ভিসতা দিয়ে ধাক্কা খাবার পর উইন্ডোজ ৭ বাজারে আনার আগে থেকেই কম্পাটিবিলিটি ছিল মাইক্রোসফটের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী।যদিও ভিসতা কিভাবে এতোটা আনকম্পাটিবল হলো তার কোনো সন্তোষজনক জবাব আজো মাইক্রোসফট দিতে পারেনি তারপরো উইন্ডোজ ৭ নিয়ে বরাবরাই মাইক্রোসফট বড় বড় কথা বলে এসেছে।আর এই বড় কথাগুলার মধ্যে বড় স্থান দখল করে আছে কম্পাটিবিলিটি নিয়ে কথা।মাইক্রোসফট বলছে হালের সব সফটওয়ার ও হার্ডওয়ার তো কম্পাটিবল হবেই সাথে সাথে আগের সফটওয়ার ও হার্ডওয়ার চালাবার জন্যও বিশেষ পন্থা রাখা হয়েছে উইন্ডোজ ৭-এ।এরই নাম দেয়া হয়েছে উইন্ডোজ ৭ কম্পাটিবিলিটি অপশন।যেহেতু গত ২২ অক্টোবর উইন্ডোজ ৭ আনুষ্ঠানিকভাবে বাজারে এসেছে তাই আজ এর কম্পাটিবিলিটি নিয়েই কিছু কথা বলব।
কি এই কম্পাটিবিলিটি? উইন্ডোজ ৭ একদমই নতুন একটি অপারেটিং সিস্টেম।কিন্তু আপনি যেই পিসি ব্যবহার করেন তার হার্ডওয়ারগুলাতো আর নতুন না।সেগুলা যখন নির্মাতা প্রতিশঠান বানিয়ে বাজারযাত করে তখন নিশ্চয়ই তারা সেভেনের কথা মাথায় রাখেনি,তাই না?সফটওয়ারের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।বর্তমান জমানার আমাদের ব্যবহার্য সবকিছুই বানানো হয়েছে এক্সপি কিংবা ভিসতাকে মাথায় রেখে।তাহলে?এই সবকিছু উইন্ডোজ ৭ এ ঠিকমতো চলবে তো?কেননা নতুন অপারেটিং সিস্টেম মানেই নতুন কিছু,আর যেহেতু সেভেনের কার্নাল আগের সব অপারেটিং সিস্টেমের চেয়ে আলাদা তখন কি হবে?এইসব কিছু মাথায় নিয়েই মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ৭ এ কম্পাটিবিলিটি ইস্যুটি নিয়ে শুরু থেকেই কাজ করে গেছে।কম্পাটিবিলিটি মানে হচ্ছে এক অপারেটিং সিস্টেমের জন্য বানানো সফটওয়ার বা হার্ডওয়ার আরেক অপারেটিং সিস্টেমে চলার ব্যাপারটা।যদিও ভিসতাতেও এই সিস্টেম ছিল কিন্তু তা কতটুকু কাজে এসেছে তা আমরা সবাইই জানি।তবে আশার কথা হচ্ছে সেভেনে তেমনটা হয়নি।এখন পর্যন্ত বিভিন্ন হার্ডওয়ার ও সফটওয়ার সেভেনের সাথে ভালোভাবেই কাজ করছে।বিশেষত পিসির বেশিরভাব হার্ডওয়ারের জন্য উইন্ডোজ ৭ এর ডিফল্ট ড্রাইভারই যথেষ্ঠ ভালো পারফরম্যান্স প্রদানে সক্ষম।
এবার আপনাদের বলবো বিভিন্ন সফটওয়ারের জন্য কম্পাটিবিলিটি অপশন কিভাবে ব্যবহার করবো সেটি। প্রথমেই বিবেচনা করি আপনার কোনো সফটওয়ার ইন্সটল হতে চাচ্ছে না।তখন কি করবেন?
*প্রথমে সেটাপ ফাইলে রাইট ক্লিক করে ট্রাবলশ্যুট কম্পাটিবিলিটি সিলেক্ট করুন।
*উইন্ডোজ নিজে নিজেই সফটওয়ারটির সমস্যা খুজে বের করার চেস্টা করবে।
*এরপর উইন্ডোজ আপনাকে দুইটা অপশন দেখাবে।ট্রাই রিকমান্ডেড সেটিংস এবং ট্রাবলশ্যুট প্রোগ্রাম।
*ঝামেলা এড়াতে চাইলে প্রথমটি নির্বাচন করে উইন্ডোজই সেই প্রোগ্রামের জন্য সম্ভাব্য সঠিক সেটিংস নির্বাচন করে সেটিকে রান করাবে।এজন্য আপনাকে স্টার্ট দা প্রোগ্রামে ক্লিক করতে হবে।আর উপরে আপনি দেখতে পাবেন কোন সেটিংস এপ্লাই করা হচ্ছে।এক্ষেত্রে উইন্ডোজ এক্সপি সার্ভিস প্যাক ২ এর সেটিংস নির্বাচন করেছে উইন্ডোজ।
*নেক্সটে ক্লিক করে চাইলে সবসময়ের জন্য এই সেটিংটি সংশ্লিস্ট প্রোগ্রামের জন্য সিলেক্ট করে রাখতে পারেন।
*তবে ঝামেলা হলেও আমার পর্যবেক্ষণ হচ্ছে এইভাবে কাজ চালানোর চেয়ে ট্রাবলশ্যুট প্রোগ্রাম নির্বাচন করাটাই পরবর্তীতে ভালো ফল বয়ে আনে।
* ট্রাবলশ্যুট প্রোগ্রাম-এ ক্লিক করলে পরের মেনুতে জানতে চাওয়া হবে আপনার কি সমস্যা হচ্ছে।বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রথমটিই আপনি টিক দিবেন যেটিতে বলা হচ্ছে আগের উইন্ডোজ ভার্সনে এটি চলতো কিন্তু সেভেনে চলছে না।নেক্সটে যান।
*এবার জানতে চাওয়া হবে কোন উইন্ডোজে এটি চলতো।স্বস্তির কথা হচ্ছে উইন্ডোজ ৯৫ থেকে শুরু করে ভিসতার সার্ভিস প্যাক ২ বা এক্সপিসার্ভিস প্যাক ৩ সবই পাবেন তালিকায়।দরকারিটি টিক দিন।না জানলে কি করবেন?যদিও আই ডন্ট নো অপশনও রাখা হয়েছে তবে আমি বলব এক্সপি সার্ভিস প্যাক ২ নির্বাচন করে নেক্সটে যেতে।বৃথা যাবে না আপনার পরিশ্রম।
*এবারে আগের মতোই।প্রোগ্রাম স্টার্ট করুন ও সেটিংস সেভ করে রাখুন।
এই পন্থাতো মূলত ইন্সটলের সময়ে কাজে লাগানোর জন্য।আর ইন্সটলের পর?বিশেষত গেমারদের কাজে লাগবে এমন পন্থা বলছি এখন।হয়তো অনেকেই এটি জানেন কিন্তু যারা জানেন না তাদের তো জানাতে হবে! এপ্লিকেশন বা গেমের রান করার .exe ফাইলে রাইট ক্লিক করে প্রোপার্টিজে যান।
*কম্পাটিবিলিটি ট্যাব সিলেক্ট করুন।
*কমাটিবিলিটি মোড থেকে ‘রান দিস প্রোগ্রাম ইন কম্পাটিবিলিটি মোড ফর’ বক্সটি চেক করে কম্পাটিবল অপারেটিং সিস্টেম নির্বাচন করে দিন।
*তবে যদি এপ্লিকেশনটি বেশি পুরানো হয় তাহলে আপনাকে নিচের অপশনগুলাও বুঝেশুনে টিক দিয়ে নিতে হবে,নইলে চালাতে পারবেন না।
আশা করছি এই ছোট্টো টিপসটি মনে রাখলে উইন্ডোজ ৭ আপনি আরেকটু বেশিই শান্তিতে চালাতে পরবেন।
আমি সেতু। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 16 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 47 টি টিউন ও 466 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আছি কম্পিউটার আর ইন্টারনেটকে সাথে নিয়ে।ভালোবাসি নতুন আর আনকোরা সফটওয়ার নিয়ে কাজ করতে।ভালো লাগে হার্ডওয়ার নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে।পড়ছি বুয়েটে।কাজ করছি টেকনোলজি টুডে'র সহকারি সম্পাদক হিসেবে।কম্পিউটার-এর জগতে শুধু ঘুরেই বেড়াচ্ছি গত প্রায় ১২/১৩ বছর ধরে।কম্পিউটার নিয়েই কাজ করছি ৮/৯ বছর ধরে।জড়িত আছি বিভিন্ন দেশী-বিদেশী সাইট-এর সাথে।মোটামুটি দেশীয় কম্পিউটারের সবক্ষেত্রেই নজর রাখতে...
খুবই দরকারী পোস্ট। সেভেনে এখনো হাত দেই নি। সময় বের করে সেটআপ দিব। কমপাটিবিলিটির এ ফিচারটা ভাল লাগলো।