কনটেন্ট রাইটিং পেশার সাথে কমবেশি আমরা অনেকেই পরিচিত। বাংলাদেশের রাইটার দের মধ্যে দুই ধরনের কনটেন্ট রাইটার রয়েছে। ইংরেজি কনটেন্ট রাইটার এবং বাংলা কনটেন্ট রাইটার। তবে কেউ কেউ ইংরেজি এবং বাংলা উভয় ভাষাতেই সমান তালে লিখতে পারে। যারা কনটেন্ট রাইটিং সেক্টরের সাথে যুক্ত তারা তো বেশ ভালোভাবেই জানেন যে ইংরেজি রাইটার দের চাহিদা তুলনামূলক বেশি এবং তাদের পেমেন্টও বেশি হয়ে থাকে৷
কিন্তু এতো চাহিদা থাকা সত্ত্বেও অনেক কনটেন্ট রাইটার ইংরেজি কনটেন্ট লিখতে ভয় পান। অথচ তারা বাংলায় বেশ চমৎকার লিখতে পারেন। কীভাবে আপনি ইংরেজি কনটেন্ট রাইটিং এর যাত্রা শুরু করবেন এবং ইংরেজি রাইটিং এর ওপরে দক্ষ হয়ে উঠবেন সেই বিষয়ে আজকে বেশকিছু টিপস আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। যারা এখনও পর্যন্ত একটা কনটেন্টও ইংরেজিতে লিখতে পারেননি তারা আজকের টিউনটি পড়ার শেষে ইংরেজিতে লেখালেখি করার সাহস পাবেন বলে আশা রাখি। তাহলে চলুন ইংরেজি কনটেন্ট রাইটিং টিপস সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
বাংলা যেমন একটি ভাষা ঠিক তেমনই ইংরেজিও একটি ভাষা। আমরা বাংলা ভাষায় লেখা শুরু করার আগে বাংলা পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলেছি। নিয়মিত পড়তে পড়তে অনেকেই এখন চমৎকার বাংলা লিখতে পারি। ঠিক এভাবেই নিয়মিত যদি আমরা ইংরেজি বই পড়ি, ম্যাগাজিন পড়ি, পত্রিকা পড়ি তাহলে আমরা দু চার লাইন হলেও লিখতে পারবো। কোনো কিছু লিখতে হলে আগে পড়ার অভ্যাস গড়তে হয়।
প্রথমেই যে আপনাকে কঠিন কঠিন, মোটা মোটা ইংরেজি বই নিয়ে বসতে হবে তা কিন্তু না। আপনি প্রাইমারি স্কুলের ছোট বাচ্চাদের ইংরেজি টেক্সট বুক থেকে শুরু করতে পারেন। এরপর ধীরে ধীরে একটু কঠিন বই হাতে নিন। পাশাপাশি পত্রিকা ও ম্যাগাজিন পড়া শুরু করুন। ইংরেজি ব্লগ পড়ুন, ইংরেজি ভিডিও কনটেন্ট দেখুন। এতে করে আপনার ভাষাগত দক্ষতার অনেক ডেভেলপমেন্ট হবে।
ধরুন আপনি বিভিন্ন লেখকের বই পড়লেন, ফলে আলাদা আলাদা লেখার স্ট্রাকচার আপনার মাথায় সেট হয়ে গেল। ফলে আপনি ঐ স্ট্রাকচারে বাক্য গঠন করতে পারবেন। নতুন নতুন শব্দ নিজের ভোকাবুলারিতে যুক্ত করতে পারবেন৷ ফলে আপনার লেখায় বৈচিত্র্য আসবে ও লেখার হাত চালু হবে। সুতরাং ইংরেজি কনটেন্ট রাইটিং শুরু করার পূর্বশর্ত হলো নিজেকে ইংরেজি বিষয়ক যে কোনো লেখা নিয়মিত পড়তে হবে।
অনলাইনে অনেক ফ্রি প্ল্যাটফর্ম আছে যেখানে আপনি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ইংরেজি প্র্যাকটিস করতে পারবেন৷ গুগলে সার্চ করলেই এমন অনেক প্ল্যাটফর্ম আপনি খুঁজে পাবেন। এই সকল প্ল্যাটফর্মে নিয়মিত প্র্যাকটিস করলে আপনার ইংরেজি রিডিং, রাইটিং, লিসেনিং ও স্পিকিং এই চারটি স্কিল বেশ ভালোভাবে আয়ত্তে এসে যাবে। ফলে আপনি সহজেই ফ্রি হ্যান্ড রাইটিং এর ওপরে পারদর্শী হয়ে উঠবেন৷
কীভাবে একটি বাক্যকে আরও সুন্দরভাবে সাজানো যায়, কোন শব্দের পরে কোন শব্দটি বসালে তা মানানসই হয় তা শিখতে পারবেন লার্নিং ইংলিশ প্ল্যাটফর্মে। এছাড়া আপনার গ্রামার নিয়ে দূর্বলতা থাকলেও এই অনলাইন প্ল্যাটফর্ম গুলোতে তা বিনামূল্যে শিখতে পারবেন। এই প্ল্যাটফর্ম গুলোর প্রতিটি অ্যাকটিভিটি এতো সুন্দরভাবে সাজানো থাকে যে আপনি এক মুহূর্তের জন্যও বোরিং হবেন না। তাই নিয়মিত যে কোনো একটি ফ্রি প্ল্যাটফর্মে প্র্যাকটিস অব্যাহত রাখুন এবং এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে কনটেন্ট রাইটিং শুরু করুন।
যে কোনো টপিক এর ওপর কনটেন্ট লেখার আগে ঐ বিষয়ে রিসার্চ করতে হয়। বাংলা কনটেন্ট রাইটিং এর ক্ষেত্রে আমরা সাধারণত বাংলাতেই রিসার্চ করে থাকি৷ অনেক সময় ইংরেজি কনটেন্ট রাইটার দের মধ্যেও বাংলায় রিসার্চ করার অভ্যাস দেখা যায়৷ কিন্তু এক্ষেত্রে ইংরেজিতেই রিসার্চ করা উচিত। ইংরেজি মাধ্যমে রিসার্চ করলে আপনি সম্পূর্ণ বিষয়টি সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করার পাশাপাশি ইংরেজি বাক্য গঠনের অনেক নিয়মকানুন শিখতে পারবেন। নতুন নতুন শব্দ শিখতে পারবেন যা আপনি আপনার কনটেন্টে সংযুক্ত করতে পারবেন৷
যে কোনো টপিক সম্পর্কে রিসার্চ করার জন্য সাধারণত আমরা গুগল সার্চ করে আর্টিকেল পড়ি, কিংবা বই পড়ি, অথবা পত্রিকা থেকে তথ্য সংগ্রহ করি। এখানে একেকজন লেখকের রাইটিং স্টাইল একেক রকম। এই ভিন্ন ভিন্ন স্টাইল গুলো আপনি নোট করে রাখবেন এবং আপনার লেখায় এগুলো অ্যাপ্লাই করার চেষ্টা করবেন। এভাবে একই সাথে আপনার রিসার্চ করাও হয়ে যাবে পাশাপাশি ইংরেজি রাইটিং স্কিলও ডেভেলপ হবে।
অনেকেই লেখা শুরু করার আগে দোটানায় পড়ে যায়, লিখতে পারবে কি-না। এই চিন্তা করতে করতেই আর লেখা শুরু করা হয়ে ওঠে না৷ একটা ভয় কাজ করে, যদি লেখা ভুল হয়। আসলে ভুল না করে কেউ শিখতে পারে না। তাই ঠিক ভুলের চিন্তা না করে লেখা শুরু করে দিন৷
আবার অনেকেই পেইড কাজ কবে পাবে সেই আসায় বসে থাকে। তাই লেখা শুরুই করে না। কিন্তু আপনার উচিত সেচ্ছায় নিয়মিত কিছু না কিছু লেখা। লিখতে লিখতে অনেক ভুল ধরা পড়বে, ঐ ভুলগুলো আস্তে আস্তে সংশোধন হয়ে যাবে। নিজেই নিজের পছন্দের টপিকে লেখা শুরু করুন ও তা সোশ্যাল মিডিয়ায় বা নিজের ব্লগ সাইটে পাবলিশ করতে থাকুন৷ এভাবেই ইংরেজি লেখা নিয়ে আপনার সংকোচ দূর হবে ও আপনি ধীরে ধীরে একজন প্রফেশনাল কনটেন্ট রাইটার হয়ে উঠতে পারবেন৷
আর আপনি যদি লেখা শুরুই না করতে পারেন তবে ভুলগুলো সংশোধন করার চান্স পাবেন না। এভাবে চলতে থাকলে আপনি কখনোই একজন ইংরেজি কনটেন্ট রাইটার হয়ে উঠতে পারবেন না।
অনেকেই মনে করেন ইংরেজি কনটেন্ট রাইটিং এর ক্ষেত্রে অনেক কঠিন কঠিন শব্দ ব্যবহার করে লিখতে হবে। বাক্যগুলো বেশ জটিল করতে হবে। আসলে বিষয়টা ঠিক তার উল্টো। কনটেন্ট এর ভাষা যতো সহজবোধ্য হবে ততোই বা পাঠকপ্রিয়তা পাবে। তাই লেখাকে জটিল করতে গিয়ে মাঝপথে আটকে যাওয়ার কোনো কারণ নেই। সুতরাং আপনি আপনার মতো করে সরল বাক্যে পুরো একটি কনটেন্ট লিখে ফেলতে পারবেন।
তবে একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে যে, একই শব্দ বার বার রিপিট করে লেখা যাবে না। লেখার শব্দের মধ্যে বৈচিত্র্য থাকা চাই। বাক্যের গঠনেও কিছুটা ভিন্নতা আনতে হবে। তাই বলে যে জটিল বাক্যে লিখতে হবে এমনটা নয়। ছোট ছোট বাক্যে সহজ ভষায় লিখতে পারবেন। তবে কীভাবে সহজ বাক্য গুলোকে নান আঙ্গিকে ফুটিয়ে তোলা যায় তা শিখতে চাইলে অবশ্যই নিয়মিত পাঠের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
অর্থাৎ খুব ভালো করতে গিয়ে লেখা যেন খুব কঠিন হয়ে না যায় এবং লেখা ভুলভাল না হয় সেদিকে লক্ষ রাখুন। আর অতি সুন্দর করতে গিয়ে লেখা বন্ধ করে বসে থাকার চেয়ে সাধারণ ভাবে লেখাই শ্রেয়।
প্রাথমিক লেভেলের রাইটার থেকে শুরু করে একদম Pro লেভেলের রাইটার সকলেরই কমবেশি লেখায় ভুল হয়। সবথেকে বেশি ভুল হয় গ্রামারে। তাই লেখা শেষ করে নিজে কয়েকবার রিভিশন করার পাশাপাশি Grammar Checker ব্যবহার করে লেখা সংশোধন করতে হবে। বিভিন্ন ফ্রি Grammar Checker টুল আপনি অনলাইনে পেয়ে যাবেন যার মাধ্যমে আপনি এক নিমিষেই লেখার সকল ভুল সংশোধন করতে পারবেন।
এখানে কয়েকটি জনপ্রিয় Grammar Checker টুল এর নাম উল্লেখ করা হলো।
উপর্যুক্ত যে কোনো টুল ব্যবহার করে আপনি আপনার লেখার গ্রামার, বানান ও বাক্যের গঠন সংশোধন করতে পারবেন। Grammar Checker টুল ব্যবহারের পাশাপাশি নিজেও কয়েকবার রিভিশন করে নিবেন। এরপর একটি পূর্ণাঙ্গ নির্ভুল ইংরেজি কনটেন্ট আপনি ক্লায়েন্ট এর হাতে ডেলিভারি করতে পারবেন।
ইংরেজি কনটেন্ট রাইটিং নিয়ে যাদের মনে ভীতি ছিলো তারা হয়তো এখন কিছুটা হলেও ইংরেজি কনটেন্ট রাইটার হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। আসলে মন থেকে চেষ্টা করলে কোনো কাজই অসম্ভব নয়। সুতরাং আজ থেকেই ইংরেজি কনটেন্ট রাইটিং এর প্রি পারেশান নিতে থাকুন। প্রথমেই শুরু করুন ইংরেজি বই পড়ার অভ্যাস তৈরির মাধ্যমে। এরপর ধীরে ধীরে লেখার দিকে মনোযোগ দিন।
আশাকরি অল্প সময়ের মধ্যেই আপনি একজন সফল ইংরেজি কনটেন্ট রাইটার হতে পারবেন। আমার ইংরেজি কনটেন্ট রাইটিং টিপস গুলো কেমন লেগেছে অবশ্যই টিউনমেন্ট করে জানাবেন। টিউনটি ভালো লাগলে একটি জোসস করে দিবেন প্লিজ। এমন নতুন নতুন টেকনিক্যাল কনটেন্ট পেতে আমাকে ফলো করে রাখতে পারেন। ধন্যবাদ।
আমি শারমিন আক্তার। শিক্ষার্থী, ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, গাজীপুর। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 115 টি টিউন ও 29 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 6 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।