আইএসপি (ISP) কি?
আইএসপি (ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার) এমন একটি সংস্থা যা ব্যক্তি ও অন্যান্য সংস্থাগুলি ইন্টারনেট এবং অন্যান্য সম্পর্কিত পরিষেবাদি যেমন ওয়েব সাইট বিল্ডিং এবং ভার্চুয়াল হোস্টিং অ্যাক্সেস প্রদান করে। ইন্টারনেটের ভৌগলিক পরিসেবা প্রদানের জন্য আইএসপি প্রতিষ্ঠানের এর অনেক যন্ত্রপাতি এবং প্রয়োজনীয় টেলিকমিউনিকেশন লাইন এক্সেস আছে। ইন্টারনেটের সঙ্গে সংযুক্ত হতে হলে অবশ্যই আপনাকে কোনো না কোনো আইএসপির সঙ্গে সংযুক্ত হতে হবে। পৃথিবীর যে কোনো দেশেই হোকনা কেন ইন্টারনেট সংযোগের পাওয়ার জন্য অবশ্যই একটি আইএসপি থাকতে হবে। কেবল সংযোগের ক্ষেত্রে আইএসপির একটি রাউটারের মাধ্যমে সংযোগ প্রদান করে। অর্থাৎ, গ্রাহকরা রাউটার এর মাধ্যমে তার আইএসপির সাথে যুক্ত। রাউটার এখানে সবার মাঝে ইন্টারনেট পৌছানের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। আর যদি আপনার সংযোগটি যদি ডায়াল আপ হয়ে থাকে তাহলে আইএসপি সংযোগের মাঝখানে একটি ট্রিপল পি বা “পয়েন্ট টু পয়েন্ট” প্রটোকল সঙ্গে যুক্ত থাকে। এই প্রটোকল একটি আইএসপি এর সঙ্গে আরেকটি আইএসপিকে সংযুক্ত করে। অতএব, সকল গ্রাহক কোনো না কোনো আইএসপির সাথে সংযুক্ত।
আইএসপি (ISP) ব্যবসা কি? বাংলাদেশের আইএসপি (ISP) ব্যবসার ধরন:
আইএসপি ব্যবসা হচ্ছে ইন্টারনেট সেবা দানকারী ব্যবসা যেখানে একটি প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি ইন্টারনেট এবং ইন্টারনেট সম্পর্কিত পরিষেবাদি অন্য ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে প্রদান করে নিজের ব্যবসা পরিচালনা করে।
বাংলাদেশের আইএসপি (ISP) ব্যবসায়ীরা এখন ঘরে ঘরে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট নিশ্চিত করছে।
মোবাইল অপারেটরদের ধীর গতির ইন্টারনেট, কোনো আনলিমিটেড প্যাকেজ না থাকা, উচ্চ মূল্যে মাত্র কয়েক MB বা GB হিসেবে ব্যবহার এসব কারণে গ্রাহকদের পছন্দের জায়গা এখন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট।
যদিও মোবাইল অপারেটররা ৩জি সেবা দেওয়া শুরু করেছে, তবুও শম্বুক গতির কারণে তা গ্রাহক সন্তুষ্টি অর্জনে বিফল হচ্ছে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে কম টাকায় উচ্চ গতির নেট পাওয়ার একমাত্র মাধ্যম ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট। স্বল্প মূল্যের আকর্ষণীয় আনলিমিটেড প্যাকেজ, অসংখ্য প্যাকেজ-এর মধ্যে থেকে প্রয়োজনীয় প্যাকেজ বাছাই সুবিধা, প্রয়োজন অনুযায়ী স্পিড, ব্যবহারকারী অনুযায়ী প্যাকেজ ইত্যাদি কারণে অধিকাংশ মানুষই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবহারে অনুরাগী হয়ে উঠেছে। কিন্তু এদেশের খুব কম জায়গাতেই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট আছে। বড় শহরগুলোতে এটা কেবল সদ্য সম্পরণশীল ব্যবসা। জেলা-উপজেলা বা মফস্বল গুলোতে এখনো ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা ভালোভাবে বিস্তার লাভ করে নাই। অতএব, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ব্যবসা কম ঝুঁকিপূর্ণ সে বিষয়ে সন্দেহ নেই।
কিভাবে শুরু করবেন:
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের ব্যবসা করতে হলে প্রথমে জরিপ করে নিন আপনার ব্যাবসায়িক এলাকায় ইন্টারনেট আইএসপি কোম্পানি কতগুলা? সেই অনুপাতে আপনার ব্যাবসায়িক এলাকায় ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা কত। ভবিষ্যতে ব্যবহারকারী বৃদ্ধির হার কেমন হবে। আপনার সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পরে ফলাফল যদি সন্তোষজনক মনে হয় তাহলে ব্যবসা শুরু করতে পারেন। ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসা করার জন্য বিটিআরসি থেকে লাইসেন্স করতে হবে। লাইসেন্স করার জন্য অবশ্যই নির্ধারিত ফরমে আবেদন করতে হবে। বিটিআরসি (বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন) থেকে দেয়া নির্ধারিত ফর্মে আবেদন দাখিল করতে হবে। বিটিআরসি (BTRC) এর ওয়েবসাইট থেকে খুব সহজেই ফর্ম নামিয়ে নিতে পারবেন। আপনাদের সুবিধার্তে ফরম পাবেন এখানে। সতর্কতার সাথে ফর্ম পূরণ করে ফর্মে উল্লেখিত সকল কাগজপত্র সংযুক্ত করে বিটিআরসি (BTRC) হেড অফিসে জমা দিতে হবে। সব কিছু ঠিক থাকলে আবেদন করার ৩ মাসের মধ্যে লাইসেন্স পেয়ে যাবেন।
সকলের জ্ঞাতার্থে কার্যালয়ের ঠিকানা নিম্নরূপ:
কোথায় ব্যান্ডউইথ পাবেন:
ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রয়োজনীয় হলো ব্যান্ডউইথ। ব্যান্ডউইথ বিনা ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট ব্যবসা সম্ভৰ নয়। বিটিসিএলের ফাইবার লাইনের পপস পোর্ট অথবা মোবাইল অপারেটরদের অপটিক্যাল ফাইবার হতে পারে প্রয়োজনীয় ব্যান্ডউইথের উৎস। বিটিসিএলের ফাইবার লাইনের পপস পোর্ট আছে শুধু জেলা শহরগুলিতে। যদি আপনার এলাকা উপজেলা বা ইউনিয়ন পর্যায়ে হয়ে থাকে তাহলেও তাতে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। কারণ মোবাইল অপারেটরদের ৩জি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণের কারণে এখন ইউনিয়ন বা গ্রাম পর্যায়েও অপটিক্যাল ফাইবার পৌঁছে গেছে।
বর্তমানে, ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্র (ইউআইএসসি) এর জন্য ইউনিয়ন পর্যায়ে দুর্বার গতিতে অপটিক্যাল ফাইবার সম্প্রসারণ চলছে। ইউনিয়ন তথ্য ও সেবা কেন্দ্র (ইউআইএসসি) হলো বাংলাদেশের ইউনিয়নভিত্তিক তথ্য-সেবা কেন্দ্র, যার উদ্দেশ্য হলো তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের দোরগোড়ায় তথ্যসেবা নিশ্চিত করা। ‘ইউনিয়ন তথ্য ও সেবাকেন্দ্র ২০০৭ সালে ‘কমিউনিটি ইনফরমেশন সেন্টার’ (সিইসি) নামে শুরু হয়। ২০০৭ সালের এ পাইলট প্রকল্পে অভিজ্ঞতার আলোকে ২০০৮ সালে বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার বিভাগ এটুআই প্রোগ্রামের সহায়তায় ৩০টি ইউনিয়ন পরিষদে সিইসি থেকে বেরিয়ে এসে ইউনিয়ন তথ্য ও সেবাকেন্দ্র স্থাপন করে। তাছাড়া, ২০১৬ সালে সারাদেশে গ্রাম পর্যায়ে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে ‘টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক বিস্তার’ নামে প্রকল্পটির কাজ শেষ হয়েছে। বিটিসিএলের এই প্রকল্পের আওতায় ৭ লাখ ৮ হাজার ৩০ কিলোমিটার ফাইবার কেবল স্থাপন করা হয়। ইন্টারনেট বর্তমানে একটি মৌলিক অধিকারের প্রায় কাছাকাছি জায়গায় অবস্থান করছে। সাধারণত, শহর ও গ্রামের বৈষম্য অনেক। এই প্রকল্পের কারণে শহর ও গ্রামের বৈষম্য অনেকাংশে কমে যাবে। গ্রামে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সুবিধা না দিলে শহরের মানুষের চেয়ে তারা পিছিয়েই থাকবে সে বিষয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ নাই। অতএব হাল ছেড়ে দিলে চলবে না।
পাশাপাশি, বেসরকারি IIG (International Internet Gateway) গুলা প্রায় সারাদেশে অতি দ্রুত তাদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করতেছে। আপনাকে ঐসব IIG এর কাছ থেকে জেনে নিতে পারবেন আপনার এলাকায় তাদের অপটিক্যাল ফাইবারের পপস পোর্ট আছে কিনা। এখন পর্যন্ত বিটিআরসি (BTRC)-এর তালিকাভুক্ত মোট ৩৬টি ব্যান্ডউইথ প্রোভাইডার রয়েছে। এই কোম্পানি গুলো সম্পর্কে জানতে ক্লিক করুন এখানে। বিটিসিএল (BTCL) সহ কয়েকটি IIG কোম্পানি সারাদেশে নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করেছে এবং তারা তুলনামূলক কম দামে ব্যান্ডউইথ বিক্রি করে। তারপরও যদি একটু দূরে পোর্ট থাকে ঐখান থেকেও রেডিও লিংক করে আনতে পারবেন। আর যদি পপস পোর্টের দূরত্ব অনেক বেশি হয় তাইলে দুইটি উপায়ে ব্যান্ডউইথ নিতে পারবেন। প্রথম উপায় হলো স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ব্যান্ডউইথ নেয়া আর দ্বিতীয়টি হলো মাইক্রোওয়েভ দ্বারা কানেক্টেড মোবাইল টাওয়ারের বিটিএস নেয়া। কিন্তু এই দুই পদ্ধতিতেই অনেক ব্যয়বহুল। এতে ব্যান্ডউইথের দাম অনেক বেশি পড়বে। বিকল্প হিসেবে বড় জেলা শহর গুলোর আইএসপি কোম্পানি থেকে কম দামে সাবলাইন নেয়া। পরের পর্বে আমরা বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।
জেবিআরসফট(JBRSOFT)
http://www.jbrsoft.com
http://www.isperp.org
আমি জেবিআরসফট আইটি ফার্ম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 6 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 2 টি টিউন ও 0 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 1 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।