টেকটিউনস Super Successor : রাজিব আহসান, সহ-প্রতিষ্ঠাতা, Cyber Developer BD

টেকটিউনস Super Successor গেস্ট:  রাজিব আহসান, সহ-প্রতিষ্ঠাতা, Cyber Developer BD
সময়: ২৯ আগষ্ট ২০১৭।দুপুর ১২ টা।
ব্যাপ্তি: প্রায় ২০ মিনিট
স্থান: Cyber Developer BD এর অফিস, ঢাকা।

টেকটিউনস Super Successor হিসেবে আজকে  হাজির আছে বাংলাদেশের আইটি জগতের একজন পরিচিত মুখ এবং টেকটিউনসের অনেক সিনিয়র একজন টিউনার। তিনি দীর্ঘ সময় ধরে আছেন টেকটিউনসের সাথে। যার আইটি এই জগতের চলার পথ ছিল আমাদের টেকটিউনস।

ফ্রিলান্সিং ছিল তার নেশা এবং পেশা। ফ্রিলান্সিং নিয়ে সে সব সময় টেকটিউনস  ্ এর ইউজারদের জন্য লিখে অনেক টিউটোরিয়াল। ফ্রিলান্সিং এরপর তিনি তার ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিয়েছে হোস্টিং বিজনেসকে। আজকে আমরা Cyber Developer BD এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা রাজিব আহসান ভাইয়ের কাছ থেকে শুনব বাংলাদেশের ফ্রিলান্সিং এবং হোস্টিং ইন্ডাস্ট্রি সম্পর্কে কিছু কথা।

Cyber Developer BD এর শুরুর কথাটা আমাদের বলুন?

Cyber Developer BD এর কাজটা আমি শুরু করেছি ফ্রিলান্সিং থেকে। আমি ২০১০ সাল থেকে ফ্রিলান্সিং এর সাথে জড়িত আছি। আমি আগে ব্লগিং এর সাথে যুক্ত ছিলাম। আমি টেকটিউনসে প্রচুর লিখালিখি করেছি।২০১১,২০১২ সালের দিকে আমি প্রচুর লিখালিখি করেছি।

ওখান থেকেই আসলে অনেকের সাথে পরিচয় হয়,অনেক উৎসাহ পেয়ে দুইজন মিলে পার্টনারশিপে আসলে শুরু করা হয়েছে Cyber Developer BD। ২০১২সাল থেকে আসলে Cyber Developer BD শুরু করা। একদিন মাথায় আসল যে হোস্টিং ব্যবসায় আসা দরকার। তখন তারেক হোসেন বিন ভাইয়ের সাথে যুক্ত হয়ে এই Cyber Developer BD টা শুরু করা।

নরমালই একেবারেই ছোট ভাবে আমি এটা শুরু করেছি রিসালার হোস্টিং নিয়ে।আর সাধারণত যেই সমস্যা গুলো হয়। যেমন, বাজেট কম, বিজনেস করতে গেলে আগে অনেক প্ল্যানিং এর দরকার হয়, আমাদের ওইধরনের কোন প্ল্যানিং ছিল না।তো আমাদের শুরু এমনি ছিল যে, কোন প্রকার প্ল্যানিং ছাড়া হুট কেই একটা বিজনেস শুরু করা।

 আপনার প্রতিষ্ঠানের বর্তমান অবস্থার কথা আমাদের বলুন?

বর্তমানে আসলে ফ্রিলান্সিং করে তো এদিকে সময় দিতে পারব না।তাই এখন ফ্রিলান্সিং ছেড়ে দিয়ে হোস্টিংকে মেইন বিজনেস হিসেবে আমি নিয়েছি।আমাদের সার্ভিস আগে থেকে এখন অনেক ভালো, কাস্টমার আগের থেকে অনেক বেড়েছে।এখন এটাই আমার মেইন বিজনেস। আমরা চেষ্টা করছি কাস্টমারদের ভালো সার্ভিস দেবার জন্য।

অন্যদের থেকে কেন আপনাদের সার্ভিস better?

হোস্টিং বিজনেসে আমরা আছি ৫ বছর ধরে।আমরা এখন অনেক Experienced। তাই অন্যান্য কোম্পানি গুলোর থেকে আমরা ভালো বুঝতে পারি কাস্টমারদের কি ধরনের সমস্যা হয়, কি কি সাপোর্ট দরকার হয়। এ সব কিছু কিন্তু আমরা মোটামুটি ভালো জানি। এক্ষেত্রে আমরা কাস্টমারকে অবশ্যই অনেক ভালো একটা সাপোর্ট দিতে পারব। দ্বিতীয়ত, আমরা কাস্টমারকে সকল ধরনের সাপোর্ট দিতে পারব।

সেক্ষেত্রে কাস্টমাররা যদি তাদের সার্ভার যদি পুরপুরি delete করে ফেলে বা সার্ভারে যদি কোন সমস্যা তাহলে তারা সাইট re- install করতে পারবে।আমরা সাপোর্ট নিশ্চিত করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে। যেমন, নতুন কোম্পানির কথাই যদি বলি, তাদের তো সাপোর্ট এর এমন কোনই ব্যবস্থা নাই। তাদেরকে কল দিলেও দেখবেন তাদের পাওয়া যাচ্ছে না।কিন্তু আমাদের ক্ষেত্রে এমন কোন অবস্থা হয় না। আমরা লাইভ সাইট সাপোর্ট রেখেছি, টিকেট সাপোর্ট রেখেছি, over the phone এ আমাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারবে।

এখন হতো অনেকেই সাজেস্ট করে দেশের বাহিরে কেনার জন্য। কিন্তু তাদের কাছে থেকে কিনলে হয়তো আপনি তাদের কাছ থেকে এত ইজিলি সাপোর্ট গুলো পাবেন না বা ফোনে হয়তো এত সহজে পাবেন না।যতটা পাবেন আমাদের কোম্পানি গুলোকে।আমরা এবং আরও যেই সকল কোম্পানি আছে বাংলাদেশে।

 বাংলাদেশের হোস্টিং ইন্ডাস্ট্রি এবং ফ্রিলান্সিং ইন্ডাস্ট্রির বর্তমান অবস্থা নিয়ে কিছু বলুন?

বাংলাদেশের ফ্রিলান্সিং ইন্ডাস্ট্রিতে এখন অনেক comparative একটা অবস্থা চলে এসেছে।বিশেষ করে সরকারী বিভিন্ন ট্রেনিং এবং সরকারী কিছু উদ্যোগ এটার পর আসলে অনলাইনে যারা কাজ করতে চাচ্ছে এবং যাদের হালকা পাতলা যদি কোন আইডিয়াও থেকে থাকে, তারাও ফ্রিলান্সিং করছে। আসলে পজিটিভ কিছু বলার নাই এটা নিয়ে কারণ এটার অবস্থা কিছুটা খারাপের দিকেই বর্তমানে।কারণ যারা unexperienced তারাই এখন ফ্রিলান্সিং এ যুক্ত হয়েছে।যার কারণে এখন মার্কেটে কাজ পাওয়া অনেক কঠিন। আসলে এখন বলতে গেলে worker বেশি, buyer কম। বিকল্প একটা সুযোগ আসলে, হোস্টিং এর ব্যবসা বলবনা, হোস্টিং এর ওয়েবসাইট বানিয়ে মানে নিজের ওয়েবসাইট বানিয়ে নিজে ইনকাম করা।

যেমন আমি দুই একটা উদাহরণ দিতে পারি, কেউ হয়তো একটা সাইট বানালও ব্লগিং করবার জন্য বা বিভিন্ন টিউন দিয়ে বা রিভিউ দিয়ে। সে কিছু কোন এডসেন্স দিয়ে সহজেই ইনকাম করতে পারবে। এখন আমি যেটা বলব সেটা হচ্ছে, ওডেক্স বা আপ-ওয়ার্ক যেটা বা freelancer.com, একটু পরিশ্রম বেশি হলেও এখান থেকে ইনকাম করা অনেক সহজ। শুধু ব্লগ না, বিভিন্ন ডাউনলোড ওয়েবসাইট, রিভিউ সাইট বিভিন্ন সাইটের সুযোগ আছে।যেটা আপনাকে নিজে নিজে ইনকাম করতে সাহায্য করবে। এফিলেট আছে। এফিলেটের একটা ওয়েবসাইট এর একটা ল্যান্ডিং একটা পেইজ করেন বা ব্লগ করেন। এগুলোকে পপুলার করতে পারে। এখান থেকেই ইনকাম করা সম্ভব।

আমার কাছে যেটা মনে হয়, ফ্রিলান্সিং এর তুলনায় এই সেক্টরে কাজ করা ইজি এবং এখানে যদি কেউ একটা দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করে কাজ করে। তাহলে সে এখান থেকেও একটা ভালো কিছু করতে পারবে।

কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং এ এখন অনেক কিছুই পারবে না কারণ এখানে এখন অনেক inexperienced লোক ভরে গিয়েছে। যেখানে হয়তো বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অবস্থা আরও খারাপ।

আপনার প্রতিষ্ঠান নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?

বর্তমানে আমরা দেশের বাহিরেও আমাদের সার্ভিস দিচ্ছে। USA, Canada সহ ২০টার উপরে দেশে থেকে আমাদের কাস্টমার আছে।আমার ইচ্ছা যাতে, সারা বিশ্বের মানুষ Cyber Developer BD কে চিনবে। যেহেতু বাংলাদেশ নিয়ে সারা বিশ্বে একটা খারাপ ধারনা আছে।আমি চেষ্টা করছি, যাতে করে খারাপ ধারনা গুলো দূর করা যায় এবং বাংলাদেশের বাহিরেও আমরা যেন ভালো পরিচিতি লাভ করতে পারি ভালো সার্ভিস দিয়ে।

অনেকে আমাকে সাজেস্ট করেছে আমাদের domain name এর মাঝে যেন BDকথাটা না থাকে।তাহলে নাকি আমরা আরও ভালো করতে পারব। কিন্তু আমি চাচ্ছি আমি এই নাম নিয়েই এগিয়ে যাব সারা বিশ্বের মধ্যে।Cyber Developer BD এখন অনেকেই ব্যবহার করছে। বাংলাদেশের মধ্যে এখন Cyber Developer BD অনেক পরিচিত একটা নাম।

আমাদের তরুণদের জন্য কিছু বলুন। যারা আপনার মত এই ব্যবসায় আসতে চায়?

কম টাকা দিয়েও হোস্টিং বিজনেস করা সম্ভব।কিন্তু প্রথমেই মনে রাখতে হবে, এটা একটা বিজনেস।অবশ্যই বিজনেস শুরুর আগেই অনেক প্ল্যান ও প্রোগ্রাম করা দরকার। আমি কিভাবে আগাবো। আমাদের টার্গেট কাস্টমার কারা।আমরা মার্কেটিংটা কিভাবে করব। আমাদের প্রোডাক্টগুলো কি কি। আমরা কি কি প্রোডাক্ট নিয়ে মার্কেটিং এ আগাব।এ সবকিছু কিন্তু আগে ঠিক করতে হবে।

আমাদের অফিস স্পেস থাকবে কি না। আমাদের স্টাফ কয়জন থাকবে। এসব কিছু প্লান করবার পর আমাদের আগাতে হবে এবং অবশ্যই প্রথমে আমাদের বাজেটটা ঠিক করে নিতে হবে।যে আমি এত টাকা পর্যন্ত monthly বা yearly আয় করতে পারব এবং অবশ্যই আমাদের একটা রিজার্ভ বাজেট রাখতে হবে।যদি আমি এই কয়েক মাস ইনকামও করতে না পারি।আমি যাতে ব্যাকআপ হিসেবে টাকাটা খরচ করতে পারব। আমার মনে হয় কেউ যদি এভাবে চিন্তা করে মার্কেটিং এর শুরু থেকে এই হোস্টিং বিজনেসে লাগে তাহলে মনে হয়, সে মোটামুটি ডেভেলপ করতে পারবে। আর একবার young যারা আসতেছে, তারা যদি এত কম বয়সে না এসে একটা নিদিষ্ট বছর পার করবার পর বিজনেস শুরু করা দরকার। কারণ প্রথমত এখানে একটা maturity এর ব্যাপার আছে।

আমি খেয়াল করে দেখেছি, অনেকে এসএসসি পাশ করে বা ১০ বা ৯ শ্রেণীতে পড়তেছে। এরাও এ বিজনেসে আসছে। কিন্তু আমি এদের বিজনেসে আসতে না করছি না। আসুক কিন্তু একটা বয়স এর পর।তখন এদের মাঝে কিন্তু maturity থাকবে একটা বিজনেস করবার জন্য।

টেকটিউনস বাংলাদেশের তথ্য প্রযুক্তি খাতে এক বিশাল অবদান রেখেছে। এ বিষয়ে আপনার মতামত কি?

আমি তো আগেই বলেছি আমি টেকটিউনসের একজন নিয়মিত পাঠক এবং ব্লগ লিখতাম। বেশ একটিভ একজন ব্লগার ছিলাম আমি ২০১১, ২০১২ এর দিকে।পরবর্তীতে হোস্টিং ব্যবসার কারণে ধীরে ধীরে ঐখান থেকে কিছুটা সরে আসতে হয়েছে।আসলে সময় দিতে পারি নাই।আমি আসলে এটা স্বীকার করি। টেকটিউনস থেকে শিক্ষা অনেক কিছু আছে। টেকটিউনসকে দীর্ঘ দিনের একটা archive বলা চলে। প্রযুক্তির বিভিন্ন তথ্য, ফ্রিলান্সিং বলুন, সামান্য মোবাইলের কোন সমস্যার কথা বলুন, এই সব কিছুর সমাধান টেকটিউনসে খুঁজলেই পাইয়া যাবে।

আমার ছোট যত ভাইরা আছে, আমি সবাইকে সাজেস্ট করি টেকটিউনসে পড়বার জন্য।

কেই যদি ফ্রিলান্সিং এ আসতে চায়, টেকটিউনসে তার সকল টিউটোরিয়াল পাওয়া যাবে। কেউ যদি তথ্য প্রযুক্তি নিজে কিছু জানতে চায়। সেটাও খুঁজতে গেলে তা টেকটিউনসে পাওয়া যাবে। আমি নিজেও অনেককে টেকটিউনস সাজেস্ট করে থাকি টেকটিউনস পড়বার জন্য।

টেকটিউনসে এডভারটাইসিং এবং ব্যান্ডিং করে আপনি কিভাবে উপকৃত হয়েছেন।

মার্কেটিং এ আসলে যেইভাবে উপকৃত হওয়া যায়, সেই ভাবেই উপকৃত হয়েছি। এটা একটা প্রযুক্তি রিলেটেড ব্লগ। এখানে প্রচুর ভিজিট আছে।এখানে প্রযুক্তি রিলেটেড যারা এবং যারা ওয়েবসাইট বানাবে। এমন ভিজিটর হবার সম্ভাবনাই বেশি। এখান থেকে আমি প্রচুর ভিজিটর আমি পেয়েছি।

টেকটিউনস সম্পর্কে আপনার কোন পরামর্শ আছে?

টেকটিউনসের টিউনের মান গুলো আরও ভালো করা দরকার। টিউন গুলো ভাল মত মনিটরিং করা দরকার।আপনাদের এড গুলো নিয়েও আমি বলতে চাই।আপনাদের এডগুলোর মাঝে যেন কোন ভুয়া কোম্পানির এড না চলে। সেই দিকে আপনাদের একটু বিশেষ খেয়াল রাখা দরকার।

কারণ, এই সকল ভুয়া কোম্পানির এড দেখে মানুষজন প্রতারণার স্বীকার হচ্ছে।এখন আমি যদি এড দেই, কাস্টমার আমার কোম্পানিকেও ভুয়া ভাবতে পারে। এটা আপনাদের একটু বিশেষ ভাবে খেয়াল রাখতে হবে।

Level 9

আমি টেকটিউনস। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 16 বছর 9 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 131 টি টিউন ও 2929 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 530 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1590 টিউনারকে ফলো করি।

মেতে উঠুন প্রযুক্তির সুরে।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস