শিরোনাম দেখে ভাবার কোন কারণ নেই যে আমি একজন বিশাল পণ্ডিতব্যক্তি। আমি নিতান্ত একজন খেটে খাওয়া লোক। পেশা চাষ করা। তবু ভাবি মাঝে মাঝে কবির সেই গান -
‘এমন মানব জমিন রইল পতিত
আবাদ করলে ফলত সোনা
মনরে কৃষি কাজ জানোনা।'
অনেকে হয়তো আমাকে মারতেই ছুটে আসবেন– মিঞা ,বাঙালিরে হাইকোর্ট দেখাচ্ছ ? তোমার কাছে বাংলা শিখতে হবে নাকি ? হা হা হা পোলা কয় কী ? সারা জীবন বাংলাতে রয়েছি । যাও যাও নিজের কাজে যাও।
বলা বাহুল্য এ লেখা তাঁদের জন্য নয়। আমি সে ধৃষ্টতা কখনোই করব না। আমায় মাপ করে দেবেন।
সবচেয়ে বড় কথা আমি কোন কিছু শেখাতে বসিনি। আসলে আমি নিজে একটু শেখার চেষ্টা করছি তো। তাই ভাবলাম যদি আমার শেখা কারো কোনো কাজে লাগে। অনেকটা কেমন জানেন তো- কেউ ধরুন নতুন বাইক চালাতে শিখেছে। কোন কারণে তাকে বাইকের পিছনের সিটে বসতে হয়েছে ; বাইক চালাচ্ছে অন্য লোক । তখন তার যেমন পিছনে বসে বসে হাত-পা সুড়সুড় করে আমার অনেকটা হয়েছে তাই। কী আর করি বলেন ? কেউ যদি আমার কথায় আঘাত পান ভাইজান মনে করে একটু মাপ করে দিয়েন।
অনেকে মনে করতে পারেন এটা তো বিজ্ঞান মনস্ক আলোচনার জায়গা, বিজ্ঞানের আলোচনার জায়গা , কম্পিউটার নিয়ে , Software নিয়ে আলোচনার জায়গা। এখানে কি এই টপিক গ্রহণযোগ্য ?
আসলে কেন এই ইচ্ছা মনে জাগলো সেটা খনিকটা খোলসা করে বলি।
আমি বাংলাদেশের বাঙালি এবং ভারতীয় বাঙালিদের মধ্যে একটা স্পষ্ট ফারাক দেখতে পাই। ভারতের বাঙালিদের মধ্যে অনেকেরই বাংলাভাষার প্রতি যথেষ্ট আন্তরিকতার অভাব আছে। বাংলার তুলনায় তারা ইংরেজিতেই অনেক স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন এবং এটা তাদের কাছে একটা স্ট্যাটাসও বটে। কিন্তু বাংলাদেশের বাঙালিরা বাংলাকে অনেক বেশি ভালোবাসেন। এই ব্লগ বা ওয়েবসাইটগুলো তার একটা বড় প্রমাণ। ভারতীয় বাংলা ব্লগ বা ওয়েবসাইটের নাম কে কটা বলতে পারবে ! বাংলাতেও যে অতিসহজে কঠিন বিষয় অতি সাবলীল ভাবে বলা যেতে পারে , বোঝানো যেতে পারে এই বাংলা ওয়েবসাইটটির ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা কিন্তু তা-ই প্রমাণ করে।
তাই এ আমার গর্ব , এ আমার অহংকার। আমি চিৎকার করে গলা ফাটিয়ে তা বলতে পারি।তাতে কেউ আমাকে পাগল বলে চিহ্নিত করলেও।
কিন্তু ইদানিং কিছুকাল যাবৎ একটা জিনিস লক্ষ করছি - এই ওয়েবসাইটের লেখাগুলোতে প্রচুর বানান ভুল। এমনটা হতে পারে কেউ হয়তো ট্রানস্লেট করে বাংলা লিখছেন।কিন্তু সবাইতো আর তা নন।তবে কেন এত বানান ভুল। কিছু কঠিন বানান ভুল হতেই পারে কিন্তু এমন অনেক বানান ভুল যা চোখে পড়ার মতো , বা বারবার চোখে পড়ে।
আমি টিউনারদের নিরুৎসাহিত করছি না। আমি বিষয়টিকে অন্য দিক থেকে ভাবতে চাইছি। আসলে হয়তো জীবনের কঠিন পথের সামনে পড়ে আমরা এই বানানের দিকে অতটা পরিচিত হতে পারিনি। আজ হয়তো সামান্য অবকাশ পেয়ে নিজের মনের বাঁধ দেওয়া আবেগকে ছেড়ে দিয়েছি লেখাতে। নীরস জীবনের মাঝখান থেকে একটু আলো পাবার চেষ্টা করছি। নিজেকে সংসারের পাঁচজনের মধ্যে বিলিয়ে দেবার চেষ্টা করছি। যার যা কিছু ভাষার সম্বল তাই নিয়ে এগিয়ে যেতে চাইছি ভবিষ্যতের দিকে। তাই ভুল ত্রুটি থাকলেও এগিয়ে যেতে হবে।
আসলে এগিয়ে যেতে গেলে গাড়ির বসার সিটটা আরামপ্রদ হতেই পারে কিন্তু গাড়ির চাকাকে উপেক্ষা করলে কি চলতে পারে ?
উত্তর- অবশ্যই না। সেদিকে খেয়াল রাখতেই হবে । যে ভাষা আমাদেরকে সারা পৃথিবীর মানুষের মধ্যে স্বতন্ত্র স্থান দিয়েছে তাঁর দিকে তো একটুখানি অন্তত নজর কিন্তু দিতেই হবে।
এইজন্যই এত কথা বলা। বন্ধু রাগ করলেন নাতো ?
প্রথমেই বলেছি আমি শেখাতে আসিনি এবং যারা ভালো বাংলা জানেন এ লেখা তাঁদের জন্য নয়। এ লেখা আমার মতো আনাড়িদের জন্য যারা সবে একটু আধটু লিখছি এবং বানান ভুল হচ্ছে।
আমি এখানে আমার শেখাটাকে আমার মতো অন্যদের মধ্যে শেয়ার করতে এসেছি। শেখাতে আসিনি। আমি নিজেই ভালো করে জানি না ; জানলে তো তবে শেখাবো।
আমার ইচ্ছা আছে আমার শেখা টিপসগুলো কয়েকটি পর্বে আপনাদের মধ্যে দিয়ে যাব।
এপর্বে যেহেতু অনেকবেশি বাজে বকা হয়ে গেল তাই ছোট্ট একটি টিপস আপনাদের মধ্যে শেয়ার করছি।
কি / কী কোনটি সঠিক ? নাকি দুটোই সঠিক ?
*****************************************
আমাদের মধ্যে “কী” এবং “কি” নিয়ে একটা সমস্যা আছে । কোথায় কখন কোনটা ব্যবহার করতে হবে বুঝে উঠতে পারিনা। ফলে যখন যেটা ভালো লাগে তখন সেটা বসিয়ে দিই।
কিন্তু এর একটা নিয়ম আছে।
১। যদি কোনো প্রশ্নের উত্তর ব্যাখ্যাধর্মী হয় তবে সেটার ক্ষেত্রে “কী “ বসবে।
২। যদি কোনো প্রশ্নের উত্তর ব্যাখ্যাধর্মী না হয়ে হ্যাঁ বা না হয় তবে সেক্ষেত্রে “কি” হবে।
ঠিক পরিষ্কার হল নাতো । আচ্ছা আমি বোঝানোর চেষ্টা করছি দেখুন বুঝতে পারেন কি না ।
১। আমি আপনাকে জিজ্ঞাসা করলাম-
- আজ বাড়িতে কী রান্না হচ্ছে ?
আপনি উত্তর দিলেন
-বিশেষ কিছুই না ডাল হচ্ছে আর একটা ভাজা ,আর তরকারি।
তাহলে দেখুন আপনার উত্তর কিন্তু ব্যাখ্যাধর্মী। তাই আমি প্রশ্ন করার ক্ষেত্রে “ কী” দিয়েছি।
২। আবার আমি আপনার কাছে জানতে চাইলাম
- আপনি কি কাল বাজারে যাবেন ?
আপনি উত্তর দিতে পারেন
- হ্যাঁ যাব।
বা উত্তর দিতে পারেন
-না , যাব না।
তাই এক্ষেত্রে আমি প্রশ্নের ক্ষেত্রে “কি” ব্যবহার করেছি ।
তাহলে বোঝাতে পারা গেল কি ?
(দেখুন এখানেও আপনার উত্তর হ্যাঁ বা না হতে পারে তাই “কি” ব্যবহার করা হয়েছে ।)
সুতরাং আমরা আর ও একটা পদ্ধতিতে বিষয়টা মনে রাখতে পারি
যদি কোন প্রশ্নের উত্তর হ্যাঁ বা না হয় তবে “কি” ব্যবহার করতে হয়
আর যদি কোন প্রশ্নের উত্তর “ হ্যাঁ বা না ” না হয় হয় ,ব্যাখ্যাধর্মী হয় তবে “ কী” দিতে হয়।
(আচ্ছা খুঁজে দেখুন তো আমার লেখায় কোনো জায়গায় কি বা কী এর ভুল আছে কি না ; আমি কিন্তু ইচ্ছা করে দু এক জায়গায় ভুল লিখেছি।)
আরো একটা বিষয় আমাদের মনে রাখতে হবে কোনো লেখা পোস্ট করার আগে বেশ কয়েকবার পড়ে নিলে অনেক অনিচ্ছাকৃত ভুল ত্রুটি এড়ানো সম্ভব হবে।
আপনাদের সমালোচনা কে স্বাগত জানালাম । তবে দেখবেন তা যেন গঠনমূলক হয় । তাহলে নিজেকে আমরা আরো সংশোধন করে নিতে পারব।
শুভরাত্রি।
ভালো থাকবেন।
আবার দেখা হবে।
আমি সবুজের অভিযান ( Sobujer Abhijan )। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 13 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 22 টি টিউন ও 333 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
সব কিছুই তো শিখতে চাই , তবু সময় যে খুব অল্প , এক পলকেই ফুরিয়ে যাবে জীবনের যত গল্প।
নবম শ্রেণিতে থাকাকালীন ‘কী/কি’ সম্পর্কে জেনেছিলাম। টিউনের জন্য ধন্যবাদ।
[অফটপিক: বাংলায় নাম লিখছেন না কেন? 'Sobujer Abhijan' -> 'সবুজের অভিযান' :? ]