তথ্যপ্রযুক্তির প্রসারে বর্তমানে বড় মাধ্যমগুলোর একটি হচ্ছে ওয়েবসাইট। এর ব্যাপক ব্যবহার শুধু শহরে নয়, বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও। ওয়েবের ব্যবহার এখন আগের তুলনায় অনেক বেশি। এ ছাড়া রয়েছে ওয়েব অ্যাপি¬কেশন, ওয়েব পোর্টাল, সোশ্যাল নেটওয়ার্ক, ই-কমার্স এবং আরো নানা ধরনের ওয়েব তৈরি ও ব্যবহার। ওয়েবভিত্তিক সলিউশন তৈরি করলে এর মূল চালিকাশক্তি হচ্ছে ওয়েব হোস্টিং। বাংলাদেশে স্কুল, কলেজ, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানসহ সরকারি-বেসরকারি সব ওয়েবসাইটেরই রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন হোস্টিং সার্ভিস কোম্পানি। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, শুধু নিজেরা না জানার কারণে কোন টাইপের হোস্টিং কিনলে নিজের চাহিদা পূরণ হবে সে বিষয়ে জানে না। এ জন্যই অনেক সময় হোস্টিং নিচ্ছেন, কিন্তু পরবর্তী সময় দেখা যায় ভোক্তার চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। আবার অনেক সময় না বুঝে বেশি দামে হোস্টিং কিনছেন অনেকে। আবার কেউ কেউ অল্প টাকায় ভালো সার্ভিস পাওয়ার আশায় না বুঝেই হোস্টিং কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হন এবং পরবর্তী সময়ে সমস্যায় পড়েন। এসব সমস্যার সমাধানে আমরা আজ হোস্টিং নিয়ে বিশদভাবে তুলে ধরার প্রয়াস পাব। আপনি যদি কোনো কাজে সচেতন না হয়ে থাকেন, তবে দেখা যাবে হোস্টিংয়ের পেছনে অপ্রয়োজনীয় অনেক খরচ করছেন।
ডোমেইন নেম কী?
ডোমেইন নেম হচ্ছে এমন একটি ইউআরএল তথা ইউনিভার্সাল রিসোর্স লোকেটর, যা কোনো একটি ওযেবসাইটকে একক নামে নির্দেশ করে। এটি সব সময় ওই মালিকের নিজস্ব সম্পত্তি। যেকোনো ডোমেইন নেমের শুরু www দিয়ে, যা সার্ভারকে খুঁজে বের করতে সহায়তা করে এবং .com .net .edu ইত্যাদি হচ্ছে এক্সটেনশন। এর মাধ্যমে বুঝা যায় ডোমেইনটি কী ধরনের কাজে ব্যবহার হয়। যেমন com-কমার্শিয়াল, edu-এডুকেশন, net-নেটওয়ার্কিং ইত্যাদিসহ বর্তমানে ২৮০টিরও বেশি ডোমেইন এক্সটেনশন রয়েছে সারা বিশ্বে। আমাদের দেশের নিজস্ব এক্সটেনশন রয়েছে। যেমন .bd, এটি শুধু বাংলাদেশের এক্সটেনশন হিসেবে সারা বিশ্বে ব্যবহার হবে।
বিশ্বে ডোমেইন নেম নিয়ন্ত্রণের জন্য আলাদা একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এর নাম ICANN (ইন্টারনেট করপোরেশন ফর অ্যাসাইনড নেমস অ্যান্ড নামবারর্স)। বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে বেশিসংখ্যক ডোমেইন ব্যবহার করে আমেরিকায় এর সংখ্যা ৭৮,২,৩৩,৭৮০টি।
হোস্টিং/ওয়েব হোস্টিং কী?
হোস্টিংকে আমরা অনেকেই ওয়েব হোস্টিংও বলি। সোজা কথায় ওয়েব হোস্টিং হচ্ছে তা, যেখানে আপনার তৈরি করা ওয়েব ফাইলগুলোকে সাজিয়ে রাখতে পারেন। প্রয়োজনে তা আবার ইন্টারনেটের মাধ্যমে যেকোনো জায়গায় বসে দেখতে পাবেন।
কারিগরি ভাষায় হোস্টিং হচ্ছে একটি কমপিউটারের হার্ডডিস্কের জায়গা, যাকে আমরা সার্ভার বলি। এর খালি অংশে আমরা আমাদের তথ্যগুলোকে সাজিয়ে রাখি যাতে পরবর্তী সময়ে যেকেউ ইন্টারনেট সহযোগিতার মাধ্যমে তথ্যগুলো ব্রাউজ করেন। এ কাজটিকেই আমরা ওয়েবসাইট ব্রাউজিং বলি। বিশ্বে বিভিন্ন ধরনের হোস্টিং সার্ভিস রয়েছে।
কেস স্টাডি-১
কোনো এক ব্যক্তি একটি ওয়েব হোস্টিং কোম্পানি খুঁজছেন তাদের অ্যাসোসিয়েশনের ওয়েবসাইটটি হোস্টিং করার জন্য। তার মূল কাজ ওই অ্যাসোসিয়েশনের সব মেম্বারকে একত্রিত করা এবং পরবর্তী সময়ে সবাইকে গ্রুপ ই-মেইলের মাধ্যমে সংগঠনের সব তথ্য জানানো। কিন্তু পরবর্তী সময়ে একসাথে ৬০০ জনকে গ্রুপ ই-মেইল করতে গিয়ে দেখলেন একসাথে তো এত মেইল যাবে না। কারণ, ওই প্যাকেজে এক ঘণ্টায় ১৫০টির বেশি ই-মেইল একসাথে পাঠানোর সুযোগ নেই। এবং ওই সার্ভারে এরচেয়ে বেশি একসাথে ই-মেইল পাঠানোর জন্য চাইলেও কারিগরি সুবিধা নেই। এদিকে ওই ব্যক্তি দুই বছরের জন্য হোস্টিং স্পেস কিনেছেন এবং এই দুই বছরের টাকা দিয়ে এক মাসের মধ্যে অন্য কোম্পানিতে হোস্টিং ট্রান্সফার করতে বাধ্য হন।
কেস স্টাডি-২
নজরুল ইসলাম নামে এক ব্যবসায়ী তার প্রতিষ্ঠানের জন্য চার বছর আগে একটি ডোমেইন কেনেন বাংলাদেশের একটি নামকরা প্রতিষ্ঠান থেকে। পরপর তিন বছর ডোমেইনটি নবায়ন করে নেন। কিন্তু চতুর্থ বছরে এসে দেখলেন, ডোমেইন হোস্টিংয়ের দাম দ্বিগুণ ধরা হয়েছে। তিনি দাম কমাতে ব্যর্থ হয়ে ডোমেইনের কন্ট্রোল প্যানেল দিয়ে দিতে বলেন, কিন্তু অনেক দেন-দরবার করেও কোনো লাভ না হওয়ায় পরবর্তী সময়ে খুবই প্রয়োজনীয় ডোমেইন নেমটি নবায়ন করাতে পারেননি। কারণ, ওই কোম্পানি ডোমেইনে কন্ট্রোল প্যানেল দেবে না বলে সরাসরি বলে দিয়েছে। ওই ব্যক্তির জানা নেই, এ ব্যাপারে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারবেন কি না। অতএব সাবধান।
কেস স্টাডি-৩
আনিসুল হক একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান। নিজের প্রতিষ্ঠানের নামে প্রায় পাঁচ বছর ধরে একটি ওয়েবসাইট এবং ওয়েবমেইল চালু ছিল। ষষ্ঠ বছরে ডোমেইন ও হোস্টিং নবায়ন করতে এসে দেখলেন, ওই কোম্পানিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। আগের ঠিকানায় যোগাযোগ করলেন। পুরনো ই-মেইলে যোগাযোগ করলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জানতে পারেন, ওই কোম্পানি সবকিছু বিক্রি করে বিদেশে চলে গেছে। তার হাতে ডোমেইনের কোনো কন্ট্রোল ছিল না। তাই পরবর্তী সময় ওই ডোমেইনটি বন্ধ হয়ে যায়। অতএব সাবধান।
এখানে আমাদের শেখার বিষয় হলো, আমাদের প্রয়োজনগুলো সবার আগে ভালো করে বুঝতে হবে। ভালো করে দেখে নিতে হবে হোস্টিং কোম্পানির দেয়া সব অফার। একটি ছোট ওয়েবসাইট হোস্টিংয়ের ক্ষেত্রে এটি একটি সাধারণ অভিজ্ঞতা। একবার ভেবে দেখুন, আপনি যদি আরো জটিল ধরনের হোস্টিং কিনতে চান তখন কী হবে। যদি নিজে সাবধান না হন, তবে দেখা যাবে হোস্টিংয়ের জন্য আপনি অযথা টাকা খরচ করছেন।
অনেক বোঝার ব্যাপার আছে। অনেক কোম্পানি খুব ভালো সার্ভার অনেক ভালো দামে অফার করে। অতএব আপনাকে নিজে আগে সচেতন হতে হবে, তারপর ভালো করে জেনে নিন, কী নিচ্ছেন।পরবর্তী লেখায় হোস্টিং নেয়ার আগে আপনার করনীয় সম্পর্কে আলোচনা করব।
বিশেষ সংযোজনঃ এ লেখাটি একটি আইটি ব্লগে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হয়েছে।ওয়েব হোস্টিং নিয়ে আরো বিস্তারিত জানতে চাইলে পরবর্তী পর্বের লেখাগুলি পরতে পারেন ইচ্ছা করলে।ধারাবাহিক এই লেখাটিতে আরো অনেক কিছু নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে , তার মধ্যে আছে -হোস্টিং সার্ভারের বিস্তারিত, কিভাবে হোস্টিং সার্ভার নিবেন, কিভাবে হোস্টিং সার্ভার ম্যানেজ করবেন ইত্যাদি নিয়ে এবং সিনিয়র সহ-সভাপতি, বেসিস, সিনিয়র সিস্টেমস অ্যানালিস্ট, বিসিসি,ব্যবস্থাপনা পরিচালকটেকনোবিডি ওয়েব সল্যুশন লিমিটেড এর সাক্ষাৎকার।
ওয়েব হোস্টিং কোম্পানি যেভাবে খুঁজে বের করবেন এর বিস্তারিত পাবেন এই লিঙ্কে
লেখাটি ভালো লাগলে আমাদের ফেসবুক পেজ এ লাইক করুনঃএখানে ক্লিক করুন
আমি কমজগৎ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 57 টি টিউন ও 17 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
Computer Jagat has been involved with the ICT movement here in Bangladesh for more than a period of two decades. During this period we have been able to create a set of records for which we feel proud of.
আমি kmmh IT Developer’s থেকে নিলাম। ১০০% আপটাইম।