হ্যালো টেকটিউনস কমিউনিটি, কেমন আছেন সবাই? প্রযুক্তির নিত্য নতুন নাস্তার ভেতর বেশ খোশ মেজাজে আছেন আশা করি। আমি আবারও ঠিক ব্যতিক্রম একটি টিউন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির।
জীবন চলে জীবনের গতিতে। কিন্তু এই সম্পূর্ণ জীবনে আমাদের এতো কিছু করার পেছনে মূল লক্ষ্য কি বলুন তো একটু ভেবে? সুখ খুঁজে ফেরা! আমি জানি আপনি একমত হবেন। কিন্তু এই ব্যস্ততার মধ্যে আমরা কতোটুকু নিজেকে সুখি করতে পারি।
আমরা প্রতিনিয়ত সুখের সন্ধানে একের পর এক কাজ করে যাচ্ছি। কিন্তু আমরা কি আসল সুখের দেখা আজও পেয়েছি। প্রতিনিয়ত নিজেকে নতুন সব পরিবেশ এবং প্রতিকূলতা পাড়ি দিতে দিতে আপনি নিজেকে হারিয়ে ফেলিন নি তো? কি একটু কি মনে হয়েছে নিজেকে নিয়ে আরও একটু ভাবার আছে। এই পরিবার, সমাজকে দেওয়ার অনেক কিছু আছে। আপনি শেষ হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে যদি আপনার অস্তিত্ব এই সুন্দর পৃথিবী থেকে শেষ হয়ে যায় তাহলে এতো কিছু করে কি লাভ? 😯
আমি অনেককে একটা প্রশ্ন করি মাঝে মাঝে যে আপনি যদি আজকে মারা যান তাহলে পৃথিবীকে আপনি কি দিলেন আর কি পেলেন এই জীবনে? আপনি কি পৃথিবীর মাঝে বেঁচে থাকতে চান না! নাকি কালের গর্ভে নিজে হারিয়ে যাবেন? একটু চিন্তায় ফেলে দিলাম নাকি?
যাইহোক চিন্তাই ফেলানো আমার কাজ না, তবে একটু ভেবে দেখবেন অনুরোধ রইলো। 💡
আজকে আমি অতি প্রাচীন কিন্তু আধুনিক জীবনের নতুন সংস্করণ একটি পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করবো, যেটা আপনাকে সুখে করে তুলবে ধীরে ধীরে। বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যায় দেখা গেছে ধ্যান আপনাকে দিবে নতুন জীবন, সুন্দর কর্ম পরিকল্পনা এবং ক্লান্তিহীন একটি সুখি জীবন। কি জানবেন না তাহলে সেই ধ্যান সম্পর্কে। আসুন আজ আমরা ধ্যানের অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে জানবো। আর সেই সাথে বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণে কেন ধ্যান এই আধুনিক জীবনে খুব বেশি দরকার সেটাও জানবো। 😕
মেডিটেশন হলো সচেতনভাবে দেহ মন এবং মস্তিষ্ককে শিথিল করার আধুনিক বৈজ্ঞানিক এবং সহজ প্রক্রিয়া। মেডিটেশন হচ্ছে মনের ব্যায়াম। নীরবে বসে সুনির্দিষ্ট অনুশীলন বাড়ায় মনোযোগ, সচেতনতা ও সৃজনশীলতা। মনের জট যায় খুলে। হতাশা ও নেতিবাচকতা দূর হয়। প্রশান্তি ও সুখানুভূতি বাড়ানোর পাশাপাশি ঘটে অন্তর্জাগৃতি। 😛
আমরা প্রতিনিয়ত কাজের মধ্যে এতোটা আবদ্ধ থাকি যে নিজেকে নিয়ে ভাবার সময় পাই না। নিজেকে সুখি করার কোন প্রচেষ্টা করি না। প্রতিনিয়ত বাস্তবতা এবং টেনশন আমাদেরকে ঘিরে ধরে।
কিন্তু যদি আমাদের প্রতিদিন মাত্র ৩০/৪০ মিনিট সময় নিয়ে নির্জনে একাকী নিজেকে প্রশান্ত করার চেষ্টা করেন তাহলে বেড়ে যাবে আপনার কর্ম উদ্দীপনা, চিন্তা শক্তি। সেই সাথে দৈনন্দিন কাজে ফিরবে নতুন স্পৃহা। যা আপনাকে দিবে নতুন করে নতুন কিছু তৈরির সুযোগ। যা আপনাকে বাঁচিয়ে রাখতে পারে যুগ যুগ ধরে।
এই জগতে যারাই মানুষকে সত্য এবং নতুন আবিষ্কার দিয়েছেন তাদের বেশির ভাগই এই ধ্যান করে গেছেন নিজেকে আবিষ্কার করার জন্য।
বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ) থেকে শুরু করে এই জগতের পাথেয় সবাই বহু বছর ধরে ধ্যান এবং সাধনা করে দিয়ে গেছেন আপামর মানুষের নতুন পথের ঠিকানা। তারা মানুষকে এগিয়ে দিয়েছেন কয়েক হাজার বছর।
মোটেই না! আধুনিক ধ্যান করার জন্য আপনাকে গুহায় বা বনে চলে যাওয়া লাগবে না। মূলত বিজ্ঞানের উৎকর্ষতা আমাদের এই পথে এগিয়ে নিতে অনেক ভূমিকা রেখেছেন।
আপনি গুগল করলে অনেক মেডিটেশন শেখার অডিও এবং ভিডিও পাবেন।
আপনি একটু সময় করে ধ্যান না শুধু ৮/১০ বার জোরে জোরে দম বা নিঃশ্বাস নিন, দেখবেন আপনি অনেক বেশি ঠাণ্ডা হয়ে গেছেন, পাবেন কর্ম স্পৃহা। এটি বৈজ্ঞানিক ভাবে স্বীকৃত। তবে দম বা নিঃশ্বাস নেওয়ার জন্য কিছু নির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক নিয়ম মেনে চলুন দেখবেন এক সময় আপনি দম নেওয়ার সাথে সাথে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। 😈
অনেকে মেডিটেশনকে আধ্যাত্মিক কিছু ভেবে বসেন, আসলে বিজ্ঞানের অগ্রগতির সাথে সাথে এই ধারণা বৈজ্ঞানিকরা ভুল প্রমাণ করেছেন। মূলত নিজেকে নিজেই নিয়ন্ত্রণ করে নিজের কর্ম উদ্দীপনা বাড়ানোর জন্যই ধ্যান করা হয়।
তবে সেটা যখন আপনি অনেক দিন-কাল ব্যয় করে সাধনা করবেন তখন এটি আপনার অন্তর্চোখ খুলে দিবে, যেটা জগতকে দেখতে অন্য এক মাত্রা দিবে। বিজ্ঞান এটাকে সাধনার উচ্চ মাত্রা বলেন, কোন আধ্যাত্মিকতা নয়।
সেহেতু আপনি যদি নিজেকে আরও বেশি সুসংগঠিত এবং নতুন পথে চালিত করতে চান তাহলে ধ্যান করতে পারেন। তবে অবশ্যই সেটা কিছু নিয়ম মেনে।
বিজ্ঞান ধ্যানকে দেখেন আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি হিসাবে। কারণ স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বলে মানুষের ৭৫% রোগ মানুসিক টেনশন থেকে তৈরি। চিন্তা ভালো তবে নিয়ন্ত্রণহীন চিন্তা কখনও মানুষের শরীর এবং মনের জন্য ভালো নয়। সেই আপনি যদি এই টেনশনকে ঝেড়ে ফেলতে পারেন তাহলে আপনার ৭৫% রোগকে নিজের শরীর থেকে দূর করা সম্ভব।
বিজ্ঞান বলে যেসব রোগ ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা অন্য কোন পরজীবী ঘটিত নয় তা আপনার মানুসিক কারণে তৈরি। দৈনন্দিন চাপ, চিন্তা, অনিয়ন্ত্রন জীবন ব্যবস্থা এর জন্য দায়ি। যেটা ধ্যান বা মেডিটেশন দিয়ে খুব সহজে দূর করা সম্ভব।
ধ্যান কারলে আপনার শরীর মন এক থাকে ফলে আপনি সহজে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। তাছাড়া আমাদের মস্তিস্ক পারিবেশিক চাপ এবং বাস্তবতা বা নেতিবাচক চিন্তা আমাদেরকে নতুন চিন্তা করার শক্তি হারায়ে দেয় বা চিন্তা করলেও সেটা আমাদের নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করে, ফলে আমরা আগাতে পারি না।
যেকারনে আমরা যদি ধ্যান করি তাহলে অতীত ভুল বা নেতিবাচক চিন্তাকে নিয়ন্ত্রণ করে নতুন চিন্তা করতে সহায়তা করে। যা আমাদেরকে এগিয়ে যেতে নতুন কিছু সৃষ্টি করতে সহায়তা করে। 🙄
ধ্যান নিয়ে অনেকের নেতিবাচক চিন্তা আছে। তবে আপনি সর্বশেষ বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ মূলক বিভিন্ন আর্টিকেল পড়ুন দেখবেন ধ্যান আপনার কতো কিছু করার জন্য সহযোগিতা করবে ভাবতে পারবেন না।
আপনারা যারা ধ্যান করতে পারবেন না বা শেখার ভালো সুযোগ নাই তারা জোরে জোরে দম নেওয়া অনুশীলন করবেন, দেখবেন আসলে কোন উপকার পাচ্ছেন কিনা। 😎
যেকোনো প্রশ্ন থাকলে আমাকে করতে পারেন। আমি যথাসম্ভব চেষ্টা করবো আপনার সঠিক প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার।
সবার সুন্দর ও সুস্থ জীবন কামনায়। আজ এখানেই শেষ করছি।
ধন্যবাদ সবাইকে! 🙄
তথ্যসুত্রঃ দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, উইকিপিডিয়া, মেডিটেশন গাইড এবং কোয়ান্টাম মেথড
আমি আইটি সরদার। Web Programmer, iCode বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 261 টি টিউন ও 1750 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 22 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমি ইমরান তপু সরদার (আইটি সরদার),পড়াশুনা করেছি কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি নিয়ে; পেশা কন্টেন্ট রাইটার এবং মার্কেটার। লেখালেখি করি নেশা থেকে ফেব্রুয়ারি ২০১৩ থেকে। লেখালেখির প্রতি শৈশব থেকেই কেন জানি অন্যরকম একটা মমতা কাজ করে। আর প্রযুক্তি সেটা তো একাডেমিকভাবেই রক্তে মিশিয়ে দিয়েছে। ফলস্বরুপ এখন আমার ধ্যান, জ্ঞান, নেশা সবকিছু...
ধন্যবাদ আই টি সরদার ভাই। ধ্যানের গুরুত্ব সম্পর্কে তুলে ধরার জন্য।
যারা বাংলায় ধ্যানের চর্চা করতে চান এই লিংকে যেতে পারেন। http://quantummethod.org.bd/