আসসালামু আলাইকুম কেমন আছেন সবাই, আশা করছি ভাল আছেন। বরাবরের মত হাজির হলার নতুন একটি টিউন নিয়ে।
আপনি ওয়াই-ফাই এর সাথে জড়িত কতগুলো ডিভাইসের নাম অবশ্যই শুনে থাকবেন যেমন, Wi-Fi Extender, Booster, Repeater। এটা আমরা সবাই জানি যে এই ডিভাইস গুলো ওয়াই-ফাই এর রেঞ্জ বাড়াতে ব্যবহৃত হয় কিন্তু এই ডিভাইস গুলোর পার্থক্যটা হয়তো জানি না। আজকে এই টিউনে আমরা এই তিন ডিভাইসের পার্থক্য জানব।
কাজটা এর নামের মতই, ওয়াই-ফাই এক্সটেন্ডার আপনার ওয়াই-ফাই এর রেঞ্জ বাড়াবে। এটি মূলত একটি ওয়ারড ডিভাইস। নির্দিষ্ট ক্যাবল দিয়ে এটি ওয়াই-ফাই এর রেঞ্জ বাড়ায়, হতে পারে Coaxial ক্যাবল, Ethernet ক্যাবল অথবা Powerline নেটওয়ার্কিং। পাওয়ারলাইন মূলত ভিন্ন একটা নেটওয়ার্ক স্ট্যান্ডার্ড আর নামটি ম্যানুফেকচারের থেকে এসেছে।
এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক যে ওয়াই-ফাই রাউটার ব্যবহার করলে আবার এখানে ক্যাবল কেন থাকবে। ইথারনেট ক্যাবল বা অন্য ক্যাবল দিয়ে ওয়াই-ফাই এক্সটেন্ড করার সুবিধা হচ্ছে যেহেতু ক্যাবল দিয়ে সিগনাল যাবে সেহেতু ইন্টারনেট স্পীড কমবে না এবং খুব বেশি ল্যাটেন্সি দেখা যাবে না। অন্যদিকে বৈদ্যুতিক তারের মাধ্যমে ঘরের অন্য রুম গুলোতে ওয়াই-ফাই সিগনাল বাড়ানোর প্রক্রিয়া হচ্ছে পাওয়ারলাইন নেটওয়ার্ক। সুতরাং বলা যায় ক্যাবলের মাধ্যমে রেঞ্জ বাড়ানো বেশ ভাল এখানে স্পীড কমে যাবে না।
আপনার রাউটারের সাথে ক্যাবল কানেক্ট করে এক্সটেন্ডার দিয়ে অন্য বিল্ডিং এ পর্যন্ত ইন্টারনেট ইউজ করতে পারবেন। তবে এটা স্বাভাবিক ক্যাবলের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে স্পীড কিছুটা কমতে থাকবে।
ওয়াই-ফাই রিপিটার, ওয়াই-ফাই এক্সটেন্ডারের মতই কাজ করে তবে এখানে ক্যাবল ব্যবহার হয় না। এটা ক্যাবল দিয়ে রাউটারের সাথে কানেক্ট করতে হবে না। যেকোনো জায়গায় রেখে ইন্টারনেট রেঞ্জ বাড়াতে পারবেন।
তবে ওয়ারলেস হওয়াতে একটা সমস্যা আপনাকে ফেস করতে হবে সেটা হচ্ছে এখানে আপনার ওভারঅল ব্যান্ডউইথ কমে যাবে। একই সাথে ল্যাটেন্সিও বাড়বে। এটা একই ফ্রিকোয়েন্সি তে ডেটা পাঠাবে বলে স্পীড কমে যাবে।
এর সমাধানও আছে মডার্ন রাউটার গুলোতে রয়েছে স্পেসিফিক ব্যান্ড এবং ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহারের সুযোগ যাকে বলে ব্যাকচ্যানেলিং। আর এর মাধ্যমে রাউটার থেকে রিপিটারে ভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সিতে ডেটা পাঠানোর চেষ্টা করা হয়৷ ব্যাকচ্যানেল মাল্টিপল ব্যান্ড ইউজ করায় রিপিটারের বিভিন্ন ইস্যু ফিক্স হয়ে যায়।
Wi-Fi Booster একই সাথে এক্সটেন্ডার এবং রিপিটার উভয়ের টার্ম ব্যবহার করে। এমনকি অনেক ওয়াই-ফাই রিপিটারে ক্যাবল কানেক্ট করারও ব্যবস্থা থাকে।
Devolo Magic 2 WiFi next Whole Home Powerline Kit এর মত হার্ডওয়্যার একই সাথে পাওয়ারলাইন এবং ওয়াই-ফাই ব্যান্ড ব্যবহার করে, মেশ নেটওয়ার্ক তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। আর এই মেশ ওয়াইফাই এবং ওয়াই-ফাই রিপিটার, ওয়াই-ফাই বুস্টারেরই অংশ।
টার্ম যেমন বা যাই হোক আপনি আগে আপনার সমস্যা আইডেন্টিফাই করবেন এবং চাহিদা মত ডিভাইস কিনে রাউটারের সাথে কানেক্ট করবেন।
এটা অনেকের কাছে অপরিচিত লাগতে পারে। Wi-Fi Bridge মূলত Wi-Fi আন-সাপোর্ট ডিভাইস এবং ওয়াই-ফাই নেটওয়ার্কের মধ্যে মধ্যস্থতা করে। ধরুন আপনার বাসায় একটি টিভি আছে যাতে ওয়াই-ফাই সাপোর্ট করে না, ইথারনেট দিয়ে কানেক্ট করতে হয়। সেক্ষেত্রে আপনি যেটা করতে পারেন, আপনার টিভিকে একটি ওয়াই-ফাই এক্সেস পয়েন্টে কানেক্ট করতে পারেন এবং সেই এক্সেস পয়েন্টকে কানেক্ট করতে পারেন রাউটারের সাথে। এই প্রক্রিয়াটিই হচ্ছে Wi-Fi Bridge।
বর্তমানে প্রায় সব ডিভাইসের সাথেই ওয়াই-ফাই থাকায় এটি আর তেমন দেখা যায় না।
আমাদের অনেকের মধ্যেই এই কমন বিষয় গুলো নিয়ে কিছুটা কনফিউশন থাকে, আশা করছি আজকের এই টিউনের মাধ্যমে আপনি বিষয় গুলো সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পেয়েছেন।
আজকে এ পর্যন্তই শীঘ্রই দেখা হবে নতুন কোন টিউনের সাথে ততদিন ভাল থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।
আমি সোহানুর রহমান। সুপ্রিম টিউনার, টেকটিউনস, ঢাকা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 627 টি টিউন ও 200 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 118 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
কখনো কখনো প্রজাপতির ডানা ঝাপটানোর মত ঘটনা পুরো পৃথিবী বদলে দিতে পারে।