ্রী যা আপনার দর্শকের মনোযোগ আকর্ষণ করে। প্রোডাক্ট রিভিউ যেকোনো উপায়ে বানানো হতে পারে, যেমন প্রোডাক্ট রিভিউ, টিউটোরিয়াল, সেবা, ক্রিয়েটিভ কন্টেন্ট, বিভিন্ন সাহিত্যিক ইত্যাদি। ইউটিউব মার্কেটিং ব্যবসায়িক ভাবে লাভ করতে একটি শক্তিশালী মাধ্যম হতে পারে যদি আপনার টার্গেট দর্শকের সাথে আপনি এটি তৈরি করে নিতে পারেন।
ইউটিউব মার্কেটিং এর সেরা ৫ টি উপায় কি কি?
আপনি আপনার প্রোডাক্ট বা সেবা নিয়ে ভিডিও তৈরি করে ব্যক্তিগত ভাবে তা রিভিউ বা ব্যবহার করে তা টিউটোরিয়াল আকারে দেখাতে পারেন। প্রোডাক্ট জানা, প্রোডাক্ট সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করুন। প্রডাক্ট এর বৈশিষ্ট্য, ব্যবহার, কাজকর্ম, এবং বিভিন্ন ফিচার সম্পর্কে জানা বা জানানো অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আপনার নিজস্ব অভিজ্ঞতা বা প্রোডাক্ট ব্যবহার করার সময়ে কেমন ছিলো, তা আপনার ভিউসদের জানান। প্রোডাক্টের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য, ডিজাইন, কার্যক্ষমতা এবং ব্যবহারযোগ্যতা নির্দিষ্টভাবে বর্ণনা করুন। মার্কেটে থাকা অন্য একই প্রোডাক্ট এর সাথে এই প্রোডাক্টের তুলনা করে দেখান। সম্ভব হলে প্রোডাক্ট ব্যবহারের ছবি বা ভিডিও যুক্ত করে ব্যবহারকারীদের এই বিষয়ে সুন্দর একটি ধারণা দেওয়া যেতে পারে।
আপনি কোন বিষয়ে টিউটোরিয়াল তৈরি করতে চাচ্ছেন তা নির্ধারণ করুন। আপনার টিউটোরিয়াল বিষয়ে ভালোভাবে জ্ঞান সংগ্রহ করুন। এটি কিভাবে কাজ করে তা সোজা ধাপে ধাপে ভাগ করুন যাতে আপনার ইউজাররা সহজে ধাপ ধাপে অনুসরণ করে সকল কিছু ক্লিয়ার বুঝতে পারে। প্রয়োজনে প্রাক্টিক্যাল বিভিন্ন টেকনিক যোগ করুন, যেমন ছবি, ভিডিও, স্ক্রিপ্ট ইত্যাদি। সম্ভবত প্রশ্ন উঠতে পারে, তাই এই প্রশ্নের সাথে উত্তর, কারণ, ভালোদিকগুলো উল্লেখ করা জরুরি। আপনার কোম্পানি বা ব্র্যান্ডের নাম শেয়ার করার জন্য ভিডিও তৈরি করতে পারেন, যা আপনার দর্শকদের সাথে মিল রেখে করতে হবে। ভিডিওটির লোকেশন এবং ব্যাকগ্রাউন্ড আপনার মূল বিষয়টি বা চাহিদাটি প্রকাশ করতে পারে।
একটি ভাল ক্যামেরা এবং মাইক ব্যবহার করে ভিডিওগুলো স্টুডিও কোয়ালিটির ভিডিও তৈরি করুন। এতে আপনার ভিউসদের বেশি আকর্ষণ করবে। একটি বিষয়ে স্ক্রিপ্ট লেখা এবং ভিডিওটিতে একটি স্টোরি তৈরি করে ভিডিওতে মূল বিষয় তুলে ধরা আপনার ভিউস বারাতে সাহায্য করতে পারে। আপনার ভিডিও ভিউয়ার বারানোর জন্য ভিডিও গ্রাফিক্স, টেক্সট, অভিনয়, অডিও ইত্যাদি যুক্ত করে আকর্ষণীয় ভিডিও তৈরি করার চেষ্টা করুন। ভিডিওটির প্রচার এবং শেয়ারিং এর জন্য আপনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলি ব্যবহার করতে পারেন।
আপনি আপনার সোস্যাল মিডিয়া প্রোফাইল থেকে ইউটিউব ভিডিও লিঙ্ক শেয়ার করে আপনার ইউটিউব চ্যানেলে ট্র্যাফিক বারাতে পারেন। এতে আপনার ব্যাবস্যার পরিধি অনেক অংশে বেরে যাবে। আপনার কম্পানির মূল নাম এবং প্রচার বিষয় নির্ধারণ করুন। এটি সামাজিক মিডিয়াতে ট্রাফিক বারাতে সাহায্য করবে। আপনার একাউন্টে সঠিক প্রোফাইল ছবি, কভার ফটো, বায়ো ডাটা ইত্যাদি ব্যবহার করে আপনার প্রোফাইল আকর্ষণীয় ও সম্পূর্ণ করুন। আপনার ভিডিও বিষয়ে টার্গেট অডিয়েন্স নিশ্চিত করে নিন এবং এবং তাদের আগ্রহ কিসে সেসব বিষয় নিয়েই ভিডিও প্রকাশ করুন।
আপনার টিউন এবং কন্টেন্টগুলি আকর্ষণীয় ও সহজেই পড়া যায় বা শেয়ারযোগ্য হতে হবে। এটি আপনার ওয়েবসাইটে টার্গেট ট্র্যাফিক পাঠাতে সাহায্য করবে। বেশি বেশি ট্র্যাফিক বাড়াতে আপনি প্রতিদিন নিয়মিত কন্টেন্ট টিউন করতে পারেন। সামাজিক মিডিয়ায় ট্রেন্ডিং বিষয়গুলোতে ব্যবহার করা হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করুন। যা আপনার পোস্টগুলিতে আরো ভিজিটর বারাতে সাহায্য করবে।
ভিডিও বা টিউন লেখার সময় সঠিক টাগ, ডেসক্রিপশন, টাইটেল ইত্যাদি ব্যবহার করে আপনার ইউটিউব চ্যানেলকে সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পেজের রেজাল্টে আনতে পারেন। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (Search Engine Optimization বা SEO) করতে আপনার লক্ষ্যকৃত পাবলিকের জন্য উপযুক্ত কীওয়ার্ড খুঁজে বের করুন যা তারা সার্চ ইঞ্জিনে নিয়মিত সার্চ করে বা অনেক বেশি সার্চ ভলিউম আছে এমন কীওয়াড খুঁজে বের করুন। টিউন এবং পেজের মেটা ট্যাগ ভালোভাবে প্রস্তুত করুন, যাতে সার্চ ইঞ্জিনগুলি বা সার্চ রেজাল্টে আপনার কন্টেন্ট সবার প্রথমে আসতে পারে।
আপনার ওয়েবসাইটে কি বিষয়ে আপনি সেই বিষয়ে নির্ধারিত উপযুক্ত কন্টেন্ট তৈরি করুন যা আপনার টার্গেট পাবলিকের চাহিদা পূরন করতে পারে। নিয়মিতভাবে নতুন এবং আকর্ষণীয় কন্টেন্ট টিউন করুন, যাতে সার্চ ইঞ্জিনআপনার সাইটকে সবার প্রথমে উপস্থাপন করতে পারে। ওয়েবসাইট গঠন এবং ডিজাইন এমন হতে হবে যা সার্চ ইঞ্জিন সহজে খুজতে পারে এবং আপনার লেখা কন্টেন্ট সহজেই ইনডেক্স করতে পারে। সবশেষে আপনার ওয়েবসাইটে ইমেজের জন্য ইমেজ এল্ট ট্যাগ ব্যবহার করুন, যা সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজড এর জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
বন্ধুরা, ইউটিউব মার্কেটিং এর জন্য সেরা উপায় হতে পারে এমন ৪ টি টিপস আমি আপনাদের মাঝে তুলে ধরলাম। বর্তমানে অনলাইনে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারা এক বড় চ্যালেঞ্জ। আপনি ইউটিউব মার্কেটিং করবেন ভাবলেন, আর সফল হলেন বিষয়টি এমন নয়। শুরুতে আপনাকে অনেক বেশি পরিশ্রমী ব্যক্তি হতে হবে। তবেই আপনার সফলতা আসবে৷ আজকের টিউনে আলোচনা করা বিষয়গুলো আপনার সফলতার এক অংশ। হয়ত শুরুতে আপনি এসব একটু কম বুজবেন বা বুজবেনই না, তবে আজকের আলোচনা করা বিষয়গুলো আপনি ইউটিউব মার্কেটিং করার জন্য নিয়ম হিসাবে মানতে পারলে আপনি ইউটিউব মার্কেটিংয়ে সফল হবেন বলে আমি মনে করি।
তো বন্ধুরা এই ছিল আমাদের আজকের টিউন, ইউটিউব মার্কেটিং এর সেরা ৫ টি উপায়। আশাকরি টিউন টি আপনাদের একটু হলেও হেল্পফুল হবে। আজকের মতো এখানেই বিদায় নিচ্ছি, দেখা হবে পরবর্তী টিউনে নতুন কোন বিষয় নিয়ে। ততক্ষণ অবধি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং টেকটিউনস এর সাথেই থাকবেন।
আমি স্বপন মিয়া। Sonic টিউনার, টেকটিউনস, গাইবান্ধা, রংপুর। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 বছর 8 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 107 টি টিউন ও 29 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 4 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
টেকনোলজি বিষয়ে জানতে শিখতে ও যেটুকু পারি তা অন্যর মাঝে তুলে ধরতে অনেক ভালো লাগে। এই ভালো লাগা থেকেই আমি নিয়মিত রাইটিং করি। আশা করি নতুন অনেক কিছুই জানতে ও শিখতে পারবেন।