ক্লাউড স্টোরেজ এর জন্য কোনটা সবচেয়ে ভাল? google drive vs onedrive vs dropbox vs icloud

আশাকরি সবাই ভাল আছেন। ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন এটাই আমার প্রত্যাশা। সুস্থতা আল্লাহর অনেক বড় নেয়ামত। আর অসুস্থতা পাপ মুক্তির একটা উপায়। তাই সুস্থ অসুস্থ উভয় অবস্থায় আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করা উচিত। আজকে আমরা যেই বিষয় টি নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি, সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই অবশ্যই মনোযোগ দিয়ে পড়বেন আশা করি।

বিগত কিছু সময়ে ক্লাউড সার্ভিস এখন সবার হাতের নাগালে চলে এসেছে। ক্লাউড সার্ভিস আসলে কি? এটা তেমন কিছু না। শুধু মাত্র কিছু ভার্চুয়াল স্টোরেজ যেখানে আপনি আপনার কিছু প্রয়োজনীয় ফাইল সংরক্ষন করতে পারবেন আবার প্রয়োজনে ডিলিট ও করতে পারবেন। প্রয়োজনে ফাইলগুলো পুনরুদ্ধারও করতে পারবেন। আর এটা এখন এতটাই নমনীয় হয়েছে যে, কিছু বছর আগেও এটা এক রকম অসম্ভব ছিল।

লক্ষ করার বিষয় এটাই যে, অধিকাংশ মানুষ ক্লাউড স্টোরেজ কোনটা ভাল সেটা যাচাই না করে একাউন্ট করে থাকে। কিন্তু একটু জেনে নিলে তার জন্য ভাল হত। অধিকাংশ মানুষই আন্দাজে যেকোনো একটা ক্লাউড স্টোরেজে একাউন্ট করে ফেলে।  তো আমি আজকে আপনাদের সুবিধার্থে ৪টি জনপ্রিয় ক্লাউড স্টোরেজ এর ব্যাপারে কিছু তথ্য তুলে ধরবো যেন আপনার উপকৃত হতে পারেন। এগুলো হল.

  • Google Drive,
  • Microsoft OneDrive,
  • Dropbox and,
  • Apple iCloud Drive.

চলুন আর কথা না বাড়িয়ে এবার শুরু করে দিই.

Google Drive

আমরা আজকের আর্টিকেল শুরু করতেছি গুগলের নিজস্ব ক্লাউড স্টোরেজ গুগল ড্রাইভকে দিয়ে। কেননা একজন মানুষ গুগল ড্রাইভকে চায় কারণ এটা গুগলের ইকোসিস্টেমের সাথে সরাসরি সংযুক্ত। বিশেষ করে আপনি যদি অ্যান্ড্রয়েড ইউজার কিংবা ক্রোম os ব্যবহারকারী হন তাহলে ক্লাউড স্টোরেজ হিসেবে আপনার প্রথম পছন্দ হওয়া উচিত গুগল ড্রাইভকে।

গুগল ড্রাইভ ব্যবহারের সুবিধা

এটা যখন ব্রাউজারে আসে তখন থেকেই অন্যান্য ক্লাউড স্টোরেজ থেকে এটা খুবই ভাল পারফর্মেন্স দেখিয়েছে। আপনি কিছু কৌশল ব্যবহার করে অনেক ফিচার ব্যবহার করতে পারবেন গুগল ড্রাইভে। আপনি যদি এক গুচ্ছ ফাইল এক সাথে আপলোড করতে চান তাহলে শুধুমাত্র ব্রাউজার অপেন করে ওয়ান ড্রাইভে ঢুকুন আর সাধারণভাবে ড্রাগ এবং ড্রপ করুন আপনার ফাইলগুলো। দেখুন সব ফাইল এক সাথে আপ্লোড শুরু হয়ে যাবে।

gdrive

আপনি যদি কখনও কোনো প্রয়োজনে সেখান থেকে কোনো ফাইল ডাউনলোড করতে চান। তাহলে সেখান থেকে ফাইলের উপর মাউসের রাইট বাটন ক্লিক করুন দেখুন ডাউনলোড অপশন  পেয়ে যাবেন। শুধু ব্রাউজার নয়। আপনি যদি চান এটা ডেস্কটপ এপ্লিকেশন হিসেবে ব্যবহার করতে তাহলে সেটাও করতে পারবেন। সেখানে আরো কিছু সহজ অপশন পাবেন।

gdrive backup and syncস্টোরেজ স্পেস

আপনি গুগল ড্রাইভে সাইন ইন করলেই আপনি পেয়ে যাবেন ১৫জিবি ফ্রী স্টোরেজ। স্টোরেজ। এখানে যা খুশি আপ্লোড করতে পারবেন। তবে হয়ত কপিরাইট কোনো কন্টেন্ট আপ্লোড করতে পারবেন না।

আপনার যদি আরও স্পেস এর প্রয়োজন তাহলে আপনি সেটাও প্রতিমাসে  কিছু ডলার দিয়ে কিনে নিতে পারবেন।

gdrive storage space

গুগল ড্রাইভের ইকোসিস্টেম

যেহেতু এর ইকোসিস্টেম গুগলের ইকোসিস্টেমের সাথে সংযুক্ত তাই গুগলের অন্যান্য সার্ভিস যেমন গুগল ফটোস, ডক্স, শীটস, স্লাইডস এবং প্লে মিউজিক ইত্যাদি ব্যবহার করা যায় কোনো প্রকার সমস্যা ছাড়াই। এছাড়াও এর গুগল সুইট সার্ভিসের জন্য আপনি গুগল ড্রাইভকে আপনার পছন্দের লিস্টে রাখতে পারেন।

Microsoft OneDrive

এই টিউনের পরবর্তী স্টোরেজ হিসেবে আমি ওয়ান ড্রাইভকে অফার করছি। কারণ এরও গুগলের মত অনেক ফিচার রয়েছে। তাছাড়া এর ইকোসিস্টেমও গুগলের কাছাকাছি। তাই আপনি যদি মাইক্রোসফট ব্যবহারকারী হয়ে থাকেন তাহলে আমি আপনাকে ওয়ান ড্রাইভ সাজেস্ট করবো।

ওয়ান ড্রাইভ ব্যবহারের সুবিধা

আপনি যদি উইন্ডোজ ১০ ব্যবহারকারী হয়ে থাকেন তাহলে ওয়ান ড্রাইভ সেটাপ খুবই সহজ। কারণ মাইক্রোসফট এর লেটেস্ট অপারেটিং সিস্টেমের সাথে এই ক্লাউড স্টোরেজ প্রি-ইনস্টল করা থাকে। আপনি উইন্ডোজ ১০ব্যবহারকারী হলে ইতোমধ্যেই ওয়ান ড্রাইভ ব্যবহার করতে পারবেন।

আর আপনি যদি উইন্ডোজ ১০ ব্যবহারকারী না হন তাহলে মাইক্রোসফট এ একটা একাউন্ট খুললেই এর ব্যবহারকারী হয়ে যেতে পারবেন।

microsoft onedrive

ব্যবহারে দিক দিয়ে এটা গুগল ড্রাইবের মতই দক্ষ। এটা মাইক্রোসফট অফিস সুইটকে এক্সেস করতে দেয়। এছাড়াও এর রয়েছে সিঙ্কিং ফিচার।

যদিও ওয়ান ড্রাইভ গুগলের ব্রাউজার ব্রাউজার এক্সপেরিয়েন্সের মত এত সুপার না। কিন্তু তবুও অনেক ভালই। এছাড়া ওয়ান ড্রাইবের রয়েছে বিভিন্ন নতুন ফিচার যা ব্যবহারকারীদের আকৃষ্ট করে। যেমন, Files On Demand feature ইত্যাদি। ইউজার এক্সপেরিয়েন্স খুবই ভাল।

microsoft onedrive

Storage Space

আগে তো ওয়ান ড্রাইভে সাইন আপ করলেই ১৫জিবি স্পেস ফ্রী  দিয়ে দিতো। কিন্তু এখন মাত্র ৫জিবি দেয়। কিন্তু আপনি চাইলে সেটা বাড়াতে পারবেন।

microsoft onedrive

তবে সেটাও আবার রেফারেলের মাধ্যমে। প্রতি রেফারেলে ০.৫ জিবি। মানে বাকি ১০জিবির জন্য আপনার ২০জন রেফারেল লাগবে।

এছাড়াও এর বিভিন্ন বাৎসরিক প্যাকেজ রয়েছে।

microsoft onedrive pricing

ইকোসিস্টেম

ইকোসিস্টেম খুবই ভাল। ঐতো অনেকটা গুগলের মতই। তাই বেশি কিছু বলার দরকার আমি মনে করি না।

Dropbox

ড্রপবক্স সব চেয়ে পুরাতন এবং অন্যতম প্রধান একটি ক্লাউড স্টোরেজ। গুগল ড্রাইভ, আই ক্লাউড, ওয়ান ড্রাইভ সবগুলোর থেকে ইকোসিস্টেমের দিক দিয়ে এটা ইউজারদেরকে কম আকৃষ্ট করে। তবে  এটা অনেক ফ্লেক্সিবলও। অসংখ্য ফিচার রয়েছে এর।

ড্রপবক্সের সুবিধা

ড্রপবক্স অনেক পুরাতন। তাই এর অসংখ্য ফিচার রয়েছে। এর মাধ্যমে আপনি সরাসরি ওয়েবসাইট বা ক্লায়েন্টের মাধ্যমে ডাটা আপ্লোড ও সিংক করতে পারবেন। এছাড়া এর রয়েছে ফাইল রিকভারি এবং ভার্সন হিস্টোরি সিস্টেম। যা আপনার ফাইলকে খুব সহজেই ট্র্যাক করতে সাহায্য করবে। এর ফুল্ডার মেনেজমেন্টও অনেক সহজ।

কিন্তু ড্রপ বক্সের উপযুক্ত একটি অফিস সুইটের অভাব আছে।

dropbox paper

স্টোরেজ স্পেস

কিন্তু দুঃখজনক হলেও এটাই সত্য যে আপনি ড্রপবক্সে একাউন্ট করলে মাত্র ২জিবি স্পেস ফ্রিতে পাবেন। তবে হ্যা আরও ১৬জিবি বাড়াতে পারবেন ফ্রিতে। কিন্তু এর জন্য আপনাকে আরও ৩২টা রেফারেল লাগবে।

dropbox plusতবে এর প্রিমিয়াম প্যাকেজও আছে। নিচের ছবিটা দেখলেই বুঝতে পারবেন। ]

dropbox plans

ইকোসিস্টেম

যদিও এটা একটা সতন্ত্র স্টোরেজ। কিন্তু এর কিছু অভাব আছে ইকোসিস্টেম ইন্টিগ্রেশনের। তবে ড্রপবক্স এর অনেক বড় প্লাটফর্ম আছে। এর প্লাটফর্ম উইন্ডোজ থেকে লিনাক্স পর্যন্ত। যদিও এটা অতটা পরিপূর্ণ সার্ভিস দেয় না। তবে এর অনেক দারূন অপশন আছে যা আপনাকে আকৃষ্ট করবে.

Apple iCloud Drive

এই পর্যায়ে আমি আপনাদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিবো আই ক্লাঊড ড্রাইভের সাথে। কয়েক বছর আগেও এটা খুবই দূর্বল সার্ভিস ছিল। কিন্তু অ্যাপল প্রতিনিয়তই এর উন্নয়ন করার চেষ্টা করতেছে। এবং বর্তমানে এই ক্লাউড খুবইল ইউজার ফ্রেন্ডলি। সর্বশেষ রেজাল্ট অনুযায়ী অল্প কিছু লেকিং থাকা সত্ত্বেও বর্তমানে খুব ভাল সার্ভিস প্রদান করতেছে।

অ্যাপল ক্লাউডের সুবিধা

আপনি যদি আইওএস বা ম্যাক অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনি এটার সাথে পরিচিত। অ্যাপল ফোনে আই ক্লাউড অন করা খুবই সহজ। আর ফিচার গুলোও খুব সহজেই এক্টীভ করতে পারবেন। একবার অন করলেই আপনার ফাইল গুলো অটোমেটিক ক্লাউডে সিংক হবে।

আপনি যদি অ্যাপল ব্যবহারকারী না হল তাহলে icloud এ একটা একাউন্ট করে নিন। আর উপভোগ করুন তাদের সার্ভিস।

icloud

স্টোরেজ স্পেস

এইটার স্পেস এর কথা বললেও আপনি খুশি হতে পারবেন না। কারণ খুবই কম। কারণ অন্যান্য সার্ভিস রেফারেল দিয়ে হলেও আপনাকে ১৫জিবি পর্যন্ত স্টোরেজ ফ্রিতে দেয়। কিন্তু অ্যাপলে ৫জিবি ফ্রী। এটা ফিক্সড। তবে হ্যা আপনি কিনে প্রিমিয়াম প্যাকেজ চালাতে পারবেন। নিচের ছবির মত প্যাকেজ পাবেন আপনি সেখানে।

icloud storage space

ইকোসিস্টেম

এটা সবাই জানে যে, অ্যাপল সব সময় চায় সকল লোক তাদের সব সার্ভিস ব্যবহার করুক। তাই তাদের ইকোসিস্টেমে তাদের সব সার্ভিস পাবেন। আপনি যদি ios বা mac os ব্যবহারকারী  হন তাহলে আপনি ভাল এক্সপেরিয়েন্স পাবেন। এছাড়া আপনি উইন্ডোজ ব্যবহারকারী হলেও ভাল ইকোসিস্টেম পাবেন। কিন্তু যদি অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারী হন তাহলে সব অপশন পাবেন না।

যাইহোক অনেক কথা বলে আপনাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করলাম। ভুল হলে ক্ষমা করবেন।  নিচে সব ড্রাইবের স্টোরেজ প্যাকেজ দিয়ে দিচ্ছি. যার যেই কাজের জন্য যেটা সুবিধা জনক সেটা ব্যবহার করুন।

ফ্রী স্টোরেজ সার্ভিস

পেইড সার্ভিস

প্লাটফর্ম

এখন আপনার ইচ্ছা। কোনটা ব্যবহার করবেন।

তো আজকের মত বিদায়। ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন প্রযুক্তিকে ভালবাসুন আর প্রযুক্তির সাথেই থাকুন।

আল্লাহ হাফিজ

ফেসবুকে আমি 

Level 1

আমি মোঃ আশিকুর রহমান সরল। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 8 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 83 টি টিউন ও 102 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 12 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।

আমি একজন প্রযুক্তি প্রেমী।কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এ লেখাপড়া করছি।পৃথিবীকে নতুন কিছু করে দেখাতে চাই। My Website


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

Level 1

Thanks for sharing.

অনেক ধন্যবাদ। আজ আপনার একটা পরানো পোষ্ট (https://www.techtunes.io/wordpress-plugins/tune-id/471429) এ গিয়ে এ লিংক অনুযায়ী Plugin Download করতে পারলাম না। সম্ভবত সরিয়ে ফেলা হয়েছে। যদি দয়া করে আবার দেয়া যায় খুব উপকৃত হবো।

    welcome… please knock me on facebook. fb.com/no1sorol
    কারণ যেকোনো ড্রাইভেই আপ্লোড দেই না কেন, লাইসেন্সের কারণে সব জায়গা থেকে রিমোভ করে দেয়া হয়। তাই ফেসবুকে নক করুন।