উইন্ডোজ এর কতগুলো দরকারি সফটওয়্যার রয়েছে যেগুলো আকারে খুবই ছোট কিন্তু খুবই পাওয়ারফুল। যেগুলো অনেকেরই নজরের আড়ালে থাকে। কিন্তু বন্ধুরা এই সফটওয়্যার গুলো ছোট হলেও খুবই পাওয়ারফুল, এডাকটিভ এবং প্রোডাক্টিভ। বলতে গেলে ছোট মরিচের ঝাল বেশি। আজ আমি দশটি সেই সফটওয়্যার গুলো নিয়ে টিউন করতে যাচ্ছি। তো চলুন বন্ধুরা শুরু করা যাক।
১. এভ্রিথিং : আমার এই টিউনটির প্রথম সফটওয়্যারটির নাম হচ্ছে এভরিথিং। এই সফটওয়্যারটির সাইজ মাত্র ১.৪ মেগাবাইট। এটা কাজ হচ্ছে সার্চ করা। আপনারা খেয়াল করলে দেখবেন উইন্ডোজ এর যে সার্চ অপশনটা রয়েছিস সেটি খুবই স্লো। কিন্তু আপনি যদি এভরিথিং লিখে সার্চ দেন তাহলে ইনস্ট্যান্টলি আপনি আপনার দরকারি ফাইল বা ফোল্ডারটি খুঁজে পাবেন। এবং আপনার সার্চটার্ম কমপ্লিট করার আগেই দরকারে ফাইলটি চলে আসে। এটি খুবই ফার্স্ট এবং কন্টিনিউস। আমি দীর্ঘদিন ধরে এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করে আসছি। এমনকি আপনি যদি কোন ফোল্ডার লক করে থাকেন তাহলে এভরিথিং সফটওয়্যারটি সেই ফোল্ডারটিও খুঁজে বের করবে। এভরিথিং সফটওয়্যার টি ফ্রি ইউজ করা যায়। আপনারা চাইলে ডাউনলোড করে ইউজ করতে পারবেন এই সফটওয়্যারটি।
২. আনলকারঃ আমার টিউনটির দ্বিতীয় সফটওয়্যারটির নাম হচ্ছে আনলকার। এবং এটির সাইজ মাত্র ৩৯৩ কিলোবাইট। ভাই ছোট বলে অবহেলা করবেন না। এই সফটওয়্যারটি খুবই পাওয়ারফুল। আমাদের কম্পিউটারে কিছু ফাইল বা ফোল্ডার তাকে যেগুলো ডিলিট হয় না আপনারা চাইলে সেগুলো আনলকার সফটওয়্যারটি দিয়ে সাথে সাথে ডিলিট করে ফেলতে পারবেন। যদি আপনি সেটা নরমালি ডিলিট করতে না পারেন। ভাই আমার মাদবরি করে উইন্ডোজের ফাইল ডিলিট করে দিয়েন না। মানে আপনি যে ফোল্ডারটা নিজেই তৈরি করেছেন সেটি ডিলিট করবেন।
৩. টেক্সটারঃ তিন নাম্বার সফটওয়্যার নাম হচ্ছে টেক্সটার। এইটার সাইজ মাত্র ৪৬২ কিলোবাইট। এই সফটওয়্যারটি তাদের জন্য যাদের টাইপ করতে গেলে হাত ব্যাথা করে। অনেক সময় আমরা আমার কে লিখি এ এম এ আর। আবার আমরা অনেক সময় অনেক ভুল বানান লিখে ফেলি। কিন্তু এই সফটওয়ারটির মাধ্যমে আমরা স্পেস দিয়ে সঠিক বানানটি সিলেক্ট করতে পারব। পাশাপাশি কমন টেক্সট যদি আপনি বারবার লিখতে থাকেন তাহলে সেটি লিখে এন্টার চাপলেই পুরো লাইনটি চলে আসবে। অনেক ডাক্তাররা আছেন যেমন বড় ওষুধের নাম লিখতে চান না। তার জন্য এরকম সংক্ষিপ্তভাবে লিখলে স্পেস চাপলেই পুরো ওষুধটির নাম স্বয়ংক্রিয়ভাবে চলে আসবে। তো আমি মনে করি এই সফটওয়্যারটি খুবই ইউজফুল এবং ছোট সাইজের, আপনারা চাইলে এটি ব্যবহার করে দেখতে পারবেন।
৪. আনচেকিঃ চার নাম্বার সফটওয়্যারটির নাম হচ্ছে আনচেকি, যেটি সাইজ হচ্ছে মাত্র ১.২৯ মেগাবাইট। এই সফটওয়্যারটি খুবই কাজের। খেয়াল করবেন আমরা যখন উইন্ডেজ এ নানান রকম সফটওয়্যার ইন্সটল করি তখন দেখা যায় বক্সে ঠিক চিহ্ন দিতে হয় বা আন চেক করতে হয়। ধরুন আপনি ইনস্টল করছেন এক সফটওয়্যার কিন্তু ইনস্টল হয়ে যাচ্ছে অন্য সফটওয়্যার। এরকম অনেক সফটওয়্যার অযথা ইউস হয়ে যায়। সার্চ বার টুলবার ইত্যাদি চলে আসে যায়। ধরুন আরও একটি কাহিনী বলি, আপনি একটি সফটওয়্যার ইন্সটল করতে গিয়ে ৭-৮ টা সফটওয়্যার বাটুল বাস সার্চ বার পরিবর্তন হয়ে যায়। এইসবের মাধ্যমে আপনার কম্পিউটারে বিভিন্ন রকম ভাইরাস চলে আসতে পারে। তো আপনি আনচাকি দিয়ে যদি ইউজ করেন তাহলে আপনি যে সফটওয়্যারটি ইন্সটল করতে যাবেন শুধুমাত্র সেই সফটওয়্যারটি ইন্সটল হবে।
৫. কিউটি টেপবার ঃ পাচ নাম্বার সফটওয়্যারটির নাম হচ্ছে কিউটি টেপবার। এই সফটওয়্যারটি সাইজ মাত্র সাড়ে চার মেগাবাইট। এবং এটিও খুবই কাজের। এই সফটওয়্যারটি দিয়ে আপনারা চাইলে উইন্ডো গুলোকে টেব আকারে সাজিয়ে রাখতে পারেন। যেমন আমরা যখন কোন ওয়েব ব্রাউজার ইউজ করি, প্রত্যেকটা ওয়েবসাইট আমরা এক একটা ট্যাবে ওপেন করি। কিন্তু আমরা যখন উইন্ডোজের মাল্টিপল ফোল্ডার ওপেন করি, তখন উইন্ডোজ এ অনেকগুলো বার থাকে। মানে আমরা ওয়েব ব্রাউজারে যখন বিভিন্ন ওয়েবসাইট টেব ওপেন করি ঠিক তেমনিভাবে ফোল্ডার গুলো কেও ট্যাব আকারে ওপেন করতে পারবেন।
৬. ওইন্ডিরস্টেটঃ ছয় নাম্বার সফটওয়্যারটির নাম হচ্ছে ওইন্ডিরস্টেট। এটির সাইজ হচ্ছে মাত্র সাড়ে ছয় মেগাবাইট। এই সফটওয়্যার দিয়ে আপনারা চাইলে আপনার পিসির যে ড্রাইভ গুলা আছে সেগুলোকে আপনারা পরিষ্কার করতে পারবেন। এ সফটওয়্যারটি সবচেয়ে উপকারী দিক হলো এই সফটওয়্যারটির মাধ্যমে আপনি গ্রাফিক্যালি আপনার ফাইল বা ফোল্ডার গুলোর সাইজ দেখতে পারবেন।
৭. রিকোভাঃ সাত নাম্বার সফটওয়্যার টির নাম হচ্ছে রিকোভা। এবং এটি সাইজ হচ্ছে মাত্র সাড়ে ৭ মেগাবাইট। এই সফটওয়্যারটির নাম হয়তো বা আপনারা অনেকেই শুনে থাকতে পারেন। এই সফটওয়্যারটির মাধ্যমে আপনারা যে কোন কিছু রিকভারি করতে পারবেন। মনে করুন, আপনি ভুলে একটি ফাইল বা ফোল্ডার ডিলিট করে ফেললেন তাহলে আপনি রিকভারি সফটওয়্যার এর মাধ্যমে আপনি সেই ফোল্ডার বা ফাইলটি রিকভারি করতে পারবেন।
৮. ডিটোঃ আট নাম্বার সফটওয়্যারটির নাম হচ্ছে ডিটো। এটি একটি ক্লিপবোর্ড ম্যানেজার। এটি সাইজ মাত্র বাইশ মেগাবাইট। এই সফটওয়্যারটি আমি দীর্ঘদিন ধরে ইউজ করি। ধরুন আপনি উইন্ডোজের কোনো ট্যাক্স কপি করলেন। কিন্তু ভুলে আপনি অন্য টেক্সট কপি করলেন। তাহলে কি হলো আপনার আগের যে কপিটা সেটি হারিয়ে গেল নতুন যে কপি করেছিলেন সেটি পেস্ট হয়ে যাবে। আগেরটা হারিয়ে যাবে। কিন্তু আপনি যদি আগেরটা ফিরে পেতে চান তাহলে পাবেন না। কারণ উইন্ডোজ এ সেরকম কোন অপশন নেই। কিন্তু আপনি যদি ডিটেলস সফটওয়্যারটি ইউজ করেন তাহলে মাল্টি পলিটেক্স কপি করতে পারেন। এবং পেস্ট করার সময় আপনি চাইলে যেকোনোটি সিলেক্ট করতে পারেন।
৯. নাইনাইট ডট কমঃ আমার লিস্টে যে নয় নাম্বার টুলটি রয়েছে সেটি হল একটি মূলত ওয়েবসাইট। ওয়েবসাইট টির নাম হলো নাইনাইট ডট কম। এবং এই সফটওয়্যারটি খুবই ইউজফুল। আমরা যখন উইন্ডোজ ফ্রেশ সেটআপ করি তখন আমাদের আলাদা আলাদাভাবে দরকারের সফটওয়্যার গুলো ইনস্টল দিতে হয় কিন্তু নাইনাইট ডট কমে এক ক্লিকে আপনি আপনার দরকারের সফটওয়্যার গুলো সিলেক্ট করে এক ক্লিকেই ইন্সটল করতে পারবেন।
১০. টারবো টপঃ দশ নাম্বার এবং লাস্ট সফটওয়্যারটির নাম হচ্ছে টারবো টপ। যেটা সাইজ হচ্ছে মাত্র ১ মেগাবাইট। এটির কাজ হচ্ছে যে কোন উইন্ডোকে সবার উপরে রাখা। ধরুন আপনি গুগল ইমেজ থেকে ছবিটা ডাউনলোড করছেন। এবং আপনার ডাউনলোডকৃত ছবিটি প্রত্যেকবার ড্রেগ করে ফোল্ডারে নিয়ে যেতে হচ্ছে। কিন্তু আপনি যদি সেই ফাইলটাকে বাটাকে উপরে রাখতে পারেন মানে ব্রাউজার এর উপরে যদি থাকে। তাহলে কিন্তু অনেক সময় অনেক উপকার হয়। কাজ অনেক দ্রুত হয় এতে। দীর্ঘদিন ধরে আমি এই সফটওয়্যার টি ইউজ করে আসছি। আপনারা ইউজ করে দেখতে পারেন।
তো বন্ধুরা আজকের টিউন কেমন লাগলো তা টিউমেন্ট করে জানিয়ে দিও আর এই টিউন্টির জন্য একটা জোস তো হতেই পারে তাই না।
আমি সজিব মাহমুদ সাইমুন। কাস্টমার কেয়ার এক্সেকিউটিভ, এশিয়া ইন্টারন্যাশনাল টেক (প্রাইভেট) লিমিটেড, চট্টগ্রাম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 2 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 26 টি টিউন ও 18 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 7 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।
আমি যে দুরন্ত, দুচোখে অনন্ত,ঝরের দিগন্ত ঝুরেই সপ্ন সাজাই।