ওয়েব হোস্টিং কী? Web Hosting কত প্রকার? কোন ওয়েব হোস্টিং আপনার জন্য সেরা জানুন খুঁটিনাটি বিস্তারিত

Level 6
Sonic টিউনার, টেকটিউনস, গাইবান্ধা, রংপুর

আসসালামু আলাইকুম। টেকটিউনস এর নতুন আরো একটি টিউনে আপনাকে স্বাগতম। আমি স্বপন আছি আপনাদের সাথে, আশাকরি সকলেই অনেক ভালো আছেন। বন্ধুরা আপনি যদি অনলাইন থেকে ইনকাম করতে চান তাহলে সবচেয়ে ভালো একটি উপায় হলো নিজের প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা৷ এতে এককভাবে একটু শ্রম দিয়েই ভালো পরিমাণ ইনকাম করা সম্ভব৷ এবার আপনি হয়ত ভাবছেন নিজের প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে অনেক লোক অনেক টাকার প্রয়োজন এছাড়াও ভালো অফিস বাড়ি ইত্যাদির প্রয়োজন। তাহলে আমি বলবো আপনি ভুল ভাবছেন।

হ্যাঁ আমি সেই সমস্ত প্রতিষ্ঠানের কথা বলছি যেগুলো ইন্ডিভিজুয়াল যা হাত দিয়ে ছুতে অথবা দোকানের প্রতিষ্ঠানের মতো দেখা যায়। এবার আপনি হয়ত চিন্তায় পড়ে গেলেন! তাহলে সেই সমস্ত প্রতিষ্ঠান কি হতে পারে৷ সহজ ভাবে বলতে গেলে অনলাইন ই-কমার্স ওয়েবসাইট। যা দ্বারা আপনি সামান্য কিছু অর্থ দিয়েই বড় ব্যবসা করতে পারবেন। তবে আপনার ব্যবসা শুরু করার আগে অবশ্যই আপনার তৈরি করা প্রতিষ্ঠান কোয়ালিটি ভালো হতে হবে৷ কারণ এমন কোনো দোকানদার অথবা ব্যাবসায়িক মালিক চায় না তাদের প্রতিষ্ঠান অথবা দোকান থেকে লোক ফেরত যাক।

আপনার অনলাইনে নিজস্ব যেকোনো প্রতিষ্ঠান অথবা সহজ কথায় দোকান প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলে সেই সাথে আপনার কাস্টমারদের যাবতীয় সকল সার্ভিস গুলো ভালোভাবেই দিতেই চাইলে ওয়েবসাইটে ডোমেইন আর হোস্টিং নিয়ে ভালোভাবেই জ্ঞান থাকতে হবে। আপনি যদি অনলাইনে কোনো ওয়েবসাইট বানাতে চান তাহলে আপনাকে ভালো ডোমেইন আর ভালো হোস্টিং সম্পর্কে জ্ঞান থাকতে হবে৷ তা না হলে মাঝে মাঝেই আপনার ওয়েবসাইট ডাউন হয়ে থাকবে। যার কারণে কোন কাস্টমার নিদিষ্ট ওয়েবসাইট ডাউন টাইমে আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে পারবে না। যার ফলে আপনার ওয়েবসাইটের প্রতি কাস্টমার অথবা ভিজিটরদের নেগেটিভ মনোভাব তৈরি হবে।

ওয়েবসাইট বানাতে চাইলে ডোমেইন হোস্টিং দুটোই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে ডোমেইন সাধারণভাবে পছন্দ মতো কিনলেই হয়ে যায়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো হোস্টিং। হোস্টিং যত ভালো হবে আপনার ওয়েবসাইট লোডিং স্পিড ততো বেশি হবে। হোস্টিং যত ভালো হবে আপনার ওয়েবসাইট ততো বেশি অ্যাকটিভ থাকবে। হোস্টিং যত ভালো হবে আপনার ওয়েবসাইট ভিজিটর অথবা ইউজার এক্সপেরিয়েন্স ততো বেশি ভালো হবে। তাই আজকের টিউনে আমরা ওয়েবসাইট হোস্টিং সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো। আজকের টিউনে ওয়েব হোস্টিং কী? Web Hosting কত প্রকার? ইত্যাদি সকল বিষয়গুলো সুন্দরভাবে বিস্তারিত আলোচনা করবো ইনশাআল্লাহ। তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক আমাদের আজকের টিউন।

ওয়েব হোস্টিং কী?

ওয়েবসাইট বানানোর সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হলো হোস্টিং৷ হোস্টিং যত ভালো হবে আপনার ওয়েবসাইটের পারফরম্যান্স ততো বেশি ভালো হবে। ওয়েব হোস্টিং হলো ওয়েবসাইটের সমস্ত ডেটা যেমনঃ টেক্সট, ইমেজ, মিডিয়া ইত্যাদি ফাইলগুলো সেভ করে রাখার জায়গা। আরো সহজভাবে বলতে গেলে আপনার ফোনে যখন আপনি গান অথবা ভিডিও লোড করেন তখন আপনার ডিভাইসের মেমোরি ফাইলগুলো সেভ হয়। যদি আপনার মেমোরি জায়গা ফাঁকা না থাকে তাহলে আপনি গান অথবা ভিডিও লোড করতে পারবেন না। তাহলে আপনার গান লোডের জন্য প্রয়োজনীয় হলো ডিভাইসের মেমোরি কার্ড। ঠিক তেমনি আপনার ওয়েবসাইটের সমস্ত ডেটাগুলো এক জায়গায় সেভ অথবা জমা রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হলো ওয়েব হোস্টিং। যেখানে আপনার আপলোড করা সমস্ত ডেটা জমা থাকবে। যা পরবর্তী কেউ ইন্টারনেটে সার্চ করলেই খুঁজে পেয়ে যাবেন।

হোস্টিং কাকে বলে?

হোস্টিং হলো ওয়েব সার্ভার। যেখানে একটি নিদিষ্ট ওয়েবসাইটের সমস্ত ডেটা স্টোর করা থাকে। ওয়েব সার্ভারের প্রতিটি তথ্যের সাথে ইউনিট একটি সংখ্যা দ্বারা নিদিষ্ট ওয়েবসাইটের সকল ডেটা কানেক্ট করা থাকে৷ যখন কোনো ভিজিটর ইন্টারনেটে সেই সমস্ত জিনিস সার্চ করে তখন ওয়েব সার্ভারে থাকা ডকুমেন্টস নিদিষ্ট এক্সেস নম্বরসহ সার্ভ করা হয়৷ সার্ভ করা নম্বরগুলোকে বলা হয় লিংক। যখন কোনো ইউজার সেই লিংকে ক্লিক করে তখন ওয়েবসাইটের সার্ভার সেই তথ্য অথবা ডেটা ভিজিটরদের সামনে প্রদর্শন করে৷

হোস্টিং কত প্রকার?

ওয়েবসাইটের হোস্টিং যারা বিক্রি করে তাদের বলা হয় হোস্টিং প্রভাইডার। হোস্টিং প্রভাইডার তাদের হোস্টিং সার্ভিসগুলো দাম ও মান দুটোই আলাদা আলাদাভাবে ম্যানেজ করে থাকে। আপনি যেমন দামের হোস্টিং নিবেন হোস্টিং মান অথবা সার্ভিস ঠিক তেমন ভাবেই পাবেন। হোস্টিং এর এই মানগুলোকে আলাদা করার জন্য হোস্টিং সার্ভিস অনেকগুলো ভাগে ভাগ করা হয়েছে। হোস্টিং দাম ও মানের বিষয় নিয়ে একটু পরে জানবো। তার আগে চলুন জেনে নেই হোস্টিং প্রকারগুলো কী কী? হোস্টিং মূলত ৬ ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

  1. ডেডিকেটেড হোস্টিং
  2. শেয়ার হোস্টিং
  3. ভিপিএস হোস্টিং
  4. ক্লাউড হোস্টিং
  5. রিসেলার হোস্টিং
  6. ম্যানেজ হোস্টিং

বেশিরভাগ হোস্টিং কোম্পানি মূলত উপরে আলোচনা করা সার্ভিসগুলোই প্রদান করে থাকে। আপনি হয়ত এই সমস্ত হোস্টিং এর প্রকারভেদগুলো জানলেন। কোনটি কী? আর কীভাবে কোন সার্ভিস তৈরি হয় সেটা হয়ত জানেন না। চলুন উপরে আলোচনা করা বিষয়গুলো একটু একটু করে ধারণা নেওয়া যাক। তাহলে আজকের টিউন আমাদের কাছে আরো সহজ লাগবে।

১. ডেডিকেটেড হোস্টিং

আপনি যদি কোনো হোস্টিং কোম্পানি থেকে পুরো সিপিইউ কিনে নেন তাহলে সেটি হবে ডেডিকেটেড হোস্টিং। ডেডিকেটেড হোস্টিং কিনলে ফুল র‍্যাম, ফুল সিপিইউ, আর সম্পূর্ণ স্টোরেজ পাবেন। আপনি ডেডিকেটেড হোস্টিং কিনতে চাইলে নিদিষ্ট পরিমাণ সাইজের একটি সিপিইউ কিনতে হবে। আপনি এই হোস্টিং ব্যবহার করে কোনো ওয়েবসাইট বানালে সেই ওয়েবসাইট রকেটের গতিতে রিফ্রেশ হবে। আপনার ওয়েবসাইট লোডিং স্পিড হবে সুপারফাস্ট। তবে এই ডেডিকেটেড হোস্টিং কিনতে চাইলে অথবা প্রতি বছর রিনিউ করতে চাইলে আপনাকে প্রায় ১ লক্ষ টাকার বেশি টাকা প্রদান করে রিনিউ করতে হবে।

২. শেয়ার হোস্টিং

একটি সম্পূর্ণ সিপিইউ যখন অনেকজন মিলে শেয়ার করে ব্যবহার করে তখন সেই হোস্টিং অথবা ওয়েব সার্ভারকে শেয়ার হোস্টিং বলা হয়৷ শেয়ার হোস্টিং সম্পুর্ন র‍্যাম, সম্পূর্ণ স্টোরেজ কয়েকজন অথবা কয়েক হাজার জন মিলে ব্যবহার করতে পারে। এতে আপনার ওয়েবসাইট লোডিং স্পিড অনেকটাই স্লো হতে পারে। মাঝে মাঝে ওয়েবসাইট ডাউন থাকতে পারে। ভালো হোস্টিং প্রভাইডার থেকে সার্ভিস নিলে এমন সমস্যা হয় না। ২০ জিবির SSD শেয়ার হোস্টিং কিনতে প্রায় ৪ হাজার টাকার মতো খরচ হতে পারে। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রায় ৯৫% ওয়েবসাইট শেয়ার হোস্টিং দ্বারাই তৈরি করা হয়েছে।

৩. ভিপিএস হোস্টিং

যখন কোনো ডেডিকেটেড হোস্টিং কিনে আলাদা আলাদা আলাদা কয়েকটি সাব মেশিন অথবা ভারচুয়াল মেশিন বানানো হয় তখন তাকে ভিপিএস হোস্টিং বলা হয়। ভিপিএস হোস্টিং হোস্টিং শেয়ার হোস্টিং এর মতোই তবে এখানে ইউজার সংখ্যা অনেক বেশি হয় না। শেয়ার হোস্টিং এর তুলনায় ভিপিএস হোস্টিং এর ইউজার সংখ্যা তুলনামূলক অনেক কম হয়। যার কারণে ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড অনেক বেশি থাকে৷ ভিপিএস হোস্টিং কিনতে চাইলে অথবা প্রতি বছির রিনিউ করতে চাইলে প্রায় ৮ হাজার টাকার মতো খরচ হতে পারে।

৪. ক্লাউড হোস্টিং

একই ওয়েবসাইটের ডোমেইন আলাদা আলাদা স্থান অথবা আলাদা আলাদা সার্ভার থেকে ওপেন করার জন্য ক্লাউড হোস্টিং ব্যবহার করা হয়। বিষয়টি আরো একটু ক্লিয়ার করে বলি, মনে করুন আপনার ওয়েবসাইটে বাংলাদেশ, চায়না, আমেরিকা এই তিন দেশের ভিজিটর আসে৷ যার কারণে মাঝে মাঝে কোনো একটি দেশের ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইটের সার্ভার এক্সেস করতে ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড স্লো হতে পারে। তখন আপনি ক্লাউড হোস্টিং ব্যবহার করে খুব সহজেই সেই সমস্যার সমাধান করতে পারবেন।

আপনি আলাদা আলাদা দেশের জন্য ক্লাউড হোস্টিং ব্যবহার করে নিদিষ্ট ওয়েবসাইটের জন্য আলাদা আলাদা ভাবে একই ওয়েব সার্ভার বানাতে পারবেন। এতে নিদিষ্ট দেশের ভিজিটর সেই দেশের সার্ভার দ্বারাই আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে পারবেন। এতে আপনার ওয়েবসাইট লোডিং স্পিড তুলনামূলক অনেক বেড়ে যাবে৷ বড়ো বড়ো অনলাইন মার্কেটে গুলো মূলত ক্লাউড হোস্টিং ব্যবহার করে থাকে। বাংলাদেশে ক্লাউড হোস্টিং ব্যবহার করে এমন একটি ওয়েবসাইট হলো Daraz.

৫. রিসেলার হোস্টিং

এটি মূলত একটি শেয়ার হোস্টিং এর মতোই। তবে এখানে ডেডিকেটেড আর সেই সাথে শেয়ার করা উভয় কাজগুলো হয়ে থাকে। যখন আপনি কোনো ওয়েব হোস্টিং অথবা একটি সিপিইউ এর সম্পূর্ণ জায়গাটি কিনে নিবেন আবার সেটি সবার সাথে শেয়ার করবেন অর্থাৎ বিক্রি করবেন তখন সেই হোস্টিং কে রিসেলার হোস্টিং বলা হয়। বিভিন্ন হোস্টিং কোম্পানিগুলো মূলত রিসেলার হোস্টিং বিক্রি করে থাকে। তারা সম্পূর্ণ একটি সিপিইউ কিনে নেয় তারপর সেই সিপিইউ ভাগ করে অথবা সবার কাছে বিক্রি করে৷ এখানে তারা প্রথমে সম্পূর্ণ অংশ কিনে নেয় তারপর ভাগ করে বিক্রি করতে থাকে এজন্য এই হোস্টিংকে রিসেলার হোস্টিং বলা হয়।

৬. ম্যানেজ হোস্টিং

বড়ো বড়ো কোম্পানি অথবা প্রতিষ্ঠান যে ধরনের ওয়েব হোস্টিং ব্যবহার করে তাকে বলা হয় ম্যানেজ হোস্টিং। এখানে তারা হোস্টিং ব্যবহার করে আবার তারাই হোস্টিং ইউজারদের জন্য ম্যানেজ করে। বিষয়টি আরো একটু ক্লিয়ার করে বলতে গেলে, আমরা সবাই ওয়ার্ডপ্রেস ব্যবহার করে ওয়েবসাইড বিল্ড করে থাকি। তবে ওয়ার্ডপ্রেস তাদের নিজস্ব হোস্টিং দিয়ে পরিচালিত। আবার আমরা চাইলে ওয়ার্ডপ্রেস থেকে হোস্টিং কিনে নিজেরাও ওয়েবসাইট বানাতে পারি। এখানে আপনি খেয়াল করুন তারা তাদের নিজেদের হোস্টিং দিয়েই পরিচালিত, আবারো আমরা চাইলেই তাদের হোস্টিং সার্ভিস ব্যবহার করতে পারি মূলত এই ধরনের হোস্টিংগুলোকেই ম্যানেজ হোস্টিং বলা হয়।

জনপ্রিয় কিছু হোস্টিং প্রোভাইডার ওয়েবসাইট

হোস্টিং একটি ওয়েবসাইটের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই ওয়েবসাইটের জন্য হোস্টিং কিনতে চাইলে অবশ্যই ভালো কোনো হোস্টিং প্রোভাইডার থেকে হোস্টিং কিনতে হবে। নয়তো যেকোনো সময় আপনার ওয়েবসাইট ডাউন হয়ে যেতে পারে। এছাড়াও ওয়েবসাইট স্লো হওয়ার মতো সমস্যা তো থাকবেই। বর্তমানে জনপ্রিয় কিছু হোস্টিং প্রোভাইডার যাদের থেকে আপনি হোস্টিং কিনলে ওয়েবসাইট ডাউন হওয়ার চিন্তা থাকবে না।

  1. Namecheep
  2. Hostinger
  3. BlueHost
  4. DreamHost
  5. Hostgator

কীভাবে হোস্টিং কিনতে হয়?

উপরের আলোচনা করা ওয়েবসাইটগুলো বর্তমান সময়ে বেশ জনপ্রিয় ডোমেইন অথবা হোস্টিং কেনার ওয়েবসাইট। উপরে আলোচনা করা ওয়েবসাইটগুলো থেকে আপনি হোস্টিং কিনতে চাইলে সাধারণভাবে বিকাশ দিয়েই কিনতে পারবেন না। তবে আপনি বিকাশ দিয়ে ভারচুয়াল মাস্টার কার্ডে ডলার লোড করে খুব সহজেই উপরের ওয়েবসাইটগুলো থেকে হোস্টিং কিনতে পারবেন। এছাড়াও আপনি Binance ব্যবহার করেও বিটকয়েন এর মাধ্যমে খুব সহজেই এসব ওয়েবসাইট থেকে ডোমেইন অথবা হোস্টিং কিনতে পারবেন।

সঠিক ওয়েব হোস্টিং নির্বাচনের উপায়?

আপনি যখন ওয়েবসাইট বানানোর উদ্দেশ্য হোস্টিং কিনবেন তখন অবশ্যই কিছু বিশেষ দিকে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ আপনার ওয়েবসাইট দিন রাত ২৪ ঘণ্টা অ্যাকটিভ থাকতে হবে। ওয়েবসাইট হঠাৎ ডাউন হয়ে গেলে ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইটের প্রতি একটি নেগেটিভ মনোভাব তৈরি হবে। আপনার সার্ভিস নিয়ে তাদের সংকোচ তৈরি হতে পারে। তাই ওভার অল সকল ইউজার এক্সপেরিয়েন্স ভালো রাখার জন্য নিম্নের বিষয়গুলো ভালো করে দেখে ওয়েব হোস্টিং নির্বাচন করা উচিত।

হোস্টিং আপটাইম

হোস্টিং এর কাজ হলো আপনার ওয়েবসাইট সবসময় ইন্টারনেটে অ্যাকটিভ রাখা। যাতে কেউ আপনার ওয়েবসাইটে প্রবেশ করলে তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী প্রায় সকল তথ্য পেয়ে যায়। তবে অনেক হোস্টিং কোম্পানি আছে যাদের হোস্টিং ব্যবহার করার কারণে ওয়েবসাইট মাঝে মাঝেই ডাউন হয়ে যায়। ওয়েবসাইট ডাউন হলে ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে পারবে না। যার ফলে ভিজিটরদের নেগেটিভ মনোভাব তৈরি হবে। যে সমস্ত হোস্টিং প্রোভাইডার ৯৯.৯৯% হোস্টিং আপটাইম দিয়ে থাকে তাদের থেকে হোস্টিং ক্রয় করা উচিত।

হোস্টিং স্পিড

ওয়েবসাইটে ভিজিটর ধরে রাখার জন্য ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আপনার ওয়েবসাইটে কেউ ভিজিট করলে ২ মিনিটেও আপনার ওয়েবসাইটের পেজ লোডিং না হলে ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইট ভিজিট না করেও ওয়েবসাইট থেকে চলে যাবে। ওয়েবসাইট লোডিং স্পিড নিয়ে এমন সমস্যা থেকে সমাধানের একমাত্র উপায় হলো ভালো লোডিং স্পিড প্রদান  করে এমন হোস্টিং ক্রয় করা।

হোস্টিং ব্যান্ডউইথ

আপনার ওয়েবসাইট প্রতি সেকেন্ড কতোগুলো ডেটা এক্সেস করতে পারবে এই ক্ষমতাকে হোস্টিং ব্যান্ডউইথ বলা হয়। আপনার ওয়েবসাইটে অনেক বেশি ভিজিটর প্রবেশ করার কারণে আপনার ওয়েবসাইট স্লো হয়ে যেতে পারে এমনকি মাঝে মাঝে বেশি ভিজিটর এর কারণে ওয়েবসাইট ডাউন হয়ে যেতে পারে। এমন সমস্যা সমাধান করতে আনলিমিটেড ব্যান্ডউইথ দিবে এমন হোস্টিংগুলো ক্রয় করুন।

হোস্টিং সিকিউরিটি

অনেক টাকা নষ্ট করে অনেক কষ্ট করে ওয়েবসাইট বানালেন সেই ওয়েবসাইট সহজেই হ্যাক অথবা ওয়েবসাইট থেকে ডেটা চুরি হয়ে গেলে নিশ্চয়ই অনেক বড়ো ঝামেলায় পড়বেন। তাই আপনাকে হাই সিকিউরিটি প্রদান করে এমন ওয়েব হোস্টিং নির্বাচন করা উচিত।

অধিক সিকিউরিটি প্রদানের সহজ মাধ্যম হলো SSL সার্টিফিকেট। SSL সার্টিফিকেট একটি ওয়েবসাইটের সিকিউরিটি প্রদানের অনেক বড়ো ভূমিকা পালন করে। তাই ওয়েব হোস্টিং কেনার সময় অবশ্যই খেয়াল করবেন হোস্টিং প্রভাইডার আপনাকে SSL সার্টিফিকেট দিচ্ছে কি না।

শেষ কথা

ওয়েবসাইট রান করানোর আগে আপনাকে হোস্টিং এর বিষয়ে অনেক বেশি গুরুত্ব দিতে হবে৷ কারণ হোস্টিং এর কারণে আপনার ওয়েবসাইট ইউজার এক্সপেরিয়েন্স বেটার পারফরম্যান্স করতে পারে। আবার হোস্টিং এর কারণে আপনার ওয়েবসাইটের র‍্যাংক ডাউন হয়ে যেতে পারে। কারণ আপনার ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিড স্লো হয়ে গেলে গুগল আপনার ওয়েবসাইট সার্চ র‍্যাংকে পিছনে রাখবে। যার ফলে আপনি ওয়েবসাইটে ভিজিটর পাবেন না। এছাড়াও আপনার হোস্টিং সার্ভিস খুব একটা ভালো না হলে ওয়েবসাইট কাস্টমাইজ অথবা কোডিং করার সময়ে বার বার ওয়েব সার্ভার ডাউন হয়ে যেতে পারে। আমার আগে অভিজ্ঞতা ছিল না যার কারণে আমার ওয়েবসাইট নিয়মিত ডাউন হতো। পরে আমি হোস্টিং প্রোভাইডার চেঞ্জ করে এখন আপাতত অনেক শান্তিতে আছে।

মানুষ মাত্রই ভুল, হয়ত অনেক তথ্যের মাঝে ভুলভ্রান্তি থাকতে পারে অথবা অনেক তথ্য মিস্টেক থাকতে পারে। তথ্য দেওয়া হয়নি, সম্পূর্ণ বলা হয়নি অথবা ভুল রয়েছে, কোথাও এমন কোনো সমস্যা থাকলে অবশ্যই আমাকে জানাবেন। আমি আমার ভুলগুলো সংশোধন করে নিবো ইনশাআল্লাহ এছাড়াও আপনাদের কোনো পরামর্শ থাকবে অবশ্যই টিউমেন্ট করে জানাবেন। গঠনমূলক সাজেশন হলে আমি অবশ্যই তা আমার টিউনে যুক্ত করে নিবো।

তো বন্ধুরা এই ছিল আমাদের আজকের টিউন, ওয়েব হোস্টিং কী? Web Hosting কত প্রকার? আশাকরি টিউনটি আপনাদের একটু হলেও হেল্পফুল হবে। আজকের মতো এখানেই বিদায় নিচ্ছি, দেখা হবে পরবর্তী টিউনে নতুন কোন বিষয় নিয়ে। ততক্ষণ অবধি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এবং টেকটিউনস এর সাথেই থাকবেন।

Level 6

আমি স্বপন মিয়া। Sonic টিউনার, টেকটিউনস, গাইবান্ধা, রংপুর। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 107 টি টিউন ও 29 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 4 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

টেকনোলজি বিষয়ে জানতে শিখতে ও যেটুকু পারি তা অন্যর মাঝে তুলে ধরতে অনেক ভালো লাগে। এই ভালো লাগা থেকেই আমি নিয়মিত রাইটিং করি। আশা করি নতুন অনেক কিছুই জানতে ও শিখতে পারবেন।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস