টিউনটির উদ্দেশ্য সাধারণ মোবাইল-কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের সফটওয়্যারের আসল নকল দিক সম্পর্কে ধারণা দেওয়া এবং কোনটি ব্যবহার যুক্তিযুক্ত তা বিবেচনায় আনা।
আমরা Android ব্যবহারকারীরা সফটওয়্যার কে Apps বলে থাকি। এই অ্যাপ্সের যে আসল নকল দিক রয়েছে তা অনেক মানুষেরই অজানা। হয়তো আমাদের জানার আগ্রহ নেই বা আমরা প্রযুক্তির এতো জটিলতায় প্রবেশ করতে চাই না। তবুও এই বিষয়ে আমাদের অবগত হওয়া প্রয়োজনীয় বলেই আজকে আমি এই টিউন করতে যাচ্ছি।
যেকোনো জিনিসেরই নকল বের হতে পারে, সফটওয়্যার বা Apps এর ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম নয়। আমরা প্রতিদিন যেসব Apps বা সফটওয়্যার ব্যবহার করি তার মধ্যে কোনটি আসল? কোনটি নকল?
আসল কোনগুলো? যেগুলো আমরা সরাসরি ডেভেলপার/ নির্মাতাদের দের কাছ থেকে পাচ্ছি। Android এ Google Play রয়েছে, এখানেই ডেভেলপাররা তাদের সফটওয়্যার বা অ্যাপ্সগুলো ছাড়েন। এগুলোকে আপনি আসল বা Genuine সফটওয়্যার বলতে পারেন। Google Play তে আপনি দেখবেন যে কিছু কিছু অ্যাপ্স এর Download বাটনে পেইড লেখা থাকে। এখানে ৳ বা $ যেকোনোটাই থাকতে পারে। অর্থাৎ আপনাকে সেগুলো বাড়তি টাকা দিয়ে কিনে পরে ডাউনলোড করতে হবে। এগুলোর ডেভেলপাররা চান আপনি তাদের কাছে অর্থ পরিশোধ করে Apps গুলো ব্যবহার করুন। এগুলো Google play বাদে আপনি Google এ Search করেও পাবেন। দেখবেন এগুলো আপনি ফ্রি ডাউনলোড করতে পারছেন। এই যে পেইড Apps গুলো বাইরে থেকে ফ্রিতে Download করছেন এগুলো Cracked / নকল কপি।
এতোক্ষণ Android নিয়ে কথা বললাম, এখন কম্পিউটারের কথা বলি। কম্পিউটারের জন্য ব্যাপারটা একটু জটিল। এখানে Google Play এর মতো “Genuine” Apps বা গেমের স্টোর একটি নয়। আপনি যদি গেমের কথা বলেন তাহলে Stream থেকে কেনা ভালো এবং এটাকেই মূল বলা যায়। Stream থেকে ডলার দিয়ে কিনে আপনাকে বিশাল পরিমাণ সাইজের গেম ডাউনলোড করতে হবে যা ঝামেলারই। একটা গেমের কথা বলি, GTA V. এই গেমটি অনেক গেমাররাই খেলেছি। আমরা গেম কোথা থেকে কিনেছি? কাছের কোনো CD এর দোকান থেকে। এই কেনা কপি গুলো নকল/ Pirated.
কম্পিউটার সফটওয়্যারের কথা বলি। সাধারণ কম্পিউটার ব্যবহারকারীদের নানা সময় নানা ধরনের সফটওয়্যার লাগে। যেমন : MS Word, Internet Download Manager, Adobe Photoshop, Adobe Illustrator ইত্যাদি। এগুলো আমরা কি করি? ইন্টারনেট থেকে ফ্রিতে ডাউনলোড দেই বা কারো কাছ থেকে কালেক্ট করে নিয়ে আসি। এগুলোর আসল কপিগুলো Paid, যা আমাদের Official সাইট থেকে কিনে ব্যবহার করতে হবে। আমরা কয়জনে কিনি? আমদের মধ্যে কেউ কেউ আবার দোকান থেকে সফটওয়্যার কিনে নিয়ে আসি। সেগুলোও Pirated. এটা নিশ্চয়তার সাথে বলা যায় যে বাংলাদেশের কোন CD এর দোকান আসল সফটওয়্যার বা গেম বিক্রি করে না। তবে Reputated কম্পিউটার স্টোর যেমন Ryans Computers এ গেলে পেতে পারেন।
এখন Pirated আর Genuine এর Pricing টা একটু দেখা যাক।
কম্পিউটারের জন্য :
Adobe Photoshop –
Cracked : Free
Genuine : 20.99$/M প্রায় ১৫৮০৳/মাস
Microsoft Office :
Cracked : Free
Genuine : 399$ প্রায় ৩২, ০০০৳
এই দুটি সফটওয়্যারের উদাহরণ থেকেই বোঝা যায় আসল / Genuine সফটওয়্যারের Price কত বেশী।
একটা সফটওয়্যার ইউজ করবো তার এতো দাম হবে কেন? নাহ, আমি ফ্রি তে ক্র্যাকড সফটওয়্যারই ইউজ করি। আমি বলতে পারি এই পর্যন্ত পড়ে সকলেই ক্র্যাকড সফটওয়্যারকে সমর্থন জানাবেন।
এখন আসি ক্র্যাকড সফটওয়্যারের অসুবিধা সম্পর্কে।
ক্র্যাকড সফটওয়্যারের অসুবিধাসমূহ :
১। প্রথমেই বলে রাখি আপনি নকল(অবৈধ) জিনিস ব্যবহার করছেন, আমাদের মতো দেশে এত সংখ্যক মানুষ ক্র্যাকড ব্যবহার করে যে কোনো আইন প্রয়োগ করা বৃথা। তবে উন্নত দেশে আইন রয়েছে এবং ওখানে অবৈধ জিনিস ব্যবহারের জন্য শাস্তিরও ব্যবস্থা আছে। আপনি দেশে বসে আছেন, ভাবছেন নিরাপদ। যদি আপনি ক্র্যাকড সফটওয়্যারের বিরাট ব্যবসা শুরু করে বসেন এবং তা যদি উন্নত দেশের গোয়েন্দা দের নজরে পড়ে তবে দেশে এসে ওরা আপনাকে ধরবে।
২। আপনি ক্র্যাকড সফটওয়্যার ব্যবহার করে ডেভেলপারদের কোনো সহায়তা পাবেন না। সফটওয়্যারে কোনো সমস্যা হলে সরাসরি হেল্প পাবেন না।
৩। নিরাপত্তা ঝুকি অবহেলা করার মতো নয়। আপনার নকল প্রোডাক্ট টি যে ম্যালওয়্যার বহন করছে না তার নিশ্চয়তা একমাত্র এন্টিভাইরাস দিতে পারবে। অনেক সময় নকল সফটওয়্যার ডাউনলোডের সাইটে বলা থাকে এন্টিভাইরাস বন্ধ করে ইন্সটল করতে। ওদের উদ্দেশ্য কি হতে পারে বলুন তো?
৪। আপনার ব্যক্তিগত তথ্য পাচারে ক্র্যাকড সফটওয়্যার গুলো ভূমিকা রাখে সবচেয়ে বেশী। এছাড়া আপনার কম্পিউটারে ক্র্যাকড সফটওয়্যার ইনস্টল দিলেন মানে অবৈধ সফটওয়্যার উৎপাদনকারীর কাছে আপনার কম্পিউটার তুলে দিলেন। এখন আপনার কম্পিউটারের আইপি এড্রেস ব্যবহার করে মাদক কেনা বেচা সহ নানা ধরনের সাইবার ক্রাইম ঘটানোর সম্ভবনা তৈরী হল। কোনো কিছু ঘটলে আপনা্কেই খুঁজে বের করবে পুলিশ।
৫। আপনি নকল সফটওয়্যারে সকল সুযোগ সুবিধা পাবেন না। বিশেষ করে অনলাইন কোনো সুবিধাই আপনার হাতের নাগালে থাকবে না। বাংলাদেশি যারা গেমার তারা অনলাইনে খেলতে পারেন না কেন?ক্র্যাকড গেম খেলার জন্যই।
তো এতো কিছু বলার উদ্দেশ্য ছিল আপনাদের আসল নকল সফটওয়্যার সম্পর্কে অবগত করা। এখন আপনার ডিসিশন, আপনি কোনটা ব্যবহার করবেন, Cracked নাকি Genuine?
আমি সন্দীপন সরকার। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 6 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 2 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।