সবাইকে স্বাগতম জানাচ্ছি আমার আজকের টিউনে, অনেক দিন পর টিটিতে বসলাম, নিশ্চই সবাই ভাল আছেন............
==================================================================
বিশ্বজুড়ে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ আজকের বিজ্ঞান গবেষণার পুরোভাগে রয়েছে। সেটি হলো আমাদের বিভিন্ন বংশগত বৈশিষ্ট্যগুলোর জন্য, বিশেষ করে এ রকম অসুখের জন্য, দায়ী জিনগুলোকে চিহ্নিত ও উদ্ঘাটিত করতে পারা। এই প্রক্রিয়ার প্রাথমিক অপরিহার্য পদক্ষেপ হলো বাবা-মা থেকে সন্তানের মধ্যে যাওয়ার বংশগতিতে জিনটিকে অনুসরণ করে যাওয়া।
শেষ পর্যন্ত এ জন্য গড়ে তুলতে হচ্ছে একটি বিস্তারিত জিনম্যাপ। শহরের ম্যাপকে যেভাবে আমরা একটি বাড়ি চিনে নেয়ার কাজে ব্যবহার করি, এই জিনম্যাপ থেকেও অনেকটা সেভাবে একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্যের জিনকে খুঁজে নিতে পারি।
বংশের মধ্যে জিনকে অনুসরণের জন্য অসুখের ঝুঁকি নির্ণয়ে এবং জিনম্যাপে এর জিনকে স্থাপন করার কাজে সহজতর পদক্ষেপ হলো জিনটির জন্য একটি জিন-মার্কার খুঁজে নেয়া। মূল জিনকে পুরো জানার আগেও এ রকম মার্কারকে অনুসরণ করা যায়।
এ জন্য মার্কারকে ডিএনএতে সব সময় ওই জিনের সাথে থাকতে হয় এবং সাধারণ ডিএনএ ফিঙ্গার প্রিন্টিং-এর মতো পদ্ধতিতে সহজে তাকে উদ্ঘাটন করতে পারতে হয়। ফলে বার কোডের মতো পরপর কিছু দাগের প্যাটার্ন থেকেই জিনটির উপস্থিতি বা তার পরিবর্তিত রূপের খবর পাওয়া যায়। এসব দিয়ে তৈরি হতে পারে একটি প্রাথমিক জিনম্যাপ, যা বলে দেয় কোনো ক্রমোজোমের মোটামুটি কোনো অংশে এক একটি জিন রয়েছে।
অন্যান্য জিনের সাথে তার কাজকে সম্পর্কিত করে জিনটিকে পুরোপুরি চিনতে হলে অবশ্য প্রয়োজন আরো বিশদ ফিজিক্যাল জিনম্যাপের যেখানে এর বিস্তারিত ভিত্তি পরম্পরায়গুলো জানা দরকার। এ কাজটি এখন অপেক্ষাকৃত দ্রুত ও সহজ হয়ে পড়ায় জিনম্যাপিং সফলভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। ভিত্তি পরম্পরায়ের মধ্যে এক একটি সক্রিয় জিনকে তার প্রারম্ভ ও শেষটুকু দিয়ে চিহ্নিত করা যাচ্ছে। সেই জিনের কাজের সাথে সেটিকে সম্পর্কিতও করা যাচ্ছে। কাছাকাছি অন্যান্য জিনের সাথেও এর সম্পর্ক নির্ণয় করা যাচ্ছে।
এটি এত ব্যাপক কর্মযজ্ঞ এবং তাতে এত বিপুল পরিমাণ তথ্যকে প্রসেস করতে হয় যে এতে আমাদের সাফল্যের অনেকখানি জুড়ে রয়েছে কম্পিউটারের অবদান। এ জন্য একটি নতুন বিজ্ঞানেরই সৃষ্টি হয়েছে বায়ো-ইনফরমেটিকস। তথ্যপ্রযুক্তি ও জেনেটিক জীববিজ্ঞানের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সমন্বয়েই কাজ করে এটি। সখ্যাতাত্ত্বিকভাবে নির্ণিত নানা সম্পর্ক নির্ণয়ে উন্নত তথ্য তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তা ছাড়া কোনো উপায় ছিল না।
বায়ো-ইনফরমেটিকসের তথ্যের ভাণ্ডার গড়ে উঠছে নানা জিনম্যাপে গড়া জিন-লাইব্রেরিগুলোর মাধ্যমে। এতে শুধু আমাদের জেনেটিক তথ্য নয়, অত্যন্ত সরল প্রাণী থেকে শুরু করে নানা প্রাণীর জিনম্যাপের তথ্য ওখানে রয়েছে এবং আরো নিত্য যোগ হচ্ছে। এই জিন-লাইব্রেরির পরস্পর-সম্পর্কিত দু’টি অস্তিত্ব রয়েছে ডিজিটাল তথ্য হিসেবে কম্পিউটারে, আর ল্যাবোরেটরির শীতল ফ্রিজারের মধ্যে জিনগুলোর অসংখ্য ডিএনএ প্রতিলিপি বা ক্লোনের সংরক্ষণ হিসেবে।
জেনেটিক স্তরে মানুষসহ সব জীবের মধ্যে যে অদ্ভুত ঐক্য রয়েছে, এখানে সেই বিষয়টিই খুব কাজে দিচ্ছে। মানুষের জিনের সমতুল্য জিন পাওয়া যায় একেবারেই ভিন্ন ধরনের জীবেই। অথচ তাদের তুলনামূলক সারল্যের কারণে সেই জিনগুলো উদ্ঘাটন সহজতর। পরে তার সূত্র ধরেই মানুষের জেনোমেও খুঁজে নেয়া যাচ্ছে তুলনীয় কাজের জন্য দায়ী জিনগুলো। সারল্যের কারণে ইঁদুর, মুরগি, ফলের মাছি, নেমাটোড কীট, এমনকি ইস্টের মতো জীবের জিন উদ্ঘাটন চমকপ্রদ অবদান রাখছে মানুষের ক্ষেত্রে।
এ প্রসঙ্গে অতি সাম্প্রতিক কতগুলো আবিষ্কারের মধ্যে শীতল সমুদ্রগর্ভে থাকা আইস ফিশের রক্ত স্বচ্ছ, কারণ তার লোহিত কণিকার প্রয়োজন খুব কম। ভ্রূণ অবস্থায় যেই জিনের প্রকাশ ব্যাহত করে এই মাছ লোহিত কণিকার ঘাটতি ঘটিয়েছে এ মাছের নানা প্রকারের মধ্যে তুলনামূলক গবেষণা করে সেটি নির্ণয় করা হয়েছে।
এখন সেই জিনের তুলনীয় জিন মানুষের ডিএনএতে চিহ্নিত করার কাজ চলছে। সফল হলে এ জিনের পরিবর্তনের মধ্যেই হয়তো উদ্ঘাটিত হবে মানুষের রক্তশূন্যতা রোগের উৎস। একইভাবে গুহার ভেতরে প্রবাহিত নদীতে থাকা দৃষ্টিহীন মাছের জিন উদ্ঘাটন করে মানুষের ছানি ও অপটিক নার্ভের অবক্ষয়ের, শিম্পাঞ্জির ক্ষেত্রে এইডস সদৃস রোগের জিন থেকে এইচআইভি-এইডসের জেনেটিক প্রক্রিয়া নির্ণয়ের সুযোগ রয়েছে।
এ রকম নানা জীবের জেনেটিক তথ্যের ক্রমবর্ধমান বিশাল ডাটাবেজ থেকে কাম্য জিন খুঁজে নিতে এবং জীবন্ত ওই জীবের ওপর ল্যাবরেটরি পরীক্ষণ তথ্যের সাথে তার সম্পর্কগুলো নির্ণয় করতে সহায়তা পাওয়া যাচ্ছে জিন মার্জ, জিন স্ক্যান, জিন বিল্ডার, ব্লাস্ট ইত্যাদি নামের কতগুলো অত্যন্ত শক্তিশালী সফটওয়্যারের। অন্য দিকে ওই জীবন্ত জীব-মডেলগুলোর ডিএনএ’র বিশেষ বিশেষ জিনে কৃত্রিমভাবে পরিবর্তন সৃষ্টি করে ওই জিনের কাজ ও প্রভাব সম্পর্কেও আরো গভীর অন্তর্দৃষ্টি লাভ করা সম্ভব হচ্ছে।
আমি সাইফুর রহমান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 14 বছর 7 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 33 টি টিউন ও 469 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 3 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
জীবনে চলার পথে আনেক বাধা আসবে, সেই বাধাকে অতিক্রম করে বাঘের মত এক দিন বাচ, আর পৃথিবীর বুকে দাগ কেটে যাও নাম লিখে যাও স্বন্রাক্ষরে http://idmfordownload.blogspot.com
এরকম বিষয় নিয়ে Tune যতো বেশি হবে, Techtunes ততো সমৃদ্ধ হবে…