হ্যালো টেকটিউনস কমিউনিটির সদস্যরা, কেমন আছেন আপনারা সবাই? আশাকরি ভালোই আছেন। বরাবরের মতো শুধুমাত্র আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি চমৎকার একটি টিউন। আশাকরি টিউনটি আপনাকে সচেতন করবে আপনার দায়িত্ব সম্পর্কে। সামনে পবিত্র ঈদুল ফিতর। তাই সবাইকে অগ্রিম ঈদ মোবারক জানিয়ে শুরু করছি আজকের টিউন।
সবুজাময় এই পৃথিবীটা আজ যেন ইট পাথরের বিল্ডিং দ্বারা ঘেরা এক শ্বাসরুদ্ধকর ভয়ানক জায়গা। কলকারখানার বর্জ্য ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় পৃথিবীতে দুষিত বায়ু আর দুষিত পানি ছাড়া আমি আর কিছু দেখি না। ঘরে ঘরে আজ শুধু রোগীর বসবাস। যে মানুষ বা প্রানী গুলো হাজার বছর বাঁচত তারা আজ অকালে মারা যাচ্ছে। এই হলো আধুনিকতার ছোঁয়ায় পৃথিবীর জীবের অভিশপ্ত অবস্থা। এসব দুষিত পরিবেশ ও প্রাকৃতিক সম্পদের কমে যাওয়া শুধু পৃথিবীর প্রানীগুলোকেই নয় বরং পৃথিবীকেও বিপদে ফেলছে। পৃথিবীর ধ্বংসটাকে দ্রুত কাছে টেনে নিচ্ছে। পৃথিবীতে এখন ক্ষতিকর সুর্য্য রশ্নি প্রবেশ করে।
পৃথিবীর স্থলভাগকে গ্রাস করছে জলভাগ। পৃথিবীর প্রানীগুলো আজ পৃথিবীতে বাঁচতে পারছে না। এসব দুর্দশা মানুষের কার্যক্রমের ফল। এই সব করেও তারা তাদের দায়িত্বটা বোঝে না। এখন আমরা যদি নিজেদের এবং পৃথিবীর ভালো চাই তবে আমাদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। সঠিক কার্যক্রম বেছে নিতে হবে। পৃথিবীকে বিপদ থেকে বাঁচাতে আমাদেরকে যেসব কার্যক্রমে গুরুত্ব দিতে হবে তা নিচে বর্ণনা করা হলো।
সারা বিশ্বের পরিবেশ দূষণে অন্যতম ভূমিকা রাখছে অধিকাংশ যানবাহন। এসব যানবাহন গুলো সর্বদা কালো ধোয়াও নির্গমন করে চলছে। ফলে দুষিত হচ্ছে পৃথিবীর সমগ্র জায়গা। এসব যানবাহন থেকে ক্ষতিকর পদার্থ যেমন- কার্বন মনোক্সাইড, কার্বন ডাই অক্সাইড এবং ওজোন নির্গমন হচ্ছে।
পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর হলেও পৃথিবীর উন্নত দেশগুলো এ যানগুলোকে একে বারে বাদ দিতে পারছে না। এসব যানবাহন থকে নির্গত বিষাক্ত পদার্থ পৃথিবীর পাশাপাশি ক্ষতি করছে সমগ্র জীবকুলের। ইঞ্জিনের ডিজাইন যথার্থ না হলে জ্বালানির খরচে সালফারের মাত্রা বেশি থাকায় ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে পৃথিবীর পরিবেশের।
যানবাহনে ডিজেল ব্যবহারে যেসব দূষক পাওয়া যায় সেগুলো হচ্ছে- নাইট্রোজেন অক্সাইড, হাইড্রোকার্বন, জৈব বিষ বা পলিনিউক্লিয়ার অ্যারোমেটিক্স। পেট্রোল ও অকটেন ব্যবহারে যানবাহন থেকে আইডল কার্বন মনোক্সাইড ও আইডল হাইড্রোকার্বন নামক দুষক নির্গত হচ্ছে। আর আপনারা নিশ্চয় জানেন যে এসব বস্তুকণার জন্যে মানবদেহে ক্যান্সার, হৃদরোগ, হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসের নানা রোগ বাড়িয়ে দিচ্ছে।
আর এসব যানবাহন বায়ু দূষণে প্রধান অবদান কারীদের মধ্যে অন্যতম। এসব যানবাহন চলাচলের জন্য বিপদে পরছে পুরো পৃথিবী। আর কবে আমরা এসব যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যাবস্থা নিব। আমরা তো শুধু পারি নিজ চোখের সামনে পৃথিবীর ধ্বংসটাকে দেখতে। আমাদের শ্বাস যদি পরিবেশ দুষনের কারনে আটকে যায় তবু আমরা চুপচাপ থাকবো। যেদিন পরিবেশ দুষনের চরম পর্যায়ে ঘরে ঘরে অসুস্থতা বিস্তার করবে সেদিন আমাদের সেন্স কাজ করবে কি না সন্দেহ আছে।
সত্যিই যদি আমরা পৃথিবীর ধ্বংস টাকে বিলম্বিত করতে চাই তাহলে আমাদের সবাইকে দায়িত্ব পালন করতে হবে। পরিবেশ সুরক্ষায় জন্য ক্ষতিকর পদার্থ নির্গমন কারী যানবাহন পরিত্যাগ করতে হবে। প্র্যয়োজন ছাড়া গাড়ি চালনো বাদ দিতে হবে। ব্যক্তিগত যানবাহন চালনোর পরিবর্তে হাঁটতে হবে আপনাকে, আমাকে এমনকি যারা যারা হাটঁতে পারে তাদের সবাইকে। প্রয়োজনে আমরা সবাই বাই সাইকেল চালিয়ে পথ পারি দিবো।
সর্বদাই আমাদেরকে দুষনমুক্ত যানবাহনের কথা চিন্তা করতে হবে। এতে যদি প্রয়োজন পরে তাহলে আমরা পুরনো দিনের ঘোড়া গাড়ি চালাবো। দুষন যুক্ত ক্ষতিকর ধোয়া নির্গমনকারী গাড়ি চালানোর বিরুদ্ধে কঠোর আইন প্রনয়ন করতে হবে। তবেই আমরা আর কিছুদিন শ্বাস নিতে পারব। এখন তো বন্যার পানি ঘরে ওঠে। কাল আমাদেরই অবহেলায় আমাদের ঘরের চালে পানি উঠবে। তাই আমাদের সবাইকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে।
প্রয়োজনে পরিবেশ রক্ষায় যা যা করনীয় তার টিউনার দেশের আনাচে কানাচে লাগাতে হবে এবং তা করতে সকলকে বাধ্য করতে হবে। পৃথিবীকে সাহায্য করতে স্বাস্থ্যকর পরিবহন চয়ন করা বা ক্ষতিকর পদার্থ উৎপন্নকারী যানবাহন বর্জন করা নিঃসন্দেহে সহজ উপায়।
পৃথিবীকে সাহায্য করার অন্যতম সেরা উপায় হলো কিছু গাছ লাগানো। গাছ রোপণ করা বায়ুমণ্ডল থেকে কার্বন ডাইঅক্সিড অপসারণ করার একটি সহজ উপায় এবং বন উজারকরণ রোধ করতে এটি শতভাগ কার্যকরী উপায়।
গাছ আমরা নানা প্রয়োজনে কেটে থাকি আবার কখন কখনো বিনা প্রয়োজনেও কেটে থাকি। বর্তমানে পৃথিবীর যা অবস্থা বিনা প্রয়োজনে গাছ কাটা তো দুরের কথা প্রয়োজনেও গাছ কাটার বিকল্প খুজতে হবে। একটি গাছ কাটলে তার জন্য কমছে কম ১০ টি গাছ লাগাতে হবে।
গাছ আমদের খাদ্য দেয়, ছায়া দেয় ও বেঁচে থাকার জন্য অক্সিজেন দেয়। আর এ গাছ কমে গেলে আমরা খাদ্য অভাবে বা অক্সিজেন অভাবে মারা যাব। থাকবে না শান্তির শ্বাস নেওয়ার মতো কোন জায়গা।
ইট পাথরের এই শ্বাসরুদ্ধকর পৃথিবীতে গাছপালা কমে যাওয়া ভয়ানক পরিণতির কারণ হতে পারে। নিঃসন্দেহে এই পৃথিবীর সবকিছুই আল্লাহ তায়ালার বিশেষ নিয়ামত। বাংলাদেশে প্রয়োজন ২৫ শতাংশ বনযুক্ত জমি যা কমে এক সময় ১৭ শতাংশ হয়েছে। আর এখন তা ১৩ শতাংশ আবার কোথাও কোথা ১০.৫৮ শতাংশ লেখা আছে।
যার ফলে পৃথিবীতে অক্সিজেন কমে যাওয়ার পাশাপাশি কার্বডাই অক্সাইড বেড়ে যাচ্ছে। ফলে বৃদ্ধি পাচ্ছে পৃথিবীর উষ্ণতা যা বাড়িয়ে দিচ্ছে সমুদ্রের পানির উচ্চতা। ফলে অকালে বড় বড় বন্যা হচ্ছে যা ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে হাজারো ঘরবাড়ি।
তাই পৃথিবী আমাদের কাছে সাহায্য চায় যে আমরা যেন বিনা কারণে গাছপালা না কাটি। যত পারি বৃক্ষ রোপন করি। প্রয়োজনে বৃক্ষ রোপনকে উৎসবে পরিনত করি। স্কুলের উঠানে বৃক্ষরোপণ করি। রাস্তার পাশে বৃক্ষরোপণ করি। আমরা নিশ্চয় আল্লাহর সন্তুষ্টি চাই। আমরা যদি সদকায়ে জারিয়ার অংশিদার হতে চাই তাহলে অবশ্যই বৃক্ষ রোপন করবো।
আজ আমরা বৃক্ষের অভাব নিঃসন্দেহে বুঝতে পারি। ভবিষ্যতে এটা আরো বাড়বে। তাই সমস্যাটাকে মোকাবিলা করতে বা পৃথিবী ও পৃথিবীর মানুষের ধ্বংস বিলম্বিত করতে আমাদের বৃক্ষরোপণ করতে হবে। পৃথিবী আজ মানুষের দরজায় কড়া নারছে সামান্যতম সাহায্যের আশায়।
বিদ্যৎ আমাদের জীবনের সাথে ওতোপ্রোতো ভাবে জরিয়ে গেছে। এটি ছাড়া যেন আর এক মুহুর্ত চলে না। কিন্তু একটা কথা ভাবুন এটা কি কোন প্রাকৃতিক সম্পদ বা অহরহ পাওয়া যায় এমন কিছু। যেখানে প্রাকৃতিক সম্পদ অপচয় করা নিষেধ সেখানে আমরা এই কষ্টে পাওয়া বিদ্যুৎ অপচয় করছি।
আপনারা হয়তো জানেন যে অপচয় কারীকে শয়তানের ভাই বলা হয়েছে। তারপরেও আমরা দিনের বেলা বা অকারণে বাল্ব জালাচ্ছি। অকারণে ফ্যান চালাচ্ছি। কখনো কখনো বাতি, ফ্যান জালিয়ে ঘরের বাহিরে যাচ্ছি। আজ আপনার জন্য উচ্চমুল্যে বিদেশ থকে বিদ্যুৎ কিনে নিতে হচ্ছে। আর আপনি বিদ্যুৎ অপচয় করছেন। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে অপচয় না করার তৌফিক দান করুক। আমিন।
আজকাল প্রতিটি ডিভাইস বিদ্যুৎ এর উপর নির্ভর করে তৈরি করা হচ্ছে। বিদ্যুৎ সংরক্ষনে আমাদের বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী সরঞ্জাম ব্যবহার করতে হবে। যেখানে বিদ্যুৎ এর প্রয়োজন নেই সেখানে বিদ্যুৎ সরবরাহ না করা।
সৌর শক্তিকে কাজে লাগিয়ে দেশের উন্নতিতে হাত রাখা। গাড়ির বদলে আমরা হাটা চলা করতে পারি। দিনের বেলায় বাল্ব না জালানো। বাড়ি থেকে বাহিরে গেলে সব বৈদ্যুতিক ডিভাইস বন্ধ করে যাওয়া।
আমারা যদি প্রতিটি পরিবার প্রতিদিন ১ ইউনিট বিদ্যুৎ সাশ্রয় করতে পারি তাহলে ১.২ ইউনিট বিদ্যুৎ তৈরি করতে হবে না বা কিনতে হবে না। তাহলে আমাদের দেশের এত পরিবার কত বিদ্যুতের খরচ কমাতে পারে ভেবে দেখুন।
প্লাগ ইন করা ডিভাইসগুলি বন্ধ থাকা অবস্থায় ও এখন বিদ্যুৎ গ্রাস করে। তাই টেলিভিশন থেকে মোবাইল ফোনগুলো বা আপনার ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস গুলো প্রয়োজন শেষ হলে তাদের প্লাগ খুলে রাখতে ভুলবেন না।
বিদ্যুৎ এক প্রকার শক্তি। আর এ শক্ত আমরা নানা জায়গা থেকে পেয়ে থাকি। এর অপচয় মানে পৃথিবীর শক্তি অপচয়। আর এ জন্য আপনাকে আমাকে তো মাশুল দিতে হবে সেই সাথে পৃথিবীকেও দিতে হবে। পৃথীবিতে অনবায়নযোগ্য শক্তি শেষ হয়ে আসছে অর্থাৎ প্রাকৃতিক গ্যাস, তেল ও কয়লা শেষ হচ্ছে।
এগুলো শেষ হলে সহজে বা অল্প সময়ে তা আর পাওয়া যাবে না। তখন আমদেরকে সম্পুর্ণ রুপে বিদ্যুতের উপর নির্ভর হতে হবে। তাই আমাদের ও পৃথিবীর অস্তিত্বের খাতিরে বিদ্যুৎ বা শক্তি সংরক্ষণে ব্যাবস্থা নিতে হবে।
এ জগতের প্রতিটি জীব অনন্য এবং সৃষ্টি কর্তার নিয়ামত। মানুষের খেদমতের জন্যই তৈরি করা হয়েছে হাজারো হাজারো জীব। এদের কতক প্রানীর গুনাগুন আমরা জানলেও অধিকাংশ প্রানীর গুনাগুন আমরা জানি না। এসব প্রানী পরিবেশের উপর বিরাট ভুমিকা রাখে। বাস্তুতন্ত্র রক্ষায় প্রতিটি প্রানীর আলাদা ভুমিকা রয়েছে।
দিনে দিনে জনসংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে। ফলে মানুষ তার বসতির জন্য গাছ উজাকরণ সহ বনাঞ্চল ধ্বংস করছে। ফলে বন্য প্রাণীদের বসবাসের অসুবিধা হচ্ছে। নেটওয়ার্ক এর রেডিয়েশন এর কারণে নানা পাখি বিলুপ্ত হচ্ছে। বন্যার কারণে নানা স্থলভাগ প্রানীর বসতি ধ্বংস হচ্ছে। এছাড়াও পরিবেশ দুষনের কারণেও নানা প্রানী বিলুপ্ত হচ্ছে। গত পঞ্চাশ বছরে প্রায় তিন ভাগের এক ভাগ প্রানী বিলুপ্ত হয়ে গেছে। বাংলাদেশে প্রায় ৮ টি প্রাণি বিলুপ্ত হয়েছে। সেগুলো সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন।
প্রকৃতি প্রতিনিয়ত আমাদের বার্তা পাঠাচ্ছে তাদের সংরক্ষন করার জন্য কিন্তু আমরা তা আমলে নিচ্ছি না। আমরা যে খুব দ্রুত তাদের রক্ষা করার সময়টুকু হারিয়ে ফেলছি তা বুঝতে পারছি না। বেশি বেশি মাছ শিকারের পাশাপাশি বনভুমি বিরাণ করছি। বাস্তুতন্ত্রের যা হয় হোক আমরা নিজের সার্থ রক্ষায় সব কুকাজ করছি।
প্রতেক প্রানীর প্রান আল্লাহর দান তাই তারা বাঁচতে চায় তাদের বাঁচার অধিকার আছে। তাদের বাঁচার পথে বাধা সৃষ্টি করছি আমরা যার জন্য মাশুল দিতে হবে পরিবেশকে আর সেই সাথে আমদেরকেও। আপনি কি জানেন যে একটি প্রাণী কমে গেলে কি কি সমস্যা হতে পারে। ধরুন যে একটি বনে বাঘ কমে গেছে। তাহলে সেই বনে হরিণের সংখ্যা বেড়ে যাবে। হরিণের সংখ্যা বেড়ে গেলে এক সময় সেই বনে হরিণের খাদ্যের অভাব দেখা দিবে।
আর আমরা নিশ্চয়ই জানি যে হরিণের প্রধান খাদ্য হচ্ছে তৃণ। আর এ তৃন কমে গেলে অসংখ্য তৃণভোজী প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে যাবে। ফলে বাস্তুতন্ত্রের এক আমূল পরিবর্তন সাধিত হবে। এভাবে পৃথিবীটা চলে যাবে ধ্বংসের দিকে।
এসব বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে আমাদের যেসব পদক্ষেপ নিতে হবে তা হলো নিম্নরুপ। বন্য অঞ্চলে বনের নীতি মেনে শত শত বছর ধরে যেসব বাসিন্দারা বাস করছে তাদেরকে সেখানে থাকতে দিতে হবে। সেখানে নতুন কোন বসতি বা নতুন কোনো মানুষ প্রবেশ করা নিষেধ করতে হবে।
বন্য প্রাণীর দাঁত এবং চামড়া ব্যবহার করে যে বস্তুগুলো তৈরি হয় সে বস্তুগুলো তৈরি করার জন্য কোন জীবিত পশুকে যেন না মারা হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। বন্য প্রাণীর দ্বারা তৈরি পণ্য ব্যবহার বন্ধ করতে হবে এবং বন্য প্রাণী পোষা প্রাণী হিসাবে রাখতে অস্বীকার করতে হবে। আমরা যদি পৃথিবীর ধ্বংসকে বিলম্বিত করতে চাই তাহলে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ একান্ত প্রয়োজন। পৃথিবী কে সাহায্য করতে আপনার আমার সামান্যতম চিন্তার বাস্তবতাই যথেষ্ট।
আমরা জানি যে পানির অপর নাম জীবন। পানি ছাড়া আমরা এক মুহুর্ত চলতে পারবো না। দৈনন্দিন সকল কাজে পানির ব্যবহার দেখতে পাওয়া যায়। এই স্থল ভাগের ৭৯% পানি আর বাদবাকি সব স্থল ভাগ। কিন্তু এসব পানির সব পানি কি আমরা পান করতে পারি?
পারি না। তার কারণ আমাদের পান করার জন্য প্রয়োজন বিশুদ্ধ পানি। যা কিছু কিছু জায়গায় সহজলভ্য হলেও অনেক জায়গায় বিরল। আর এসব বিরল জায়গাতে পানির দাম এতটাই বেশি যে তা আপনার আমার কল্পনার বাহিরে। তো আমাদের পৃথিবীতে যেখানে যেখানে বিশুদ্ধ পানি পাওয়া যায় তা সংরক্ষণ করতে হবে যাতে করে আমরা তা যেখানে যেখানে পানি পাওয়া যায় না সেখানে সরবরাহ করতে পারি। আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম যাতে দুষিত পানির সমস্যায় না ভোগে তার জন্য আমাদের পানি সংরক্ষণ করতে হবে।
একবার ভাবুন তো কত জায়গার পানিতে আর্সেনিক থাকার কারনে তা আমরা পান করতে পারছি না। কতো কলকারখানার বর্জ্য নদী নালার পানিকে দুষিত করছে। কতো জায়গায় পানির স্তর এতটাই নিচে যে সেখান থেকে পানি পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার।
এসব সমস্যা দিন দিন বাড়ছে। ভবিষ্যতে আমরা বিশুদ্ধ পানি সংকটে পড়তে পারি যদি আমরা পানি অপচয় করি বা সংরক্ষণ না করি।
ভবিষ্যতে মানুষের চাহিদা মেটাতে পরিবেশবান্ধব প্রাকৃতিক সম্পদ বিশুদ্ধ পানির প্রয়োজন। এটার জন্য আমাদের বিভিন্ন নীতি প্রণয়ন করতে হবে। কতো কতো জায়গায় পানির অভাবে জমিতে সেচ হয় না। ফলে আমদের শস্য হয় না। খাদ্যের দাম বেড়ে যায় আর অনেকেই খাবার কিনে খেতে পারে না। দেশে দেখা দেয় দারিদ্রতা। এভাবে চলতে থাকলে বা দুর্ভিক্ষের ভয়াবহ রুপ ধারণ করলে বিলুপ্ত হবে মানুষ সহ পৃথিবীর অন্যান্য প্রণী। যার ফলে পৃথিবী ধ্বংসের পথ ও প্রাভাবিত হবে।
অধিকাংশ উন্নত শহরগুলোতে ইতিমধ্যে সাফল্যের সাথে পানি সংরক্ষণের লক্ষ্যে নীতিমালা প্রয়োগ করা হয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৬০ সালের দিকে ডাক স্ট্যাম্পে পানি সংরক্ষণের সুপারিশ করা হয়েছিলো। পৃথিবীকে ও পৃথিবীর প্রানী গুলোকে বাচাঁবার লক্ষ্যে পানি সংরক্ষণ একটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য হতে পারে।
পরবর্তী প্রজন্মের জন্য পানি পাওয়া নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নিতে হবে। যাতে বাস্তুতন্ত্র সচল থাকে বা বিশুদ্ধ পানির অভাবে প্রাকৃতিক কার্যক্রম বিঘ্নিত না হয়।
পানি তুলতে আমাদের শক্তি বা বিদ্যুৎ এর প্রয়োজন হয়। পানি সংরক্ষণে আমাদের শক্তি সঞ্চয় হবে। দুষিত পানিকে বিশুদ্ধ করতে আমদের অর্থ ব্যায় হয় যা পানি সংরক্ষণে বেচে যাবে।
পৃথিবীর কিছু কিছু অঞ্চলে বিদ্যুতের ১৫% এর চেয়েও বেশি বিদ্যুৎ পানি ব্যবস্থাপনায় ব্যয় হয়। যা পানি সংরক্ষনে সাশ্রয় হবে।
আমরা অল্প পানি ব্যবহার করে অল্প সময়ে গোসল শেষ করে পানির ব্যবহার কমাতে পারি। কিয়ামতের দিন আমদেরকে পানির জন্য হিসাব দিতে হবে। আমাদের গোসলের জন ৬ লিটার পানি বরাদ্দ আছে এর বেশি ব্যায় করলে হিসাব দিতে হবে। এ রকম প্রতিটি কাজের জন্য পানি বরাদ্দ রয়েছে। তবে রমজানে যত খুশি ততো পানি খরচ করলেও আল্লাহ তায়ালা হিসাব নিবেন। আলহামদুলিল্লাহ। আমরা ব্রাশ করার সময় ট্যাপটা ঘুড়িয়ে পানি প্রাবাহ বন্ধ করে পানি সঞ্চয় করতে পারি।
তরিতরকারি ধৌত করে সেই পানি আবার টয়লেট ফ্লাসে ব্যবহার করে পানি সঞ্চয় করতে পারি। এ রকম আরো অনেক উপায় বের করে আমরা পানি সঞ্চয় করতে পারি। নিজেদের ভালোর জন্য আমাদের এটুকু করতেই হবে। তাই আশাকরি আপনারা পানি সংরক্ষণে এখন থেকে গুরুত্ব দিবেন।
প্লাস্টিকের সহজলভ্যতা একসময় ছিলো আমাদের জন্য আশীর্বাদ। কিন্তু তা বর্তমানে অভিশাপে পরিনত হয়েছে। ব্যবহার করা প্লাস্টিকের নানা সামগ্রী দিয়ে ভরা এখন প্রতিটি দেশের নদী, নালা, খাল, বিল। ফলে দূষিত হচ্ছে পানি আর সেই সাথে মরে যাচ্ছে মাছ। বাড়ছে মাছের দাম, খাদ্য অভাবে ভুগছে মানুষ।
ব্যবহারের পর মানুষ এসব যেখানে সেখানে ফেলছে। যেহেতু এগুলো নষ্ট হয় না তাই ভরে যাচ্ছে পৃথিবী। পোড়ালে হচ্ছে বায়ু দুষন। পুনরায় ব্যবহার উপযোগী করতে চাইলে ব্যায় হচ্ছে বিপুল পরিমাণ অর্থ। অর্থাৎ এই প্লাস্টিক হচ্ছে রুপকথার সেই জ্বিন যার ভাষন হচ্ছে, কাজ চাই কাজ চাই, কাজ না পেলে মালিককে পেটাই। প্লাস্টিক একবার ব্যবহারের পর এটাকে নিয়ে আমরা যাই করি না কেন এটা আমাদের ক্ষতি করেই ছাড়ে।
আমি নিশ্চিত যে আপনারা সবাই ভালো ভাবেই জানেন যে প্লাস্টিক আমাদের ও পৃথিবীর জন্য কতটা ক্ষতিকর। দৈনন্দিন সকল কাজে আসা এই উপকারী প্লাস্টিক যে আজ এত ভয়ানক মাথা ব্যাথার কারণ হবে তা ভাবতে পারেনি তারা। এখন ভাবতে পারে বলেই বিজ্ঞানীরা প্লাস্টিকের বিকল্প খুঁজে ফিরছে। কিন্তু তা বাজারে সচল করা এতোটাও সহজ বিষয় নয়।
কত কত বার দেখলাম দেশের বাজারে পলিথিন নেই অন্য ব্যাগ এসেছে। দেখে ভালো লাগতো। কিন্তু কিছু কিছু অসুবিধার কারণে দুদিন পরে আবার পলিথিনের দর্শন পাওয়া যেত। যাক সেসব কথা আর না বলি। প্লাস্টিকের ব্যবহার আমরা বাদ দিতে পারব না এটা নিশ্চিত কিন্তু কমাতে নিশ্চয় পারব। আমরা যেসব বাজার করতে পলিথিন ব্যবহার করতাম সেসব বাজার করতে পচনশীল পাটের ব্যাগ ব্যবহার করবো। প্রয়োজনে কাপড়ের সাথে দেওয়া শপিং ব্যাগ বাজারে বাজার আনতে নিয়ে যাব।
শক্ত কাগজের ব্যাগ বা কাপড়ের ব্যাগ ব্যবহার করবো। নিঃসন্দেহে এটি খুব ভালো একটি বিকল্প। প্লাস্টিকের বোতল গুলোর পরিবর্তে কাচের বোতল ব্যবহার শুরু করতে হবে। যেসব ক্ষেত্রে পলিথিনের বিকল্প নেই সেক্ষেত্রে ব্যবহার করবো।
সলু ব্যাগের মতো কৃত্রিম ব্যাগ দেশে আমদানি করে তার ব্যবহার শুরু করতে হবে। কাপড় আমদানিতে বা বিক্রয়ে পলিথিন ব্যবহার না করে কাপড়েরই ব্যাগ ব্যবহারের ব্যাবস্থা করতে হবে। নিজের এবং নিজের প্লানেটের সুরক্ষায় আমাদেরকে এটুকু করতেই হবে। যে প্লাস্টিক মাটির নিচে কয়েক শত বছরেও পচেনা এবং পৃথিবীর জন্য হুমকি তার বিকল্প আমাদের খুঁজতেই হবে আর সেই সাথে তার প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
যাক আলোচনা করে ফেললাম পৃথিবীর বিপদে আমাদের করণীয় সম্পর্কে। এ কাজ গুলো আপনাকে আমাকে বাস্তবায়ন করতে হবে। কতদিন আর নিজ হাতে পৃথিবীকে বিপদে ফেলবো। ভবিষ্যত প্রজন্মের চিন্তায় হলেও আমাদের এসব কাজ করতে হবে। স্লোগান হতে হবে, গাছ লাগান পৃথিবীকে বাঁচান। এরকম আরো স্লোগান বের করতে হবে। তা ছাপিয়ে দেয়ালে দেয়ালে লাগিয়ে দিতে হবে যাতে করে আমরা পৃথিবী রক্ষায় সঠিক কার্যক্রম বেছে নিয়ে তা বাস্তবায়ন করতে পারি।
তো কেমন হল আজকের টিউন জানাতে অবশ্যই টিউমেন্ট করুন, আমাকে জানান আমার কথা গুলো কেমন লাগলো। ভালো লাগলে জোসস বাটনে একটা ক্লিক দিয়েন। আমার টিউন নিয়মিত দেখতে চাইলে আমাকে ফলো করুন। নিঃসন্দেহে ভবিষ্যতে আমি আপনাদের জন্য জ্ঞানমুলক টিউন নিয়ে আসবো। ইনশাআল্লাহ। আজকের মত এই পর্যন্তই, পরবর্তী টিউন পর্যন্ত ভালো থাকুন। আল্লাহ হা-ফেজ।
আমি মো তানজিন প্রধান। ২য় বর্ষ, বগুড়া আজিজুল হক কলেজ, গাইবান্ধা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 91 টি টিউন ও 65 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 24 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 4 টিউনারকে ফলো করি।
কখনো কখনো হারিয়ে যাই চিন্তার আসরে, কখনোবা ভালোবাসি শিখতে, কখনোবা ভালোবাসি শিখাতে, হয়তো চিন্তাগুলো একদিন হারিয়ে যাবে ব্যাস্ততার ভীরে। তারপর ব্যাস্ততার ঘোর নিয়েই একদিন চলে যাব কবরে।