স্যামসাং এবার এস ৯ ও এস ৯+ এ একেবারে ধামাকা করে দিয়েছে। ফোনের মধ্যে ভ্যারিয়েবল অ্যাপারেচার ক্যামেরা। ভাবা যায়! তার উপর সাছে 960 fps এ ভিডিও করার সুযোগ। বহু প্রতীক্ষার পর এই মাসে অর্থাৎ ফেব্রুয়ারী, ২০১৮ তে অফিসিয়াল্ভাবে স্যামসাং তাদের স্যামসাং গ্যালাক্সি এস ৯ ও এস ৯+ এর ঘোষণা করে। সম্ভবত আগামী মার্চ মাসের দিকে মাথা ঘুরিয়ে দেয়া স্যামস্যাং এস সিরিজের আরো দুটো ফোন আসতে যাচ্ছে।
এস ৯ কে নিয়ে জল্পনা কল্পনার শেষ নেই। অনেক অনেক লিক বের হয়েছে এই ফোনকে নিয়ে। কেউ বলেছে এস ৯ হচ্ছে ভবিষ্যৎ ফোন আর কেউ বলছে এটা হচ্ছে স্যামসাং এর গেম চেঞ্জিং ফোন। অনেকেই আবার এস ৯ কে নিয়ে তেমন সন্তুষ্ট নন। আজকে আমরা এস ৯ কে নিয়েই গল্প করব। চলুন দেখা যাক এস ৯ আসলেই কতটা যোগ্য ভবিষ্যতের ফোন হবার জন্য।
প্রথমেই সাধারণ স্পেসিফিকেশনগুলো জেনে নেয়া যাক। নিচে সবথেকে বিশ্বাসযোগ্য সাইট GSMARENA থেকে তুলে দিচ্ছি।
NETWORK | Technology | GSM / HSPA / LTE |
---|---|---|
2G bands | GSM 850 / 900 / 1800 / 1900 - SIM 1 & SIM 2 (dual-SIM model only) | |
3G bands | HSDPA 850 / 900 / 1700(AWS) / 1900 / 2100 | |
4G bands | LTE | |
Speed | HSPA 42.2/5.76 Mbps, LTE-A (6CA) Cat18 1200/200 Mbps | |
GPRS | Yes | |
EDGE | Yes |
LAUNCH | Announced | 2018, February |
---|---|---|
Status | Coming soon. Exp. release 2018, March |
BODY | Dimensions | 147.7 x 68.7 x 8.5 mm (5.81 x 2.70 x 0.33 in) |
---|---|---|
Weight | 163 g (5.75 oz) | |
Build | Front/back glass (Gorilla Glass 5), aluminum frame | |
SIM | Single SIM (Nano-SIM) or Hybrid Dual SIM (Nano-SIM, dual stand-by) | |
- Samsung Pay (Visa, MasterCard certified) - IP68 certified - dust/water proof over 1.5 meter and 30 minutes |
DISPLAY | Type | Super AMOLED capacitive touchscreen, 16M colors |
---|---|---|
Size | 5.8 inches, 84.8 cm2 (~83.6% screen-to-body ratio) | |
Resolution | 1440 x 2960 pixels, 18.5:9 ratio (~570 ppi density) | |
Multitouch | Yes | |
Protection | Corning Gorilla Glass 5 | |
- 3D Touch (home button only) - Always-on display |
PLATFORM | OS | Android 8.0 (Oreo) |
---|---|---|
Chipset | Exynos 9810 Octa - EMEA Qualcomm MSM8998 Snapdragon 845 - USA & China | |
CPU | Octa-core (4x2.8 GHz Mongoose M3 & 4x1.7 GHz Cortex-A55) - EMEA Octa-core (4x2.7 GHz Kryo 385 Gold & 4x1.7 GHz Kryo 385 Silver) - USA & China | |
GPU | Mali-G72 MP18 - EMEA Adreno 630 - USA & China |
MEMORY | Card slot | microSD, up to 256 GB (uses SIM 2 slot) - dual SIM model only |
---|---|---|
Internal | 64/128/256 GB, 4 GB RAM |
CAMERA | Primary | 12 MP (f/1.5-2.4, 26mm, 1/2.5", 1.4 µm, Dual Pixel PDAF), phase detection autofocus, OIS, LED flash |
---|---|---|
Features | Geo-tagging, simultaneous 4K video and 9MP image recording, touch focus, face/smile detection, Auto HDR, panorama | |
Video | 2160p@60fps, 1080p@60fps, 720p@960fps, HDR, dual-video rec. | |
Secondary | 8 MP, f/1.7, autofocus, 1440p, dual video call, Auto HDR |
SOUND | Alert types | Vibration; MP3, WAV ringtones |
---|---|---|
Loudspeaker | Yes, with stereo speakers | |
3.5mm jack | Yes | |
- 32-bit/384kHz audio - Active noise cancellation with dedicated mic |
COMMS | WLAN | Wi-Fi 802.11 a/b/g/n/ac, dual-band, Wi-Fi Direct, hotspot |
---|---|---|
Bluetooth | 5.0, A2DP, LE, aptX | |
GPS | Yes, with A-GPS, GLONASS, BDS, GALILEO | |
NFC | Yes | |
Radio | FM radio (USA & Canada only) | |
USB | 3.1, Type-C 1.0 reversible connector |
FEATURES | Sensors | Iris scanner, fingerprint (rear-mounted), accelerometer, gyro, proximity, compass, barometer, heart rate, SpO2 |
---|---|---|
Messaging | SMS(threaded view), MMS, Email, Push Mail, IM | |
Browser | HTML5 | |
- Samsung DeX (desktop experience support) - Fast battery charging (Quick Charge 2.0) - Qi wireless charging - ANT+ support - Bixby natural language commands and dictation - MP4/DivX/XviD/H.265 player - MP3/WAV/eAAC+/FLAC player - Photo/video editor - Document editor |
BATTERY | Non-removable Li-Ion 3000 mAh battery (11.55 Wh) |
---|
MISC | Colors | Midnight Black, Coral Blue, Titanium Gray, Lilac Purple |
---|---|---|
Price | About 840 EUR |
Disclaimer. We can not guarantee that the information on this page is 100% correct. Read more
১৬৩ গ্রামের এস ৯ কে অনেক বেশি স্লিম করে তৈরি করা হয়েছে। ৮.৫ মিলিমিটার মাত্র। যদিও এস ৮ কেবল ৮.০ মিলিমিটার ছিল। এস ৯ এ চিপসেট হিসেবে Exynos 9810 Octa ব্যবহার করা হয়েছে গ্লোবাল এর জন্য। আর চীন ও আমেরিকার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে Qualcomm MSM8998, Snapdragon 845.
আমরা যদি একটু ভালো করে দেখতে চাই তাহলে দেখতে পাব আসলে এস ৯ পুরোটাই এস ৮ এর কপি। বাইরে থেকে দেখলে অন্তত তাই মনে হয়। এমনকি বেশিরভাগ স্পেশিফিকেশন দেখেও এই সিদ্ধান্তে আসা যায়। শুধু মাত্র এস ৯ এর ডিসপ্লেতে কিছু পরিবর্তন দেখা যায়। নতুন এস ৯ এ স্ক্রিনের উপরে ও নিচে নন-স্ক্রিন এরিয়া কমিয়ে আনা হয়েছে। যার জন্যে স্ক্রিন আর বডি রেশিও আরো কমে প্রায় ৮৪% হয়েছে। যদিও এই রেশিও আইফোন এক্স এর থেকে এখনো বেশি। আর বাকিসব আগেরমতই আছে যেমন ইনফিনিটি ও কার্ভ ডিসপ্লে। পাশাপাশি স্যামসাং এর Organic LED ডিসপ্লে ব্যবহার করা হয়েছে এস ৯ এ। এর জন্য ফোনের স্ক্রীনের ব্রাইটনেস বাজারে যেকোনো ফোনের থেকে বেশি এবং প্রতি ইঞ্ছিতে পিক্সেলের সংখ্যাও 570 এর মত। সুতরাং স্যামসাং গ্যালাক্সি এস ৯ এ থাকছে চমৎকার মন মাতানো ডিসপ্লে।
হার্ডওয়ার আর সফটওয়্যারে স্যামসাং গ্যালাক্সি এস ৯ এ আসলে তেমন কোনো পরিবর্তন নেই। এস ৯ বাজারে আসছে Android Oreo মানে Android 8 নিয়ে। তবে ফোনের সাউন্ড সিস্টেমে আপগ্রেড করা হয়েছে। যুক্ত করা হয়েছে Dolby Digital এবং Stereo স্পিকার। অর্থাৎ আগের মত ফোনের নিচে স্পিকার তো থাকছেই সাথে কানের ইয়ারপিসকেও স্পিকার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। যার জন্য আগের থেকে উচ্চ এবং পরিষ্কার শব্দে গান শোনা যাবে।
এই ফোনে ব্লুটুথ ৫ টেকনোলজি ব্যবহার হয়েছে সাথে আগের মত ফাস্ট চার্জিং, তারবিহীন চার্জিং তো আছেই। এবারো নতুন পোর্ট USB Type-C ব্যবহার করা হয়েছে ডাটা ক্যাবলের জন্য। এবং এস ৮ এর মত ফোনের নিচে রয়েছে ৩.৫ মিলিমিটার হেডফোন জ্যাক।
স্যামসাং গ্যালাক্সি এস ৯ এ কোনো হোম বাটন ব্যবহার করা হয় নি। হোম বাটন মূলত গোরিলা স্ক্রিনের নিচে দেয়া হয়েছে। এবং এতে রয়েছে 3D টাচ। স্যামসাং এর সবথেকে বড় যেটা অভিযোগ সেটা হচ্ছে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর উপরের দিকে। এবার সেই বিবেচনা রেখে স্যামসাং গ্যালাক্সি এস ৯ এ ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর পেছনে ক্যামেরার নিচে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। নোট ৮ এর মত এস ৯ এ যোগ করা হয়েছে আইরিস সেন্সর ও ফেস ডিটেকশন।
এবার আসি আসল কথায়। স্যামসাং তাদের এস ৯ পুরোপুরি ৮ এর কপি করলেও যেই জিনিসটার পরিবর্তন এনেছে সেটা হচ্ছে তাদের গেইম চেঞ্জিং ক্যামেরা। আমাদের আজকের বন্দনা মূলত হবে এই ক্যামেরা নিয়েই।
স্যামসাং গ্যালাক্সি এস ৯ এ ভ্যারিয়েবল অ্যাপারেচার ক্যামেরা লেন্স ব্যবহার হয়েছে। অ্যাপারেচার হচ্ছে ক্যামেরার আলো নিয়ন্ত্রণ করার একটা কৌশল। এই ফোনে অ্যাপারেচার পরিবর্তন করা যায়। অথচ আমাদের গতানুগতিক সব ফোনে একটা ফিক্সড অ্যাপারেচার থাকে। সাধারণত অ্যাপারেচার যত বেশি হবে, তত কম আলোতে ভালো ও পরিষ্কার ছবি তোলা যাবে। এর জন্যেই ফোন কম্পানিগুলো অ্যাপারেচার কমিয়ে আনার যুদ্ধে থাকে সর্বদা।
অ্যাপারেচারকে সাধারণত f/x দিয়ে প্রকাশ করা হয়। এখানে x এর মান যত কম হবে ঐ ক্যামেরা দিয়ে তত কম আলোতে ভালো ছবি তোলা যাবে। আমরা সাধারণ স্মার্টফোন এমনকি ডিজিটাল ক্যামেরাতেও এরকম পরিবর্তনশিল অ্যাপারেচার দেখতে পাই না। বর্তমানে ফোনের অ্যাপারেচারগুলো থাকে এরকম f/2.0, f/1.9, f/1.8 অথবা f/1.7 এর মত। এমনকি GoPro এর অ্যাকশন ক্যামেরাগুলোতেও ফিক্সড অ্যাপারেচার থাকে। সেখানে পরিবর্তন করা যায় না।
কিন্তু স্যামসাং গ্যালাক্সি এস ৯ এ f/1.5-f/2.4 পর্যন্ত অ্যাপারেচার রেঞ্জ দেয়া হয়েছে। এটাই সবথেকে আলোচনার বিষয় ছিল। টেকনিক্যাল জ্ঞান থাকলে বোঝা যায় এত ছোট্ট একটা ফোনে ভ্যারিয়েবল অ্যাপারেচার ক্যামেরা লেন্স ব্যবহার করা কতটা শক্ত কাজ। আমরা DSLR ক্যামেরা ছাড়া এরকম পরিবর্তনশীল অ্যাপারেচার দেখতে পাই না।
আসলে এই অ্যাপারেচার দিয়ে কি হয়? মূলত কম আলোতে ছবি তোলার জন্য f/1.5 এর অ্যাপারেচার ব্যবহার করা হয়। এতে ক্যামেরার লেন্সের মুখ বেশি খোলা থাকে এবং এতে বেশি আলো প্রবেশ করতে পারে। তবে এতে ক্যামেরার ফোকাস এরিয়া কমে যায় যার জন্য সামান্য একটু যায়গা ছাড়া বাকি সব ব্লার হয়ে যায়। আবার বেশি আলোতে অর্থাৎ আউটডোর ফটোগ্রাফীর জন্য অ্যাপারেচার কমিয়ে নিতে হয়। এতে অনেক বেশি শার্প আর
ডিটেইলস ছবি পাওয়া যায়। কিন্তু যদি অ্যাপারেচার ফিক্সড থাকে তাহলে একসাথে সব কাজ করা সম্ভব হয় না।
ব্যাপারটা আরো ভালোভাবে বলা যায়। আপনি মানুষের চোখের দিকে ভালো করে পর্যবেক্ষণ করলে অ্যাপারেচার এর ব্যাপারটা ভালো বুঝতে পারবেন। দেখবেন মানুষের চোখে আলো পরলে চোখের মনি ছোট হয়ে যায় আর কম আলো তাকলে মনি বড় হয়ে যায়। ঠিক এই কাজটাই হয় অ্যাপারেচার নিয়ন্ত্রণে। স্যামসাং তাদের একটা মোটো নিয়ে এই ফোন বানিয়েছে। সেটা হচ্ছে খানিকটা এরকম ‘মানুষ যা দেখবে ক্যামেরাও তাই দেখবে’।
গ্যালাক্সি এস ৯ এর ক্যামেরায় আরো একটা দারুণ জিনিস রয়েছে। এতে ব্যবহার আছে ৯৬০ fps (frame per secon) এ ভিডিও করার অপশন। অর্থাৎ আপনি এই ফোনের ক্যামেরা দিয়ে যেকোনো ফোন থেকে বেশি স্লো মোশনে ভিডিও রেকোর্ড করতে পারবেন। এর আগে কেবল সনির ফোনে এত বেশি ফ্রেম রেট ছিল। আইফোন এক্স এ মাত্র ২৪০ fps এ রেকোর্ড করা যায়। ৯৬০ fps কে বিস্তারিত বলতে গেলে এভাবে বলা যায়, “ আপনি যদি 0.2 সেকেন্ডের একটা ভিডিও করেন তাহলে এই ফোন দিয়ে সেটাকে ৬ সেকেন্ডের ভিডিও করে ফেলা যাবে। ” মানে আপনি প্রতিটা মুহূর্তকে খুব ধীরে ধীরে দেখতে পাবেন।
এছাড়াও ক্যামেরায় রয়েছে Aremoji এবং ট্রান্সলেশন টেকনলজি। তাছাড়া গুগল গ্লাস এর মত বিভিন্ন অবজেক্টের উপর ক্যামেরা ধরলে সেই অবজেক্ট সম্পর্কে চলে আসবে ফোনের স্ক্রিনে।
এই হলো স্যামসাং গ্যালাক্সি এস ৯। স্যামসাং গ্যালাক্সি এস ৯+ এর সবকিছুই এক শুধু মাত্র এতে রয়েছে ডুয়েল ক্যামেরা ও
২ জিবি বেশি র্যাম, অর্থাৎ ৬ জিবি র্যাম। এস ৯+ এ একটা ১২ মেগাপিক্সেল এর f/1.5-f/2.4 এর ওয়াইড অ্যাঙ্গেল ক্যামেরা
ব্যবহার হয়েছে আর অন্যটি হচ্ছে f/2.4 এর ৫২ মিলিমিটার ফোকাল লেংথ এর টেলিফটো লেন্স। যা দিয়ে ২x অপটিক্যাল জুম করা যাবে।
তো, এই হচ্ছে স্যামসাং এর গেইম চেঞ্জিং এস ৯ ও এস ৯+ 'the camera reimagined'
আমরা অনেক কিছুই জানালাম। এবার আপনার পালা। আপনি কি মনে করেন স্যামসাং এর ফোন আসলেই ভবিষ্যতের ফোন হবার যোগ্য? নাকি এই খেতাব পেয়ে যাবে অন্য কোনো কোম্পানির অন্য কোনো ফোন?
আপনার মতামত জানিয়ে দিন নিচের টিউমেন্ট বক্সে। দেখা যাক অন্যান্যদের মত আপনার ভাবনাও এক কিনা! আপনি কি ভাবছেন?
আমি কামরুজ্জামান ইমন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 33 টি টিউন ও 124 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 2 টিউনারকে ফলো করি।
বিজ্ঞানকে ভালবাসি। চাই দেশে বিজ্ঞান চর্চা হোক। দেশের ঘরে ঘরে যেন বিজ্ঞান চর্চা হয় সেই লক্ষ্যেই কাজ করছি।