বন্ধুরা হল আমাদের জীবনের এক অমূল্য উপহার । আমরা অধিকাংশ সময় তাদের সাথে কাটায় এবং আরো অনেক কিছুই আমরা বন্ধুদের সাথে করি । এ সবকিছুর মধ্যে বাইক চালকদের জন্য দলগতভাবে ভ্রমণের চেয়ে উত্তেজক আর কিছু হতে পারে না ! বন্ধুদের সাথে দলগতভাবে ভ্রমণ করা অত্যন্ত আনন্দের এবং এতে কিছুটা প্রতিযোগিতারও ঝাঁজ থাকে । কিন্তু তার মানে এই নয় যে দলগতভাবে চালানোর সময় আমরা আমাদের নিরাপত্তার ব্যাপারে ছাড় দেব কারণ অনেকেই দলগতভাবে ভ্রমণের সময় মারাত্মক দুর্ঘটনায় পড়েছে । তাই এখানে দলগতভাবে ভ্রমণের সময় অনুসরন করার জন্য কিছু কৌশল দেয়া হল যেগুলো দলগত ভ্রমণের সময় অবশ্যই অনুসরন করা উচিত ।
নিচে আপনার নিরাপত্তার জন্য নিয়মগুলো দেয়া হলঃ
১. দলগত ভ্রমণ শুরু করার আগে সদস্যদের রাস্তায় কিভাবে যোগাযোগ করবে তা ঠিক করে নিতে হবে ।
২.যখন বাইক চালাবেন কখনো আপনার সামনের বাইকের দিকে তাকিয়ে থাকবেন না কারণ আপনি যদি আপনার সামনের বাইকের স্টিয়ারিং এর দিকে তাকিয়ে থাকেন তাহলে সে যদি দুর্ঘটনায় পড়ে আপনিও দুর্ঘটনায় পড়বেন । আপনি সামনের বাইক চালক হতে সবসময় ২ সেকেন্ডের দূরত্ব রাখবেন কারণ তার যদি খারাপ কিছু ঘটে তাহলে আপনি অন্তত তাকে সাহায্য করতে পারবেন এবং সেই সাথে আপনাকেও সে সমস্যায় পড়তে হবে না । আপনি অন্যদের থেকেও সাহায্য চাওয়ার সময় পাবেন ।
৩. আপনাদের অবশ্যই একটি কোহেসিভ অবস্থা বজায় রাখতে হবে । কোহেসিভ অবস্থা বলতে আমি বুঝাচ্ছি যে, কোন চালকই যেন তাদের বাইক পাশাপাশি না চালায় । রাস্তায় তাদের মধ্যে কিছুটা দূরত্ব রাখা উচিত কারণ একজনের পর একজন চালানো সবচেয়ে নিরাপদ । এভাবে চালালে তারা ভালোভাবে দেখতে পাবে, নিরাপত্তার সাথে চালাতে পারবে এবং এতে কোন ঝুঁকি থাকবে না ।
৪. যেটা আমি প্রথমেই বলেছি যে দলগতভাবে চালালে প্রতিযোগিতার আবহ থাকে । কিন্তু এই প্রতিযোগিতার আবহের কারণে আপনি ফাঁদে পড়তে পারেন না কারণ আপনি যদি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন তাহলে আপনাকে গতি বাড়াতে হবে । ফলাফলস্বরূপ আপনি দুর্ঘটনায় পড়তে পারেন । সাধারন রাস্তায় আপনি কখনো আপনার ড্রাইভিং স্কিল প্রদর্শন করবেন না এবং কখনো বেশি গতিতে বাইক চালাবেন না ।
৫.দলগতভাবে চালানোর সময় আবহাওয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । গরমকালে দিনের মাঝামাঝি সময়ে ভ্রমণ পরিহার করুন কারণ এ সময় তীব্র রোঁদ থাকে এবং হেলমেটের কারণে আপনি দ্রুত ক্লান্ত হয়ে পড়বেন এমনকি অসুস্থও হয়ে যেতে পারেন ফলে আপনি ভ্রমণটি উপভোগ করতে পারবেন না । কিন্তু শীতকালে এর উল্টোটি করার চেষ্টা করুন অর্থাৎ দিনের মাঝামাঝি সময়ে ভ্রমণ করার চেষ্টা করুন । কারণ শীতকালে সাধারনত সূর্য থাকেনা এবং আবাহাওয়াও ঠাণ্ডা থাকে । কিন্তু শীতকালে আপনাকে কুয়াশা নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে কারণ এটা রাস্তাকে পিছলা করে দিতে পারে । যখন ভ্রমণটি নিয়ে আলোচনা করবেন তখনই ঠিক করে নিন এরকম কিছু হলে কি করবেন এবং প্রয়োজনে ভ্রমণটি বাতিল করে অন্যদিন করুন ।
৬. দলগত ভ্রমণে হাতের সিগন্যাল খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । প্রত্যেক চালকেরই হাতের সিগন্যাল বুঝতে হবে। কারণ দলগত ভ্রমনের সময় তারা খুব একটা শব্দও করতে পারে না ।
৭.যখন অন্য গাড়ি আপনাকে অতিক্রম করে যাবে তখন আপনার বাইকের গতি কমিয়ে গাড়িটিকে যেতে দিন এবং গাড়িটি হতে কিছুটা দূরত্ব রাখুন নইলে আপনি ও আপনার বন্ধুরা একটি বড় দুর্ঘটনায় পড়তে পারেন ।
৮.সবসময় ভ্রমণ শুরু করার আগে আপনার বাইক চেক করে নিন । নতুবা এটা আপনাকে ভ্রমণের মাঝখানে থামিয়ে দেবে এবং আপনার জন্য সমস্যা সৃষ্টি করবে ।
৯. ট্রাফিক সিগন্যাল মেনে চলুন কারণ আপনি যদি সিগন্যাল না মানেন তাহলে বিপদে পড়তে পারেন ।
১০. যদি দলগত ভ্রমণের কোন পর্যায়ে আপনার খারাপ লাগে তবে দ্রুত দল থেকে নিজেকে আলাদা করে নিন । কারণ আপনাকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা একমাত্র আপনারই ।
তাই আপনি যদি দলগত ভ্রমণের এই নিয়মগুলো মেনে চলেন এবং যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী হন তাহলে সহজেই যেকোনো দুর্ঘটনা এড়াতে পারবেন ।
মোটর সাইকেল সম্পর্কে আরও কিছু জানতে দেখুন বাংলাদেশের প্রথম মোটর সাইকেল ব্লগ বাইকবিডি
আমি suvrosen007। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 8 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 9 টি টিউন ও 18 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
Good post.. 🙂