হ্যালো টেকটিউনস কমিউনিটি, কেমন আছেন সবাই। আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমি একটু বেশি ভালো আজকে। কারণ এই দীর্ঘ পথচলায় আজ আমার ২০০ তম টিউন প্রকাশ পাচ্ছে। স্পেশাল কৃতজ্ঞ টেকটিউনসের কাছে এবং টেকটিউনস সি, ই, ও এবং প্রতিষ্ঠাতা মেহেদী ভাইয়ের কাছে। আর আমার সকল ভালোবাসা আপনাদের জন্য। 🙂 আসলে আমার নিজেরও বিশ্বাস হচ্ছে না, কীভাবে এতো বড় পথ এতো দ্রুত পাড়ি দিলাম।
আসুন দেখি স্পেশাল আয়োজনে কি থাকছে আজ! আমরা যারা অনলাইন পেশাজীবী তাদের কাজ করতে হয় বাসায় বসে। বাসায় কাজ করার ফলে আমরা অনেকে সব কাজ সময় মতো করে উঠতে পারি না বা সময়ের হেরফের হয় অনেক সময়। আবার অনেকের অফিসের কাজ বিশেষ কারণে বেশ কিছু দিন ধরে বাসায় বসে করতে হয়। তখন বাসার সাথে অফিস মেলাতে পারেন না। আবার অনেকের অসুস্থ হয়ে বাসায় বসে একটু কাজ সারতে হয়। তখনও বাধে গোলযোগ।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে যারা অনলাইন পেশাজীবী তারা তাদের কর্মজীবন বাসায় করে ফেলেন, ফলে কিছু কিছু বাঁধা আসেই। যেকারনে আমরা আরও বেশি কর্মক্ষম হয়ে উঠতে পারি না। কিন্তু আমরা যদি একটু নিজেদের ভেতর বেশ কিছু অভ্যাস মেইনটেইন করায় তবে হয়তো নিজেদের আরও একটু কর্মক্ষম এবং নিজেদের বাসায় হলেও কাজকে উপভোগ করতে শিখবো। এই বিষয় গুলো নিয়েই আমার আজকের টিউন। আমি চেষ্টা করবো সব গুলো বিষয় আপনাদের সামনে উঠিয়ে ধরার।
আপনি বাসায় কাজ করছেন মানে এই নয় আপনি নিজের মতো যখন ইচ্ছা কাজ করবেন। এটা আপনার কর্ম উদ্যম নষ্ট করবে। আপনাকে আপনার সকল কাজের একটা নির্দিষ্ট শিডিউল করতে হবে। যেকারনে গুরুত্ব অনুসারে কাজগুলো সাজিয়ে নিবেন। দিনের যে সময় আপনি বেশি কর্ম-উদ্যম থাকবেন সেই সময় আপনি বেশি প্রডাক্টিভ কাজ করবেন। তাছাড়া আপনার ক্লায়েন্ট বা বসের সময় মেইন-টেইন করার বা মিউচুয়াল করে নেবার চেষ্টা করবেন। এতে আপনি ভালোভাবে কাজে অগ্রসর হতে পারবেন। একটা নির্দিষ্ট সময় প্রতিদিন আপনি মেইল চেক করার জন্য রাখুন, স্কাইপে যোগাযোগ করুন বা ফোন কল নিন। এভাবে সময় মোতাবেক কাজ করলে আপনি অনেক বেশি প্রডাক্টিভভাবে কাজ করতে পারবেন।
আমাদের সবার একটা পার্সোনাল লাইফ আছে। সেহেতু আপনাকে সেটাও মেইন-টেইন করতে হবে। তবে ওয়ার্ক টাইমের সাথে আপনার পার্সোনাল টাইম গুলিয়ে ফেললে হবে না। পার্সোনাল টাইম আপনি যেহেতু পরিবারের সাথে দিবেন সেহেতু তার জন্য কোন টাইম ভালো সেটা ঠিক করে ওয়ার্ক টাইম নির্ধারণ করুন। আপনার পরিবারের সাথে কিছু সময় কাটালে আপনি আরও বেশি কর্মক্ষম হবেন এটা স্বাভাবিক।
শুধু কাজ করে গেলেই হবে না। নির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা থাকা লাগবে কাজে সঠিকভাবে কাজ শেষ করার জন্য। কাজের গুরুত্ব অনুসারে আপনাকে কাজ সাজাতে হবে। কোনটা আগে পরে রাখবেন সেটা আপনাকে গুরুত্ব অনুসারেই সাজাতে হবে। আর প্রতিদিনের কাজ শেষে পরবর্তী দিনের কর্মপরিকল্পনা সাযাবেন। এতে আপনার সুন্দর ঘুমে ব্যাঘাত আনবে না। আবার ভালোভাবে কাজও করতে পারবেন।
প্রতিদিন ঠিক নির্দিষ্ট টাইমে পরবর্তী দিনের কর্মপরিকল্পনা সাজান।
আপনি বাসায় বসে কাজ করেন সেহেতু সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠে সুন্দর সকাল উপভোগ করুন। এটি আপনাকে সারাদিন কর্ম-ক্ষম রাখবে। হালকা হেঁটে প্রকৃতির সাথে মিশে যেতে পারেন। তারপর সঠিক সময়ে পুষ্টিকর নাস্তা নিন। নাস্তায় ৩০ মিনিটের কম সময় রাখবেন না। আর লান্সের জন্য মিনিমাম ১ ঘণ্টা সময় রাখবেন। সকালে কারও সাথে হালকা আলাপেও জমতে পারেন, এটি আপনাকে সজিব করবে।
যদিও আপনি বাসায় বসে কাজ করবেন তারপরও অফিসিয়াল ড্রেসকোড মেইন-টেইন করুন। এটি আপনার ভেতর কর্ম-উদ্যম আনবে। সুন্দর করে ব্রাশ করে, সাওয়ার নিয়ে তারপর ড্রেস মেইন-টেইন করে কাজ শুরু করুন দেখবেন নিজের কাছেই অফিসিয়াল পার্সন লাগবে। তাছাড়া আপনার নিজের ভেতরও মোটিভেশন কাজ করবে।
নিজের বাসায় আপনি কাজ করলেও অফিসকে এমনভাবে তৈরি করুন যেন এটা অফিস ভাবতে আপনার কষ্ট না হয়। এই ডেস্ক আপনি শুধু অফিসিয়াল কাজের জন্যই ব্যবহার করবেন। আপনি যদি রিলাক্স করে শুয়ে বসে কাজ করেন দেখবেন অনেক সময় নষ্ট করে ফেলছেন। কিন্তু যদি আপনি অফিসিয়াল ব্যবহার তৈরি করেন নিজের কাছে অফিসের মাধ্যমে তাহলে দেখবেন আপনার প্রডাক্টিভিটি বেড়ে যাবে। আপনি আরও ভালোভাবে কাজ করতে পারবেন।
যেহেতু এটি আপনার অফিস সেহেতু সবার প্রবেশে এটি নিরুৎসাহিত করুন। আপনার বাচ্চা, অয়িফ বা অন্য কাউকে খুব বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া এখানে আসা একদম নিষেধ রাখুন। কারণ এটি আপনার অফিস, এখানে আপনি অফিসিয়াল সকল কাজ করেন, আপনার মেন্টালিটি সম্পূর্ণ অফিসিয়াল কাজের জন্য।
আপনার অফিস যেন আপনার রুমের মতো না দেখায়। অর্থাৎ কখনো যেন এটি আপনার কাজের সময় নির্দিষ্ট জিনিস খুঁজে পেতে ব্যাঘাত সৃষ্টি না করে। সব সময় একদম অফিসিয়াল গোছানো থাকবে আপনার রুম, তাহলে আপনি যেমন মজা পাবেন কাজ করে, ঠিক অফিসিয়াল ব্যবহার করতেও আপনার সুবিধা হবে। পরিবারের অন্য কারও প্রয়োজনীয় জিনিস আপানার কাছে থাকবে না। সব সময় অফিসিয়াল লুক থাকবে আপনার অফিসে।
আপনি যেহেতু বাসায় অফিস তৈরি করেছেন সেহেতু আপনার বাসায় হালকা বিনোদনের ব্যবস্থা রাখতে পারেন। এটা আপনার কর্ম-ক্ষমতা বাড়াতে পারে। আপনি যেধরনের মিউজিক হালকা ধাঁচের পছন্দ করেন তার ব্যবস্থা রাখতে পারেন। কাজের মধ্যে হালকা রিফ্রেশ নিতে পারেন। তবে হালকা সুর রাখার চেষ্টা করবেন।
আপনি বাসায় বসে কাজ করেন বলে বাইরের জগতকে একদম ভুলে গেলে চলবে না। বাইরের মানুষের সাথে উঠা বসা করুন সপ্তাহে বিশেষ দিন তৈরি করে। এটি আপনার কর্ম-দক্ষতা বাড়াবে। পরিচিত কলিগদের সাথে ফোন কন্টাক্ট রাখুন। এতে আপনি ইন্সপাইরড হবেন। আপনার ক্লান্তি দূর হবে। দূর কোথাও বেড়াতে ভুলে যাবেন না। বিভিন্ন ইভেন্টকে অবহেলা করবেন না।
আপনি বাসায় কাজ করেন বলে নিজেকে কখনও গুটিয়ে রাখবেন না। এই বিশ্ব আপনার, এখানে আপনাকে বীজ বুনতে হবে। নিজেকে সেভাবে গড়তে হবে। নিজেকে উপভোগও করতে হবে তার মধ্যে। আমরা না আনলে কে আনবে এই দেশের চেঞ্জ।
আসুন হাতে হাত মেলায় সুন্দর পৃথিবী গড়ার জন্য।
অনলাইন পেশাজীবী হিসেবে আপনার কোন ভিন্ন পদ্ধতি থাকলে আমাকে টিউমেন্টের মাধ্যমে জানাতে ভুলবেন না। আপনার সুন্দর ভবিষ্যৎ কামনায়।
ধন্যবাদ সবাইকে। এটা আমার ২০০ তম টিউন। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন, যেন এভাবেই ভালো কাজের ভেতর থাকতে পারি সারা জীবন। 🙂
আমি আইটি সরদার। Web Programmer, iCode বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 11 বছর 10 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 261 টি টিউন ও 1750 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 22 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আমি ইমরান তপু সরদার (আইটি সরদার),পড়াশুনা করেছি কম্পিউটার বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি নিয়ে; পেশা কন্টেন্ট রাইটার এবং মার্কেটার। লেখালেখি করি নেশা থেকে ফেব্রুয়ারি ২০১৩ থেকে। লেখালেখির প্রতি শৈশব থেকেই কেন জানি অন্যরকম একটা মমতা কাজ করে। আর প্রযুক্তি সেটা তো একাডেমিকভাবেই রক্তে মিশিয়ে দিয়েছে। ফলস্বরুপ এখন আমার ধ্যান, জ্ঞান, নেশা সবকিছু...
২০০ তম টিউনের অভিনন্দন। অনেক কিছু পেয়েছি আপনার কাজ থেকে আশা করছি ভবিষ্যৎ এ পাব,এগিয়ে যান অনেক অনেক শুভ কামনা রইল।