সায়েন্স ফিকশনের সাথে আমাদের সবারই পরিচয় আছে।তাই না? ভবিষ্যত পৃথিবীর নানা কাহিনী নিয়ে গড়ে উঠে একেকটি গল্প। সিনেমাও কম হয়নি এ নিয়ে।আমাদের অনেকেরও তার কিছু না কিছু দেখা আছে। স্বাভাবিকভাবেও বিভিন্ন আজব (!) যানের সাথেও পরিচয় হতে হয়েছে আমাদের। কারণ চলাফেরায় ২য় কোনো বিকল্পতো আর হতে পারে না। এইতো স্টিভেন স্পিলবার্গের মাইনরিটি রিপোর্টের কথাই ধরুন না। গাড়িগুলোর কথা মনে আছে তো ? সমতল, খাড়া কিংবা উল্টা সব পথেই চলতে পারতো সেগুলো। এরকম আরও কত গাড়িই তো দেখেছি আমরা। সেই প্রাচীনকালের ভক্সওয়াগেন থেকে শুরু করে হালের সর্বাধুনিক উভচর কিংবা আসছে উড়ক্কু গাড়ি সব ক্ষেত্রেই একটা সাধারণ মিল কিন্তু ছিল। গাড়িগুলোর ডিজাইন যেমনি হোক না কেন সেগুলো মোটামুটি চৌকোনাকার ছিল।
কিন্তু ফেরারি বোধহয় আর তা বেশিদিন থাকতে দিচ্ছে না। আজব এক ডিজাইন মাথায় এসেছে বিশ্বখ্যাত স্পোর্টস কার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ফেরারির ডিজাইনারদের মাথায়। আবার তাদের পরিকল্পনার ধরণটাও আজব। এই গাড়ি নাকি মানুষ চালাতে পারবে না, এতোই দ্রুতগতির হবে এটি। শুধুমাত্র প্রোগ্রামড সুপার কম্পিউটারই এটিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে!
ফেরারির নাম আমরা প্রায় সবাইই হয়তো শুনেছি। যদিও আমাদের দেশে বিএমডব্লিউ বা মার্সিডিজ হরহামেশাই দেখা গেলেও ফেরারি এখনো এই তালিকায় যুক্ত হয়নি। হবেই বা কি করে ? ফেরারি তো আর সাধারণ রোড কার বানায় না। তাদের প্রায় সব মডেলই আল্ট্রা মডার্ন স্পোর্টস কার। এগুলো ঢাকার রাস্তায় চালানোর কথা চিন্তা করা আর মিরপুর স্টেডিয়ামে বোয়িং নামানো কোনটা বেশি অবাস্তব একটু ভেবে বলতে হবে। তার উপর আছে আবার ফেরারির এক্সক্লুসিভ প্রাইস ট্যাগ। লাখ পাউন্ডের নিচে যার দেখা পাওয়াটাই ভার। আল্লাহ মালুম বাংলাদেশে সব ট্যাক্সের ঝামেলা পার হয়ে এর দাম কততে গিয়ে যে ঠেকতো!
কিন্তু স্পোর্টস বিশেষ করে ফর্মুলা ওয়ানে ফেরারি এফ ওয়ান কার অবিসংবাদিত সম্রাট। ১৯৫০ সাল থেকে শুরু বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশীপের ১৬টিই ঘরে তুলেছে ফেরারি, এর মধ্যে আবার গত ১০ বছরেই এসেছে ৮টি শিরোপা। আছে ২০০৮-এর শিরোপাও। আর কিংবদন্তী মাইকেল শুমাখার তো সাধারণ থেকে অসাধারণ হয়েছেন এই ফেরারির সাথে থেকেই। ৭টি ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশীপ যার ঝুলিতে। এই রেকর্ড অদূর ভবিষ্যতে ভাঙ্গবে- এইটা অনেকেই ভাবতেও পারেন না।
তাই বিলাসি চিন্তা তো ফেরারিকেই করতে হয়। আর ফেরারি ডিজাইনাররাও সব সময় তা করে আসছেন। আর তার তাদের সুদক্ষ প্রকৌশলীরাও সেগুলোকে বাস্তবে পরিণত করতে বেশ পটু। কি ফেরারি এফ ২০০৮, ফিয়োরানো ৫৯৯, স্কুডারিয়া ৪৩০ কিংবা আসছে স্কুডারিয়া স্পাইডার ১৬ এম কোনটার চেয়ে কোনটাকে এগিয়ে রাখবেন আপনি? প্রতিটিরই আছে নিজস্ব রাজসিক ডিজাইন ও সুপার ফাস্ট গতি কিন্তু অসাধারণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। সবমিলিয়ে গাড়ি জগতে ফেরারিকে দেখা হয় আসলে অন্য এক দৃষ্টিতে।
সেই ফেরারিই এবার এমন এক গাড়ি ডিজাইন করেছে বলা হচ্ছে এই গাড়ি এতটাই গতিময় ও জটিল যে কোনো মানব মস্তিষ্ক একে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম নয়। শুধুমাত্র কম্পিউটারই পারে এই গাড়িকে চালাতে। গাড়িটির দিকে একবার চোখ বুলান তো। প্রথম দর্শনে একে স্পেসশীপ বলে ভুল করবেন অনেকেই।
ফেরারি ডিজাইনার ইমান মাঘসৌদি এই গাড়ি নিয়ে বলেছেন যে- এটি মুহূর্তেই ২০০ কি.মি./ঘণ্টা গতি তুলে ফেলতে সক্ষম এবং সার্বক্ষণিক পূর্ণাঙ্গ মনোযোগ ছাড়া এটিকে নিয়ন্ত্রণ করা মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়, সেহেতু এই গাড়ির নিয়ন্ত্রণভার কম্পিউটারের হাতে রাখাটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ। গাড়িটি ফেরারি মনজা সিরিজের, যার সূচনা হয় সেই ১৯৫০ সালে। যেই আমল থেকেই পৃথিবীবাসীকে নিত্যনতুন চমক নিয়ে আসছে এই সিরিজের গাড়িগুলো। আর এবারেরটি তো কয়েক ধাপ উপরে। এই গাড়িটি এক আসন বিশিষ্ট। চালক বসার আসনটিকে সিট না বলে ককপিট বলাটাই বোধহয় ভালো হবে। গাড়িটি যখন কম গতিতে চলবে তখন চালকই ইচ্ছে করলে এটিকে চালাতে পারবেন কিন্তু একটি নির্দিষ্ট গতিসীমা অতিক্রম করে গেলেই কম্পিউটার এটিকে চালানোর দায়িত্ব নিয়ে নিবে। এর সামনের দিকে থাকবে বিমানের রাডারের মতো নড়ার ক্ষমতাসম্পন্ন ডানাসদৃশ ক্যানার্ড। যার কাজ হবে বর্ধিত গতিতেও গাড়িটি যেন মাটিতে থাকে তা নিশ্চিত করা এবং এর ভারসাম্য রক্ষা করা।
এই গাড়িটি এখনো যদিও গবেষণার গণ্ডিই পেরোয়নি তাই কবে নাগাদ এটি আলোর মুখ দেখবে তা নিয়ে এখানো পরিষ্কার কোনো ধারণা পাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে এটি বাজারে এলে বর্তমান স্পোর্টস কারগুলোর কি অবস্থা হবে তা নিয়েই অনেকে ভাবতে শুরু করেছেন। আবার এটাও ঠিক যে, বর্তমানেই স্পোর্টস ক্যাটাগরিতে প্রায় একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে রাখা এই কোম্পানিটি তাদের অবস্থান কোথায় নিয়ে যায় তা দেখতেও অনেক আগ্রহী হয়ে অপেক্ষা করছেন।
আমি সেতু। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 16 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 47 টি টিউন ও 466 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
আছি কম্পিউটার আর ইন্টারনেটকে সাথে নিয়ে।ভালোবাসি নতুন আর আনকোরা সফটওয়ার নিয়ে কাজ করতে।ভালো লাগে হার্ডওয়ার নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে।পড়ছি বুয়েটে।কাজ করছি টেকনোলজি টুডে'র সহকারি সম্পাদক হিসেবে।কম্পিউটার-এর জগতে শুধু ঘুরেই বেড়াচ্ছি গত প্রায় ১২/১৩ বছর ধরে।কম্পিউটার নিয়েই কাজ করছি ৮/৯ বছর ধরে।জড়িত আছি বিভিন্ন দেশী-বিদেশী সাইট-এর সাথে।মোটামুটি দেশীয় কম্পিউটারের সবক্ষেত্রেই নজর রাখতে...
অসাধারণ………
চমৎকার…….
এমন টিউনই তো ধরকার।