হ্যালো টেকটিউনস কমিউনিটি, কেমন আছেন সবাই? এই দাবদাহের মধ্যে (লেখা শেষ হতে না হতেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে ঢাকা শহরে) টেকটিউনসের প্রযুক্তির সাথেই আছেন আশা করি। তাছাড়া টেকটিউনস ছাড়া আমাদের প্রযুক্তি জগতের নিত্য নতুন খবর কে দিবে? 😉
অ্যাপেলের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমাদের আগ্রহ একটু বেশিই। তাছাড়া অ্যাপেলের কোয়ালিটি ডিজাইন আমাদের সব সময়ই টানে। কিন্তু আমরা বেশির ভাগই এটার ভেতরের অনেক রহস্য জানি না বা জানতে চাই না। প্রযুক্তি জগতে যে কাজ সবাই যেভাবে করে অ্যাপেল তাঁর কাজ সব সময় সেভাবে করেন না। ব্যতিক্রম অনেক চিন্তাই তারা নিয়ে আসেন যেটা আমরা ভাবতে পারি না। আসুন আজকে আমরা জানবো সেই সব সূক্ষ্ম থেকেও সূক্ষ্ম বিষয় যা অ্যাপেল জোড়া দেয় সুনিপন ভাবে। যা আজকের প্রযুক্তি জগতকে করেছে অনেক বেশি সমৃদ্ধ। 😆
অ্যাপেলের Breathing Status LED Indicator হলো অ্যপেলের ল্যাপটপের জন্য ডিজাইন করা একটি LED Indicator। যা অ্যাপেলের ল্যাপটপ গুলোতে স্লিপ মুডে কাজ করে। Breathing Status LED Indicator অ্যাপেলের পেটেন্ট করা একটি ডিজাইন। অ্যাপেল তাদের এ প্যান্টেন্ট এ উল্লেখ করেছে অ্যাপেলের এই ব্রিডিং লাইট যখন স্লিপ মোডে থাকে তখন যেন একটি একটি মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাসের মত কাজ করে। যে একজন ইউজারকে মানুসিকভাবে অনেক স্বস্তি দেয় এবং সেই সাথে দারুন সূক্ষ্ম বিশ্লেষণের মাধ্যমে এই ডিজাইন করা হয়েছে। দেখুন অ্যাপেল কত সূক্ষ্ম বিষয়ে মানুষে শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে মিল করে তার প্রোডাক্ট ডিজাইন করেছে!
ম্যাকের নতুন ল্যাপটপ যেটাতে ভয়েস ডিটেকশন ফিচার যুক্ত করা হয়েছে, যেখানে অ্যাপেল তাদের ইন্টারনাল ফ্যান স্লো স্পিডে আপনার ভয়েস সনাক্ত করতে পারে। ভালোভাবে ভয়েস সনাক্ত করার জন্য অতি সূক্ষ্ম বিষয় এখানে মাথায় রাখতে হয়েছে অ্যাপেলকে।
আপনি যদি অ্যাপেলে স্যাটেলাইট ভিউ ওপেন করেন অ্যাপেল ম্যাপ অ্যাপের মাধ্যমে এবং আপনি যদি পর্যাপ্ত জুম করেন তাহলে আপনি সূর্যের আলো পর্যন্ত দেখতে পাবেন, ঠিক যেভাবে পৃথিবী রিয়েল টাইম অনুসারে ঘুরছে। অর্থাৎ আপনি দিন রাতের পরিবর্তন এই অ্যাপের মাধমে খুব ভালোভাবে উপলব্ধি করতে পারবেন। এটিকে বলা হয় অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার যেটা আমাদের বিস্ময় না বাড়িয়ে পারে না।
প্রত্যেকটি ম্যাকবুক ইয়ার এবং নতুন ম্যাকবুক প্রোতে আপনি যদি ক্যাপস লক কী ক্লিক করেন কোন পরিবর্তন দেখতে পাবেন না। কারণ হঠাৎ ক্যাপস লক যাতে সামান্য স্পর্শে অন (On) না হয় সেজন্য এই ব্যবস্থা করা। আপনি ক্যাপস লক একটিভ করতে আপনাকে একটু বেশি সময় ধরে ক্লিক করে রাখতে হবে।
অ্যাপেলের ব্রাউজারে আপনি যদি কোন ওয়েব সাইট বুকমার্ক করেন তাহলে আপনি অ্যাপেল আকৃতির একটি আইকোন বা ফেভিকন দেখতে পাবেন। যদিও সাফারির পরবর্তী ভার্সনে এটা রিমুভ করা হয়। তবে এটি স্টিভ জবসের মৃত্যু বার্ষিকীতে অর্ধেক অ্যাপেল আইকোন দেখায়, যেটা শুধু মাত্র স্টিভ জবসকে শ্রদ্ধা প্রকাশ করে।
অ্যাপেল iSight camera ম্যাগনেট আইম্যাকে যুক্ত করার আগে পূর্বের আইম্যাক গুলোতে একটি হিডেন ক্যামেরা দেওয়া থাকতো। যেটা দিয়ে প্লেস বা অন্য ক্যামেরার কাজ মিটতো।
অ্যাপেল আইফোনই একমাত্র ফোন যা সর্বপ্রথম ইউজারদের slide-to-unlock করে ফোন লক খুলার স্বাদ এনে দেয়। প্রথম দিকের আইফোন এই slide-to-unlock বাটনে ছিল ডান দিকে একটি Arrow Tail এবং একটি Rail.
এরপর আইফোনের নতুন ভার্সেন এই left-to-right বাটনটি আরও মনিমাল ডিজাইন করা হয়। নতুন ডিজাইনে Arrow Tail এবং Rail বাদ দেওয়া হয়। তবে নতুন ব্যবহারকারি যাতে বুঝতে পারে যে left-to-right বাটনের মাধ্যমে আনলক করা যায় সেজন্য অ্যাপেল টেক্সট ইন্সট্রাকশনের পাশাপাশি slide-to-unlock এর নিচে হালকা একটি লাইটিং ইফেক্ট যুক্ত করে যেটা অনবরত বাম থেকে ডান দিকে স্লাইড করার জন্য গাইড করে। যা অ্যাপেল আরও একটি অনন্য সূক্ষ ডিজাউনের পরিচায়ক। নিচের ছবি টি দেখুন তাহলে বিষয়টি ক্লিয়ার হবে।
অডিও এবং ভিডিও পেশাজীবীদের সুবিধার্থে optical adapters ব্যবহার বান্ধব করতে সেখানে অ্যাপেল উচ্চ শক্তির Toslink ব্যবহার করেন যেটা তাদের উচ্চ শক্তির আউটপুট দেয়। আপনি যখন ম্যাকবুকে optical adapters যুক্ত করবেন তখন এটি Toslink এর মাধ্যমে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন সাউন্ড দিতে সক্ষম। ফলে এক্সট্রা সাউন্ড সিস্টেম অনেক সময় অ্যাপেলে ব্যবহার করার প্রয়োজন হয় না।
অ্যাপেল আইফোন আপনি যখন Do Not Disturb মোড চালু করেন তখন উপরের টপ স্ক্রিনে ছোট একটি চাঁদের আইকন আসে। কিন্তু আপনি যখন এটি অন অফ (On-Off) করবেন তখন যদি ভালো ভাবে লক্ষ করেন তবে একটি ছোট এনিমেশন আপনার চোখের সামনে ঘটে যাবে। কি অবাক?
আপনার আই ফোনে যখন ভলিউম এবং ব্রাইটনেস আপনি বাড়াবেন কমাবেন তখন আপনার ফিঙ্গার স্টপ না করা পর্যন্ত একটি বাউন্স লক্ষ্য করবেন আপনি। একটু দৃষ্টি দিয়ে দেখুন। চোখে পড়ে?
অ্যাপেলের ল্যাপটপ এমন ভাবে ডিজাইন করা যেন আপনি একটি ফিঙ্গার দিয়ে সেটা ওপেন করতে পারেন। তবে নতুন ডিভাইস কাজ করতে একটু সময় নিবে। তবে অভস্ত হলে আপনি অবাক না হয়ে পারবেন না। এতো শার্প অ্যাপেল প্রযুক্তি।
আপনি যখন আই ফোনে মিউজিক শোনেন তখন সেটা একসি-ডেন্টলি আপনার আই টিউনস স্টোরে চলে যায় বা যেতে পারে। যেটা বন্ধ করতে আই ফোনের নতুন ভার্সনে আইটিউনস সিঙ্গেল ক্লিকে ওপেন বন্ধ করছে। যেটা ব্যবহার দ্রুত গতির ও ঝামেলা ছাড়া।
অ্যাপেল আইওএস ৬ এ কিছু ভার্চুয়াল রিফ্লেকশন দেওয়ার চেষ্টা করছে যেটা আপনার আবহাওয়া অনুসারে ভলিউম বা ব্রাইটনেস পরিবর্তন হবে। যেটা ভার্চুয়াল রিয়েলিটি নিয়ে আসার চেষ্টা। হয়তো পরবর্তী ভার্সনে এটা আরও প্রসার হবে।
আপনি যদি অ্যাপেল থেকে নতুন কোন ফিঙ্গার প্রিন্ট যোগ করতে চান বা পুরাতন কোন ফিঙ্গার প্রিন্ট ডিলেট করতে চান তাহলে আপনি সেটা অ্যাপেল টাচ আইডি স্টোর থেকে খুব সহজে শনাক্ত করতে পারবেন হোম স্ক্রিনে একটি ফিঙ্গার থেকে তাঁর রিলেভেন্টের মাধ্যমে। যেটা দিয়ে আপনি সহজে পুরাতন ফিঙ্গার প্রিন্ট ডিলেট করতে পারবেন।
আইওএস ৭ এ আপনি ইচ্ছা করলে খুব সহজে ক্যামেরা অ্যাপ আনলকের সাথে সাথে ওপেন করতে পারবেন। এমনকি লক অবস্থায়ও আপনি ক্যামেরা অ্যাপ ওপেন রাখতে পারবেন। ক্যামেরার ব্যবহার বেশি হওয়ায় এই ব্যবস্থা।
অ্যাপেল মানেই চমক। অনেক কঠিন কাজ তারা এতো সহজে করেন যে আপনি না দেখে বিশ্বাস করতে পারবেন না। যাইহোক আজ এই পর্যন্ত দেখা হবে অন্য কোন টিউনে! অ্যাপেল প্রযুক্তি নিয়ে আপনার মতামত প্রত্যাশী।
ধন্যবাদ সবাইকে। 🙄
আমি আইটি সরদার। Web Programmer, iCode বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 261 টি টিউন ও 1750 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 22 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমি ইমরান তপু সরদার (আইটি সরদার),পড়াশুনা করেছি কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি নিয়ে; পেশা কন্টেন্ট রাইটার এবং মার্কেটার। লেখালেখি করি নেশা থেকে ফেব্রুয়ারি ২০১৩ থেকে। লেখালেখির প্রতি শৈশব থেকেই কেন জানি অন্যরকম একটা মমতা কাজ করে। আর প্রযুক্তি সেটা তো একাডেমিকভাবেই রক্তে মিশিয়ে দিয়েছে। ফলস্বরুপ এখন আমার ধ্যান, জ্ঞান, নেশা সবকিছু...
ভালো লাগল ৷