আমরা যারা অনলাইনে বিভিন্ন ছোট-খাট ব্যবসার সাথে জরিত যেমন ডোমেইন হোস্টিং প্রোভাইডার, কিংবা বাল্ক এসএমএস প্রোভাইডার অথবা অন্য বিদেশি সার্ভিস কিনে দেশে লোকাল সেবা দেয়ে থাকি বা যারা দেন তারাই কেবল আন্তর্জাতিক ভিসা বা মাস্টার কার্ড এর প্রয়োজনীয়তা বুঝি। এছাড়াও অনলাইনে কেনা-কাটা করার জন্যও আন্তর্জাতিক ভিসা বা মাস্টার কার্ড এর প্রয়োজনীয়তা অবর্ননীয়। আর আমাদের দেশে আন্তর্জাতিক ভিসা বা মাস্টার কার্ড পাওয়া যেন সোণার হরিন (স্বর্ণের কথা বলছি ভাই, অন্য কিছু ভাববেন না যেন)। আর সে কারণেই আমরা বিভিন্ন ভার্চুয়ার আন্তর্জাতিক ভিসা বা মাস্টার কার্ড কিংবা অনলাইন মানি ট্রান্সফার ব্যবহার করে থাকি যেমন, NETELLER, SKRILL, Payowner, Paypal ইত্যাদি। এবার নিচে এদের একেকজনের বিবরণ দেই যে, কার কেমন উপকারিতাঃ-
১. NETELLER Virtual Master Card: অনলাইন জগতে টাকা পেমেন্ট দেওয়ার জন্য এর তুলনা হয়না। ঠিক যেন ফিজিকাল কার্ড। একটি পূর্নাঙ্গ আন্তর্জাতিক মাস্টার কার্ডের সকল সুবিধাই পাবেন এতে। যেকোন প্রকার ওয়েব সাইট এ এটি দ্বারা পেমেন্ট দিতে পারবেন। তবে দুঃখের বিষয় বাংলাদেশের কোন ব্যাংক থেকে এতে টাকা আপলোড দেওয়া যায়না। শুধু এতে নয়, কোন অনলাইন সার্ভিসেই দেওয়া যায়না। মানে বাংলাদেশের সরকারের নিয়ম অনুযায়ী এদেশ থেকে বিদেশে সরাসরি ব্যাংক মাধ্যমে টাকা পাঠানো যাবে না, শুধু আসবে। মানে ওয়ান ওয়ে। খানিকটা পুলিশের পকেটের মত বলতে পারেন, কেননা ওদের পকেটে কোন টাকা গেলে সেটা আর ফেরৎ আসে না নাকি। তাই ওটাকে ওয়ান ওয়ে পকেট বলা হয়। (কোন পুলিশ ভাই আমার লেখাটি পড়ে আবার আমার মামলা দিয়েন না দয়া করে)
২. SKRILL, Payowner: সেই একই কাহিনি, সবই করতে পারবেন শুধু বাংলাদেশের কোন ব্যাংক থেকে এতে টাকা আপলোড দিতে পারবেন না!
৩. Paypal: যদিও বাংলাদেশে ব্যবহার করার অনুমোদন নেই, তবুও অনেকেই ঝুকি নিয়ে ব্যবহার করেন। কাজেই এটি ব্যবহার না করাই উত্তম।
এবার আসি অনলাইনে ডলার কেনার অভিজ্ঞতা নিয়ে কিছু কথায়- NETELLER, SKRILL, Payowner এর একান্ট এ টাকা আপলোড করতে গেলে অর্থাৎ কার্ডে টাকা আনতে হলে অবশ্যই দৌড়াতে হয় ভিক্ষুখের মত... আর সেখানেই নানা প্রকার অনলাইন ডিজিটাল প্রতারণা!
আমার অভিজ্ঞাঃ গত রমযানের ঈদের আগে আমার প্রয়োজন হলো ১০০ ডলারের, কিন্তু এক দিনে মধ্যে কোথায় কার কাছে পাবো এত টাকা নেটেলারে? পরিচিত কারো কাছে পাচ্ছিলাম না। তাই অনলাইনে বিভিন্য জায়গায় সার্চ করে কয়েকটা সাইট এর ঠিাকানা পেলাম। তাদের সাথে ফোনে কথা বললাম। একেকজন একেক রকম দাম চাইলো ডলারের সাথে ১০০ ডলারের জন্য ২-৩ দিন সময়ও নাকি দিয়ে হবে বললো। যাইহোক যা দাম চাইলো তারা, কেউ ৯২ টাকা প্রতি ইউএস ডলার, কেউ ৯৪, ৯৫, ৯৬ টাকা পর্যন্ত সাথে বিকাশে টাকা পাঠানোর খরচও দিতে হবে। আর সবাই অপরিচিত ও কারোর কোন নির্দিষ্ট ওয়েব সাইট ও নেই, আছে শুধু নতুন সিরিজর মোবাইল নম্বর। কাজেই কিভাবে তাদের বিশ্বাস করবো ভেবে পাচ্ছিলাম না। অবশেষে পরিচিত একজনের কাছে ডলার পেলাম তবে তাম ১০০ টাকা প্রতি ডলার। পরিচিত হওয়াতে সেই চড়া দামেই নিলাম। কেননা নাই মা’র চেয়ে কানা মা নাকি ভালো, মানে টাকা মার যাবার কোন চিন্তা নেই, যেহেতো পরিচিত। কয়েকদিন আগে আমার এক কাছের বন্ধ ফেইসবুকে পরিচিত একজনের কাছ থেকে একবার ডলার কিনেছিল, সেই আশায় আবার ডলার কেনার জন্য ২০০০ টাকা বিকাশ করে দেওয়ার সাথে সাথে সে উধাও! বেচারা দড়ি ছিরে ** খেল। কি আর করা সেও তার পর থেকে ঐ আমার পরিচিত লোকের কাছ থেকে ১০০ টাকা প্রতি ডলার দাম দিয়ে ডলার কিনতো।
অবশেষে দেখা গেল কেউ চড়া দামে ডলার বিক্রি করে লাভবান হচ্ছে, আবার কেউবা টাকা মেরে দিয়ে বাড়িতে দালান উঠাচ্ছে। বিষয়টা যেন এমনঃ- সোনা মিয়া বেশি দামে ডলার বিক্রি করে, আর লাল মিয়া কম দামের কথা বলে টাকা মেরে দেয়!
ব্র্যাক ব্যাংক এর ভিসা বা মাস্টার কার্ডঃ হ্যা আমি অবশেষে এই সোনা লাল হওয়ার অত্যাচার থেকে রক্ষা পেতে নিয়ে নিলাম ইউনিভার্সাল মাস্টার ক্লাসিক কার্ড, যা আমাদে দিয়ে ব্র্যাক ব্যাংক। নিচে আমার অরিজিনাল মাস্টার কার্ডের একটি ছবি তুলে আপলোড দিলাম সাথে আমার সকল ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড-
উপরের সবকটি কার্ডই আমার নিজের, আবার কেউ ভাবতে পারেন নেট থেকে ডাউনলোড করে গল্প করছি। প্রতিটি কার্ডেই নাম লেখা রয়েছে।
১. ইউনিভার্সাল ভিসা/মাস্টার ক্লাসিকঃ ডুয়াল ভিসা/মাস্টার ক্রেডিট কার্ড যা শুধু বাংলাদেশেই নয় বিশ্বব্যাপী গ্রহনযোগ্য। এটি দেশে স্থানীয় মুদ্রায় এবং বর্হিবিশ্বে বৈদেশিক মুদ্রায় ব্যবহারযোগ্য। বর্তমানে ভিসা/মাস্টার ক্রেডিট কার্ডের ১০,০০০ টাকা হতে ৭৫,০০০ টাকা ক্রেডিট লিমিট দেয়া হয়ে থাকে।
২. ইউনিভার্সাল ভিসা/মাস্টার গোল্ডঃ ডুয়াল ভিসা/মাস্টার ক্রেডিট কার্ড যা শুধু বাংলাদেশেই নয় বিশ্বব্যাপী গ্রহনযোগ্য। এটি দেশে স্থানীয় মুদ্রায় এবং বর্হিবিশ্বে বৈদেশিক মুদ্রায় ব্যবহারযোগ্য। ক্লাসিক কার্ড ও গোল্ড কার্ড এর মধ্যে মূল পার্থক্য হলো গোল্ড কার্ডের ঋণ সুবিধা ক্লাসিক কার্ডেও চেয়ে অনেক বেশি। বর্তমানে ভিসা/মাস্টার ক্রেডিট কার্ডের ৭৫,০০১ টাকা হতে ৫০০,০০০ টাকা ক্রেডিট লিমিট দেয়া হয়ে থাকে।
ইউনিভার্সাল ভিসা/মাস্টার ক্লাসিক কার্ড দিয়ে আমি যা করতে পারিঃ-
✡ বিশ্বের যেকোন দেশের ATM (অভিনেতা এটিএম নয়) থেকে টাকা উত্তোলন করতে পারি।
✡ যে কোন দেশের ওয়েব সাইট এ পেমেন্ট দিতে পারি।
✡ নেটেলার, স্ক্রিল সহ যে কোন অনলাইন একাউন্ট এ টাকা আপলোড দিতে পারি। মানে আমি চাইলে এখন নেটেলার, স্ক্রিল সহ যে কোন অনলাইন ডলার বিক্রি করতে পারি।
✡ ফ্ল্যাট রেট ডলার কণভার্সন। মানে ৮০ টাকা হাড়ে আপনাকে ব্র্যাক ব্যাংক বাংলাদেশী টাকা ইউ.এস মুদ্রায় কনভার্ট করে দেবে।
✡ আরো অনেক অনেক সুভিধা আছে যা লেখার মত ধৈর্য্য নেই আমার।।
কে বা কারা নিতে পারবে এই ইউনিভার্সাল ভিসা/মাস্টার কার্ড? - দুই শেণীর লোক এটি নিতে পারবে। ১. কর জীবি (ব্যবসায়ী), ২. পর জীবি (চাকুরী বীবি) [নামগুলো আমার নিজের দেওয়া] ব্যবসায়ী হলে আপনাকে আপনার ব্যাসা প্রতিষ্ঠারেন নাম ও তার ট্রেড লাইসেন্স দেখাতে হবে। আর সিকিউরিটি হিসেবে নূন্যতম ৫০,০০০/- (পঞ্চাশ হাজার) টাকা জমা দিতে হবে। আর চাকুরীবীবি হলে আপনাকে প্রতি মাসে নূন্যতম ২০,০০০/- (বিশ হাজার) টাকা বেতন পেতে হবে ও তার ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট (বেতনের) ও চাকুরীর পরিচয় পত্র দেখাতে হবে। যদিও আমি চাকুরীবীবি তবুও আমাকে ব্যবসায়ী হিসেবে কার্ডটি নিতে হয়েছে। কেননা আমি প্রতি মাসে নূন্যতম ২০,০০০/- (বিশ হাজার) টাকা বেতন পাইনা বলে। তাই সিকিউরিটি হিসেবে নূন্যতম ৫০,০০০/- (পঞ্চাশ হাজার) টাকা জমা দিয়েই এটি নিয়েছি।
ইউনিভার্সাল ভিসা/মাস্টার ক্লাসিক সম্পর্কে বিস্তারিত দেখুন ব্র্যাক ব্যাংক এর সাইট হতে এখানে
আমি মোহাম্মদ মাসুম। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 8 টি টিউন ও 82 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
@মাসুম ভাই পঞ্চাশ হাজার টাকার কমে হবে না¿