আস সালামু আলাইকুম, আশা করি আপনারা সবাই অনেক অনেক ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ,আমিও ভাল আছি। তবে হঠাৎ করেই কেন জানি ঘুমটা একটু বেড়ে গেছে। যাই হোক ঘুম বাড়লেই কি আর আপনাদেরকে ভুলে গেলে চলবে? আপনারাই তো আমাদের আপনজন।
টেকনোলজি বিষয়ে আপনাদের সামান্য হেল্প করতে পারলেই আমাদের নিজেদের কাজকে স্বার্থক হয়েছে বলে মনে করি। তাই আজকে আপনাদের মাঝে চলে এলাম গুরুত্বপূর্ণ একটি টপিক্স নিয়ে। আজকে আমাদের কিছু ভুল ধারণা শুধ্রে নেওয়া যাবে বলে আশা করি। চলুন আর দেরি না করে আজকের টিউনের বিষয়ে চলে যাই।
প্রতিটি নতুন প্রযুক্তি রিলিজ হলেই আমরা দেখি যে, তারা আগের থেকে গতিশীল আর ভাল পারফর্মেন্স পাওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। কারণ আর কিছু নয় এটাই আমাদের চাওয়া আর কোম্পানির প্রোডাক্টের চাহিদা বাড়ানো। আমরা কখনই কোনো ট্রেইন আপগ্রেড হলেও যদি স্পিড না থাকে সেটাতে উঠতে চাই না... তেমনি স্লো ডিভাইসও কেউ কিনতে চাইবে না। তাই কোম্পানিগুলো সব সময়ই স্পীড বাড়ানোর চেষ্টা করে।
আমরা অনেকেই মোবাইলের স্পিড বাড়ানোর টিপ্স এর জন্য গুগলে সার্চ করি। আর কখনো বা সত্যি টিপ্স পাই আবার কখনো বা ভুল তথ্য নিয়ে বাসায় ফিরে যাই। তো চলুন আজ আপনাদের সাথে শেয়ার করবো যেই মেথডগুলো আমরা ব্যবহার করলে আপনার ফোনের গতি বাড়তে পারে আর কোনগুলো মিথ্যা,তার জাল। তো চলুন জেনে নিই ...
আমরা সবাই এটির সাথে পরিচিত যে, আমরা যখন আমাদের মোবাইলের হোম বাটনে ক্লিক করি তখন অনেকগুলো শেষ না হওয়া এপ্স এর লিষ্ট দেখানো হয়।এটা কমন একটা বিষয় যে, ডেস্কটপ কম্পিউটিং সিস্টেম এর ক্ষেত্রে একাধিক এপ্স রান করানো থাকলে সেক্ষেত্রে কম্পিউটারটি স্লো হয়ে যায়। যেমন, গুগল ক্রোম ব্রাউজারের অনেকগুলো ট্যাব এক সাথে ওপেন করে রাখলেও ল্যাপটপ স্লো হয়ে যায়।
কিন্তু এই একই লজিক মোবাইল ডিভাইসের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। এন্ড্রয়েড আর আইওএস উভয় ডিভাইসেই রিসেন্ট এপ্স লিস্ট নামে একটা লিষ্ট আছে। যেটা আমরা হোম বাটনে ক্লিক করলে দেখতে পাই যে, যেই এপ্স গুলো কিছুক্ষণ আগে আমরা অন করেছিলাম সেগুলোর একটা লম্বা লিস্ট।
আপনি দেখতে পারবেন অনেক সময় সেই লিস্ট খালি করা সত্ত্বেও আপনার ফোনের স্পীড একটুও বাড়তেছে না। যেটা হয় সেটা হচ্ছে মনের সান্ত্বনা। এমনকি অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় এর উল্টো কাজ করতেছে। মানে স্পিড আরও স্লো হয়ে গেছে। এর কারণ কি? এর কারণ হচ্ছে, এই উভয় প্রকার মোবাইলেই এমন সব পদ্ধতি এপ্লাই করা হয়েছে যা আপনার মোবাইলের র্যামকে খুবই বুদ্ধিমত্তার সাথে রক্ষনাবেক্ষণ করে।
মানে যখন র্যাম খালি করার দরকার তখন অটোমেটিক খালি করে দেয়। এটা প্রথমে আইওএস সিস্টেমে প্রয়োগ করা হয়। আসলে আমরা যেই এপ্সগুলো ক্লোজ না করেই বেরিয়ে আসি প্রকৃতপক্ষে সেগুলো আর রানিং থাকে না। আর রানিং না থাকলে তো র্যাম ও ব্যবহার হয় না। আসলে আমরা যেগুলো ক্লোজ না করে বেরিয়ে আসি সেগুলো সাস্পেন্ডেড স্ট্যাট হিসেবে আপনার মেমরিতে সেভ হয়ে থাকে সাময়িকভাবে।
যখন আবার ওপেন করা হয় তখন র্যাম ইউজ হয়। তার মানে আমরা যেটা করি সেটা ভুয়া। যদি আমরা এগুলো ক্লোজ না করি তাহলে ফোনের পারফর্মেন্স এবং ব্যাটারী লাইফও ভাল থাকে। যদিও এন্ড্রয়েডের লেটেস্ট ভার্শনে বর্তমানে মেমরী ম্যানেজমেন্ট এ কিছুটা ত্রূটি রয়েছে।
বর্তমানে যেই এপ্স গুলো এন্ড্রয়েড এ বেশি চলে সেগুলো হচ্ছে স্পিড বুস্টার। সবাই মনে করে এটা সোনার হরিণ। এতে ক্লিক করলেই ফোন বিমানের স্পিডে উড়বে। তাই সবাই ইন্সটল করি তাই না? কিন্তু আমরা একটূ আগেই জেনেছি যে, ফোনের নিজেরই র্যাম বা মেমরী ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম আছে। তাই আপনি যদি আলাদা কোনো সফটওয়্যার ব্যবহার করেন স্পিড বাড়ানোর জন্য তাহলে দেখতে পারবেন র্যাম বুস্ট করার জন্য বেশ কিছু আলাদা লেভেল রয়েছে।
এগুলো ব্যবহারের ফলে অনেক সময় ফোনের অনেক প্রয়োজনীয় অনেক সিস্টেমকে বন্ধ করে দেয়। ফলে সেটা আপনার ফোনের সিকিউরিটির বা ব্যক্তিগত তথ্যের জন্য হুমকির কারণ হতে পারে। হয়ত স্পিড সামান্য বাড়বে। কিন্তু সেটা আপনার ফোনের জন্য খারাপও হতে পারে। যাইহোক আপনার ফোনে এমন এপ্স রাখবেন কি না সেটা আপনার ব্যাপার।
চলুন তো কিভাবে স্পিড বাড়াতে পারেন সেগুলোর একটু টিপ্স দেয়ার চেষ্টা করি।
আপনার ফোন হঠাত করেই বাজে পারফর্মেন্স দেখাচ্ছে? ব্যাটারিতে চার্জ কম থাকছে। আসলে এর মানে হতে পারে যে, অন্যকোনো এপ্স আপনার ফোনের কোনো ফাংশনে সমস্যা সৃষ্টী করেছে। তাই আপনি আগে খুঁজে বের করুন যে, কোন সফটওয়্যারটি এমন সমস্যা করতে পারে। জানি আপনি নিজে পারবেন না তাই বেশ কয়েকটি সফটওয়্যার এর নাম বলতেছি এগুলো দিয়ে চিহ্নিত করুন যে, কোন সফটওয়ার টি সমস্যা করতেছে। আপনি চিহ্নিত করার জন্য
Wakelock Detector,
GSam Battery Monitor
Watchdog Task Manager
Carat
Greenify ইত্যাদি সফটওয়ারগুলো ব্যবহার করতে পারেন।
যদি এত কিছু করার পর যদি না হয় তাহলে এপ্স টি আনইন্সটল করে দিন। এরপরও যদি সমস্যায় পড়েন তাহলে সর্বশেষ ফ্ল্যাশ বা রিসেট করুন।
আমাদের অনেকের স্বভাবই এখন ফোন মেমরি ভরে রাখা। ফোন মেমরি একটু বেশি দেয় বলে আমরা এখানেই সব রেখে দেই। কেন গান, মোভি,ছবি এগুলো এক্সটার্নাল মেমরিতে রাখলে প্রবলেম কি? ফোন তার প্রয়োজনে অনেক সময়ই ডিফল্টভাবে ফোন মেমরি ব্যবহার করে। তাই অবশ্যই ফোন মেমরি খালি রাখুন।
অনেক সময় দেখা যায় যে, আপনি একটা এপ্স আনইন্সটল করেছেন। সেটা আবার পুনরায় ইনস্টল করার সময় বলতেছে যে, পর্যাপ্ত জায়গা নেই। তাহলে প্রথমেই ফোন মেমরিতে জায়গা করুন। এরপরও যদি বলে যে, জায়গা নেই তাহলে ফোনের সব ডাটা ব্যাকাপ নিয়ে রিসেট বা ফ্ল্যাশ করুন।
এটা খুবই কার্যকরি। আপনার ফোন যখন কাজ কম করবে তখন আপনার ফোনকে রিস্টার্ট দিন। আশা করি স্পিড বেড়ে যাবে। আসলে এই প্রব্লেমগুলো হয় মূলত সফটওয়্যার গুলোর কারণেই। যদিও ফোনের মেমরি ম্যানেজমেন্ট অনেক ভাল কিন্তু সফটওয়্যারগুলো এই ম্যানেজমেন্ট সিস্তেম মাঝে মাঝেই ব্রেক করে ফেলে।
আশা করি আজকের টিউনটি আপনাদের কাছে ভাল লেগেছে। ভাল লাগলে জানাবেন।ভুল হলে ক্ষমা করবেন। আজকের মত বিদায়। ভাল থাকুন সুস্থ থাকুন, প্রযুক্তিকে ভালবাসুন আর প্রযুক্তির সাথেই থাকুন।
আল্লাহ হাফিজ
আমি মোঃ আশিকুর রহমান সরল। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 8 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 83 টি টিউন ও 102 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 12 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমি একজন প্রযুক্তি প্রেমী।কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং এ লেখাপড়া করছি।পৃথিবীকে নতুন কিছু করে দেখাতে চাই। My Website