আজ টিউনের শেষ পর্ব। আশা করছি আগের পর্ব গুলো সবাই পড়েছেন এবং সবার ভালো লেগেছে। পুরো টিউনটি আপনার কেমন লাগলো তা জানাতে ভুলবেন না কিন্তু। আর যত সমস্যা, সাহায্য, প্রশ্ন সব এই টিউনেই শেষ করে ফেলুন। কারণ এটি শেষ পর্ব 😀 এই সুযোগ আর পাবেন না।
আজ আমি পুরো টিউনটির সারসংক্ষেপ লিখবো। যেন পুরো টিউনের মর্ম কথা বুঝতে পারেন। আছে শেষ কিছুয়া কথা এবং সব শেষে আমার সম্পর্কে কিছু কথা।
একটি ওয়েব সাইট এর দৃশ্যমান অংশ ডিজাইন করাই হচ্ছে ওয়েব ডিজাইন। এইচটিএমএল, সিএসএস, জাভাস্ক্রিপ্ট, জেকুয়েরি ইত্যাদি মারকাপ ও স্ক্রিপ্টিং ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যবহার করে ওয়েবসাইট বানানো হয়। বিশ্বে ওয়েব ডিজাইন এর মান এবং মূল্য দুটোই অনেক বেশি। আপনি যদি একজন ভাল ওয়েব ডিজানার হতে পারেন, তবে ভার্চুয়াল জগতে আপনার দারুণ সুনাম থাকবে। ওয়েব ডিজাইন এ বিদেশে চাকরী করে বা আমাদের দেশের ফার্ম এ চাকরী করে অথবা ফ্রিল্যান্সিং করে ভাল পরিমাণ আয় করা যায়। আমাদের দেশের সফল ওয়েব ডিজাইনার রা মাসে ১-২ লক্ষ টাকার উপরে আয় করছেন শুধু ফ্রিল্যান্সিং করে। আপনার যদি আগ্রহ থাকে ওয়েব ডিজাইন এর প্রতি তাহলে আপনি শিখতে পারেন ওয়েব ডিজাইন। তবে লোভে পড়ে, টাকার নেশায় ওয়েব ডিজাইন শিখলে সফলতার মুখ দেখবেন না। প্রথমে এইচটিএমএল দিয়ে শেখা শুরু করুন। এরপর সিএসএস এবং ধাপে ধাপে সিএসএস ৩, এইচটিএমএল ৫, জাভাস্ক্রিপ্ট, জেকুয়েরি ইত্যাদি শিখতে থাকুন। অনেক পরিশ্রম আর সময় দিয়ে কাজ শিখুন। অনল্প শিখেই টাকার পিছে দৌড়াবেন না। তাহলে প্রথম প্রথম হয়তো হাজার পাচেক টাকা কামাবেন, তবে ভবিশ্যতে উন্যতি করতে পারবেন না। সেই হাজার পাচেক টাকা পার করতে পারবেন না কখনো। অল্প বিদ্যা ভয়ংকরী। সামান্য শিখেই ওডেস্ক এ একাউন্ট খুলে বিড করা শুরু করলে পরিনতি বেশি ভাল হবে না। কাজ পাবার সম্ভাবনা খুব কম। পেলেও বেশ সমস্যায় পড়বেন এবং অন্যের হাতে পায়ে ধরতে হবে। কাজ শিখুন, পরিশ্রম করুন। নিজের উপর আত্মবিশ্বাস রাখুন।
অনেকেই মনে করতে পারেন আমি লোভ দেখানোর চেষ্টা করেছি। না! আমি শুধু ওয়েব ডিজাইন এর মূল্য সম্পর্কে ধারণা দেয়ার চেষ্টা করেছি মাত্র। ভুলেও লোভে পড়ে ওয়েব ডিজাইন শিখতে যাবেন না। যদি আপনার ওয়েব ডিজাইন এ আগ্রহ থাকে তবেই কেবল ওয়েব ডিজাইন শিখুন। লোভে পড়ে শিখতে গেলে সফল হতে পারবেন না। আয় করার কথা মাথায় নিয়ে কখনো সফল হওয়া যায় না। আপনার লক্ষ হতে হবে শেখা, দক্ষতা এবং সফলতা। তাহলে আপনি সফল হতে পারবেন। হ্যা, আয় সম্পর্কে ধারণা থাকা প্রয়োজন। আপনি আয় করতে পারবেন। তবে আয় করা কখনই যেন আপনার লক্ষ না হয়।
টিউনটি তে আমি চেষ্টা করেছি ওয়েব ডিজাইন এর উপর মোটামোটি বিস্তারিত ধারণা লিখার। আশা করছি সবাইকে বোঝাতে পারেছি। যদি আপনি কোন কিছু না বুঝে থাকেন। তবে অবশ্যই মন্তব্য করুন। আর আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে তাও মন্তব্বের মাধ্যমে আমাকে জানিয়ে দিন।
কোন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে শেখার প্রয়োজন আছে?
আমার মনে হয়না কোন প্রতিষ্ঠানে গিয়ে ওয়েব ডিজাইন শেখার প্রয়োজন আছে। তাও আপনার যদি একান্তই ইচ্ছা থাকে তাহলে একটু খোঁজ খবর নিয়ে ভাল কোন প্রতিষ্ঠানে কোর্স করতে পারেন। বিঃদ্রঃ মত বিরোধের কারনে আমি কোন প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করতে চাচ্ছি না। এমনকি আমার ঠিক জানা ও নেই। তাই নিজেরাই একটু কষ্ট করে খোঁজ করুন।
এই টিউন টি কেন লিখেছি?
বহু মানুষ আমাকে ফেসবুক এ মেসেজ দিয়েছেন, তারা ওয়েব ডিজাইন শিখতে চান কিন্তু শুরু করতে পারছেন না বা বুঝতে পারছেন না আরো অনেক কিছুই। সবাইকে আলাদা আলাদা করে বোঝানো সম্ভব নয়। তাই এই টিউন লিখার সিদ্ধান্ত নেই। অনেকেই হতাশ হয়ে আছেন কিছু করার আশায়। পারছেন না। রাস্তা খুঁজে পাচ্ছেন না। আমার ইচ্ছা ছিল সবার এই হতাশা দূর করার। আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। কতটুকু পেরেছি জানি না।
আমাদের তরুন প্রজন্মের অবস্থান
বর্তমানে আমাদের তরুন প্রজন্মের অবস্থা নিয়ে মনে হয় বেশি কিছু বলা লাগবে না। দেশ কিভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে সেটা সবাই নিজের চোখেই দেখছেন। কিন্তু হাতের পাচ আঙ্গুল যেমন সমান নয় তেমনি সব তরুনরাও এক নয়। একদল তরুন যেমন দেশ ধ্বংসে উঠে পড়ে লেগেছে, অপর দিকে আরেক দল তরুণ নিজেদের সর্বাত্মক পরিশ্রম দিয়ে দেশকে ধ্বংসের মুখ তগেকে বাচাচ্ছে।
আমাদের দেশের ফ্রিল্যান্সার রা অধিকাংসই তরুণ। তাদের অয়স খুব বেশি না। তারা রাত দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে দেশে বৈদেশিক মুদ্রা এনে দিচ্ছে। যদিও সরকার থেকে তেমন কোন সুযোগ সুবিধা তারা পাচ্ছে না, তাও তারা নিঃস্বার্থ ভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছে। এদের জন্য আমার লাল সালাম। তোমরাই দেশের আসল সন্তান! তোমরা প্রমাণ করেছ দেশকে ভালবাসতে হলে রাজনীতি করতে হয় না। দেশকে ভালবাসতে হলে নিজের বিবেক বুদ্ধি দিয়েই ভালবাসা যায়। তোমাদের বিবেক বুদ্ধি তোমাদের সঠিক পথ দেখিয়েছে, তোমরা ধ্বংসের পথে না গিয়ে আলোর পথে এগিয়েছো. আবারও লাল সালাম তোমাদের।
একদল তরুণ যখন স্কুল, কলেজ, ভারসিটিতে উচ্চ শিক্ষা নিয়েও বিভিন্ন নেশা, রাজনীতি ইত্যাদি ভাবে নিজের ও দেশের ভবিষ্যৎ ধ্বংস করতে ব্যস্ত। আরেকদল তরুণ তেমন কোন প্রাতিষ্ঠানিক উচ্চ শিক্ষা লাভ না করেও বা করতে না পেরেও ফ্রিল্যান্সিং কে নিজের পেশা, নেশা এবং জীবন করে রাত দিন অক্লান্ত পরিশ্রম করে দেশে বৈদেশিক মুদ্রা আনায় ব্যস্ত। এতে তারা নিজেরা যেমন স্বাবলম্বী হতে পারছে পাশাপাশি দেশের অনেক বড় উপকার করছে। গত কয়েক বছরে বাংলাদেশি তরুণ ফ্রিল্যান্সার রা বিশ্বদরবারে বাংলাদেশকে অনেক উপরে নিয়ে গেছে। তারা অর্জন করেছে অনেক বড় বড় খেতাব। আর সেই খেতাবে তার নামের পাশে আরেকটি পরিচয় থাকে, বাঙ্গালী।
টেকটিউনস এর ২০১২ সালের একটি মিটাপ এ ডঃ মোস্তফা আঙ্কেল এই কথা বলে কেদে দিয়েছিলেন "এই বয়সে তরুণরা নিজেদের নেশার জগতে ঠেলে দেয়, আর তোমাদের মত তরুণরা নিঃস্বার্থে টেকটিউনস এর মত ব্লগ গুলোর সাহায্যে জ্ঞান বিতরন করে যাচ্ছ। এটা ভেবেই অনেক ভাল লাগে"। (উনার কথাটা ঠিক এমন ছিলো না, আমার যতটুকু মনে আছে বলেছি। উনার টিউন টি দেখতে পারেন এখানে)
পথভ্রষ্ট তরুণ সমাজকে এখন আলোর পথে নিয়ে আশা আমাদের দায়িত্ত। তারা যদি আমাদের তরুণ ফ্রিল্যান্সারদের সাথে মিলে একসাথে কাজ করে তাহলে বাংলাদেশ কে আর বেশি দিন গরিব দেশের পরিচয় নিয়ে থাকতে হবে না।
ফ্রিল্যান্সিং এ নারীদের অবস্থান
দুঃখজনক হলেও সত্যি ফ্রিল্যান্সিং জগতে নারীদের তেমন হাতছানি নেই। হাতে গোনা কয়েকজন নারী কেবল ফ্রিল্যান্সিং জগতে সফল হয়েছেন। কয়েকদিন আগে হয়ে যাওয়া বেসিস ফ্রিল্যান্সার অ্যাওয়ার্ড এ ১০০ জন এর মধ্যে মাত্র ৩ জন নারী। অথচ ফ্রিল্যান্সিং পেশা টি নারীদের জন্য বেশি উপযোগী। আমাদের পুরুষদের জন্ম থেকেই অভ্যাস বাইরে বাইরে থাকার। আর নারীদের ছোট থেকেই ঘরে পর্দায় থাকতে হয়। হ্যা! বর্তমানে নারীরা অফিস, স্কুল কলেজ ইত্যাদি তে পুরুষদের সাথে সমান বেগে এগোচ্ছে। আর আমি বলছি না নারীদের ঘরে কোণঠাসা হয়ে থাকতে। আমাদের দেশের অধকাংশ নারীর অধিকাংস সময় কাটে ঘরের কোনে। তাদের জন্য ফ্রিল্যান্সিং এর পেশা টি সবচেয়ে উপযোগী। তারা তাদের প্রয়জনিও কাজ শেষে অবসর সময়ে বসে প্রতিদিন ৪-৫ ঘন্টা কাজ করে মাসে খুব ভাল আয় করতে পারে। এতে তারা নিজেরা স্বাবলম্বী হতে পারবে। অন্যের উপর নির্ভর করে চলতে হবে না। কলেজ-ভারসিটিতে পরুয়া মেয়ে, বিবাহিতা নারী, সন্তানের মা সবার জন্যই এই পেশা বেশ সুবিধা জনক।
ঠিক কি কারনে জানিনা, নারীরা এই পেশায় খুবই কম। যদিও বর্তমানে নারীদের সংখ্যা পূর্বের তুলনায় বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে আমাদের সবাইকে আরো সচেতন হতে হবে। আমাদের আশে পাশের বান্ধবি, মা, বোন, স্ত্রী তাদের অবসর সময় গুলো নষ্ট না করে এই পেশায় ব্যয় করার জন্য আমরা তাদের উদ্বুদ্ধ করবো। তাদের ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে জানাবো। তাদের শেখার সুযোগ করে দিবো। বাংলাদেশে যে সংখ্যক বেঁকার নারী আছে তার অর্ধেক ও যদি ফ্রিল্যান্সিং কে পেশা হিসেবে নেয় তবে বাংলাদেশ খুব দ্রুতই আমাদের স্বপ্নের বাংলাদেশ হবে ইনশাল্লাহ।
আমার সম্পর্কে কিছু কথা
আমার আসল নাম রাকিবুল হাসান। এবার ধানমন্ডি গভঃ বয়েজ হাই স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছি। বয়স ১৬। . ঢাকায় জন্ম এখানেই বড় হয়েছি, এখন ঢাকাতেই আছি।
ছোট থেকেই কম্পিউটার এর প্রতি অনেক নেশা। ক্লাস সেভেন এ প্রথম নিজের কম্পিউটার কিনি। তখন অবশ্য ২৪/৭ গেম খেলা নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম। অবশ্য বন্ধুদের সাথে মিলে ছোট খাটো ট্রিক শিখতেও খুব মজা পেতাম। এমনি করতে করতে একটু একটু কম্পিউটার শেখা। বাবা কম্পিউটার ভাল জানতেন। তার কাছ থেকে একটু একটু করে অনেক কিছুই শিখি। ধীরে ধীরে মনোযোগ গেম থেকে অন্য দিকে যায়। এইযে গেম, এটা কিভাবে বানালো? আমি কি বানাতে পারবো? এসব কথা মাথায় ঘুরতো। তখন গেম খেলা ছেরে গেম এডিট করার পেছনে লাগি।
নবম শ্রেণীতে উঠে কাকতালীয় ভাবে টেকটিউনস এর সাথে পরিচয়। ওর সাথে আমার বেশ আড্ডা জমে গেলো। বলতে পারেন টেকটিউনস এর হাত ধরেই আমার এত দূর আশা। আমি আজ যা পারি বা যা শিখছি এর অনেকটা কৃতিত্ব টেকটিউনস এর। টেকটিউনস থেকেই আমার ব্লগিং শেখা, ওয়েব ডিজাইন, ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে জানা, আরো অনেক কিছুই। টেকটিউনস থেকে যে কত কিছু শিখেছি তা বলে শেষ করতে পারবো না। টেকটিউনস এর এই ঋণ কখনো শোধ করতে পারবো কিনা জানি না। তাই আজও বিনা দ্বিধায় টেকটিউনস কে ভাল কিছু উপহার দেয়ার চেষ্টা করি। টেকটিউনস এর জন্য আমার যতটুকু আছে সব দিয়ে করতে রাজি আছি।
টেকটিউনস এর প্রতি কৃতিত্ব প্রকাশ করা মানেই এর টিউনার দের প্রতি কৃতিত্ব প্রকাশ করা। টেকটিউনস এর টিউনারদের প্রতি কৃতিত্ব প্রকাশ করে শেষ করা যাবে না। টিউনারদের অসাধারণ সব টিউন গুলোর জন্যই হয়তো আমি এত কিছু শিখতে পেরেছি। তাদেরকে ধন্যবাদ দেয়ার মত ভাষা আমার নেই। কারো নাম লিখতে চাচ্ছি না, নাম লিখে শেষ করতে পারবো না। আর একজনের নাম বাদ গেলে হয়তো খারাপ লাগবে। তাই কারো নামই লিখচি না।
আমি এখন ওয়েব ডিজাইন শিখছি। কোন প্রতিষ্ঠানে নয়। নিজেই অনলাইন এ টিউটোরিয়াল দেখে এবং পড়ে। আমাকে কেও ফ্রিল্যান্সার/ গুরুতর ওয়েব ডিজাইনার/ মহা জ্ঞানী ভেবে ভুল করবেন না। আমি ওয়েব ডিজাইন শিখছি কেবল। ফ্রিল্যান্সিং? এখনো ওডেস্ক এ একাউন্ট ও খুলি নাই। মহা জ্ঞানী? আমাকে ওই দিন মহাজ্ঞানি বলবেন যেদিন আমি মার্ক জুকার বারগ বা বিল গেটস থেকেও বড় কিছু করে দেখাতে পারবো। আপনাদের কাছে অনুরোধ রইলো আমার। এটা আমার স্বপ্ন। অনেক বড় হবার স্বপ্ন।
সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। সামনে ৯ তারিখ আমার এসএসসি পরিক্ষার ফলাফল।
কারো কোন সাহায্য লাগলে ফেসবুক এ নক করবেন, আমার স্বল্প জ্ঞান দিয়ে সাহায্য করার চেষ্টা করবো।
আমি আছি ফেসবুক এঃ Rakibul Hasan
আমি কম্পিউটার লাভার। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 101 টি টিউন ও 1258 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 20 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
Also known as "Raiku Saiko". React.js & Javascript Developer. Former Wordpress Developer, Front-end Designer. Technology Addicted.
বাংলাতে আর থেকে পরিপূর্ণ গাইডলাইন আমি আগে পাই নি। তোমার টিউন সার্থক।
তোমার জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা। অনেক দূর এগিয়ে যাবা এটা আমার বিশ্বাস। 🙂