'ফাস্ট চার্জিং' কথাটির সাথে আমরা সবাই পরিচিত। আর ফাস্ট চার্জিং এর বেসিক কিছু জিনিস যা না জানলেই নয়- এমন কিছু বিষয় নিয়েই লেখা হয়েছে এই লেখাটি। তাই এক নজরে দেখে নিন কি কি থাকছে আজকের লেখায়।
টিউনটি থেকে জানতে পারবেন:
যে চার্জার ফোনকে তাড়াতাড়ি চার্জ করে সেটাই হচ্ছে ফাস্ট চার্জার। ফাস্ট চার্জারকে বিভিন্ন নামে ডাকা হয় যেমন ভুক চার্জার, অ্যাডাপটিভ ফাস্ট চার্জার, কুইক চার্জার ইত্যাদি।
২০১৩ সালে কোয়ালকম (Qualcomm) কোম্পানির নতুন টেকনোলজি 'কুইক চার্জ' প্রকাশ করার মাধ্যমে ফোনকে দ্রুত চার্জ করার বিষয়টি সামনে আসে। এটি ছিলো ১০ ওয়াটের (10 w) একটি চার্জার। তখনকার সময়ে এটিই ছিলো একমাত্র ১০ ওয়াটের চার্জার। সে সময় সাধারণভাবে যে চার্জারগুলো পাওয়া যেতো সেগুলো ছিলো ৫ ওয়াটের কমবেশি। তাই ১০ ওয়াটের চার্জার চলে আসার পর মানুষজন এটি ব্যবহার করতে শুরু করলো। এতে করে ফোনগুলো খুব কম সময়ে চার্জ হতে থাকলো। এক কথায় বলতে গেলে ফাস্ট চার্জিং এর ধারণাটি এরকম– Less Time in the Socket, More Time in the Pocket.
সহজভাবে বলতে গেলে বলা যায়, ভোল্ট এবং অ্যাম্পিয়ারের গুণফলই হচ্ছে ওয়াট (w)। ধরুন আপনি যে চার্জারটি কিনেছেন তার–
ভোল্ট 5V
তড়িৎপ্রবাহ 2A
তাহলে 5V × 2A = 10 w, অর্থাৎ আপনার চার্জারটি ১০ ওয়াটের আর এই ১০ সংখ্যাটি হচ্ছে ওয়াট এককে আপনার চার্জারের ক্ষমতা। তাই কোনো চার্জারে যতো বেশি ওয়াট থাকবে, সেই চার্জারের ক্ষমতা তত বেশি হবে।
এখন অবশ্য চার্জারগুলোর গায়ে সরাসরি ওয়াট এককে চার্জারের ক্ষমতা লেখা থাকে।
ফাস্ট চার্জিং সাপোর্ট করে না এমন একটি ফোনে ফাস্ট চার্জার লাগানো হলেও সেটি দ্রুত চার্জ হবে না। কেননা, ফাস্ট চার্জিং এর ক্ষেত্রে সেই ফোনটিই ফাস্ট চার্জ হবে যার এই চার্জ (অধিক ক্ষমতা বোঝানো হয়েছে) শোষণ করার ক্ষমতা আছে। তাই ফাস্ট চার্জার কেনার আগে দেখে নিন আপনার ফোনটির ব্যাটারি, সার্কিট ইত্যাদি ফাস্ট চার্জার ব্যবহারের উপযোগী কিনা।
এক্ষেত্রে সাধারণত দেখা যায় ফোনের কোনো ক্ষতি হয় না। কারণ ফোনটি বেশি ক্ষমতা শোষণ না করে সে যতটুক শোষণ করতে পারবে ঠিক ততটুকুই গ্রহণ করে।
তবে মাঝে মাঝে কিছু সমস্যাও দেখা দিতে পারে। তাই এই কাজটি একদমই করবেন না। কারণ, আপনার ফোন যতটুকু ওয়াট নিতে পারে কিছু কিছু ফাস্ট চার্জার তার থেকেও বেশি ওয়াট আপনার ফোনে ডেলিভারি করে। এক্ষেত্রে আপনার ফোনে সমস্যা হতে পারে।
তাই ফোনের সাথে যে চার্জারটি আসে অর্থাৎ যত ওয়াটের চার্জার আসে তত ওয়াটের চার্জার ব্যবহার করাটাই সবচেয়ে ভালো।
না, ফাস্ট চার্জিং ফোনের ব্যাটারির হেলথে কোনো ধরনের ক্ষতিকর ইম্প্যাক্ট ফেলে না। তবে ফাস্ট চার্জিংয়ে ব্যাটারিগুলো সাধারণের তুলনায় একটু বেশি গরম হয়ে যায়। এতে করে ব্যাটারির কোনো সমস্যা না হলেও মোবাইল ফোনের অন্যান্য পার্টসগুলো গরম হয়ে যায়। আর গরম হওয়া যেহেতু যেকোনো ইলেকট্রনিক্স পণ্যের জন্য ক্ষতিকর, তাই এক্ষেত্রে ফোনের অন্যান্য পার্টসগুলোর ক্ষতি হতে পারে। এই ক্ষতি এড়াতে মোবাইল কোম্পানিগুলো ব্যাটারিগুলোতে 'টু ফেস চার্জিং' নামক টেকনোলজি ব্যবহার করে থাকে। এতে করে প্রথম ৭০% বা ৮০% ব্যাটারি ফাস্ট চার্জিং হলেও পরবর্তী ২০% এর ক্ষেত্রে দেখা যায় ফোনটি সাধারণ গতিতে চার্জ হয়। ফোনের ব্যাটারি যাতে খুব বেশি গরম না হয়ে যায় সেই কারণে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়ে থাকে।
এক্ষেত্রে বেশিরভাগ মানুষ যেটা করে তা হলো- একটা ফাস্ট চার্জার কিনে নেয় এবং সেটা হয়তো কোনো ভালো ব্র্যান্ড বা কোম্পানির নাও হতে পারে। এমনকি তিনি নিজে যে কোম্পানির ফোন ব্যবহার করছেন দেখা যায় চার্জারটি সেই কোম্পানিরও নয়। তাই ফাস্ট চার্জারটি ফোনের সাথে ম্যাচ করতে পারে না। এতে করে তার ফোনে দুই ধরনের সমস্যা হতে পারেঃ
মোবাইল ফোনের ব্যাটারিতে সমস্যা + মোবাইল ফোনের সার্কিট বোর্ডে সমস্যা।
নন-স্ট্যান্ডার্ড চার্জার দিয়ে চার্জ করার সময় ফোনটি ফুল চার্জ হয়ে গেলেও ব্যাটারি চার্জ সাপ্লাই করা বন্ধ করে না। ফলে ফোনের চার্জ ১০০% হয়ে গেলেও চার্জারটি আউটপুট দিতে থাকে। আর বেশি চার্জ হওয়ার ফলে ফোনের ব্যাটারির ক্ষতি হয়, লাইফটাইম কমে যায় এমনকি ব্লাস্ট পর্যন্ত হয়ে যেতে পারে। তাছাড়া ফোনের সার্কিট বোর্ডেও সমস্যা দেখা দিতে পারে। সুতরাং যেসব ফোনের সাথে ফাস্ট চার্জার দিয়ে দেওয়া হয়েছে শুধুমাত্র সে সকল ফোনেই ফাস্ট চার্জার ব্যবহার করতে হবে।
আপনি যদি এরকম আরও আনুষঙ্গিক বিষয়গুলো জেনে নিজেকে আপডেটেড রাখতে চান তাহলে এই একাউন্টটি ফলো দিয়ে রাখতে পারেন। আর নিয়মিত এ ধরনের লেখা পেতে চোখ রাখুন টেকটিউনস এর পাতায়।
আমি জান্নাতুল ফেরদৌস ইভা। এসএসসি ২০২২, ময়মনসিংহ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 2 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 14 টি টিউন ও 14 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 8 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 8 টিউনারকে ফলো করি।