কম্পিউটার আধুনিক বিজ্ঞানের অন্যতম সেরা আবিষ্কার। আপনি যদি হতে চান কম্পিউটার জিনিয়াস, তাহলে এই টিউনটি আপনারই জন্য। এই টিউনটিতে আমি কম্পিউটার জিনিয়াস হওয়ার জন্য ৬ টি অত্যন্ত Effective Method নিয়ে আলোচনা করবো।
টিউনের শেষদিকে পুরো বিষয়টির উপর রয়েছে ভিডিও। আশাকরি 🙂
এর প্রথম স্টেপ হলো- বই পড়া, বই পড়ার মাধ্যমে জানা যতোটা শক্তিশালী হবে, অন্য কোনো মাধ্যমে এতোটা শক্তিশালী হবে না। তাই বাজারে কম্পিউটারের উপর যেসকল বই পাওয়া যায়, তাঁর মধ্যে যেগুলো Beginner দের উপযোগী, সেগুলো সংগ্রহ করুন, পড়ুন, বুঝুন, Implement করুন। সেক্ষেত্রে নীলক্ষেত হতে পারে আপনার জন্য পছন্দের জায়গা। কারণ সেখানে খুব সস্তায় অনেক ভালো ভালো লেখকের বই পাওয়া যায়।
দ্বিতীয় স্টেপ হলো- আপনার কম্পিউটারের ভেতরের হার্ডওয়্যারগুলোর নাম জানা- অর্থাৎ RAM, ROM, HARD DISK সহ কম্পিউটারের অন্যান্য হার্ডওয়্যারের নাম জানা হতে পারে আপনার কম্পিউটার জিনিয়াস হওয়ার প্রাথমিক পদক্ষেপ। এগুলো জানার জন্যও বই হতে পারে সবচেয়ে বেস্ট লার্নিং ম্যাটেরিয়াল।
তৃতীয় স্টেপ হলো- কম্পিউটারের দোকানগুলোতে যাওয়া এবং লেটেস্ট টেকনোলজি সম্বন্ধে ধারণা অর্জন করা। কম্পিউটারের দোকানগুলোতে আপনার নিয়মিত যাতায়াত থাকলে বাজারে আসা নতুন নতুন হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার, নতুন নতুন ডিভাইস ও প্রযুক্তির লেটেস্ট আপডেটগুলো সম্বন্ধে জানতে পারবেন আপনি।
চতুর্থ স্টেপ হলো- ইউটিউবে কম্পিউটার জিনিয়াসদের ভিডিও দেখা। ইউটিউবে এমন অসংখ্য ভিডিও পাবেন, যেখানে সরাসরি কম্পিউটারের ভেতরের জিনিসগুলো দেখানো হয়েছে খুলে খুলে, দেয়া হয়েছে বিশদ বর্ণনা। সেগুলো দেখার মাধ্যমে আপনার কম্পিউটার জ্ঞান বাড়াতে পারেন।
পঞ্চম স্টেপ হলো- নিজের কম্পিউটার নিজেই খোলা। আপনি যদি আত্মবিশ্বাসী থাকেন, তাহলে নিজের কম্পিউটার নিজেই খুলে কম্পিউটারের কোথায় কোন কম্পোনেন্ট কীভাবে কানেক্ট করা আছে, কোথায় র্যাম, কোথায় হার্ডডিস্ক, কোথায় পাওয়ার সাপ্লাই রয়েছে ইত্যাদি বিষয়গুলো সম্বন্ধে একটা মোটামুটি ধারণা নিতে পারবেন।
কম্পিউটার জিনিয়াস হওয়ার জন্য বিভিন্ন অপারেটিং সিস্টেমের মধ্যকার পার্থক্যগুলো বোঝার চেষ্টা করা ও নতুন নতুন সফটওয়্যার ব্যবহার করা খুবই দরকার। আমরা সচরাচর মাইক্রোসফট উইন্ডজের অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে থাকি। কম্পিউটার জিনিয়াস হতে হলে ম্যাক, লিনাক্স সহ অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেম ও অন্যান্য বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার ব্যবহার করাটাও আমাদের জন্য দরকারি। উইন্ডোজ, লিনাক্স, ম্যাক কোন অপারেটিং সিস্টেমের কী সুবিধা, কোনটার কী অসুবিধা এগুলো আপনার জানা দরকার। বিভিন্ন ব্লগ ও ফোরামে এসব অপারেটিং সিস্টেম নিয়ে পাবেন নানা আলোচনা, প্রশ্নোত্তর ইত্যাদি। সেগুলো পড়ার মাধ্যমে আপনি অপারেটিং সিস্টেমগুলোর ব্যাপারে ধারণা নিতে পারেন। আমার পরামর্শ হলো আপনি সবগুলো অপারেটিং সিস্টেম অন্তত একবার করে হলেও ব্যবহার করুন। এছাড়াও নতুন নতুন সফটওয়্যার নিয়ে চালাতে পারেন এক্সপেরিমেন্ট।
প্রথমতঃ প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ শেখা। জাভা, পিএইচপি, এসকিউএল এর মতো প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজগুলো শেখার মাধ্যমে আপনি কম্পিউটারের অ্যাডভান্সড স্কিল অর্জন করতে পারেন।
দ্বিতীয়তঃ নেটওয়ার্ক সেটাপঃ কম্পিউটার জিনিয়াস হওয়ার জন্য নেটওয়ার্ক সেটাপিং জ্ঞান অর্জন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
তৃতীয়তঃ কম্পিউটার সিকিউরিটি ও হ্যাকিং। হ্যাকিং ও কম্পিউটার সিকিউরিটি এ বিষয়গুলোর জ্ঞান অর্জন না করলে আপনার কম্পিউটার ও ওয়েব অ্যাসেট হতে পারে আক্রান্ত। তাই এই বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
চতুর্থতঃ আজীবন শেখার প্রতিজ্ঞা করা। প্রযুক্তি খুবই দ্রুত পরিবর্তনশীল। আজ প্রযুক্তির যে উপকরণগুলো আপনি ব্যবহার করছেন, আগামী ১ বছর পরেই তা হয়ে যেতে পারে ব্যাকডেটেড বা পুরনো। সুতরাং টেকনোলজীর বিভিন্ন ব্লগ, ফোরাম, ইউটিউব চ্যানেল ইত্যাদির সাথে নিয়মিত যুক্ত থেকে প্রযুক্তির নতুন নতুন আপডেট জানার মাধ্যমে আজীবন শেখার মানসিকতা তৈরি করতে হবে।
প্রথমতঃ সমস্যা সনাক্তকরণ। আইটি ইন্ডাস্ট্রিতে কম্পিউটার Troubleshooting অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই সমাধান করার আগে প্রয়োজন সমস্যা সনাক্তকরণের দক্ষতা অর্জন করা। তাই সমস্যা হলে নির্দিষ্ট Keyword দিয়ে Google Search করুন। কম্পিউটারে কোনো Error Message দেখলে হুবহু ঐ Error Message টি লিখে Google এ Search করুন। নিশ্চিতভাবে সমাধানের পথ পেয়ে যাবেন।
দ্বিতীয়তঃ Google স্কীল বৃদ্ধি করা। কম্পিউটার জিনিয়াস হওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে কীভাবে, কোথায় Information পাওয়া যায়। এক্ষেত্রে Google আপনার সবচেয়ে সেরা বন্ধু। Google এ কীভাবে Search করলে সুনির্দিষ্ট রেজাল্ট পাওয়া যায় সে বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করা খুবই জরুরি।
যেমনঃ ("") ডাবল কোটেশন ব্যবহার করে Exact Keyword অথবা Phrase এর নির্দিষ্ট রেজাল্ট পাওয়া সম্ভব। উদাহরণ- "কম্পিউটার হ্যাকিং" লিখে Google এ Search করে দেখুন Exactly 'কম্পিউটার হ্যাকিং' Keyword টি নিয়ে সুনির্দিষ্ট আলোচনা পাবেন। তেমনিভাবে নির্দিষ্ট কোনো সাইট থেকে নির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়ার জন্য Keyword:Site Name এভাবে Search করার মাধ্যমে নির্দিষ্ট সাইট থেকে নির্দিষ্ট Information পাওয়া সম্ভব। যেমনঃ 'গ্রাফিক্স ডিজাইন site:techtunes.io'
তৃতীয়তঃ নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু নিয়ে বিভিন্ন ফোরাম রয়েছে। যেমন Windows Operating System নিয়ে অনেক ফোরাম রয়েছে, রয়েছে অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেম নিয়েও নানা ফোরাম। নির্দিষ্ট বিষয় বা সমস্যা নিয়ে সেগুলোতে তথ্য জানতে চেয়ে Post করার মাধ্যমে আপনি সেখান থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাবেন। তবে হ্যাঁ, তাঁর আগে দেখে নিন- সে সব ফোরামে ঐ বিষয়ে আগের কোনো Post রয়েছে কী না।
চতুর্থতঃ কাছের লোকজনের কম্পিউটার সমস্যার সমাধান করা। শুধুমাত্র পড়াশুনা করে ১০০% দক্ষতা অর্জন করা সম্ভব নয়, যতক্ষণ না আপনি মাঠে নামছেন। তাই বন্ধু-বান্ধব বা কাছের লোকজনের কম্পিউটারের সমস্যা চোখে পড়লেই লেগে পড়ুন সমাধানের জন্য। সমাধান জানা না থাকলে Google তো রয়েছেই।
কম্পিউটার জিনিয়াস হতে হলে পুরনো অপারেটিং সিস্টেম বা পুরনো সফটওয়্যার আকড়ে ধরে রাখলে হবে না। অপারেটিং সিস্টেম এর নতুন আপডেট আসার সাথে সাথে তা ইন্সটল করে নিতে হবে, এবং তা অন্যের সাহায্য নিয়ে নয়, নিজে নিজে। সেই সাথে বিভিন্ন সফটওয়্যারের নতুন ভার্সন আসার সাথে সাথেও পুরনো ভার্সন বদলে আপগ্রেড করে নিন। এছাড়া আপনার অপারেটিং সিস্টেম এর উপরে যেসকল ফোরাম, ব্লগ, ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে, সেখানেও কানেক্টেড থেকে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ Information, Tips, Tricks পেতে পারেন।
প্রথমতঃ এমন একটি বিষয় নির্বাচন করুন, যে বিষয়ে আপনার ইন্টারেস্ট বা আগ্রহ রয়েছে। সেটা হতে পারে ওয়েব ডিজাইন, ভিডিও মেকিং, প্রোগ্রামিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন ইত্যাদি। যে কোনো একটি পছন্দের বিষয় বাছাই করে সে বিষয়ে অ্যাডভান্সড জ্ঞান অর্জন করা হতে পারে কম্পিউটার জিনিয়াস হওয়ার সবচেয়ে সেরা উপায়।
দ্বিতীয়তঃ আপনার পছন্দের বিষয়ে অনলাইনে থাকা আর্টিকেলগুলো পড়াঃ আপনার পছন্দের বিষয়ে যতোভাবে সম্ভব Search করে গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলগুলো পড়ুন। নির্দিষ্ট টপিক নিয়ে নির্দিষ্ট ব্লগ রয়েছে, যেখানে নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে রেগুলার Post করা হয়। যেমনঃ গ্রাফিক্স ডিজাইন আপনার পছন্দের বিষয় হলে গ্রাফিক্স ডিজাইনের উপর যেসব ব্লগ রয়েছে, সেসব সাইটগুলো বুকমার্ক করে রাখুন আর সেগুলো রেগুলার ভিজিট করুন। নির্দিষ্ট বিষয়ের ফোরামে সক্রিয় মেম্বার হোন, নির্দিষ্ট ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করে নোটিফিকেশন অন করে রাখুন, যাতে সেসব চ্যানেলে নতুন ভিডিও আপলোড হলেই আপনার কাছে নোটিফিকেশন চলে আসে।
তৃতীয়তঃ অংশগ্রহণ করতে পারেন প্র্যাকটিক্যাল ট্রেইনিং এ। আমাদের দেশে কম্পিউটারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিভিন্ন ট্রেইনিং সেন্টার রয়েছে। সেখান থেকে আপনার পছন্দ করা বিষয়টির উপর বেস্ট ট্রেইনিং সেন্টার কোনটি তা খুঁজে বের করুন, এবং সেখানে ভর্তি হওয়ার মাধ্যমে আপনি সে বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে পারেন একেবারে হাতে-কলমে।
-
আশা করি টিউনটি আপনাদের ভালো লেগেছে। প্রযুক্তি সম্পর্কিত নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করে নিন Projukti School চ্যানেলটিতে। সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন এখানে।
টিউন বা ভিডিওতে আলোচিত বিষয়গুলো নিয়ে প্রশ্ন থাকলে জানাতে পারেন টিউমেন্ট বক্সে।
আমার ব্লগঃ http://bloggerdulal.com
ফেসবুকে আমিঃ https://www.facebook.com/azizur.dulal
আজ এ পর্যন্তই। ভালো থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
আমি আজিজুর রহমান দুলাল। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 15 টি টিউন ও 143 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমি বৃষ্টির মধ্যে হাঁটতে ভালবাসি, কারণ তখন কেউ বুঝবেনা আমি কাঁদছি।