আপনি কি একজন টেকনিক্যাল কনটেন্ট রাইটার হতে চান? তাহলে আজকের টিউনটি আপনার জন্য।
টেকনিক্যাল কনটেন্ট রাইটিং বলতে সহজে পাঠযোগ্য ব্লগ টিউন, প্রোডাক্ট রিভিউ সহ বিভিন্ন বিষয়বস্তু লেখাকে বোঝায়। হয়তো অনেকেই জানেন না যে, টেকনিক্যাল রাইটিং ও টেকনিক্যাল কনটেন্ট রাইটিং এর মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। কেননা টেকনিক্যাল রাইটিং এর মধ্যে যে কোনো কোম্পানির ম্যানুয়াল তৈরি, ডকুমেন্টারি রিলেটেড কাজ সহ এই জাতীয় বিভিন্ন কাজ থাকতে পারে যা টেকনিক্যাল কনটেন্ট রাইটিং এর আওতাভুক্ত হবে না। আর এই সূক্ষ্ম পার্থক্যটি অনেকেই হয়তো জানেন না।
একজন সফল টেকনিক্যাল কনটেন্ট রাইটার হওয়ার জন্য আপনার মধ্যে বেশ কিছু কোয়ালিটি থাকতে হবে। যেমন: এক সাথে বিভিন্ন বিষয়ে রিসার্চ করার মনমানসিকতা, লেখালেখির ওপরে ভালো দক্ষতা, যে কোনো প্রফেশনাল ব্যক্তিবর্গের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করার দক্ষতা, ইন্ডাস্ট্রিয়াল এক্সপার্ট দের সাথে সুসম্পর্ক স্থাপন করে তথ্য সংগ্রহ করার দক্ষতা ইত্যাদি।
আপনার যদি যে কোনো টেকনিক্যাল বিষয়বস্তু সম্পর্কে জানার খুব আগ্রহ থাকে এবং সেই সাথে অন্যকে এই বিষয়ে জানানোর আগ্রহ ও বোঝানোর ক্ষমতা কিংবা ইচ্ছা থাকে তাহলে টেকনিক্যাল কনটেন্ট রাইটিং আপনার জন্য একটি আদর্শ ক্যারিয়ার হতে পারে।
তাহলে চলুন টেকনিক্যাল কনটেন্ট রাইটিং সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেয়া যাক। কীভাবে এই সেক্টরে একটি সফল ক্যারিয়ার গড়তে পারবেন তার সকল দিকনির্দেশনা পেয়ে যাবেন পুরো টিউনটি পড়ার মাধ্যমে।
একজন টেকনিক্যাল কনটেন্ট রাইটার একটি সুনির্দিষ্ট উদ্যেশ্য অর্জনের জন্য বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে লেখালেখি করে থাকে৷ যেমন: ব্লগ টিউন, আর্টিকেল, ই-বুক, প্রোডাক্ট রিভিউ, হোয়াইট পেপার, কেনাকাটা বিষয়ক গাইডলাইন ইত্যাদি। এই লেখাগুলো টার্গেট অডিয়েন্স এর কাছে পৌঁছানোর জন্য একজন টেকনিক্যাল কনটেন্ট রাইটার এর যথেষ্ট রিসার্চ করার সক্ষমতা থাকতে হবে। সেই সাথে লেখার মধ্যে কি ওয়ার্ড ব্যবহার করে লেখাকে একটি ব্রান্ডিং টোন বা স্টাইলে নিয়ে আসার মতো দক্ষতা থাকতে হয়।
একজন সফল টেকনিক্যাল কনটেন্ট রাইটার হিসেবে আপনাকে যে কোনো জটিল টেকনিক্যাল বিষয়কে খুব সহজভাবে উপস্থাপন করার সক্ষমতা থাকতে হবে। লেখার প্রতি আপনাকে খুবই সচেতন থাকতে হবে যাতে করে লেখায় কোনো ধরনের অপ্রয়োজনীয় বা অপ্রাসঙ্গিক কথাবার্তার উপস্থিতি না থাকে। একজন টেকনিক্যাল কনটেন্ট রাইটার হিসেবে আপনি SaaS Company, ওয়েব-ভিত্তিক সফ্টওয়্যার, যে কোনো বিপনন সংস্থা, ক্রিপ্টোকারেন্সি, প্রোগ্রামিং টিউটোরিয়াল, টেক নিউজ, টেক টিউটোরিয়াল ব্লগ, টেকনিক্যাল প্রোডাক্ট রিভিউ, অনলাইন আর্নিং সহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর কনটেন্ট লিখতে পারেন।
আশাকরি ইতোমধ্যে বুঝে গেছেন যে টেকনিক্যাল কনটেন্ট রাইটিং আসলে কী এবং টেকনিক্যাল কনটেন্ট রাইটার হিসেবে আপনার কী কী দক্ষতা থাকতে হবে। তবে আপনার এটাও জেনে নেয়া দরকার যে কোনটি টেকনিক্যাল কনটেন্ট রাইটিং নয়।
প্রাথমিক পর্যায়ে আপনি যখন চাকরি খুঁজবেন বা চাকরির জন্য আবেদন করবেন তখন টেকনিক্যাল রাইটিং সেক্টরের দুই ধরনের চাকরির অফার পাবেন। একটি হতে পারে টেকনিক্যাল ব্লগ লেখার জন্য কনটেন্ট রাইটিং এবং অন্যটি হলো টেকনিক্যাল রাইটিং। আপনি যেহেতু টেকনিক্যাল কনটেন্ট রাইটিং সেক্টরে কাজ করতে আগ্রহী তাই আপনার জানা উচিত যে এই দুই ধরনের কাজের মধ্যে ব্যপক পার্থক্য রয়েছে।
একজন টেকনিক্যাল রাইটার এর কাজের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে কোনো কোম্পানির ডকুমেন্টেশন তৈরি করা, ইউজার ম্যানুয়াল তৈরি করা, পণ্যের জন্য হোয়াইট পেপার তৈরি করা ইত্যাদি। আর এসব কাজ টেকনিক্যাল কনটেন্ট রাইটার এর কাজের আওতাভুক্ত হয় না।
টেকনিক্যাল রাইটার এবং টেকনিক্যাল কনটেন্ট রাইটার এর পেমেন্ট-ও ভিন্ন হয়ে থাকে। U.S. News & World Report এর মতে একজন টেকনিক্যাল রাইটার এর গড় বার্ষিক আয় ৭৮ হাজার ডলার। অন্যদিকে Zippia এর মতে একজন টেকনিক্যাল কনটেন্ট রাইটার এর গড় বার্ষিক আয় ৫৯ হাজার ডলার।
আশাকরি ইতোমধ্যে টেকনিক্যাল রাইটার এবং টেকনিক্যাল কনটেন্ট রাইটার এর মধ্যে পেশাগত পার্থক্য সম্পর্কে স্পষ্ট ধারনা পেয়েছেন।
আপনি যদি টেকনিক্যাল কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার গড়তে চান তাহলে অবশ্যই কিছু নির্দিষ্ট স্কিল আপনার মধ্যে থাকতে হবে। এখানে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি স্কিল সম্পর্কে আলোচনা করা হলো। একজন সফল টেকনিক্যাল কনটেন্ট রাইটার এর এই তিনটি স্কিল বা দক্ষতা অবশ্যই থাকতে হবে।
একজন টেকনিক্যাল কনটেন্ট রাইটার হিসেবে প্রথমেই আপনার লেখালেখির ওপরে খুব ভালো দক্ষতা অর্জন করতে হবে। অনেকেই হয়তো প্রকৃতিগত ভাবে অনেকটা দক্ষতার মালিকানা পেয়ে যায়। কিন্তু টেকনিক্যাল কনটেন্ট রাইটিং এর জন্য এক্সট্রা কিছু দক্ষতার প্রয়োজন হয়। আপনি চাইলে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই সেক্টরে লেখালেখির ওপরে একটি কোর্স করতে পারেন। তাছাড়া বিভিন্ন অনলাইন কোর্সে অংশগ্রহণ করার মাধ্যমেও আপনি লেখালেখিতে একটি দারুণ দক্ষতা অর্জন করতে পারেন।
ব্যকরণ গত দিক থেকে নির্ভুল হওয়ার পাশাপাশি আপনার লেখায় আরও বেশ কিছু কোয়ালিটি মেইনটেইন করতে হবে। স্টোরি টেলিং এর মাধ্যমে কনটেন্ট কে আকর্ষনীয় ভাবে উপস্থাপন করা শিখতে হবে, শেষ পর্যন্ত পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করার মতো লেখা উপস্থাপন করতে হবে, একটি আকর্ষনীয় শিরোনাম তৈরি করার মতো দক্ষতা থাকতে হবে। পাশাপাশি লেখার মধ্যে এমন কিছু রাখতে হবে যাতে করে পাঠক আপনার লেখা পড়ে প্রাকটিকাল ভাবে কোনো পদক্ষেপ নেয়ার আগ্রহ খুঁজে পায়। একজন টেকনিক্যাল কনটেন্ট রাইটার এর লেখার কোয়ালিটি হিসেবে এই বিষয়গুলো অবশ্যই বিবেচনায় রাখা উচিত।
যতো বেশি রিসার্চ করে লিখবেন আপনার লেখা ততোটাই আকর্ষনীয় ও কোয়ালিটি সম্পন্ন হবে। অন্যদিকে কম রিসার্চ করে লেখা কনটেন্ট এর কোয়ালিটি তুলনামূলক খারাপ হবে। তাই একজন টেকনিক্যাল কনটেন্ট রাইটার হিসেবে আপনাকে যে কোনো সাধারণ বিষয় থেকে শুরু করে জটিল বিষয়ে রিসার্চ করার দক্ষতা অর্জন করতে হবে। এজন্য প্রথমেই আপনাকে যে কোনো বিষয়বস্তুর আসল ওয়েবসাইট নিয়ে রিসার্চ করতে হবে।
অর্থাৎ আপনি যে বিষয়ের ওপরে কনটেন্ট লিখবেন ঐ বিষয়বস্তু সম্পর্কিত ওয়েবসাইট নিয়ে গুগলে সার্চ করতে হবে। এরপর এমন ব্লগ সাইট খুঁজে বের করতে হবে যেখানে তথ্যগুলো নির্ভরযোগ্য মনে হয়। আলাদা আলাদা নির্ভরযোগ্য সাইট থেকে তথ্য সংগ্রহ করে নোট কর নিতে হবে। সবশেষে যে সাইটের মান্থলি ট্রাফিক বেশি থাকবে, ডোমেইন অথোরিটি নির্ভরযোগ্য মনে হবে, প্রকাশিত ব্লগ এর সংখ্যা বেশি হবে ঐ সাইট থেকে তথ্য সংগ্রহ করবেন।
তথ্য সংগ্রহের জন্য নিন্মলিখিত যে কোনো একটি Chrome Extensions ডাউনলোড করে নিতে পারেন।
এই Extensions গুলো ব্যবহার করে আপনি যে কোনো ওয়েবসাইট বা ব্লগ টিউন এর ট্রাফিক সংখ্যা, কি ওয়ার্ড সংখ্যা, ডোমেইন অথোরিটির সহ বিস্তারিত সকল তথ্য জানতে পারবেন। তাই খুব সহজেই সকল দিক বিবেচনা করে সঠিক তথ্যটি খুঁজে বের করতে পারবেন।
আপনি একটি কোয়ালিটি সম্পন্ন তথ্যবহুল কনটেন্ট তৈরি করার জন্য সকল তথ্য গুগলে না-ও পেতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনার সরাসরি মাঠ পর্যায়ে নেমে বিভিন্ন সেক্টরের এক্সপার্ট লোকজন এর ইন্টারভিউ নিতে হবে। এতে করে আপনি একদম সঠিক ও ইউনিক কিছু তথ্য আপনার লেখার মধ্যে তুলে ধরতে পারবেন। ইন্ডাস্ট্রি এক্সপার্ট দের মধ্যে থাকতে পারে ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, গবেষক, কোনো প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার, কোনো সংস্থা বা বস্তুর প্রতিষ্ঠাতা ইত্যাদি।
আপনি যদি শুধুমাত্র আপওয়ার্ক বা ফাইবার এর জন্য লেখালেখি না করে যে কোনো একটি প্রতিষ্ঠানের হয়ে কাজ করেন তাহলে আপনার মধ্যে অবশ্যই এই দক্ষতা টি থাকতে হবে। একটি প্রতিষ্ঠানকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পেছনে মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করবে আপনার কনটেন্ট। তাই পর্যাপ্ত সময় নিয়ে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইন্ডাস্ট্রি এক্সপার্ট দের সাথে যোগাযোগ স্থাপন করার পরিকল্পনা করুন। তাদের কাছ থেকে এমন সব তথ্য সংগ্রহ করার চেষ্টা করুন যা এর আগে কোনো টেকনিক্যাল কনটেন্ট রাইটার তুলে ধরতে পারেনি।
যাদি আপনি টেকনিক্যাল নিউজ ব্লগ রাইটার হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রেও এই দক্ষতাটি আপনার জন্য খুবই জরুরি। তাই কীভাবে একটি প্রফেশনাল ই-মেইল লিখতে হয় তা শিখে নিন। আর অফিসিয়াল ই-মেইল এর উত্তর কীভাবে দিতে হবে এটাও আপনার শেখা জরুরি। কেননা ইন্ডাস্ট্রি এক্সপার্ট দের সাথে আপনি ই-মেইল এর মাধ্যমে একটি চমৎকার যোগাযোগ মাধ্যম তৈরি করতে পারবেন।
অবশেষে এটাই বলবো যে, একদম টপ লেভেলের টেকনিক্যাল কনটেন্ট রাইটার হতে চাইলে আপনাকে অবশ্যই প্রফেশনাল যোগাযোগ এর ক্ষেত্রে ভালোভাবে দক্ষ হয়ে উঠতে হবে।
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা আমাদের ক্যারিয়ার এর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু প্রাথমিক পর্যায়ে কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়া টেকনিক্যাল কনটেন্ট রাইটার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করতে চাইলে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা খুব বেশি প্রাধান্য পাবে না। এখানে প্রাধান্য পাবে আপনার রাইটিং স্কিল। তাই টেকনিক্যাল কনটেন্ট রাইটার হতে চাইলে আপনার প্রথম পদক্ষেপ হবে এই সেক্টরে প্রচুর প্রাকটিস করা ও প্রতিনিয়ত নিজের স্কিল ডেভেলপ করা।
স্কিল ডেভেলপ করার জন্য আপনি নিজের ব্লগ সাইটে লেখালেখি করতে পারেন অথবা কোনো পারিশ্রমিক ছাড়া একটি ইন্টার্নশিপ করতে পারেন। কিংবা যে কোনো অলাভজনক প্রতিষ্ঠানের জন্য বিনামূল্যে লেখালেখি করতে পারেন। মনে রাখবেন যতোদিন পর্যন্ত এই সেক্টরে আপনি দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন না ততোদিন এখান থেকে কোনো আয় করার আশা করবেন না। অন্তত প্রাথম কয়েক মাস আপনি আয় করার চিন্তা ভাবনা পুরোপুরি বাদ দিয়ে কাজ শেখার দিকে মনোযোগ দিন।
পরবর্তীতে আপনার যখন মনে হবে এই সেক্টরের মোটামুটি ভালোই দক্ষতা অর্জন করেছেন এবং অন্যান্য লেখকদের সাথে একটি সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে পেরেছেন তখন একটি সিভি তৈরি করুন। একটি আকর্ষনীয় সিভি ও পোর্টফোলিও আপনাকে কাজ খুঁজে পেতে অনেক সাহায্য করবে। নিজের পোর্টফোলিও তৈরি করে তাতে আপনার সবথেকে ভালো কাজগুলো প্রদর্শন করুন। এবং সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আপনি আশানুরূপ একটি চাকরির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
প্রাথমিক পর্যায়ে আপনি কতো টাকা পেমেন্ট পাচ্ছেন এটা মূখ্য বিষয় হিসেবে বিবেচনা করবেন না। প্রাথমিক অবস্থায় মোটামুটি আয় হবে এমন কাজ পেলেও তা শুরু করে দিন। পাশাপাশি কাজের মাধ্যমে আর-ও নতুন নতুন দক্ষতা অর্জন করতে চেষ্টা করুন। আর আপনার আয়ের কিছু অংশ নিজের স্কিল ডেভেলপ করার জন্য ব্যয় করুন। যেমন: কোনো রাইটিং কোর্স করতে পারেন৷ বিভিন্ন পেইড টুল কিনতে পারেন, প্রয়োজনীয় হার্ডওয়্যার কিনতে পারেন। এতে করে আপনার ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার আর-ও বেশি সম্ভাবনাময় হবে।
টেকনিক্যাল রাইটিং এর বিষয়ে বিস্তারিত জানার পরে আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে আপনি কীভাবে এই কাজটি করতে চাচ্ছেন। চাইলে আপনি একজন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করতে পারেন। কিংবা যে কোনো প্রজেক্ট এর কাজ কনট্রাক্ট হিসেবে নিতে পারেন। অথবা যে কোনো একটি কোম্পানীর কর্মী হিসেবে ফুল টাইম চাকরি-ও করতে পারেন। তাই প্রথমেই আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে আপনি কোন সেক্টরে কীভাবে কাজ করতে চান।
আপনি যদি একজন টেকনিক্যাল ফ্রিল্যান্স রাইটার হিসেবে কাজ করতে চান তাহলে আপনার জার্নালিজম বিষয়ক কোনো সার্টিফিকেট না থাকলেও চলবে। তাছাড়া আপনার টেকনিক্যাল সেক্টরে খুব বেশি অভিজ্ঞতার-ও প্রয়োজন হবে না। আর আপনার যদি এই ধরনের কোনো সার্টিফিকেট বা অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে এটা আপনার জন্য একটি প্লাস পয়েন্ট। তবে ফ্রিলান্সার হিসেবে কাজ শুরু করার জন্য আপনার একটি চমৎকার পোর্টফোলিও থাকতে হবে সেই সাথে উপরে উল্লিখিত দক্ষতাগুলো থাকতে হবে। তবেই আপনি একজন টেকনিক্যাল ফ্রিল্যান্স রাইটার হিসেবে কাজ শুরু করতে পারবেন।
অন্যদিকে আপনি যদি কোনো কোম্পানিতে ফুল টাইম জব করতে চান সেক্ষেত্রে আপনাকে কোম্পানির সকল শর্ত পূরণ করতে হবে। বেশিরভাগ কোম্পানির প্রথম শর্ত থাকে যে ইংরেজি অথবা অন্য যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ থেকে ব্যাচেলর ডিগ্রি অর্জনকারী হতে হবে। এবং বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান টেকনিক্যাল সেক্টরে আপনার পূর্ববর্তী কাজের অভিজ্ঞতা বিবেচনা করে আপনাকে চাকরি প্রদান করবে। এক্ষেত্রে ইঞ্জিনিয়ারিং, মেডিকেল সাইন্স, কম্পিউটার সাইন্স সহ যে কোনো টেকনিক্যাল সেক্টরে কাজের পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকলে আপনার চাকরি পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
তবে আপনার প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রি থাকলেও সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে কাজের অভিজ্ঞতা। কেননা আপনার দ্বারা কোম্পানি কতোটুকু উপকৃত হবে তার ওপর নির্ভর করে আপনার স্যালারি নির্ধারণ করা হবে। তাই চাকরির আবেদন করার আগে অবশ্যই একটি আকর্ষনীয় পোর্টফোলিও তৈরি করা আবশ্যক।
একজন টেকনিক্যাল কনটেন্ট রাইটার হওয়ার পুরো পরিকল্পনা এখানে পুনরায় সংক্ষিপ্ত ভাবে তুলে ধরা হলো। যাতে করে আপনি খুব সহজেই পুরো প্লানটি সাজাতে পারেন এবং সেই অনুযায়ী কাজ করে একজন সফল টেকনিক্যাল কনটেন্ট রাইটার হতে পারেন।
প্রাথমিক পর্যায়ে যে কোনো স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাইটিং কোর্স করে নিতে হবে। এই কোর্স চাইলে আপনি অনলাইনে কিংবা অফলাইনে করতে পারবেন। এখানে কয়েকটি টপ রেটিং কোর্স উল্লেখ করা হলো।
আপনি যদি ভালো কোনো প্রতিষ্ঠান বা ক্লায়েন্ট এর সাথে কাজ করতে চান তাহলে অবশ্যই প্রফেশনাল ব্যক্তিবর্গের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে। এই দক্ষতা টি আপনাকে কাজ খুঁজে পেতে সবথেকে বেশি সাহায্য করবে। তাই রাইটিং কোর্স করার পাশাপাশি নেটওয়ার্ক বিল্ড আপ করার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
পোর্টফোলিও তৈরির জন্য নিজের ব্লগ সাইটে লেখালেখি করতে পারেন। ফ্রি তে একটি ব্লগ সাইট তৈরি করে সেখানে টেকনিক্যাল ব্লগ লিখলে আপনার ক্লায়েন্ট আপনার পোর্টফোলিও দেখে সন্তুষ্ট হবে৷ কেননা তখন ক্লায়েন্ট বুঝতে পারবে যে অনলাইন অডিয়েন্স এর জন্য কীভাবে লিখতে হয় সে সম্পর্কে আপনার খুব ভালো ধারনা আছে। তাই নিজের একটি আকর্ষনীয় পোর্টফোলিও তৈরির দিকে মনযোগ দিতে হবে।
টেকনিক্যাল কনটেন্ট রাইটিং এর ওপর কোর্স করলে আপনি এই সেক্টরের অনেকটা দক্ষ হয়ে উঠবেন। সেই সাথে তো পোর্টফোলিও তৈরি করা-ও হয়ে যাবে। এই পর্যায়ে আপনি চাকরি খুঁজতে শুরু করবেন এবং চাকরির জন্য আবেদন করতে থাকবেন। Indeed, Monster, Flexjobs, Career Builder, Nexxt, LinkedIn এই সাইট গুলোতে আপনার জন্য একটি উপযুক্ত চাকরি খুঁজতে পারেন।
নিয়মিত প্রচেষ্টা চালিয়ে গেলে যে কোনো সেক্টরে একটি সফল ক্যারিয়ার তৈরি করা যায়। টেকনিক্যাল কনটেন্ট রাইটার হিসেবে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে আপনাকে এর পেছনে ধৈর্য ধরে সময় দিতে হবে। তবে একবার এই সেক্টরের একটি সফল ক্যারিয়ার দাঁড় করাতে পারলে আপনাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হবে না। কেননা টেকনিক্যাল কনটেন্ট রাইটিং এর চাহিদা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
আপনার যদি টেকনোলজি বিষয়ে জানার এবং অন্যকে জানানোর আগ্রহ থাকে তাহলে সময় এখন আপনার। নিজের স্কিল ডেভেলপ করুন এবং এই সেক্টরে একটি সফল ক্যারিয়ার তৈরি করুন। আপনার নতুন পথযাত্রার জন্য শুভকামনা রইলো। ধন্যবাদ।
আমি শারমিন আক্তার। শিক্ষার্থী, ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, গাজীপুর। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 115 টি টিউন ও 29 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 6 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।