সেরা ১০ টি হ্যাকিং ডিভাইস, হ্যাকিং শিখতে হলে যেগুলো সম্পর্কে আপনাকে জানতে হবে

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম, আশাকরি সবাই ভালো আছেন। আজকের এই টিউনে নতুন আরেকটি টপিক নিয়ে আলোচনা করব। তাহলে চলুন আর কথা না বাড়িয়ে মূল টপিকে চলে যাই।

আপনি কি একজন হ্যাকার হতে চান? হ্যাঁ চেষ্টা করলে কোন কিছুই অসম্ভব কিছু না, সব কিছুই সম্ভব। কিন্তু তার জন্য প্রয়োজন পরিশ্রম এবং প্রচুর ধৈর্য। পরিশ্রম এবং ধৈর্য এই দুটি জিনিস থাকলে আপনার পক্ষে সব কিছুই সম্ভব। কিন্তু একটা কথা সবসময় মাথায় রাখতে হবে, আপনি হ্যাকার হোন আর অন্য কিছু এটা মেইন সাবজেক্ট না মেইন হলো আপনি কিছু হয়ে এমন কিছু করবেন না যাতে আপনাকে অপরাধী হতে হয়। মনে করুন আপনি একজন হ্যাকার হলেন, হ্যাকার হবেন এমন কোন উদ্দেশ্য নিয়ে যাতে আরেকজনের উপকার করতে পারেন।

হ্যাকিং জগতে আপনি কিছুই জানেন না তারপরে ও আপনার হ্যাকার হওয়ার খুব শখ। শর্টকাটে হ্যাকার হওয়ার জন্য আপনার প্রয়োজন হ্যাকিং ডিভাইস, যেখানে কোড লেখা থাকবে সফটওয়্যার বিল্ডআপ করা থাকবে আপনি শুধু ডিভাইসকে ব্যবহার করবেন অথবা হ্যাকিং জগতে আপনি কিছু অ্যাপ কোডিং অথবা সফটওয়্যার এর কাজ পারেন। তবে পরিপূর্ণ হ্যাকার হওয়ার জন্য আপনাকে হার্ডওয়্যার এবং হ্যাকিং ডিভাইসের উপর নলেজ রাখতে হবে, তাহলেই আপনি একজন পরিপূর্ণ হ্যাকার বা ইথিক্যাল হ্যাকার হতে পারবেন। আজকেই এই টিউনে এমনি কিছু টেকনোলজি এবং হ্যাকিং ডিভাইসের সঙ্গে আপনাদের পরিচয় করি দিবো।

১ম হ্যাকিং ডিভাইস: RFID-NFC SKIMMER

এই ডিভাইস দিয়ে মূলত আপনার ক্রেডিট কার্ড, ডেভিড কার্ড, ডিজিটাল কার্ডের ইনফরমেশন চুরি করা যায়। এই ডিভাইসের সংস্পর্শে আসলেই কার্ডের ইনফরমেশন নিমিষেই হ্যাক হয়ে যায়। তবে সবচেয়ে ভয়ংকর কথা হচ্ছে ডিভাইসটির আপডেট ভার্সন রয়েছে। মনে করেন আপনার মানিব্যাগ অথবা আপনার পকেটে আপনার কাঙ্ক্ষিত ডিজিটাল কার্ড, ক্রেডিট কার্ড, অথবা ডেবিট কার্ড রয়েছে, আপডেট ভার্সনে ৩ ফিট দূরত্ব থেকে ডিভাইসটি ব্যবহার করে ডিজিটাল কার্ডের ইনফরমেশন চুরি করা সম্ভব।

২য় হ্যাকিং ডিভাইস: WIPHONE

এই ডিভাইস দিয়ে আপনি সিম কার্ড ছাড়াও কল করতে পারবেন। সবসময় হ্যাকাররা ব্যবহার করে থাকে এই WIPHONE। এই ডিভাইসটি ব্যবহার করার জন্য এস আইপি অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে যেকোনো প্লাটফর্মে। এই ফোনের প্রত্যেকটি বাটন Programmable। এই ফোন দিয়ে আপনি একটানা ৮ ঘণ্টা কথা বলতে পারবেন। যেটি হ্যাকিং এর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই ফোন সহজেই কেউ ট্র্যাক করতে অয়ারে না।

৩য় হ্যাকিং ডিভাইস: FLIPPER ZERO

আমার দেখা বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ংকর ডিভাইস হলো FLIPPER ZER। এখন পর্যন্ত এমন কোন কোড বের হয়নি যে কোডের মাধ্যমে এই ডিভাইসটি Protect করা সম্ভব। ডিজিটাল যত ধরনের লক রয়েছে সব কিছুই খোলা সম্ভব এই ডিভাইসের মাধ্যমে। এই ডিভাইসের মাধ্যমে যে শুধু লক খুলতে পারবেন এমন কিন্তু না। যত গুলো ডিভাইস রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে পরিচালিত হয় প্রত্যেকটি রিমোট কন্ট্রোল ডিভাইস ট্র্যাক করে সে রিমোটের মতো ব্যবহার করতে পারবেন এই ডিভাইস দিয়ে যেমন ধরুন এই ডিভাইস দিয়ে আপনি Tour লক খুলতে পারবেন। এই ডিভাইস দিয়ে যত ডিজিটাল লক রয়েছে সব লক ট্র্যাক করা সম্ভব, তাছাড়া টিভির রিমোট বলেন, এসির রিমোট বলেন, আর জিবি কন্ট্রোলার বলেন যত রিমোট রয়েছে সব রিমোটের এক্সেস নিয়ে নিতে পারবে এই ডিভাইস। তবে এই রিমোট ব্যবহার করার জন্য অরিজিনাল রিমোট এই ডিভাইসের মধ্যে প্রবেশ করানোর পর এটি অরিজিনাল ডিভাইসের মতো কাজ করবে। যেহেতু এখন ডিজিটাল যুগ তাই একজন ব্যক্তিকে অনেক ধরনের রিমোট ব্যবহার করতে হয়। কোম্পানি মূলত এটি তৈরি করেছিল যাতে রিমোট বা অন্য কিছু ব্যবহার না করে একটি ডিভাইসের মাধ্যমে সবকিছু Access করতে পারে। কিন্তু পরবর্তীতে এই ডিভাইসটা এতটা বাজে কাজে ব্যবহার হবে তা হয়ত কোম্পানি বুঝতে পারে নি, ঠিক এজন্যই এই ডিভাইসটা বিভিন্ন দেশে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

৪র্থ হ্যাকিং ডিভাইস: MULTIPICK KRONOS

এই ডিভাইস দিয়ে ইনস্ট্যান্ট যত তালা আছে সবগুলো তালার চাবি বানিয়ে ফেলতে পারবেন অর্থাৎ আপনি যে কোন লক খুলতে পারবেন এই ডিভাইস দিয়ে। কিন্তু এই ডিভাইস সবার জন্য ব্যবহার যোগ্য নয়, ডিভাইসটি ব্যবহার করার জন্য অবশ্যই প্রফেশনাল কাউকে প্রয়োজন হবে।

৫ম হ্যাকিং ডিভাইস: DISTRUCT USB DEVICE

এই ডিভাইসের কাজ হলো যত ধরনের Storage ডিভাইস রয়েছে, যেমন হার্ডডিস্ক, SSD বা মেমোরি কার্ড এই Storage ডিভাইস থেকে পার্মানেন্ট ভাবে সবকিছু ডিলিট করার জন্য এই ডিভাইসটি ব্যবহার করা হয়। অনেকেই মনে করতে পারেন যে আমি তো ফরমেট দিলেই কাজটি হয়ে যাবে তাহলে আমি এই ডিভাইস ব্যবহার করব কেন। যারা এরকম ভাবছেন তাদের উদ্দেশ্য বলছি, আপনি একটু ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করেন বর্তমান বিশ্বে হার্ডডিস্ক, SSD বা মেমোরি কার্ড যত এরকম যত ধরনের Storage ডিভাইস আছে এগুলো থেকে ডাটা রিকভারি করা সম্ভব। মনে করেন আপনি আপনার পুরোনো ল্যাপটপ, PC, হার্ডডিস্ক অথবা মেমোরি কার্ড বিক্রি করেছেন এবং বিক্রয় করার আগে আপনি সেখান থেকে সবকিছু ডিলিট করে দিয়েছেন, কিন্তু আপনি যার কাছে বিক্রি করেছেন সে চাইলে কিন্তু আপনার সেই পুরোনো ডাটা গুলো ফিরিয়ে আনতে পারবে। ঠিক এ কারণে অনেক সুনামধন্য কোম্পানিগুলো তাদের চেঞ্জ করার প্রয়োজন হলে তারা ডিভাইস গুলো বিক্রি করত না পুড়িয়ে ফেলত অথবা নষ্ট করে দিত। কিন্তু আমরা সাধারণত মানুষের জন্য তো আর ডিভাইস গুলো নষ্ট করা সম্ভব না আবার আপনার ইনফরমেশন অন্যজনের কাছে চলে যাবে এটি ও চাচ্ছেন না আপনি তাই এই সকল সমস্যার কথা বিবেচনা করে আপনাকে ব্যবহার করতে হবে DISTRUCT USB DEVICE যার ফলে আপনার Storage Device থেকে আর কোন ডাটা রিকভার করা সম্ভব না।

৬ষ্ঠ হ্যাকিং ডিভাইস: GSM JAMMER

এই ডিভাইসটা মূলত GPS বা যত ধরনের ডিজিটাল সিগন্যাল রয়েছে সব সিগন্যালকে ব্লক করে দেয় এবং এই ডিভাইস অনেক বেশি ব্যবহার করা হয় প্রত্যেকটি দেশে। আপনি দেখে থাকবেন বিভিন্ন এয়ারপোর্ট অথবা বিভিন্ন ক্যান্টনমেন্ট এরিয়াতে আপনি যদি ডোম ক্যামেরা উড়াতে চান তাহলে কিন্তু পারবেন না। সেখানে এই ধরনের ডিভাইস দিয়ে তারা প্রোটেক্ট করে থাকে বিভিন্ন সিগন্যাল বা GPS কে তারা কিন্তু এই GPS এবং ডিজিটাল সিগন্যালকে ব্লক করে রেখেছে। তাছাড়া অনেক গুপ্তচর বা প্রাইভেট এরিয়া তে এই ধরনের ডিভাইস ব্যবহার করা হয়, যাতে করে ঐ এরিয়ার পারমিশন ছাড়া তাদের কোন সিগন্যাল আদান প্রদান না হয়।

৭ম হ্যাকিং ডিভাইস: DSTIKE DEAUTHER WATCH

এই ডিভাইস রিলিজ হওয়ার পর বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করেছিলো WiFi Hacking এর জন্য। ডিভাইসটি দেখতে Smart Watch এর মতো হলে ও এটি দ্বারা কারো পারসোনাল WiFi খুব সজেই হ্যাক করা যেত। কিন্তু একটা দুঃখের সংবাদ হলো এটি রিলিজ পাওয়ার পর যতটা মার্কেট পেয়েছিলো পরবর্তীতে এই ডিভাইসটা অনেকটাই অকেজো অর্থাৎ মার্কেট হারিয়ে ফেলেছে, কেননা প্রত্যেকটা রাউটার কোম্পানি তাদের আপডেট ভার্সনে এই ডিভাইসের প্রটেক্ট ব্যবহার করেছে যার কারণে এই ফিভাইসটি অনেক রাউটারেই এখন কাজ করে না।

৮ম হ্যাকিং ডিভাইস: LAWMATE CM-TC10

 

এই ডিভাইসটা মূলত গুপ্তচর ক্যামেরা হিসেবে কাজ করবে এটি এতটাই নিখুঁত হয়ে থাকে যা কিনা আপনি কাউকে ট্র্যাক করার জন্য ও ব্যবহার করতে পারবেন। গুপ্তচর হিসেবে এই ডিভাইসের ব্যবহারের কিছু কারণ রয়েছে। এই ক্যামেরা ৬০° অ্যাঙ্গেলে ভিডিও ধারণ করতে পারে। এই ক্যামেরা ৪° সেলসিয়াস ও সর্বোচ্চ ৯০° হিউ মিনিটেতে ব্যবহার করতে পারবেন অর্থাৎ গরম এবং ঠান্ডা সহ্য করার মতো এই ডিভাইসের ক্ষমতা রয়েছে। তার থেকে ও বড় কথা হলো এই ক্যামেরা আপনি ওয়ারলেস ক্যামেরা হিসেবেও ব্যবহার করতে পারবেন।

৯ম হ্যাকিং ডিভাইস: HIGH POWER BLUE POINTER

 

সাধারণভাবে বলতে গেলে এটি একটি লেজার লাইট, তবে সাধারণ লেজার লাইট ভাবলে ভুল করবেন এই লেজার লাইটের ক্ষমতা এত বেশি যে এই লেজার লাইট দিয়ে আপনি আগুন ধরাতে পারবেন। এই ডিভাইসটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয় সিগন্যাল প্রেরণ করার জন্য। এই ডিভাইসের মাধ্যমে কাউকে পাঁচ-ছয় মাইল দূরে ও সিগন্যাল দেওয়া সম্ভব।

১০ম হ্যাকিং ডিভাইস: POCKETCHIP

এটি দেখে আপনি যদি মনে করেন এটি কোন ধরনের মোবাইল ফোন তাহলে আপনার ভাবনা ভুল, এটি পরিপূর্ণ মোবাইল না তবে মোবাইল ন্যায়ের মতো কাজ করবে। এটি অনেক ফাস্ট কাজ করে এবং অ্যাটাকের ক্ষেত্রে এই ডিভাইসটা অনেক বেশি কাজ করে। এই ডিভাইসটা আকারে অনেক ছোট এবং পাতলা হওয়ায় অনায়াসে যেকোনো জায়গায় বা যেকোনো স্থানে এটি ব্যবহার করা যায়। এই ডিভাইসে ৫১২ জিবি RAM ব্যবহার করা হয়েছে এবং Storage হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে ৪ গিগাবাইট আশাকরি আপনি বুঝতেই পেরেছেন ১০ টি ল্যাপটপ বা কম্পিউটার একত্রিত করেই যে স্পিড আপনি পাবেন সেই স্পিডটা কিন্তু এই ছোট্র একটা ডিভাইস থেকে পাওয়া সম্ভব। এই ডিভাইসে যত বড়ই সফটওয়্যার হোক না কেন অনায়াসে রান করতে পারে।

হ্যাকিং শিখে যেমন আপনি অপরাধে লিপ্ত হতে পারবেন তেমনি ভালো কিছু করতে পারবেন। তাই আমি আশাকরি অপরাধ না করে ভালো কিছু করবেন। আজকের এই টিউনে হ্যাকিং এর ১০ টি ডিভাইস নিয়ে আলোচনা করেছি। আশাকরি এই ১০ টি হ্যাকিং ডিভাইস সম্পর্কে আপনারা ধারণা পেয়েছেন এবং বুঝতে পেরেছেন এই ১০ টি হ্যাকিং ডিভাইসের কাজ সম্পর্কে। আশাকরি আজকের এই টিউন থেকে ভালো কিছু নিতে পেরেছেন।

আজকের মতো এখানেই বিদায় নিলাম, দেখা হবে আবার নতুন কোন টিউনে নতুন কোন টপিক নিয়ে, ততক্ষণ পর্যন্ত সবাই ভালো থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

Level 7

আমি মাহবুব আলম তারেক। Sonic টিউনার, টেকটিউনস, সিলেট। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 3 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 95 টি টিউন ও 129 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 7 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 3 টিউনারকে ফলো করি।

I am a Graphics Designer, and have worked on a few other Web Sites.


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস