সুপ্রিয় পাঠক, আচ্ছালামু-আলাইকুম। অনেকদিন ধরে টেকটিউন্সের পাঠক হিসাবে আছি। প্রবল ইচ্ছা থাকা সত্তেও কোন টিউন করার সময় হয়ে উঠেনি। এই পবিত্র রমজান মাসে এই টিউন দিয়েই আমি আমার টিউন লিখা শুরু করতে চাই। এখানে আমি সিনিয়র টিউনারদের সহযোগিতা কামনা করছি। আশা করছি কোন ভূলক্রটি হলে শুধরে দিবেন। আজকে আমার জীবনের প্রথম টিউন লেখা শুরু করার আগে আমাদের প্রাণপ্রিয় রসুলে করিম (স:) একখানা হাদিস দিয়ে শুরু করতে চাই:-
এক জুমাদিন আমাদের প্রাণপ্রিয় রসুল (স:) খুৎবা দেয়ার জন্য মিম্বরে আরোহণ করছিলেন তখন উপস্থিত সাহাবায়ে কেরামগণ লক্ষ্য করলেন রসুলে করিম (স:) তিন বার আমীন, আমীন, আমীন বললেন। খুৎবা শেষে উপস্থিত সাহাবায়ে কেরামগণ রসুল (স:) এর কাছে জানতে চাইলেন ইয়া রাসুলুল্লাহ (স:) আপনি যখন খুৎবা দেয়ার জন্য মিম্বরে আরোহণ করছিলেন আমরা লক্ষ্য করলাম আপনি তিনবার আমীন বললেন যা আগে কোনদিন আমরা শুনিনি। হুজুরে পাক (স:) এরশাদ করলেন আমি যখন মিম্বরে আরোহণ করছিলাম তখন জিবরাইল (আ:) আমাকে উদ্দেশ্য করে বললেন যারা পবিত্র রমজানের মত একটি রহমতের মাস পেয়েও ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নিকট নিজের জীবনের গুনাহ মাফ করাইতে পারেনি তারা ধ্বংস হোক, আমি বললাম আমীন। জিবরাইল (আ:) দ্বিতীয়বার বললেন যারা মা-বাবাকে পেয়েও তাদের সেবা করার মাধ্যমে নিজের জান্নাত হাসিল করতে পারেনি তারা ধ্বংস হোক, আমি বললাম আমীন। জিবরাইল (আ:) তৃতীয় বার বলিলেন যারা আপনার নাম শুনার পর দরুদ শরীফ (সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম) পড়েনা তারা ধ্বংস হোক আমি বললাম আমীন।
শেষ রাতে ঘুম থেকে জেগে শুধু সাহরী খাওয়া মূল উদ্দেশ্য নয়, সাহরী খাওয়া সুন্নত, কোন কারণে সাহরী খাওয়া সম্ভব না হলেও ঐ অবস্থায় রোজা রাখলে তা আদায় হয়ে যাবে। এখানে আরো একটি উদ্দেশ্য রয়েছে আর তা হলো রোজাদার যখন সাহরী খাওয়ার জন্য ঘুম থেকে উঠবে তখন তাহাজ্জুতের নামায পড়বে। সাধারণত রমজান ছাড়া রাতের ঐ সময়ে তাহাজ্জুত নামাযের জন্য রাত জাগা সবার জন্য সম্ভব হয়না, তাই রমজানে সাহরী খেতে একটু আগে ভাগে উঠে তাহাজ্জুত পড়াটা একটা বাড়তি সুযোগ। নফল নামাযের মধ্যে সবচেয়ে উত্তম হচ্ছে তাহাজ্জুতের নামায। তাহাজ্জুতের নামায ব্যতিত কোন মুমিন আল্লাহর প্রিয় পাত্র হতে পারে নাই ।
যেভাবে তাহাজ্জুতের নামাজ পড়তে হয়:-
নফলের নিয়তে দুই রাকাত করে যত ইচ্ছা পড়া যাবে। প্রতি রাকাতে সুরাহ ফাতিহার সাথে যেকোন সুরাহ মিলিয়ে পড়লেই তাহাজ্জুদের নামায আদায় হবে। তবে যেহেতু হুজুরে পাক (স:) তাহাজ্জুতের নামাযে প্রতি রাতে একেকটা কোরআন শেষ করে দিতেন, তাই কোন কোন আলেমের মতে রসুলে করিম (স:) উম্মতের যেহেতু ঐ ধৈর্য্য এবং একটা কোরআন শেষ করার ক্ষমতা নাই, তাই প্রতি রাকাতে সুরাহ ফাতিহার সাথে তিন বার সুরাহ ইখলাছ পুরো কোরআনের সওয়াব হাসিল করার উদ্দেশ্যে পড়লে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পুরো কোরআনের সওয়াব দিতেও পারেন।
রমজান মাসের ইবাদতে অন্যান্য মাসের ইবাদত থেকে ৭০ গুণ বেশী সওয়াব পাওয়া যায়। তাই সবার উচিত বেশী করে ইবাদত করা। রাত জেগে বেশী বেশী করে তাহাজ্জুত নামায পড়া।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে রমজানের গুরুত্ব অনুধাবন করে বেশী বেশী ইবাদতে মশগুল থাকার তওফিক দান করুন। যাদের মা-বাবা জীবিত আছেন তাদেরকে নিজের সাধ্যমত সেবা করার তওফিক দান করুন। এবং হুজুরে পাক (স:) এর নাম শুনলেই সাথে সাথে সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়াসাল্লাম বলার তওফিক দান করুন। আমীন। আজ এ পর্যন্তই। সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
আগামী টিউন সালাতুত্তছবীহের নামায
ছালাতুত্তছবীহের নামায ফযিলতের দিক দিয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ নামায। সম্ভবত (সম্ভবত বলছি এ কারণে যে আমার নজরে এখনো এ হাদিস পরেনি) করিম (স:) থেকে এব্যাপারে হাদিস রয়েছে, যে তিনি সাহাবীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন সম্ভব হলে প্রতিদিন এই নামায একবার পড়, যদি সম্ভব না হয় তাহলে সপ্তাহে একবার, আর যদি তাও সম্ভব না হয়, তাহলে মাসে একবার, আর যদি তাও সম্ভব না হয়, তাহলে বছরে একবার। আর যদি তাও সম্ভব না হয়, তাহলে অন্তত জীবনে একবার এই নামায পড়ার তাগিত দিয়েছেন। বিস্তারিত আসছে..................................
আমার প্রথম টিউন কেমন লাগলো মন্তব্য করতে ভূলবেন না
আমি Nurul Azim। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 2 টি টিউন ও 84 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আসসালামুআলাইকুম