উইন্ডোজ ৮.১ রিলিজের পর থেকে প্ল্যান করছিলাম কবে নাগাত ইন্সটল দিতে পারবো। পর্যাপ্ত নেট স্পিড না থাকায় ডাউনলোড করার সাহস করে উঠেনি। হটাৎ করে এক ছোট ভাইয়ের কাছে গিয়ে দেখি সে ৮.১ চালায়। সাথে সাথে তার থেকে ব্যাকআপ ফাইল নিয়ে পিসিতে ইন্সটল দিই কাংখিত উইন্ডোজ ৮.১। আপনারা যারা এখনো উইন্ডোজ এক্সপি বা ৭ এর মধ্যে সীমাবদ্ধ আছেন, নতুন এই উইন্ডোজ ৮.১ আপনার কম্পিউটার বাবহারের অভিজ্ঞতাকে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে। কিভাবে? সেটাই জন্যই আজকের এই টিউন।
উইন্ডোজ ৮.১ এর আগের ভার্সনের তুলনায় অনেক বেশি ত্রুটিমুক্ত, যোগ করা হয়েছে অনেক এক্সট্রা ফিচার এবং টুলস। মাইক্রোসফট এর এই ভার্সন এখন মোবাইল, ট্যাবলেট, টাচ স্ক্রীন এবং ঐতিহ্যবাহী কম্পিউটার এ এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। আর আপনি কেবল মাত্র এর উল্লেখযোগ্য সুবিধা গুলো পাবেন আপগ্রেডের মাধ্যমে। তাহলে আপনি কেনই বা উইন্ডোজ ৮.১ ইন্সটল করবেন? চলুন দেখা যাক।
উইন্ডোজ ৮.১ এর স্মার্ট সার্চ এ আপনার কম্পিউটার এবং স্কাইড্রাইভ এর সার্চ রেজাল্ট এর পাশাপাশি বিং থেকেও প্রাসঙ্গিক রেজাল্ট শো করবে। তবে সব সার্চ এর ক্ষেত্রে এটি কাজ করবে না, এবং আপনি চাইলে এটি বন্ধ ও করে রাখতে পারেন। মিউজিক সার্চ লোকাল ট্রাক এর পাশাপাশি ওয়েব থেকে ব্যান্ড এর ইনফো শো করবে। এছাড়া ইমেজ সার্চ ও অনেকটা সুন্দর এবং সুবিধা জনক হয়েছে, ওয়েবসাইট প্রিভিউ টাও ভালো।
মাইক্রোসফট তাদের কিছু নিজেদের অ্যাপস যেমন, মেইল ও ফটোতে কিছু পরিবর্তন এনেছে। পাশাপাশি থার্ড-পার্টি ডেভেলপাররা ও তাদের গেমকে এখন উন্নত করতে শুরু করেছে। মাইক্রোসফট তাদের Netfix app কে আরও উন্নত করেছে। আপনি যদি বড় স্ক্রীন এ দেখেন তাহলে এটার তফাৎ বুজতে পারবেন। ডক অ্যাপস অথবা অ্যাপ ডকিং সিস্টেম কে আরও উন্নত করেছে মাইক্রোসফট। আপনি খুব সহজে একসাথে স্মার্ট স্ক্রীন ও ডেক্সটপ অ্যাপস পাশাপাশি রেখে ব্যবহার করতে পারবেন। তাছাড়া এখন আপনি বড় স্ক্রীনে তিন চারটি অ্যাপস কে একসাথে চালাতেও পারবেন।
মাইক্রোসফট তাদের স্কাইড্রাইভ নামের পরিবর্তন আনার পূর্বাভাস দিয়েছে। কিন্তু সার্ভিস আগের মতই রাখবে। মাইক্রোসফট তাদের ক্লাউড-বেসড ফাইল সংরক্ষন পদ্ধতিকে আরও উন্নত করেছে উইন্ডোজ ৮.১ এ। এখান থেকে আপনি পাচ্চেন সিনক্রোনাইজড ও ব্যাকআপ সুবিধা এবং সহজে অনলাইন এ ফাইল শেয়ার করার সুবিধা। ড্রপবক্স ব্যবহার করেন না কে কে? যারা করেন তাদের জন্য একটি ফ্রী অফিসিয়াল ডেক্সটপ ও স্মার্ট স্ক্রীন অ্যাপস র ব্যাবস্থা করেছে মাইক্রোসফট।
উইন্ডোজ ৮.১ এর আগের ভার্সনের তুলনায় ডেক্সটপ ভিউকে আরও উন্নত করা হয়েছে। মাইক্রোসফট নিয়ে এসেছে নতুন একটি ডেক্সটপ ডিসপ্লে স্কেলিং ফাংশন যা আপনার ছোট কিংবা বড় স্ক্রীনের পারফরমেন্স কে বাড়িয়ে দিবে। । Computer পরিবর্তন করে যোগ করা হয়েছে This PC এবং রাইট-কিল্ক স্টার্ট মেনুতে কিছু অতিরিক্ত কমান্ড যোগ করা হয়েছে। আরও আকর্ষণীয় করা হয়েছে ডেক্সটপ ওয়ালপেপার। এছাড়া উইন্ডোজ ৮ যারা একদম বামের নিচের কোণায় স্টার্ট বাটন এর অভাব অনুভব করতেন তাদের জন্য উইন্ডোজ ৮.১ এ নতুন এই স্টার্ট বাটন যোগ করা হয়েছে। এটা শুধু মাত্র স্টার্ট বাটন, স্টার্ট মেনু না। স্টার্ট বাটনে যোগ করা হয়েছে সাট ডাউন অপশন যার সাহায্যে সাট ডাউন, রি-স্টার্ট, স্লিপ করে নিতে পারেন সহজে।
এখন আপনি উইন্ডোজ ৮ থেকে আপনার স্মার্ট স্ক্রীন কে আরও বেশি করে কন্ট্রোল করতে পারবেন। এটিতে রয়েছে অনেক কালার ও ব্যাকগ্রাউন্ড পছন্দ করার ব্যাবস্থা, রয়েছে লক স্ক্রীনে স্থির ছবির পরিবর্তে স্লাইডশো ছবির ব্যাবস্থা। এমনকি আপনি স্মার্ট স্ক্রীন এর পরিবর্তে অ্যাপস পেজও দিয়ে রাখতে পারেন। এছাড়া ডেস্কটপে hot corners নামে একটি ফাংশন যা আপনার সুবিধা মত পরিবর্তন করতে পারেন।
এখন আপনি সহজে আপনার ডেক্সটপ কে বুট করতে পারেন। মানে উইন্ডোজ চালু করার সাথে আপনি সরাসরি আপনার ডেস্কটপে যেতে পারবেন। কোন স্মার্ট স্ক্রীন এর ঝামেলায় জড়াতে হবে না। যদিও উইন্ডোজ ৮ এ ধরনের কোন অপশন ছিল না। এমনকি আপনি একই ওয়ালপেপার আপনার ডেক্সটপ ও স্মার্ট স্ক্রীন এ একসাথে ব্যবহার করতে পারেন। এখানে আপনি যদি ট্যাবলেট ব্যবহারকারী হন তাহলে স্মার্ট স্ক্রীন এ থাকাই ভালো। আর কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা সরাসরি ডেক্সটপ এ বুট করতে পারেন।
যখন এটি প্রথম নিয়ে আনা হয়েছিল তখন উইন্ডোজ ৮ স্টোর এতটা সম্পূর্ণ ছিল না। কিন্তু উইন্ডোজ ৮.১ স্টোর কাজে ও দেখতে দুটোতেই অনেক এগিয়ে। সব সফটওয়্যার কে একই স্থানে রেখে কাজ করতে পারবেন এবং রয়েছে সয়ংক্রিয় অ্যাপস আপডেটের সুবিধা। স্টোরে যোগ করা হয়েছে নতুন লুপ সাথে আছে বিভিন্ন অ্যাপসের বর্ণনা ও রেটিং যার মাধ্যমে আপনার পছন্দের সেরা সেরা প্রোগ্রাম ও গেমসকে বেছে নিতে পারেন সহজে।
সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং কে আরও একধাপ এগিয়ে এনেছে উইন্ডোজ ৮.১। স্কাইড্রাইভের মত এটিতে যুক্ত হয়েছে বর্তমান সময়ের দুটি জনপ্রিয় অ্যাপস ফেসবুক ও স্কাইপ। মানে একাধারে আপনি স্কাইপ এ ভিডিও কলিং, অডিও কলিং এবং ইনস্ট্যান্ট মেসেঞ্জিং করার পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ফেসবুকে কানেন্ট থাকতে পারবেন সহজে। এছাড়াও উইন্ডোজ ৮.১ এ যুক্ত হয়েছে পিপল(people) নামে একটি প্রি-ইন্সটলড অ্যাপস যার মাধ্যমে বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যম গুলোতে যুক্ত থাকতে পারেন।
বেশিরভাগ টেক-পাগল যারা তাদের কম্পিউটার এ বিভিন্ন সেটিংস নিয়ে ঘাটাতে পছন্দ করে তারা হয়তো উইন্ডোজ ৮ এ সেটা মিস করেছেন। কারন উইন্ডোজ ৮ এর পিসি সেটিংস ও সুপরিচিত কন্ট্রোল প্যানেল মিলে একটি জগাখিচুড়ি করে ফেলেছে। কিন্তু উইন্ডোজ ৮.১ এর সেটিং অ্যাপ টি খুবি বিস্তৃত। সুতরাং অধিকাংশ সেটিং উভয় জায়াগাতেই রয়েছে আর আপনার পিসি কে কাস্টমাইজ করা আরো সহজ হয়ে গেছে।
মাইক্রোসফট তাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা মাথায় রেখে উইন্ডোজ ৮.১ এ কিছু ছোট ছোট জিনিসের উন্নতিসাধন করেছে মাইক্রোসফট। উইন্ডোজ ৮.১ এ রয়েছে 3D প্রিন্টিং করার ক্ষমতা, রয়েছে Wi-Fi সাপোর্টের মাধ্যমে সরাসরি পেইন্ট অ্যাপস থেকে কোন ড্রয়িং প্রিন্টারে প্রিন্ট করার সুবিধা।
➡ উইন্ডোজ ৮.১ নিয়ে আর জানতে মুশফিকুস সালেহীন ভাইয়ের নির্বাচিত এক্সক্লুসিভ টিউনটি দেখে আসতে পারেন।
তাহলে কেন আপনি উইন্ডোজ এক্সপি বা সেভেনে আঁটকে থাকবেন! চলে আসুন উইন্ডোজ ৮.১ এ আর উপভোগ করুন দারুণ সব ফিচার। অনেক বর্ণনা দিয়ে ফেলেছি। অন্য একদিন অন্য কিছু নিয়ে হাজির হব। সবাইকে ধন্যবাদ ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য।
ফেসবুকে
আমি রনি সাটিয়ার। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 16 টি টিউন ও 573 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 3 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
দারুন লিখেছেন রনি ভাই। শুভকামনা রইলো!
আমি উইন্ডোজ ৮.১ ব্যবহার করছি, আসলেই অনেক জোস! এর নতুন ফিচার গুলো আমার খুবি ভালো লেগেছে। আর উইন্ডোজ ৮.১ এ এক্সপি বা সেভেন থেকে খুব কম ভাইরাস এটাক করতে পারে।
আর এটি এক্সপি বা সেভেন থেকে খুবি পাতলা…