সুপ্রিয় টেকটিউনস কমিউনিটি, সবাইকে আমার আন্তরিক সালাম এবং শুভেচ্ছা জানিয়ে শুরু করছি চালক বিহীন বিমান তথা ড্রোন এর কিছু লেটেস্ট এবং অত্যাধুনিক সংস্করণ এবং তাদের মূল্যমান সম্পর্কিত আমার আজকের টিউন।
➡ ড্রোন কথাটি শুনামাত্র মেরুদণ্ড বেয়ে একটা হিমশীতল অনুভূতি সৃষ্টি হয়। চোখের সামনে ভেসে উঠে ক্ষমতাধর রাষ্ট্রের প্রতিহিংসার শিকার কোন নিরীহ মানুষের উপর চালকবিহীন বিমান কর্তৃক বোমা হামলার চিত্র। অধিকাংশ মানুষের ড্রোন কথাটির সাথে পরিচয় কিন্তু এভাবেই হয়েছে। তবে ড্রোন জিনিসটি হলো চালকবিহীন বিমান। যেটা যেকোন উদ্দেশ্যে তৈরী করা যেতে পারে। আজকের টিউনের শিরোনাম দেখে অনেকেই ভাবতে পারেন, “এবার তোরে খাইছি মফিজ। তোর মাথার উপর ড্রোন হামলা করবো”। কিন্তু আজকের টিউনের আলোচিত ড্রোনগুলো ব্যবহৃত হবে ফটোগ্রাফির জন্য। এই ড্রোনগুলোতে যুক্ত হাইকোয়ালিটির ক্যামেরার মাধ্যমে আপনার যেকোন কিছুর ছবি এবং ভিডিও ধারন করতে পারবেন। আপনার হাতে থাকা কন্ট্রোলিং সিস্টেমের সাহায্যে যেকোন অবজেক্ট এর স্থির বা চলমান ছবি অনায়াসেই ক্যাপচার করতে পারবেন। আশাহত হলেন কিনা বুঝতে পারলাম না তবে টিউনের পরবর্তি অংশে আপনার জন্য কিছু চমক অবশ্যই রয়েছে। কারন ড্রোনগুলো শুধু প্রদর্শনের জন্য না, এগুলো বিক্রির জন্যও। মানে আজ থেকে আপনিও হতে পারবেন একটি আকর্ষনীয় ড্রোন এর মালিক। তবে আর দেরি কেন?
Parrot Bebop Drone একটি তৃতীয় প্রজন্মের Parrot AR.Drone যা মূলত তার বিল্টইন ক্যামেরার সাহায্যে বাতাসে ভেসে ভিডিও ধারন করতে পারে। আমরা জানি শুন্যস্থানে ভেসে কোন অবজেক্টকে বিভিন্ন অ্যাঙ্গেল থেকে ফোকাস করা কষ্টসাধ্য। এই বিষয়টাকে মাথায় রেখে এই অসাধারন ড্রোনটি ডিজাইন করা হয়েছে। যাতে ১৮০ ডিগ্রি এবং ১৪ মেগাপিক্সেল Fisheye লেন্স এবং অত্যাধুনিক ক্যাপচারিং সফটওয়্যার যুক্ত রয়েছে। ফলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ড্রোনটি অসাধারন ফটো এবং ভিঠিও শুট করতে পারে।
এতে রয়েছে জিপিএস এবং অটো ল্যান্ডিং সুবিধা। তাছাড়া যেকোন অ্যাঙ্গেল এবং পরিস্থিতিতে ভিডিও ধারনের সুবিধা, ইমার্জেন্সি এলার্ট সহ আরও অনেক কিছু। মাত্র ৪০০ গ্রাম ওজনের এই ড্রোনটি দুটি ব্যাটারির সাহায্যে প্রায় ২২ মিনিট আকাশে উড়তে পারে। এর বাজার মূল্য এবং অন্যান্য ফিচারগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে প্যারোট এর অফিশিয়াল ওয়েব সাইট ভিজিট করুন। আশা করি, এ বিষয়ে আপনার তৃষ্ণা পুরোপুরি নিবারণ হবে।
ড্রোন জগতের আরও এক অপ্রতিদ্বন্দ্বী হলো Phantom 2 Vison ড্রোন। এতে রয়েছে অত্যাধুনিক Stills Fish Lens ক্যামেরা, জিপিএস এবং ওয়াই-ফাই কানেকশন। এর ওয়াই-ফাই সিগনাল যেকোন মূহুর্তের ড্রোনটির অবস্থা, অবস্থান, ক্যামেরা ভিউ, এবং রিয়েল টাইম ডাটা সরবরাহ করে। ৩০০ মিটার দুরত্ব পর্যন্ত এই ওয়াই-ফাই সিগনার কাজ করতে সক্ষম।
ড্রোনটির জিপিএস প্রযুক্তি ড্রোনটিকে আকাশে স্থিরভাবে ভেসে থাকতে সাহায্য করে। তাছাড়া এটার Altitude Lock যেকোন পজিশন এর উপর ড্রোনটিকে হোভার করাতে পারে। তাছাড়া ব্যাটারি পাওয়ার শেষ হয়ে গেলে ড্রোনটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইমার্জেন্সি ভুমিতে অবতরণ করতে পারে। ৯৯৯ ডলার মূল্যের এই ড্রোনটি সম্পর্কে আরও ব্স্তিারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
Walkera QR W100S হলো একটি ফার্স্ট পারসন ড্রোন যেটা ওয়াই-ফাই কানেকশনের মাধ্যমে ব্যবহার করা যায়। মানে হলো আপনার অ্যান্ড্রোয়েড, উইন্ডোজ কিংবা iOS স্মার্টফোনে সাহায্যে ড্রোনটি কন্ট্রোল করতে পারবেন। ড্রোনটিতে ফ্লায়িং এর জন্য টিল্ট মোড এবং ফ্লায়িং মোড নামের দুটি অপশন আছে যার মাধ্যমে আপনি স্মার্টফোনের সাহায্যে ড্রোনটিকে আপনার ইচ্ছে মতো যেকোন অ্যাঙ্গেলে উড়াতে পারবেন।
তাছাড়া এই ড্রোনটি আপনাকে ফ্লায়িং এর সকল ডাটা প্রোভাইড করবে। তাছাড়া এর মাধ্যমে আপনি লাইভ ফিড দেখতে পারবেন। এর ওয়াই-ফাই কানেকশন আপনাকে সরাসরি তাই দেখাবো যা ড্রোনটি (ড্রোন ক্যামেরা) দেখতে পাবে। মাত্র ১৫৯ ডলার মূল্যের এই অসাধারন ড্রোনটি কিনতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন।
আপনার যদি একটি ইউনিক স্টাইল ড্রোন প্রয়োজন হয় তাহলে আপনার প্রথম পছন্দ হওয়া উচিত WL Toys V959 ড্রোনটি। এটা দেখতে একটি সুদৃশ্য কোয়াড কপ্টারের অনুরূপ কিন্তু একটু ছোট। এটার অনবোর্ড ক্যামেরা আপনাকে ছবি তুলতে এবং ভিডিও ধারন করতে সহযোগিতা করবে। তবে এটার একটাই অসুবিধা হলো এটার কন্ট্রোলার দিয়ে লাইভ ফিড দেখা যায় না।
আপনি যদি আগে কখনো ড্রোন না চালিয়ে থাকেন তাহলে এটা দিয়েই শুরু করতে পারেন। মাত্র ৫৮ ডলার মূল্যের এই ড্রোনটি দিয়ে আপনার ড্রোন চালনার শুরু করুন। এই ড্রোনটি সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
Hubsan H107D X4 ড্রোনটি সস্তার মধ্যে অনেক বেশি কার্যক্ষম একটি ড্রোন। এটি আকারে ক্ষুদ্র এবং সহজেই ব্যবহার উপযোগি। এর কন্ট্রোলারে রয়েছে ৪.৩ ইঞ্চি রঙ্গিন লিকুইড ক্রিস্টাল ডিসপ্লে। যার সাহায্যে ড্রোনটির সার্বিক অবস্থা এবং লাইভ ফিড দেখা যায়। বিল্ট ইন ক্যামেরার সাহায্যে ছবি তোলার পাশাপাশি ভিডিও রেকর্ডও করা যায়। শুধুমাত্র কন্ট্রোলার প্যানেলে স্টার্ট এবং স্টপ বাটনের মাধ্যমে ড্রোনের ভিডিও বা ছবি তুলতে পারবেন।
এতে কোন জিপিএস প্রযুক্তি নেই। ফলে এটাকে শুন্যে স্থির রাখা যায় না। অথবা কোন স্থানের উপর হোভার করা যায় না। তবুও মাত্র ১৩৯ ডলার মূল্যের এই ড্রোনটি আপনার পছন্দ হয়ে যেতে পারে। ড্রোনটি সম্পর্কে আরও জানতে চাইলে এখানে ক্লিক করুন।
টিউনটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে অথবা বুঝতে যদি কোন রকম সমস্যা হয় তাহলে আমাকে টিউমেন্টের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না। কারন আপনাদের যেকোন মতামত আমাকে সংশোধিত হতে এবং আরো ভালো মানের টিউন করতে উৎসাহিত করবে। আর টিউনটিকে মৌলিক মনে হলে এবং নির্বাচিত টিউন হওয়ার উপযুক্ত মনে হলে নির্বাচিত টিউন মনোনয়ন দিতে ভুলে যাবে না যেন। সর্বশেষ যে কথাটি বলবো, আসুন আমরা কপি পেস্ট করা বর্জন করি এবং অপরকেও কপি পেস্ট টিউন করতে নিরুৎসাহিত করি। সবার সর্বাঙ্গিন মঙ্গল কামনা করে আজ এখানেই শেষ করছি। দেখা হবে আগামী টিউনে।
আপনাদের জন্য » সানিম মাহবীর ফাহাদ
➡ ইমেইলে আমার সকল টিউনের আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করুনঃ টেকটিউনস » সানিম মাহবীর ফাহাদ 🙄
আমি সানিম মাহবীর ফাহাদ। সুপ্রিম টিউনার, টেকটিউনস, ঢাকা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 176 টি টিউন ও 3500 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 159 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আগে যা শিখেছিলাম এখন তা শেখানোর কাজ করছি। পেশায় একজন শিক্ষক, তবে মনে প্রাণে টেকনোলজির ছাত্র। সবার দোয়া প্রত্যাশি।
আমার তো মাঝে মাঝে আপনার উপরেই হামলা করতে ইচ্ছে করে। আপনার টিউনগুলোর সাথে এতটাই অভ্যস্ত হয়ে গেছি যে আর কারও টিউন ভালো লাগে না। অথচ আপনিও মাঝে মাঝে টিউন না করে ডুব দেন। বোমা বহনকারী ড্রোন বিষয়ে টিউন না করে আপনি নিজেরই উপকার করেছেন।
*** এই কারনে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন আমার কাছে 😛 😛 😛