কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সবাই ভালো আছেন, আর কেনই বা ভাল থাকবেন না কেননা বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস কমিউনিটির এর সাথে যারা থাকে তারা সব সময়ই ভাল থাকে। তাহলে আর দেরি না করে মূল কথায় আসা যাক।
এটা কি কখনও ঘটেছে যে আপনি আপনার স্মার্টফোন থেকে কম্পিউটারের মধ্যে কিছু ফাইল শেয়ার করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু আপনার কাছে কোন USB ক্যাবল না থাকায় ফাইল শেয়ার করা আর সম্ভব হয়নি? অথবা আপনার যদি ইন্টারনেট সংযোগ না থাকে তবে সম্ভবত আপনাকে ধীর গতির এবং সমস্যাযুক্ত ব্লুটুথ ব্যবহার করে ফাইল শেয়ার করেছিলেন।
এছাড়াও, যদি আপনার স্মার্টফোন এবং আপনার পিসিতে ওয়াইফাই অ্যাডাপ্টার থাকে তাহলে আপনি সরাসরি দুটি ডিভাইস কানেক্ট করে ফাইল শেয়ার করতে পারবেন। আজ আমি আপনাদের কে Feem নামক মাল্টি প্ল্যাটফর্ম অ্যাপ্লিকেশন যার মাধ্যমে আপনি আপনার স্মার্টফোন থেকে ফাইলগুলিকে আপনার পিসিতে পাঠাতে পারবেন এবং পিসিতে থেকে মোবাইলে ফাইল পাঠাতে পারবেন।
Feem হচ্ছে একটি মাল্টিপ্ল্যাটফর্ম অ্যাপ্লিকেশন যা আপনার স্মার্টফোন এবং আপনার পিসির মধ্যে কোনও ক্যাবল, ইন্টারনেট বা অন্য কোনও ডিভাইস ব্যবহার না করেই ফাইলগুলি শেয়ার করা যায়। এক্ষেত্রে, আপনার শুধু ওয়াইফাই সংবলিত স্মার্টফোন এবং ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ পিসি প্রয়োজন। প্রকৃতপক্ষে, ওয়াইফাই ডাইরেক্ট যেভাবে কাজ করে এটিও ঠিক একইভাবে কাজ করে। নিচে এর ফিচার সম্পর্কে আলোচনা করা হল।
Official Download @ Feem
Feem এর বেশ কিছু অসাধারন ফিচার রয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য তিনটি ফিচার নিম্নে উল্লেখ করা হলঃ
নিম্নে Feem এর প্রতিটি ফিচার এর সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হল।
আপনি Feem এর মাধ্যমে বড় বড় ফাইল রিসিভ এবং সেন্ড করতে পারবেন খুবই অল্প সময়ে ও দ্রুত গতিতে। Feem ব্লুটুথ থেকে ৫০ গুন দ্রুত ফাইল রিসিভ ও সেন্ড করে এবং Dropbox থেকে প্রায় দ্বিগুণ দ্রুত গতিতে কাজ করে।
আপনি Feem এর মাধ্যমে যে কোন সাইজের ফাইল শেয়ার করতে পারবেন এবং রিসিভ করতে পারবেন। যে কোন সাইজের ফাইল বলতে, ফাইলের সাইজ যত বড়ই হোক না কেন আপনি এর মাধ্যমে অনায়েসে রিসিভ এবং শেয়ার করতে পারবেন কোন ইন্টারনেট চার্জ ছাড়াই।
আপনার সংগ্রহে থাকা সেন্সিটিভ ফাইল LAN এর মাধ্যমে ট্রান্সফার করতে পারবেন, এক্ষেত্রে কোন ক্লাউড স্টোরেজ এ ফাইল আপলোড দিতে হবে না। ফলে আপনার ফাইল হ্যাক করার কারো পক্ষে সম্ভব না। এছাড়াও, TLS এর মাধ্যমে Feem আপনার সকল লোকাল ট্রান্সফারকে এনক্রিপ্ট করে ফলে কেউ ডাটা চুরি করতে পারবেনা।
আগেই বলেছি যে, Feem একটি মাল্টি প্লাটফর্ম অ্যাপ্লিকেশান, জনপ্রিয় প্রায় সকল অপারেটিং সিস্টেম সাপোর্ট করে এবং সাথে সাথে জনপ্রিয় সকল স্মার্টফোন অপারেটিং সিস্টেমও সাপোর্ট করে।
আপনি আপনার কম্পিউটারে যে অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করেন না কেন, সকল অপারেটিং সিস্টেমে আপনি Feem অ্যাপ চালাতে পারবেন। তো নিচে থেকে আমরা এখন দেখে নেই Feem কোন কোন অপারেটিং সিস্টেম সাপোর্ট করে।
এছাড়াও, জনপ্রিয় সকল স্মার্টফোন অপারেটিং সিস্টেমে Feem সাপোর্ট করে থাকে, নিচে থেকে আমরা এখন দেখে নেই Feem কোন কোন স্মার্টফোন অপারেটিং সিস্টেম সাপোর্ট করে।
আপনার কম্পিউটার এবং স্মার্টফোন এর জন্য Feem অ্যাপ্লিকেশানটি এখান থেকে ডাউনলোড করুন এবং অন্যান্য সকল অ্যাপ এর মত এটি ইন্সটল দিন।
আশাকরি আপনাদের কম্পিউটার/ল্যাপটপ এবং স্মার্টফোনের এর অপারেটিং সিস্টেম অনুযায়ি ইন্সটলেশন ফাইল ডাউনলোড করেছেন এবং নিশ্চিয় ইন্সটল ও করে ফেলেছেন। আমি জানি যে আপনারা সবাই ইন্সটল দিতে পারেন, তারপরেও যদি কেউ ইন্সটল করতে না পারেন তাহলে টিউনমেন্টে জানান যথাসম্ভব সাহায্য করা হবে।
আপনাদের কম্পিউটার/ল্যাপটপ এবং স্মার্টফোনে ইন্সটল করা হয়ে গেলে, অ্যাপ্লিকেশান টি রান করুন, তাহলে নিচের মত একটা ইন্টারফেস দেখতে পারবেন।
এরপর, আপনি যে ডিভাসের সাথে ফাইল শেয়ার করতে চান সেই ডিভাইসেও অ্যাপ্লিকেশান টি ইন্সটল করুন, এখন আমি আপনাদের দেখাবো Linux থেকে Android এবং Android থেকে Linux এ ফাইল শেয়ার করবেন।
আগেই বলেছি, আপনাদের ওয়াইফাই রাউটার বা উভয় ডিভাইসে ওয়াইফাই ডিভাইস থাকলেই হবে। আপনার কম্পিউটার/ল্যাপটপ এবং স্মার্টফোন একই ওয়াইফাই রাউটার অথবা হটস্পট এ কানেক্ট থাকলে Feem অটোম্যাটিক ভাবে কানেক্ট হয়ে যাবে।
কানেক্ট হওয়ার পরে নিচের ছবির মত ইন্টারফেস দেখতে পাবেন এবং নিচের চ্যাট বক্সের মাধ্যমে আপনারা চ্যাটিং এর পছন্দের ফাইল পাঠানোর জন্য বলতে পারবেন।
ফাইল শেয়ার করতে নিচের দিকে “Send File” অপশনে ক্লিক করে কাংখিত ফাইল ফাইল ম্যানেজার থেকে সিলেক্ট করুন এবং Open বাটনে ক্লিক করুন। ব্যাস ফাইল পাঠানো একদম সিম্পল। আর এর সিম্পল ইউজার ইন্টারফেস এর কারনে যে কেউ অ্যাপ ইন্সটল দিয়েই কারো সাহায্য ছাড়াই এই অ্যাপ ব্যবহার করতে পারবে।
ভালো ট্রানসফার স্পীড পাওয়ার জন্য আপনাকে আপনার স্মার্ট ফোনের হটস্পট অন করে কম্পিউটার বা ল্যাপটপের সাথে কানেক্ট করতে হবে তাহলেই আপনি আগের থেকে অনেক অনেক বেশি স্পিড পাবেন।
ফাইল শেয়ারিং এর আরো অন্যান্য অনেক অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে, তবে Feem এর সাথে অন্যান্য অ্যাপ এর কিছু পার্থক্য রয়েছে। Feem এর সাথে অন্যান্য অ্যাপ্লিকেশন এর মূল পার্থক্য হল এর দ্রুতগতির ফাইল ট্রান্সফার স্পিড এবং সিকিউর ফাইল ট্রান্সফার।
Feem যেসব অনন্যা ফাইল শেয়ারিং এর দারুন অল্টারনেটিভ হিসেবে কাজ করে
উপরে উল্লেখিত অ্যাপ সমূহের সাথে এর পার্থক্য আপনারা ব্যবহারের মাধ্যমে সহজেই বুঝতে পারবেন।
Feem অ্যাপ্লিকেশন এর আরেকটি অসাধারণ ফিচার হল চ্যাটিং অপশন। এর মাধ্যমে আপনি এবং যার কাছ থেকে ফাইল নিবেন বা দিবেন তার সাথে চ্যাটিং করতে পারবেন। ফলে আপনার পছন্দের ফাইল সম্পর্কে ম্যাসেজের মাধ্যমে জানাতে পারবেন এবং কুশলাদি বিনিময় করতে পারবেন।
আজকে এই পর্যন্তই আর আপনাদের যে কোন প্রশ্ন থাকলে টিউনমেন্ট এ জিজ্ঞাসা করুন, টিউন জোস করুন, টিউন শেয়ার করুন, আর টেকটিউনস এর সাথেই থাকুন।
আমি রায়হান ফেরদৌস। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 4 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 189 টি টিউন ও 131 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 73 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।
দারুণ উপকারী এপ্লিকেশন রিভিউ। ধন্যবাদ ভাই।