বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
আস্সালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠক, আপনি যদি মোবাইল সর্ভিসিং এর কাজ শিখতে চান তাহলে আমার এই টিউটোরিয়াল আপনার জন্য। আপনি যদি আমাদের সাথে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনি মোবাইল সার্ভিসিং শিখতে পারবেন। আমরা ৩৫-৪০টি টিউটোরিয়ালের মাধ্যমে আমাদের এই (হার্ডওয়্যার) কোর্সটি শেষ করব। আপনি পড়াশোনা অথবা চাকরি বা অন্য যে কোন পোশার সাথে সম্পৃক্ত থাকুন না কেন আমাদের সাথে থাকেন, আমরা আপনাকে মোবাইল রিপেয়ার শিখতে সাহায্য করব। শুধু আপনাকে আমাদের দেখানো পথে অনুশীলন করতে হবে। আশাকরি আপনি আমাদের সাথেই থাকবেন।
আধুনিক বিজ্ঞানের অন্যতম একটি বিশ্ময় আবিষ্কার মোবাইল ফোন। আমাদের প্রতিদিনের ব্যবহারের আধুনিক যন্ত্রপাতির মধ্যে মোবাইল গুরুত্বপূর্ণ একটি যন্ত্র। মোবাইল আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে করেছে দ্রুত থেকে দ্রুততম। এছাড়াও মোবাইল আমাদের বিনোদনের একটি অন্যতম মাধ্যম। মোবাইল গেম, মুভি দেখা, সোস্যাল মিডিয়া সহ মোবাইলের বিভিন্ন প্লাটফর্ম মোবাইলকে আরো জনপ্রিয় করে তুলেছে। বর্তমান আর্ন্তজাতিক বাজারে মোবাইল সৃষ্টি করেছে বিশাল একটা অর্থনৈতিক প্রভাব। বিশ্বের প্রায় সবদেশেই রয়েছে মোবাইল ব্যবহারকারীর বিশাল একটা সংখ্যা। সুতরাং মোবাইল রিপেয়ারের চাহিদাও বাজারে রয়েছে ব্যপক। বর্তমানে আমাদের দেশের প্রতিটি গ্রামে পৌছে গেছে মোবাইল। গ্রামে অথবা ইউনিয়ন পর্যায়ে মোবাইল সার্ভিসিং এর চাহিদা দিনদিন আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। মোবাইল সার্ভিসিংকে নিজের পেশা হিসেবে গ্রহন করা যেতেই পারে।
মোবাইল ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস সুতরাং এটি রিপেয়ার করতে আপনাকে অবশ্যই প্রশিক্ষণ নিতে হবে। মোবাইলের বিভিন্ন পার্টস পরিবর্তন করতে হয় রিপেয়ারিং এর সময়। সুতরাং আপনাকে অবশ্যই ধৈর্যশীলতা এবং অনুশীলনের মাধমে এটাকে আয়ত্ত করতে হবে। মোবাইল হার্ডওয়্যার এবং সফটওয়্যার এর সমন্বয়ে তৈরী করা হয়ে থাকে। সুতরাং আপনাকে কিছুটা হলেও শিক্ষিত হতে হবে। আপনি যতবেশি অনুশীলন করবেন ততবেশি আপনার অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি পাবে। একজন অভিজ্ঞ টেকনিশিয়ান হতে হলে আপনাকে অবশ্যই অনেক বেশি অনুশীলন করতে হবে।
মোবাইলের ইতিহাস এবং কার্যপ্রণালীঃ মোবাইল রিপেয়ার শুরু করার আগে আমরা মোবাইল সম্পর্কে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জেনে নেব। ১৯৭৩ সালে সর্বপ্রথম মোবাইল আবিষ্কার হয়। শুরুতে মোবাইল নেটওয়ার্ক ১জি হলেও বর্তমানে মার্কেটে ২জি, ৩জি, ৪জি এবং ৫জি মোবাইল পাওয়া যায়। আমাদেরে দেশে প্রথম মোবাইল বাজারে আসে ১৯৯৩ সালে। বর্তমানে বিজ্ঞানের কল্যানে আমরা অত্যাধুনিক স্মার্টফোর ব্যবহার করতে পারছি।
মোবাইল ফোন সাধারনত দ্বিমুখী বেতারযন্ত্র। এতে এক দিকে থাকে বেতার প্রেরক এবং বেতার গ্রাহক। যখন মোবাইল দিয়ে কথা কলা হয় তখন মোবাইল শব্দকে ইলেকট্রিক সিগন্যালে পরিনত করে। মোবাইলে ব্যবহৃত এন্টেনা এই সিগন্যালকে রেডিও তরঙ্গের মাধ্যমে নিকটস্থ মোবাইল টাওয়ারের মাধ্যমে অন্য গ্রাহকের নিকট পাঠায়। অন্য মোবাইল আবার একই পদ্ধতিতে রেডিও তরঙ্গকে ইলেকট্রিক্যাল সিগন্যাল এবং ইলেকট্রিক্যাল সিগন্যালকে শব্দে রুপান্ত্রিত করে।
মোবাইল ফোনকে আমরা ধরন অনুযায়ী ২ ভাগে ভাগ করতে পারি। জিএসএম এবং সিডিএমএ। জিএসএম ফোনে সিমকার্ড পরিবর্তন করে ব্যবহার করা যায়। কিন্তু সিডিএমএ ফোনে একটি রিমকার্ড থাকে। পরিবর্তনের সুযোগ থাকে না।
আবার আমরা ব্যবহার অনুযায়ী মোবাইলকে কীপ্যাড ফোন এবং টাচস্ক্রীন ফোনে ভাগ করতে পারি। নিন্ম স্তরের ফোনকে ফিচারড ফোন বলা হয়ে থাকে। এ সকল ফোনে টেলিফোন যোগাযোগ পদ্ধতি থাকে। বর্তমানে মাল্টিমিডিয়া সহ আরো কয়েকটি সেবা ফিচারড ফোনে ব্যবহার করা যায়। আর কিছু মোবাইল ফোন আরো কিছু বাড়তি সেবা এবং কম্পিউটারের মত সেবা প্রদান করে তাদেরকে স্মার্ট ফোন বলে। এই মোবাইলে বিভিন্ন অ্যাপস এর মাধ্যমে নানবিধ সুবিধা পাওয়া যায়।
মোবাইল সাধারনত কথা আদান প্রদানের কাজেই বেশি ব্যবহৃত হয়। যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরো বেশি দ্রুততম করায় মোবাইলের ভুমিকা ব্যপক। স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে আমরা আরো অনেক সুবিধা গ্রহণ করতে পারছি। নিন্মে কিছু সুবিধা উল্লেখ করা হল।
এছাড়াও মোবাইলে বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার করে আমরা আরো অনেক সুবিধা পেতে পারি। যেমন গুগল ম্যাপ এর মত অ্যাপস ব্যবহার করে লোকেশন খুঁজে বের করা যায় এবং অনলাইনে কেনাকাটা, খাবার অর্ডার সহ আরো অনেক সুবিধা পেতে পারি স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে।
বর্তমান বাজারে নামিদামী অনেক মোবাইল কম্পানি রয়েছে, তাদের মধ্যে অ্যপল-আইফোন (Apple-iPhone), স্যামসাং(Samsung), হুয়াওয়েই(Huawei), সাওমি(Xiaomi), অপ্পো(Oppo), ভিভো(Vivo), মটোরোলা(Motorola), লেনেভো(Lenevo), নোকিয়া(Nokia) সহ অনেক লোকাল এবং চাইনিজ মোবাইল কম্পানি রয়েছে বিভিন্ন দেশে। আইফোন এখন পর্যন্ত তাদের নিজস্ব অপারেটিং সিস্টেম আই ও এস ব্যবহার করছে। অন্য কোন কম্পানিতে তারা এই অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করার অনুমতি দেয়নি। বর্তমানে এনড্রয়েড হচ্ছে একটি জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম। স্যামসাং(Samsung), হুয়াওয়েই(Huawei), সাওমি(Xiaomi), অপ্পো(Oppo), ভিভো(Vivo), মটোরোলা(Motorola), লেনেভো(Lenevo), নোকিয়া(Nokia) সহ অধিকাংশ মোবাইল কম্পানি তাদের প্রস্তুতকৃত মোবাইলে এই অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে থাকে। উইনডোজ ওএস হচ্ছে মাইক্রোসফট এর অপারেটিং সিস্টেম, যা আমরা কম্পিউটারে দেখতে পাই। বর্তমান বাজারে কিছু উইনডোজ মোবাইল হল নোকিয়া লুমিয়া ৮০০, নোকিয়া লুমিয়া ৯০০, স্যামসাং ফোকাস, এইচটিসি টাইটন ২২ ইত্যাদী। এছাড়াও Symbian, Kai Os, Blackberry Os, Palm Os সহ কিছু অপারেটিং সিস্টেম মোবাইলে ব্যবহৃত হয়।
আজকের টিউটোরিয়াল এই পর্যন্ত.
আগামি টিউটোরিয়ালে আমরা মোবাইল সর্ভিসিং করতে যে সকল যন্ত্রপাতির প্রয়োজন হয় সে সম্পর্কে আলোচনা করব।
আমি রবিউল ইসলাম। , সোহাগ টেলিকম, মঠবাড়িয়া। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 2 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে এবং জানাতে ভালোলাগে।