চেইন টিউন: মহাবিশ্ব ও পৃথিবীর কথা -২

গত পর্বে আমরা বিগব্যাং নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেছিলাম। আজ আমরা এ নিয়ে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করবো। সাথে বোনাস হিসেবে থাকবে বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের বিগব্যাং নিয়ে একটি ভূলের বিস্তারিত!

বিগ ব্যাং নিয়ে প্রচলিত ধারণা:

বিগব্যাং। বিখ্যাত একটি তত্ত্ব। বিজ্ঞানে সর্বাধিক উচ্চারিত শব্দগুলোর একটি। শুধু তাই না, পৃথিবীর সবচাইতে ভুল ভাবে বোঝা বিষয়গুলোরও একটি হলো বিগব্যাং। বিগব্যাং সম্পর্কে আমরা সাধারণ মানুষ হয়তো নাম শুনেই যথাযথ সম্মান জানিয়ে দুরে থাকি। কিংবা, এমন কিছু আবছা ধারনা রাখি যা আসলে ভুল, মহাভুল।

আমারা যেই মহাবিশ্বে বাস করি তার কিভাবে উৎপত্তি হলো? মহাবিশ্বের সৃষ্টির আগে কি ছিল? এই প্রশ্ন মানুষ অনেক আগে থেকেই করে আসছে। পাঠক, আপনি কি মনে করেন যে বিগব্যাং তত্ত্ব এই প্রশ্নের উত্তর দেয়? যদি এরকমটাই ভেবে থাকেন তাহলে এখনই এ ধারণাটা মাথা হতে ঝেড়ে ফেলে দিন! আসলে এই মহাবিখ্যাত তত্ত্বটির মহাবিশ্বের উৎপত্তি নিয়ে কোন মাথাব্যাথা নেই। এই তত্ত্ব আরো যে সব চিরায়ত, অবাক করা প্রশ্ন নিয়ে কাজ করে না সেগুলো হলো:

=> কি, কিংবা কোন শক্তি মহাবিশ্বের উৎপত্তির সূচনা করেছিলো? বিগব্যাং নয়, ইনফ্লুশন থিউরী এর একটি ব্যাখ্যা দেয়।( এ নিয়ে বিস্তারিত পরে আলোচনা করা হবে)
=> বিগব্যাং'র আগে কি ঘটেছিলো?
=> মহাবিশ্বের বাইরে কি আছে?
=> মহাবিশ্বের আকৃতি কেমন? এ বিষয়টি অনেক তত্ত্বই ‌ব্যাখ্যা করে। কিন্তু বিগব্যাং তত্ত্ব এ সম্পর্কে কিছু বলে না।

আসলে বিগব্যাং তত্ত্ব হলো একটি ব্যাখ্যা। ব্যাখ্যার বিষয় – কিভাবে আমাদের নিজস্ব মহাবিশ্ব অত্যন্ত ক্ষুদ্র, ঘন ও উত্তপ্ত অবস্থা হতে আজকের এই দশায় গড়ে উঠলো। বিগব্যাং তত্ত্বই কেবল একমাত্র ব্যাখ্যা নয়, আরো ব্যাখ্যা আছে। এদের মধ্যে বিগব্যাং তত্ত্বই সর্বাধিক গ্রহণযোগ্য। কারণ বিগব্যাং তত্ত্ব এমন কিছু ভবিষদ্বানী করেছিলো যা এখন প্রমাণিত। তবে বিগব্যাং এখনও অনেক পর্যবেক্ষণের ব্যাখ্যা দিতে পারে না।

বিগব্যাং কি কোন বিষ্ফোরণ?

না। বিগব্যাং কোন বিষ্ফোরণ নয়। অনেকে এভাবে ভাবেন যে বিগব্যাং এক আদি সময়ে মহাবিশ্বের সকল বস্তু আর শক্তি এক বিন্দুতে সংকুচিত ছিল। তার পর এ বিন্দু বিষ্ফোরিত হয়ে বস্তুগুলো চারপাশের স্থানে ছিটকে যায়। এর মাধ্যমে মহাবিশ্ব গড়ে ওঠা শুরু করে।

বিষয়টা আসলে তা নয়। প্রকৃতপক্ষে, বিগব্যাং নিয়ে যে কোন আলোচনার সময় আমাদের যে শব্দটির দিকে সবচাইতে খেয়াল করতে হবে তা হলো সম্প্রসারণ, বিষ্ফোরণ নয়। এ তত্ত্ব বলে স্থান তার মাঝে যা আছে তার সব কিছু নিয়েই সম্প্রসারিত হচ্ছে। সকল বস্তু এই স্থানের মধ্যে ছিল – তারা একে অপর থেকে দূরে চলে যাচ্ছে।

এ দুটি ধারণার মাঝে পার্থক্য কোথায়? বিগব্যাং মহাবিশ্বের পদার্থ এবং শক্তি চারপাশের স্থানে ছিটকে পড়ে নি। বরং স্থান, তার মাঝে পদার্থ ও শক্তি নিয়ে প্রসারিত হয়েছে। যদিও বিগব্যাং তত্ত্বের কিছু বিবৃতি (রূপ/ভার্সন) বলে যে বিগব্যাং অত্যন্ত দ্রুতগতির সম্প্রসারণ – তারপরেও তা সাধারণ ধারণামতে কিন্তু ঠিক বিষ্ফোরণ নয়। নিচের ছবিটা লক্ষ্য করুন-

আজ যখন আমরা মহাকাশের দিকে তাকাই, দেখি বিভিন্ন গ্রহ, অজস্র তারা, গ্যালাক্সি এবং তাদের মাঝে বিস্তীর্ণ স্থান। এই বিস্তীর্ণ স্থান দিয়ে তারা আলাদা আলাদা ভাবে আছে। বিগব্যাং আদি মুহূর্তে সকল বস্তু, শক্তি আর স্থান এক শুণ্য আয়তনের কিন্তু অসীম ঘনত্ববিশিষ্ট এক বিন্দুতে সীমাবদ্ধ ছিল। বিজ্ঞানীরা এই অবস্থাকে বলেন সিঙ্গুলারিটি।

যত দোষ নামের:
এই যে বিগব্যাং তত্ত্ব নিয়ে ভুল ধারণা – এর জন্য আমরা কাকে দোষ দিতে পারি? আসলে দোষ দেওয়া উচিত এই তত্ত্বের নামটিকেই। বিগব্যাং'র শাব্দিক অর্থ হলো বিশাল গন্ডগোল! আর এ নামের এমন মহিমা হলো যে শুনলেই মনে হয় ব্যাপক বিষ্ফোরণ! এই নামটি দিয়েছিলেন স্যার ফ্রেড হয়েল। তিনি মহাবিশ্বকে ব্যাখ্যা করতে স্থির একটি মহাবিশ্বের নকশা দিয়েছিলেন। এ নকশায় সময়ের যে কোন বিন্দুতে মহাবিশ্ব একই রকম থাকে (আইনস্টাইনও প্রথমে স্থির মহাবিশ্বের মডেলে বিশ্বাস করতেন)। স্বাভাবিকভাবেই বিগব্যাং হলো এই ধারণার উল্টো। তিনি ১৯৪৯ সালে বিবিসি প্রচারিত থার্ড প্রোগ্রাম নামক অনুষ্ঠানে নতুন এই তত্ত্বকে একটু হেয় করতেই বিগব্যাং নামটি দেন। পরবর্তীতে তিনি অনেকগুলো বক্তৃতায় এ নামটি ব্যবহার করেন এবং এ নামটিই পরবরর্তীতে জনপ্রিয় হয়ে উঠে।

গণিত পরীক্ষার চালাকি!
স্কুলের সেই চতুর ছেলের গল্প বলি। গণিত পরীক্ষা চলছে। ভালোভাবেই দিচ্ছিলো পরীক্ষাটা। হঠাৎ একটা অঙ্ক সে মেলাতে পারছিলো না – কোথায় যেন একটা ঝামেলা হচ্ছে।অঙ্কটা তার অপরিচিত নয়। উত্তরটা ছিলো জানা। সে এখন একটা ছোট্ট চালাকি করতে পারে। অঙ্কটার শেষে কোনমতে বসিয়ে দিতে পারে সঠিক উত্তরচি। আশা করা যায়, পরীক্ষকের চোখে চালাকিটা ধরা পড়বে না।
অনেকটা কাছাকাছি কাজ করেছিলেন আইনস্টাইন। বিগব্যাঙ নিয়ে করেছিলেন একটি ভুল। চলুন সেই গল্প শোনা যাক।

আইনস্টাইনের ভুল!!!
বিজ্ঞানী হাবল বিগব্যাং একটি তাত্ত্বিক রূপ দেন (গত পর্বে এ নিয়ে বলা হয়েছে)। তার সমসাময়িক অনেকেই এই তত্ত্ব নিয়ে বিশাল দ্বন্দ্বের মধ্যে পড়েন। তাদের মাঝে একজন ছিলেন আইনস্টাইন।
আইনস্টাইন ভাবতেন, মহাবিশ্ব স্থির। অর্থাৎ সৃষ্টির শুরুতে মহাবিশ্ব যেমন ছিলো, এখনোও ঠিক তেমনই আছে। আর বিগব্যাং তত্ত্ব বলে যে মহাবিশ্ব সম্প্রসারিত হচ্ছে।
আইনস্টাইনের বিখ্যাত একটি তত্ত্ব সাধারণ আপেক্ষিকতা। তিনি আশা করতেন, এই তত্ত্ব তাকে মহাবিশ্বের গঠন সম্পর্কে একটি ধারণা দেবে। এই তত্ত্বটি সম্পূর্ণ করার পর তিনি বিশ্মিত হয়ে গেলেন। এই তত্ত্ব বলছিলো, মহাবিশ্ব স্থির নয়। হয় তা সম্প্রসারিত অথবা সংকুচিত হচ্ছে। এই গাণিতিক উপসংহার ছিলো তার স্হির মহাবিশ্ব ধারণার সাথে বিরোধপূর্ণ। প্রথমে এই উপসংহার তিনি মেনে নিতে পারেন নি। তাই এই বিরোধিতা নিরসনের জন্য তিনি একটি সৃষ্টিতাত্ত্বিক ধ্রুবক (কসমোলজিকাল কন্সট্যান্ট) প্রস্তাব করেন। এই ধ্রুবক গাণিতিকভাবে তার তত্ত্ব আসে না। অনেকটা জোড় করেই এই ধ্রুবকটিকে আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্বের সাথে যুক্ত করা হয়। এর ফলে আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্বের সাথে স্হির মহাবিশ্ব মডেলের বিরোধ মিটে যায়।
অবশ্য পরবর্তীতে যখন হাবলের তত্ত্ব স্বীকৃত হলো, আইনস্টাইন মেনে নিলেন যে তিনি ভুল করেছেন। মহাবিশ্ব আসলেই সম্প্রসারিত হচ্ছে। তার নিজের তত্ত্বই বিগব্যাং'র পক্ষে যায়। তিনি যে সৃষ্টিতাত্ত্বিক ধ্রুবকের প্রস্তাবনা করেছিলেন, তা আসলে ভুল ছিলো।

মহাবিশ্বের বিকাশ ব্যাখ্যা করার জন্য বিগব্যাং তত্ত্বই একমাত্র নয়। আরো অনেকগুলো মডেল মহাবিশ্বের বিকাশ ব্যাখ্যা করে। তবে তাদের কোনটিই বিগব্যাং তত্ত্বের মতো জনপ্রিয় ও বহুলপ্রচারিত নয়। এরকম কয়েকটি মডেলের নাম শোনা যাক:

ক) স্টেডি স্টেট ইউনিভার্স। এই তত্ত্ব বলে যে মহাবিশ্বের ঘনত্ব অতীত, বর্তমান এবং ভবিষ্যতে একই রকম থাকে। সম্প্রসারণের সাথে সাথে ব সমানুপাতিক হারে মহাবিশ্ নতুন বস্তু তৈরি করে। এ কারণে মহাবিশ্বের ঘনত্বের কোন পরিবর্তন হয় না।
খ) বিগ বাউন্স তত্ত্ব অনুসারে মহাবিশ্ব ধারাবাহিকভাবে সম্পসারিত হয়। তার পর একসময় সে সংকুচিত হওয়া শুরু করে। তারপর আবার সে সম্পসারিত হয়। আমাদের মহাবিশ্ব এইরকম সংকোচন-প্রসারণের মাধ্যমে তৈরি হওয়া অনেকগুলো মহাবিশ্বের একটি।
গ) একপাইরোটিক তত্ত্ব বলে আরো একটি মডেল আছে। এই তত্ত্বটি বলে যে আমাদের মহাবিশ্ব চতুর্থ মাত্রায় দুইটি ত্রিমাত্রিক জগতের পারস্পারিক সংঘর্ষের ফলাফল! এই তত্ত্ব বিগব্যাং'র সাথে বিরোধপূর্ণ নয়। একটা সময় পর মহাবিশ্ব বিগব্যাং প্রদর্শিত পথে বিকশিত হয়। [চলবে...]

(তথ্যসূত্র- Big-Bang)

ধারাবাহিক সিরিজ: মহাবিশ্ব ও পৃথিবীর কথা -১

Level 0

আমি এন.সি.। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 46 টি টিউন ও 208 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস

এন,সি ভাই যে, কি খবর? টিটি তে দেখে ভালো লাগলো। স্বাগতম আপনাকে, ভালো থাকুন, শুভ কামনা

    পিপি ভাই যে! 😀 কেমন আছেন আপনি? আমি ভালো আছি। আপনাকে ধন্যবাদ।

ভালো লিখেছেন…………কিন্তু আল্লাহ’র দেওয়া সৃষ্টি তত্তের সাথে বিরোধপূর্ণ বলে মনে হোল……। 😀

    বিজ্ঞানকে ধর্মের সাথে তুলনা করা ঠিক হবেনা। এই ধারাবাহিক টিউনটি করা হচ্ছে অবশ্যই আধুনিক বিজ্ঞানকে কেন্দ্র করে। ধর্ম একান্তই যেকারো ব্যক্তিগত ব্যাপার। আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ…

আপনার এই ধারাবাহিক লেখা খুব ভাল লাগছে চালিয়ে যান ।

    ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

অনেক সুন্দর হইছে, পড়ে ও ভাল লাগল অনেক কিছু জানার আছে> আমার একটা ছোট প্রশ্ন এই বিষয় সম্পর্কে, যদি জানেন তবে সাহায্য করবেন,
পৃথিবী যে গোলাকার তার উপরের দিকে দ্বীপের মত এক একটা দেশ তাহলে আমরা মানুষেরা কি সত্যি ই সোজা হয়ে দাড়াতে পারি নাকি আমাদের সমতল টা সমতল নয় ঢালু প্রকৃতির? প্রশ্নটা বুঝাতে পারলাম কি না জানিনা

    প্রথমে আপনাকে ধন্যবাদ জানাই আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য। আপনার প্রশ্ন আমি খুব ভালোভাবেই বুঝতে পেরেছি। আশা করি খুব তড়াতাড়ি এই সম্পর্কে জানতে পারবেন। পরবর্তী টিউনে এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করে হবে। ভালো থাকবেন…।

    আমরা সবসময় ঝুলন্ত অবস্থায় থাকি ।

    @ছাত্র ও শিক্ষক
    বিষয়গুলোতে অনেক জানার এবং বোঝার আছে। আর ভাল কিছু পাওয়ার জন্য তো অপেক্ষা করতেই হবে। ধন্যবাদ…

এন.সি. ভাই মজার কথা কি জানেন এ ধরনের সায়েন্টিফিক পোষ্টগুলোতে কেন যেন ধর্ম বারবার চলে আসে। যাই হোক আমি যেমনটা জানি তাতে ইসলাম ধর্মে বিগ ব্যাঙ্গের একটা ইঙ্গিত আছে(আমি পেয়েছি কারো থেকে শোনা না)।
টিউন অনেক ভাল হয়েছে চালিয়ে যাবেন আশা করি।

    আপনি ১০০% সঠিক বলেছেন। আমার কাছে মোঃ জাকির নায়েকের একটি বই আছে। ওখানেই এ সম্পর্কে জেনেছি। তবে আমি আবারো আপনাদের মনে করিয়ে দিতে চাই, আমি কোনভাবেই ধর্মীয় বিতর্কে যেতে চাই না। আর এই ধারাবাহিক টিউনটি (পরবর্তী পর্বগুলোসহ) শুধু মাত্র বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করা হবে। আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ…

আমিও দুঃখিত বার বার ধর্ম এসে যায় তার কারনও আপনার টিউনের চাহিদায়,
বিগবেনের সাথে পবিত্র ক্বোরানের অনেক না বেশীর ভাগই মিল আছে,এই নিয়ে জাকির নায়েক সুন্দর ভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন।
*কোন বিষয়ের উপরে যদি কোন ধর্মিয় কিতাবের মতামত প্রদান করা হয় সেটা কিন্তু ধর্মিয় বিতর্ক না এইটাও একটা মত।
আর বৈনাজ্ঞানিক দৃষ্টিকোন থেকে বিবেচনা করব কিভাবে আমি যে বিজ্ঞানি নয়,আর বিজ্ঞানির মতামতকে যদি বিবেচনায় আনতে বলেন তাহা হইলেই হইছে কাজ,কারটা মানব,আজ যদি কোন একজন বিজ্ঞানি যদি বলে এইটা ঠিক কিছুদিন পরে অন্য আরেক জন বলে আগেরটা ঠিক না এইটা ঠিক।
তাইতো আমাদের মতন কম জানা মানুষের এই সব কিতাবের কাছে যেতে হয় কারন দেখে এসেছি যে,বিজ্ঞানিদের কথার ওলোট পালোট হইলেও কিতাবের কথার কোন পরিবর্তন হয় নাই।
*আরেকটা কথা শুধু ব্যাক্তিগত ভাবে আপনাকে বলব খারাপ লাগলে ডিলেট করে দিয়েন কারন এইটা অনেকটা ধর্মিয়,
আপনি বার বার বলছেন ধর্ম যার যার ব্যাক্তিগত ব্যাপার,আমার পক্ষথেকে একজন মুসলমান হিসাবে এই কথার সাথে দ্বীমত পোশন করছি।
কারন আমাদের ধর্মে নিজে নিজে বাঁচার বা ধর্ম পালন করার কোন সুযোগ নাই,বরং আমাদের ধর্মটা সমষ্টিগত ব্যাপার।
আমাদের পদ্ধতিটা হইল এই রকম,”আপনি নিজে বাঁচবেন তারপর আপনার পরিবারকে বাঁচাবেন(অর্থাৎ খারাপ বা গুনাহর কাজ থেকে বিরত রাখবেন)তারপর আপনার প্রতিবেশী-সমাজ-রাষ্ট্র-এবং পুরা মানব জাতি।”আপনি একা একা বাঁচবেন আর অন্যরা মরবে তাহা হইলে আপনারও নাজাত নাই।
পবিত্র ক্বোরানে স্পষ্ট আছে “তোমরা নিজে বাঁচ এবং তোমাদের পরিবারদেরকেও আল্লাহর শাস্তি হইতে বাঁচাও – আল ক্বোরান সুরা-আত ত্বাহরীম।”তাছারাও এই নিয়ে অনেক হাদিস আছে।
কমেন্টা একটু বড় হয়ে যাওয়ার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি ভাল না লাগলে ডিলেট করে দিয়েন,
*আর হ্যা ধর্ম নিয়ে অবশ্যই বারাবারি করা যাবেনা।

    ধর্মের সাথে বিজ্ঞানের শত্রুতা অনেক আগে থেকেই। আর আমি আগেই বলেছি, এই ধারাবাহিক টিউনটি করা হচ্ছে অবশ্যই আধুনিক বিজ্ঞানকে কেন্দ্র করে। তাছাড়া ইসলাম তো জ্ঞান অর্জন করার জন্য সুদূর চীন দেশেও যেতে বলেছেন। ধর্ম সম্পর্কে আমি নিজেও তেমন কিছুই জানিনা। বিশেষ করে ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে তো কিছুই জানিনা। এজন্য আমি ধর্ম নিয়ে বিতর্কগুলো সবসময় এড়িয়ে যেতে চাই।

    আমার জানা মতে, আল্লাহর শেষ রাসূল হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছিলেন- “কারো উপর জোড়পূর্বক নিজের ধর্ম চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করোনা”। এমনকি ইসলামের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল-কোরআনেও নাকি এ সম্পর্কে বলা হয়েছে- “লাকুম দী নুকুম ওয়ালিয়া দ্বীন।” অর্থাৎ, “যার যার ধর্ম তার তার কাছে”। আর সেই হিসেবেই আমি বলেছিলাম যে, ধর্ম একান্তই যেকারো ব্যক্তিগত ব্যাপার। বাংলা ব্যাকরণের নিয়ম অনুযায়ী, ধর্ম শব্দটির উৎপত্তি ‘ধৃ’ ধাতু থেকে। ধৃ মানে ধারণ করা, আর ধর্ম হলো সেই জীবনব্যবস্থা যা মানুষ নিজে ধারণ করে। আর এ ক্ষেত্রে একজন মানুষ হিসেবে আমাদের সবার প্রধান ধর্ম হওয়া উচিৎ মনুষত্ব। ধর্ম এমন একটা জিনিস যা নিয়ে একবার তর্ক শুরু হলে চলতেই থাকবে। তাই আমি আগেই বলেছি, কোনভাবেই ধর্মীয় বিতর্কে যেতে চাই না। উপরোক্ত কথাগুলোর জন্য সরাসরি কোন তথ্যসূত্র দিতে পারলাম না বলে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। আর আমি আরবী ভাষা জানিনা। এগুলো সব কোন এক তাফসীর-উল-কোরআনের আসর থেকে শুনেছিলাম। এতে আমার কিছু ভুল থাকলে আশাকরি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আর আপনি এমন কিছুই বলেননি, যার জন্য আপনার মন্তব্যটি মুছে ফেলা হবে। আপনার মতামতের জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

    আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাই আপনার সুন্দর গঠন মুলক বক্তব্যের জন্য।
    আরেকটা কথা না বলার লোভ সামলাতে পারলাম না তাই আবার কমেন্ট করতে হইল।
    দয়া করে আমার কমেন্ট গুলু আপনি ধর্মিয় দৃষ্টিকোন থেকে দেখবেননা,
    আমি হয়তো উদাহরন দিব দুই একটা কিন্তু বাড়াবারি আমি কোনদিনই করিনা।
    আর আপনাকে একটা কথা না বললেই নয়,
    আপনি আপনার টিউনে কখনো বলবেন্না”কেউ এই টিউনকে ধর্মিয় দৃষ্টি কোন থেকে দেখবেন্ন”ইহাতে কি হয় জানেন উলটা অনেকে ধর্ম নিয়েই কমেন্ট করে বসবে আরো উৎসাহিত হয়ে,আর যদি কেউ বাড়াবারি ধরনের কমেন্ট করে ধর্ম নিয়ে তাহা হইলে আপনি ডিলেট করে দিবেন আর ডিলেট করতে না চাইলে এড়িয়ে যাবেন না হয় শুধু ধন্যবাদ বলে দিবেন দেখবেন আর বাড়বেনা ব্যাপারটা।
    এইটা আমার পরামর্শ থাকল যদি ভাল লাগে দেখবেন ভাল কাজ দিবে।

    যোদিও আমি নিজে ইসলাম ধর্মের নই। তবুও আমার ইসলাম সহ অন্যান্য সব ধর্ম সম্পর্কে জানার অনেক তৃষ্ণা আছে। আমি সব ধর্ম থেকে যতটুকু সম্ভব জ্ঞান অর্জন করতে চাই। আমার মতে, কোন ধর্মই অন্যায়কে সাপোর্ট করেনা। আর সব ধর্মই মনুষের কল্যাণের কথাই বলে।
    কেউ ধর্ম নিয়ে আজেবাজে কথা বললে সেটি অবশ্যই ডিলিট করা হবে। আপনার সুন্দর পরামর্শের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

nice

আপনি প্রথমেই বলেছেন কোন ধর্মীয় বিতর্কে যেতে চান না তার মানে দাড়াঁয় আপনি আগে থেকেই জানেন এধরনের টিউনে ধর্মীয় বিতর্ক চলে আসবে । তাই বলছি যদি
বিতর্ক এড়াতে চান বিতর্ক যাতে না আসে এরকম টিউন করুন । সুন্দর টিউনের জন্য ধন্যবাদ ।

    ধর্মের সাথে বিজ্ঞানের শত্রুতা অনেক আগে থেকেই। যেহেতু এটি বিজ্ঞান ভিত্তিক টিউন, সেহেতু এখানে ধর্মীয় বিতর্ক চলে আসবে এটা খুব সহজেই অনুমেয়। আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

    সহমত

কিছু মনে করবেন না।

আপনি কি সবসময় বিতার্কিক টিউন করতে পছন্দ করেন?

    ধর্মের সাথে বিজ্ঞানের বিতর্ক অনেক আগে থেকেই। তাই আমি আগেই সবাইকে ধর্মীয় বিতর্কে না যেতে অনুরোধ করেছি। তাছাড়া ইসলাম ধর্মে বিগ ব্যাঙ্গের একটা ইঙ্গিত আছে, সেটা আপনিও জানেন আশা করি। তারপরেও এই ধারাবাহিক টিউনটিকে আবারও বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করার জন্য সবাইকে অনুরোধ জানাচ্ছি । ধন্যবাদ…

ভাল হয়েছে, ধন্যবাদ আপনাকে।

ধর্মের সাথে বিজ্ঞানের শ্ত্রুতা???? এন.সি দাস আপনার অবগতির জন্য জানাই যে অন্তত ইসলাম ধর্মের সাথে বিজ্ঞানের কোনো শ্ত্রুতা নাই।
বরং বর্তমান বিজ্ঞানে যে সমস্ত মতবাদ সুপ্রতিষ্ঠিত তার ব্যাখ্যা পবিত্র কুরান শরীফে বহু আগেই দেয়া হয়েছে।নিচে পবিত্র কুরান শরীফের কিছু আয়াত লক্ষ করুন-
১। “সুর্য ও চন্দ্র আবর্তন করে সুনির্ধারিত কক্ষপথে”-(সুরাঃ আররাহমান, আয়াতঃ ০৫ )।
২। “তিনি সুর্য ও চন্দ্র উভয়কে করিয়াছেন আজ্ঞাধীন(নিয়মাধীন) এবং প্রত্যেকেই একটি একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত পরিভ্রমন করিতে থাকে”-(সুরাঃ লুকমান, আয়াতঃ ২৯ )।
৩। “সুর্যের সাধ্য নাই চন্দ্রকে নাগালে পায়,রাত্রিও দিবসের অগ্রগামী নহে এবং প্রত্যেকেই কক্ষপথ সন্তরন করিতেছে।” (সুরাঃ ইয়াছীন, আয়াতঃ ৪০)
৪। “সুর্য তাহার গন্তব্যের উদ্দেশ্য ভ্রমনে নিরত” (সুরাঃ ইয়াছীন, আয়াতঃ ৩৮)।

মাত্র কয়েকশ বছর আগে ১৫৪৩ সালে কোপার্নিকাস তার “On the revolution of the celestial spheres” বইটিতে সুর্যকে একটি স্থির নক্ষত্র হিসাবে ব্যাখ্যা করেন যা সৌরজগতের কেন্দ্র। অথচ খ্রীষ্টীয় সাতশ শতকে কুরানে বলা হয়েছিল যে সুর্য স্থির নয় বরং নির্দিষ্ট পথে গমনরত যা আজ সত্য বলে প্রমানিত।

১৬১৮ সালে কেপলার বলে যান- “গ্রহ এবং সুর্যের সংযোগকারী ব্যাসার্ধরেখা সমান সময়ে সমান ক্ষেত্রফল অতিক্রম করে” এবং “প্রতিটি গ্রহের পর্যায়কালের বর্গ সুর্য হতে তার গড় দুরত্বের ঘনফলের সমানুপাতিক”। একটু খেয়াল করলে দেখবেন উক্ত সুত্রদয় ২নং ও ৩নং আয়াতকে সমর্থন করে। আমার জানামতে কুরানের এরকম আরো অনেক আয়াত রয়েছে যা আধুনিক বিজ্ঞানের মতবাদ গুলোকে সমর্থন করে।

দুঃখের বিষয় হল এত তথ্যসমৃদ্ধ একটি গ্রন্থ থাকা সত্বেও ধর্মীয় কুসংস্কারের দরুন মুসলমানেরা একটি পশ্চাদপদ জাতি হিসাবে আজও বিশ্ব দরবারে পরিচত। একটি উদাহরন দেই- আমার এক খালাতো ভাইকে মাদ্রাসার এক হুজুর বলেছেন যে, কুরানের বাংলা অনুবাদ পড়লে নাকি গুনাহ হয়। বলুন তাহলে, এই যদি হয় অবস্থা মুসলমানেরা পিছিয়ে থাকবে না কেন। যেখানে পবিত্র কুরান শরীফ নিজেই বিজ্ঞানের একটি স্বতঃসিদ্ধ দলিল সেখানে মুসলমানদের কুরান না বুঝে পড়ার জন্য বাধ্য করা হয়। অথচ কুরান শরীফের বহু যায়গায় বলা হয়েছে এই গ্রন্থটিকে অনুধাবন করার জন্য।
মন্তব্য দীর্ঘায়িত করার জন্য দুঃখিত।

    আমার এ ধরণের বিতর্কিত টিউনগুলোতে, ধর্ম নিয়ে কথা না বললেই ভালো হয়। ধর্ম নিয়ে তর্ক করা আমি মোটেও পছন্দ করিনা। আশাকরি আপনারা এ ব্যাপারে আমাকে সাহায্য করবেন। ধন্যবাদ…

Level 0

n.c vai apnar ei squence er 4 no tune ta koi khuje paiteche na. doya kore link ta dan………. poira heavy moja paiteche……..

বিজ্ঞান বিজ্ঞানের যায়গায় থাক আর ধরম থাক তার যায়গায়। এ বিশয় নিয়ে আমদের বাড়াবাড়ি করা মোটেও ঠিক না।যদি কেউ জানতে চান তাহলে জানতে থাকুন।কারন প্রত্তেকের নিজ নিজ মত আছে, আর সেই মত কে শ্রদ্ধা করাই আমাদের কর্তব্য। তাই আমি বলব বিতরকে না গিয়ে গান আহরন করাই শ্রেয় ।কারন তাহলেই আমরা বুঝতে পারব কোনটা আর কোনটা ভুল ।
এন. সি ভাই আপনাকে আপনার তিউনের জন্য অনেক ধন্যবাদ।