কিভাবে ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট অপ্টিমাইজ করবেন, আসুন দেখি নেই

ওয়ার্ডপ্রেস ওয়েবসাইট লোড হতে বেশি সময় নিলে তা আপনাকে সফল করতে কোন ভূমিকা পালন করবে? অবশ্যই না, যদি আপনার ওয়েবসাইট স্লো থাকে তাহলে ভিসিটররা বিরক্তবোধ করবে এবং আপনার ওয়েবসাইট থেকে চলে যেতে বাধ্য হবে। বেশির ভাগ সময় তারা তাদের ব্রাউজারের ব্যাক বাটন ব্যবহার করবে।

আপনার ওয়েবসাইটের Performance খারাপ হলে তা এসইও (SEO) তে ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। ভাল র‍্যাঙ্ক পাওয়ার জন্য এবং বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনের বোট যাতে সহজে আপনার সাইট সম্পর্কে ধারণা নিতে পারে সেজন্য তাদের সাইট এর ডিজাইন এমনভাবে করে থাকে যাতে তুলনামূলকভাবে কম সময়েই তা ভিসিটরের মন কেঁড়ে নিতে পারে এবং সার্চ ইঞ্জিন যাতে সহজেই তথ্য সংগ্রহ করতে পারে।

optimize-thumb

আজকে আমরা ওয়ার্ডপ্রেস সাইটের পেইজ লোডিং টাইম কামানোর জন্য ১৩ টি ধাপে ধাপে বিস্তারিত আলোচনা করব। যদি আজকের এই ধাপগুলো আপনি ফলো করেন আশাকরি ভাল ফলাফল পাবেন।

ধাপগুলো ফলো করার আগে আমি আপনাকে আপনার সাইটের স্পীড চেক করে নিতে বলব সেজন্য আপনি জিটিম্যাট্রিক্স, ইয়াহুস্লো এবং গুগল স্পীড টেস্ট ব্যবহার করতে পারেন।

ধাপসমূহঃ

সঠিক হোস্টিং প্ল্যান নেওয়া।

আপনি অনেক কিছু করলেন কিন্তু আপনার সাইটের হোস্টিং প্ল্যান ভাল না থাকলে আপনার সাইট স্লোই থেকে যাবে। আপনার সাইট যদি HTTP requests প্রসেস করতে অধিক সময় নেই তাহলে আপনি কোনভাবেই ডিজাইনকে দোষী করতে পারবেন না। উপরের উল্লিখিত স্পীড টেস্ট পদ্ধতি দ্ধারা আপনি আপনার সাইটের সার্ভার রেসপন্স টাইম নির্ধারণ করতে পারবেন। এতেই আপনি বোঝতে পারবেন সাইট লোডিং এ আপনার হোস্টিং কত বড় ভূমিকা পালন করে। বড় এবং ভাল হোস্টিং কোম্পানি বড় কিছু না সবচেয়ে বড় প্রয়োজন ভাল হোস্টিং হোক সেটি ছোট প্রতিষ্ঠান।

রেস্পন্সিভ দ্রুত লোড হয় এমন থীম ব্যবহার করা

বাজেভাবে কোডিং করা এবং অতিরিক্ত ছবির ব্যবহার করে ডিজাইনের সাইজ বৃদ্ধি করা আপনার সাইট লোড হতে দেরি হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ। সেজন্য আপনাকে এমন একটি ডিজাইন বাছাই করতে হবে যা ডেক্সটপ, ট্যাবলেট এবং মোবাইল এর জন্য উপযোগী। বেশীর ভাগ ওয়েবসাইটের থীমের সম্পূর্ণ অংশ তার মূল হোস্টিং থেকে লোড হয় না, ডিজাইনের সময় ডিজাইনাররা তাদের সার্ভার থেকে অনেক কিছু লোড হতে দেয়। এতে অনেক সময় বেশি লাগে সুতরাং অবশ্যই সম্পূর্ণ সাইট যেন আপনার সার্ভার থেকে লোড হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।

প্লাগিন মনিটরিং

কোন প্লাগিন ইন্সটল করার আগে একবার ভেবে দেখুন তো এই প্লাগিনটি সত্যিই আপনার কোন কাজে লাগবে?

যদি লাগে তাহলে ইন্সটল করতে পারেন অথবা অযথা ইন্সটল করার কোন প্রয়োজন নেই। অনেক সময় আপনার সার্ভারের সিপিইউতে অনেক প্লাগিন ব্যবহার করার হয়ে থাকে যার কারণে অনেক প্রসেস বন্ধ হয়ে যায়। অতিরিক্ত প্লাগিন ব্যবহারের ফলে আপনার ক্ষতি হিসেবে সার্ভার স্লো অথবা ডাউন হয়ে যেতে পারে।

1

Trash খালি রাখুন

WordPress 2.9 থেকে Trash এর ব্যবহার শুরু। যখন কোন কন্টেন্ট, টিউমেন্টস, ছবি ডিলিট করা হয় তখন তা আপনার সাইট এ Trash এ জমা হবে। এখান থেকে সেই কন্টেন্ট পুনরায় ফেরত এবং সম্পূর্ণভাবে ডিলিট করা সম্ভব। অনেকটা আপনার কম্পিউটারের Recycle Bin এর ব্যবহারের মত। Trash আপনার ডাটাবেইজে অনেক অপ্রয়োজনীয় জায়গা দখল করে নেই যার কারণে আপনি যখন আপনার এডমিন প্যানেল এ যাবেন তখন এসকল কন্টেন্ট আবার লোড হবে এবং অতিরিক্ত সময় নিবে। তবে এক্ষেত্রে একটি সুবিধা আছে ওয়ার্ডপ্রেস ৩০ দিনের পুরাতন Trash এর ফাইল ডিলিট করে ফেলে। যদি এই সময় কমাতে চান তাহলে আপনার wp-config.php ফাইল এ যান এবং সেখানে নিচের মত একটি কোড পাবেনঃ

define ('EMPTY_TRASH_DAYS', 30);

এবার এটিকে 30 এর পরিবর্তে 7 করে দিন তাহলে ৭ দিন পর পর খালি Trash হবে।

আবার আপনি যদি একেবারে বন্ধ করে দিতে চান তাহলে নিচের কোডটি ব্যবহার করতে পারেনঃ

define ('EMPTY_TRASH_DAYS', 0);

Revisions, Drafts, Spam, Pingbacks এবং Trackbacks এর ব্যবহার কামানো।

আপনার প্রতি সময় উচিত এসকল অযথা জিনিষ ব্যবহার না করা এতে একজন ইউজার সহজেই আপনার সাইট এর কন্ট্রোল প্যানেলে দ্রুত লগইন এবং সহজেই ব্যবহার করতে পারবে। তাই এই গুলো ব্যবহার না করে বন্ধ করে নেওয়াই ভাল কিন্তু আপনি যদি ব্যবহার করতে চান তাহলে করতে পারেন কারণ এই গুলো খুব একটা প্রভাব ফেলে না।

ছবি অপ্টিমাইজ করা

বর্তমানে সবাই টেক্সট এর তুলনায় ইমেজ এ যেন একটু বেশিই বিশ্বাসী। তবে সেই ইমেজ লোড হতে যদি অল্প একটু বেশি সময় নেই এবং এক সাথে একাধিক ছবি যদি ভিসিটরের সময় নস্ট করা শুরু করে তাহলে কে না বিরক্ত হবে? সেজন্য আপনার সাইট এ ছবি অপ্টিমাইজ করে আপলোড করা প্রয়োজন। সেজন্য আপনি আপলোড করার আগে ফটোশপ এবং অন্যান্য থার্ড পার্টি সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পারেন। আপনি ফটোশপে “Save for Web” অপশন ব্যবহার করে ইমেজ অপ্টিমাইজ করতে পারেন।

আর আপনার সাইট এ আপলোড করা ইমেজ অপ্টিমাইজ করার জন্য আপনি WP Smush.it প্লাগিনটি ব্যবহার করতে পারেন। আশাকরি অনেক কাজে দিবে।

বিজ্ঞাপনের মান যাচাই করে বসানো

সাইট এ বিজ্ঞাপন বসানোর জন্য অবশ্যই ইমেজ বিজ্ঞাপন হলে অপ্টিমাইজ করে বসাবেন ফটোশপ অথবা আপনার পছন্দের সফটওয়্যার ব্যবহার করে। সবসময় সাইজের দিকে একটু খেয়াল রাখা উচিৎ। কুয়ালিটি ঠিক রেখে সাইজ যতটুকু সম্ভব কমাতে চেষ্টা করবেন।

ব্যবহার হয় না এবং সোসিয়াল শেয়ারিং বাটন ব্যবহার না করাই ভাল।

সার্চ ইঞ্জিনের পর সোসিয়াল শেয়ারিং করে প্রচুর ভিসিটন আনা সম্ভব। কিন্তু যেসব বাটন ব্যবহার হয় না তা আপনার সাইট এ ব্যবহার করে শুধু শুধু লোডিং টাইম বাড়ানো উচিৎ না। তাই প্রয়োজনীয় বাটন সরিয়ে নেওয়া উচিৎ।

Gzip compression ব্যবহার করা

Gzip compression ব্যবহার করে আপনি আপনার সাইট লোড আগের তুলনায় ৭০ % কমাতে পারবেন। যদি আপনি তা আপনার ওয়ার্ডপ্রেস এ চালু করতে চান তাহলে http://www.yourwebsite.com/wp-admin/options.php এখানে যান এবং GZIP এর ভ্যালু 0 থেকে 1 করে দিন।

জাভাস্ক্রিপ্ট এবং সিএসএস এর ব্যবহার কামানো

আপনার সাইট এ একাধিক জাভাস্ক্রিপ্ট এবং সিএসএস এর ব্যবহারে শুধু আপনার সাইট লোড হতে বেশি সময় নেয় তা নয় আপনার এসইওতে ব্যাপক খারাপ প্রভাব ফেলে। এজন্য আপনার অপ্রয়োজনীয় জাভাস্ক্রিপ্ট এবং সিএসএস ব্যবহার বন্ধ করা উচিৎ।

ব্রাউজার ক্যাচ চালু করা

আপনার সাইট এ ব্রাউজিং দ্রুত করার জন্য ব্রাউজার ক্যাচ ব্যবহার করা উচিৎ। ব্রাউজার ক্যাচ আপনার সাইট এর ডাটা ভিসিটরের পিসিতে সংরক্ষণ থাকবে এবং যখন ভিসিটর আপনার সাইট ভিসিট করবে তখন সেই ক্যাপ থেকে ডাটা লড হবে। এতে সময় অনেকাংশেই কমে যাবে।

ক্যাচ প্লাগিন ইন্সটল করুন

সাইট ক্যাচ চালু করার জন্য আপনি বিভিন্ন প্লাগিন ব্যবহার করতে পারেন। নিম্নে কয়েকটি ভাল প্লাগিন দেওয়া হলঃ

w3-total-cache

এই প্লাগিনগুলো ব্যবহার সম্পূর্ণ ফ্রী।

CDN ব্যবহার করা

সর্বশেষ যে ধাপটি আপনি অনুসরণ করতে পারেন তা হল CDN (Content Delivery Networks) এর মাধ্যমে ভিসিটরের নিকটবর্তী সার্ভার স্টেশন থেকে সাইট লোড হবে এবং এতে সাইট লোড হতে সময় অনেকাংশেই কম লাগবে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ধরুন আমি আমেরিকা থাকি এবং আমি সেখান থেকে আপনার সাইট ভিসিট করব। এখন যদি আপনি CDN ব্যবহার করে থাকেন এবং তার সার্ভার স্টেশন যদি আমেরিকা থাকে তাহলে সেখান থেকে সাইট লোড হবে আপনার বাংলাদেশের সার্ভার থেকে নয়। আশাকরি বোঝতে পেড়েছেন।

কথায় আছে, Time Is Money। আপনার কাছে যতটুকু গুরুত্বপূর্ণ আপনার ভিসিটরের কাছে সময় এর চেয়ে বেশি দামি হতে পারে। তাই অবশ্যই আপনি আপনার ওয়ার্ডপ্রেস সাইট এর জন্য এই ১৩টি ধাপ অনুসরণ করতে পারেন।

ফেসবুকে আমি এখানেে

আমার ব্লগ সাইট এখানে

Level 0

আমি Habibur Rahman। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 65 টি টিউন ও 213 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 3 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।

জানতে চাই, জানাতে চাই এ আমার পত্যাশা । সবাই দোয়া করবেন ।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

upokarable post

আপনার কাছে একটি বিষয় জানার ছিল তা হল:
একটি সাইট চালাতে হলে সাবডোমাইন অবশ্রই প্রয়োজন। যেমন ধুরুন টেকটিউনস তার কত গুলো সাবডোমাইন ব্যবহার করে এই জন্য স্পীড ভাল । ‘
এখন প্রশ্ন হল আমি সাবডোমাইন ইমেজ হুস্টিঙ করলাম এই রকম পাল্গীন জানা থাকলে জানাবেন। তবে আমি মেনুযেল কনফিগারেশন পারি মন মত পাল্গীন পেলাম না।

    @www.bangladesh.usa.cc: না ভাই আমার কাছে এখন এই ধরনের প্লাগইন এখন নাই । তবে হ্যা আসলে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব

Gzip এর মান ১ করে দিয়েছি তারপরেও Gzip অন হয় না। এখন কি উপায়?

ভাল হয়েছে। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।