ওয়ার্ডপ্রেস কি?
ওয়ার্ডপ্রেস হচ্ছে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় কন্টেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিএমএস)। এটি সার্ভার সাইড স্ক্রিপ্টিং ল্যাঙ্গুয়েজ পিএইচপি এবং মাইএসকিউএল ডাটাবেজ দিয়ে তৈরি। এটি একটি ওপেনসোর্স ব্লগিং সফটওয়্যার যা ফ্রিতে ব্যবহার করা যায়। ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করে খুব সহজেই মাত্র কয়েক মিনিটে একটি ওয়েব সাইট তৈরি করা যায়, এমনকি কোন প্রকার টেকনিক্যাল জ্ঞান ছাড়াই! আর এ কারণেই বিশ্বব্যাপী ওয়ার্ডপ্রেসের এত জনপ্রিয়তা।
কেন ওয়ার্ডপ্রেস?
সবাই চায় সে যেন তার ওয়েবসাইটের কনটেন্টগুলোকে খুব সহজেই ম্যানেজ করতে পারে, সেজন্যই প্রয়োজন কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম তৈরি করা অনেক ব্যয়বহুল।
এক্ষেত্রে খরচ বাঁচানোর জন্য অনেকে ফ্রি সিএমএস ব্যবহার করে থাকে, আর এক্ষেত্রে ওয়ার্ডপ্রেসই থাকে সবার প্রথম পছন্দ। সিএমএসগুলোর মধ্যে ওয়ার্ডপ্রেসের এত জনপ্রিয়তার কয়েকটি কারণ হল- এর ইউজার ফ্রেন্ডলি ইন্টারফেস, খুব সহজেই কোন ফিচার যোগ করতে পারার সুবিধা এবং সার্চ ইঞ্জিন বান্ধব স্ট্রাকচার। ওয়ার্ডপ্রেস প্রথমে ব্লগিং সফটওয়্যার হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও, বর্তমানে পোর্টফোলিও সাইট থেকে শুরু করে কর্পোরেট, অনলাইন সংবাদপত্র, সোশ্যাল মিডিয়া, ইকমার্স সাইট পর্যন্ত ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি করা হয়ে থাকে। ওয়ার্ডপ্রেস এর হাজার হাজার ফ্রি থিম এবং প্লাগইন এই কাজটিকে আরও সহজ করে দিয়েছে!
কারা ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করে?
ইন্টারনেটে জনপ্রিয় ১০ লাখ ওয়েবসাইটের ১৬.৭ ভাগ ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি। যেসব ওয়েবসাইট কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার করে থাকে তার শতকরা ৫৫.১ ভাগ ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করে থাকে। অন্য এক সমীক্ষায় জানা গেছে, প্রতিদিন ১ লাখের বেশি ওয়ার্ডপ্রেস ইনস্টল করা হয়ে থাকে। যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় পত্রিকা নিউ ইয়র্ক টাইমস এর ব্লগ ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি। তাছাড়া জনপ্রিয় সংবাদ সংস্থা সিএনএন, রয়টার্স, ফোর্বস, সোশ্যাল মিডিয়া নিউজ ব্লগ ম্যাশেবল এর ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি।
ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভেলপমেন্টের চাহিদা
ওয়ার্ডপ্রেসের ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ার সাথে সাথে বাড়ছে ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভেলপারদের কাজের পরিধি। এক সমীক্ষায় জানা গেছে, ওয়ার্ডপ্রেস এর ব্যবহারকারীদের শতকরা ৩৫ ভাগ প্রিমিয়াম থিম অথবা নিজের কাস্টোমাইজ করা থিম ব্যবহার করে থাকেন। আর প্রতিদিন ১ লাখ নতুন ওয়েবসাইট তৈরি হচ্ছে ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে। এখানে ৩৫ শতাংশ প্রিমিয়াম ব্যবহারকারী ধরলে প্রতিদিন নতুন নতুন গ্রাহক তৈরি হচ্ছে ৩৫ হাজার। বছরে নতুন গ্রাহক হচ্ছে ১ কোটি ২৭ লাখ। আর প্রচুর ব্যবহারকারী যেহেতু নিজেদের মত করে ডিজাইন তৈরি করে নেন তাই এক্ষেত্রে ওয়ার্ডপ্রেস কাস্টোমাইজেশনের কাজের ক্ষেত্রও ব্যাপক। পাশাপাশি প্লাগইন ডেভেলপমেন্ট সেক্টরেও ব্যাপক কাজের সুবিধা রয়েছে।
যা জানতে হবে
ওয়ার্ডপ্রেস থিম ডেভেলপমেন্ট নিয়ে কাজ করার জন্য প্রথমে পিএইচপি কোডিং জানতে হবে। সেই সঙ্গেঁ এইচটিএমএল, সিএসএস এবং জাভাস্ক্রিপ্ট জানার প্রয়োজন পড়বে। আর কেবল ওয়ার্ডপ্রেস থিম কাস্টোমাইজেশনের জন্য এইচটিএমএল, সিএসএস এবং ওয়ার্ডপ্রেস ফ্রেমওয়ার্কেরও ব্যবহার জানা থাকলেই চলবে। নতুন কেউ ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপমেন্টে এসে ভালভাবে শিখতে সময় লাগবে ২ থেকে ৬ মাস। তবে দেড় থেকে ২ মাসের মধ্যেই ওয়ার্ডপ্রেস কাস্টোমাইজেশন শেখা যায়। আর কাজ করতে করতেই যাওয়া যায় অ্যাডভান্স লেভেল পর্যন্ত। ইন্টারনেটে ওয়ার্ডপ্রেসের বিভিন্ন টিউটোরিয়াল এবং ভিডিও পাওয়া যায়। যেগুলো দেখে অনেক কিছু শেখার সুযোগ রয়েছে। তাছাড়া যারা আরো বিস্তারিত জানতে ইচ্ছুক তাদের জন্যে ডেভসটিম ইনস্টিটিউট আগামী ১৭ এপ্রিল, ২০১৪ তারিখে ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপমেন্টে ক্যারিয়ার বিষয়ক দুই ঘন্টা ব্যাপী সেমিনারের আয়োজন করেছে। শেখার জন্যে কি কি প্রয়োজন সেটা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে সেখানে।
ওয়ার্ডপ্রেসের ব্যবহারকারি যেমন বাড়ছে তেমনি বাড়ছে কাজের সুযোগও। তাই ওয়ার্ডপ্রেস ডেভেলপমেন্ট এখন এমন একটি ক্ষেত্র, যেখানে কাজের আসলে কোন অভাব নেই। বিশাল এই কাজের ক্ষেত্রে প্রবেশের জন্য কেবল প্রয়োজন দক্ষতা। আপনার যদি মনোবল আর ইচ্ছা থাকে, তবে এই দক্ষতা অর্জন কোন ব্যাপারই নয়। তাই যদি শুরু করতে চান তবে অপেক্ষা না করে এখনই শুরু করুন। ওয়ার্ডপ্রেসের সম্ভাবনাময় জগতে দৃপ্ত পদক্ষেপে এগিয়ে যান এই প্রত্যাশাই রইলো।
আমি DevsTeam Institute। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 4 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 41 টি টিউন ও 63 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
Ami Aktu Help chai