আমাদের এ পৃথিবীতে একটি রহস্যময় গভীর জায়গার আছে. যার নাম Mariana Trench. আপনি সম্ভবত ইতিমধ্যে এই গভীরতম খাদ সম্পর্কে কিছু না কিছু জেনেছেন বা শুনেছেন.
আমরা সবাই স্কুলে পড়েছিলাম, এভারেস্ট পৃথিবীর সর্বোচ্চ উচ্চ স্থান. এবং সম্ভবত আপনি এও পড়েছেন যে মারিয়ানা ট্রেঞ্চ সবচেয়ে গভীরতম.
আমাদের বেশির ভাগই স্কুল-কলেজে এসব বিষয়ে জানার পরিধি এখানে শেষ হয়েছিল. কিছু সংখ্যক বয়ে হয়তো উল্লেখ করা হয়েছিল এই রহস্যময় জায়গার সম্পর্কে.
কিন্তু আপনি কল্পনাও করতে পারবেন না যে, কতটা গোপনীয় বিষয় এখানে লুকিয়ে আছে এবং কতটা অদ্ভুত প্রাণীদের বসবাস এই জায়গাতেই.
পৃথিবীর এই গভীরতম খাত প্রশান্ত মহাসাগরের ঠিক পশ্চিমে মারিয়ানা দ্বীপপুঞ্জের কাছে, আর এখান থেকেই এর নামকরণ করা হয়েছে মারিয়ানা ট্রেঞ্চ.মারিয়ানা ট্রেঞ্চ একটি বিশাল V আকৃতির খাল, যেটি 1500 km দীর্ঘ এবং 11, 000 মিটারেরও বেশি গভীর.
এটি এতটাই বিশাল যে সেখানে ভারেস্টের মত সুউচ্চ পর্বতমালা খুব সহজভাবেই প্রবেশ করানো যাবে এই bottomless খালে.
এখন কথা বলা যাক এই মারিয়ানা ট্রেঞ্চের ভেতরে বসবাসরত বাসিন্দাদের সম্পর্কে.
শতাব্দি ধরে বিশ্বাস করা হতো এই প্রত্যন্ত এবং ভয়ংকর জায়গায় জীবের অস্তিত্ব থাকাটা অসম্ভব. সোভিয়েত জাহাজ Vidya 1958 সালে প্রমাণ করে এখানে প্রাণের অস্তিত্ব আছে.
তারপর বিজ্ঞানীরা 7, 000 meters গভীরতাই প্রাণের অস্তিত্ব আবিষ্কার করেন.এরপর একের পর এক প্রমাণ বেরিয়ে এসেছে যে মারিয়ানা ট্রেঞ্চ এর গভীরে বিভিন্ন প্রজাতির বহু সংখ্যক প্রাণীর বসবাসের.
এছাড়াও ভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া, মেরুদন্ডী প্রাণী, শম্বুক এবং প্রচুর অপরিচিত জীবের বসবাস এখানে. আর এসব অপরিচিত প্রাণীরাই প্রকৃত দানব.
1960 সালে. একজন সুইচ গবেষক Jacques Piccard প্রথমবার এই বিশাল খাদটিতে অভিযান করার পদক্ষেপ গ্রহণ করেন
Jacques এবং তার সফরসঙ্গী deep dive submersible এর সাহায্যে এই সমুদ্রের তলদেশে পৌঁছতে সক্ষম হয়.
তথাকথিত এই নরকের ভেতর সমুদ্র স্তর থেকে almost 11, 000 meters গভীরে প্রবেশ করেন. এই সাহসী গবেষকরা কোন এক অদৃশ্য শক্তির কারণে সেখানে 20 মিনিটের বেশি stay করতে পারে না.
কিন্তু তারা এই কম সময়ে যা দেখেছিল সেটুকুই বোঝার জন্য যথেষ্ট যে মারিয়ানা ট্রেঞ্চের একদম তলদেশে জীবনের অস্তিত্ব বিদ্যমান. তাদের এই আবিষ্কার অন্যান্য গবেষকদের তাক লাগিয়ে দেয়
আমাদের স্বাভাবিক সমুদ্র স্তরের বায়ুমণ্ডলের চেয়ে মারিয়ানা ট্রেঞ্চে 1, 100 গুণ বেশি গভীর. যেখানে পানির প্রেসার থাকে তিন tons per square centimetre এ.এত বিস্ময়কর প্রেসারে যেকোনো শক্ত ধাতু যেমন লোহাকে পর্যন্ত চ্যাপ্টা করে দিতে পারবে. কিন্তু এই স্থানে বসবাস করা সামুদ্রিক মাছ গুলো কিছুই অনুভব করছে না,
প্রচুর ঝিনুক এবং অদ্ভুত কিছু মাছের প্রজাতি সেগুলো বৈজ্ঞানিকভাবে এখনো অপরিচিত তারা খুব easily এখানে বসবাস করে আসছে.
11, 000 meters গভীরে এইসব প্রজাতি তাদের অস্তিত্ব কিভাবে টিকিয়ে রেখেছে তা বিজ্ঞানীদের ভাবিয়ে তুলছে বারবার.
অনেক বছর পর Jacques Piccard এর নোটবুক থেকে রেকর্ড করা সেসমস্ত তথ্য উপাত্ত জনসম্মুখে আনা হয়.সেখানে বলা হয়েছিল এইসব প্রাণীদের রক্ত শীতল অবস্থায় তাদের শিরায় চলাচল করে.
এরপর গবেষকেরা মারিয়ানা ট্রেঞ্চে মধ্যভাগে একটি আতঙ্কজনক বস্তু কে দেখতে পায় এটা ছিল বৃহৎ আকৃতির disc-shaped বা গোল আকৃতির বস্তু, তারা তাদের deep dive submersible এর উইন্ডো থেকে এই বস্তুটিকে খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করেন এটি উজ্জ্বল আকৃতির গোলাকার অদ্ভুত একটি বস্তু যেটি অন্ধকারে খুব ভালো ভাবে দেখা যাচ্ছিল, এবং সে এই সাবমারসিবল এর দিকে তাকিয়ে আছে.
কিন্তু ঠিক কিছু মিনিট পর এই অদ্ভুত বস্তুটি হঠাৎ ই উধাও হয়ে যায়, কে বা এটি কি ছিল তা এখনও বিজ্ঞানীদের কাছে পরিষ্কার নয়. একদিন এই প্রাকৃতিক ইন্দ্রিয়গোচর বস্তুর সম্পর্কে হয়তো জানা সম্ভব হবে.
কিছু রিসার্চার বলেন এটা সম্ভব প্রাচীন কালের কোন প্রাণী যার সম্পর্কে ধারণা আমাদের নেই, এখনো প্রাচীন কিছু জীব মারিয়ানা ট্রেঞ্চ এর ভেতর এর অস্তিত্ব থাকতেও পারে.
1985 সালে. আমেরিকান একদল নাবিক তাদের জাহাজ যার নাম Glomar Challenger এই জাহাজ থেকে মারিয়ানা ট্রেঞ্চের গভীরে প্রবেশ করানোর জন্য একটি গোলাকার ফাঁপা বস্তুর ভেতর 9 meter একটি বল আকৃতির ডিভাইস প্রবেশ করানো হয় ডিভাইসটির নাম Hedgehog.
এই ডিভাইসটির মাধ্যমে সেই স্থানে উৎপন্ন শব্দের পরীক্ষা করবার জন্য পাঠানো হয়. কম্পিউটার কিছু অদ্ভুত ধরনের শব্দের রেকর্ড শুরু করে. কিন্তু হঠাৎই এই ডিভাইসটির cables কে.কোন এক অদৃশ্য শক্তি নিচের দিকে আর নিচের দিকে টানতে শুরু করে.
গবেষকেরা এই অদ্ভুত ঘটনার কারণ খুঁজে বের করতে ডিভাইসটিকে উপরে ফিরিয়ে নিয়ে আসার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করেন.তারা একটি reel এর মাধ্যমে Hedgehog ডিভাইসটি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেন.কিন্তু কোনভাবেই যেন গভীরতা থেকে এই ডিভাইস টিকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হচ্ছিল না.
ফাইনালি তিন ঘন্টা লড়াইয়ের পর এই অজ্ঞাত শক্তির হাত থেকে মেশিনটিকে উপরে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে হয়েছিল.
এরপর একটি ভয়ানক চিহ্ন বিজ্ঞানীরা দেখতে পান. এই steel এর তৈরি বস্তুটিকে দেখে মনে হলো যেন এটি একটি পানির দৈত্যের চোয়ালের মধ্যে ছিল.সেখানে একটি কামড়ের চিহ্ন দেখা যাচ্ছিল.
কি ধরনের প্রাণী এই কাজ করতে পারে? এই ঘটনাটি একটি আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে. স্টিল এবং তার গুলোর কন্ডিশন দেখে তারা হতবুদ্ধি হয়ে যায়, সাথে হঠাৎ বিশাল ঢেউ তাদেরকে ভীতু করে ফেলে.
তারপর বিজ্ঞানীরা মনে করে এই স্টিলের ডিভাইসটি সম্ভবত তলদেশে কোন শিলার সাথে আটকে পড়েছিল.যার ফলে এই ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে.
কিন্তু Glomar Challenger নাবিকদল মানতে নারাজ যে সেখানে 11 কিলোমিটার গভীরে নিশ্চয়ই কোন অধিক শক্তিশালী কিছু একটা ছিল.
কিন্তু গবেষকেরা আগের অবস্থাতেই অনড় থেকে যায় তারা বলেন, মারিয়ানা ট্রেঞ্চের নীচে বিভিন্ন পর্বতে আচ্ছাদিত.
প্রকৃত রিচার্জ করার পর দেখা গেল, সেই স্থানের কোন ধরনের শিলা বা পর্বতমালা নেই. সেখানে এমন কিছুই ছিল না যার কারণে এই ডিভাইস টি আটকে পড়বে.যদি এ ধরনের কিছু থাকত তাহলে এই ডিভাইসটির মাধ্যমে আগেই এ ধরনের সিগন্যাল পাওয়া যেত. কিন্তু সেগুলো কিছুই ঘটেনি
এই ভয়াবহ damage ছাড়াও, এখানে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ধরনের ভৌতিক শব্দগুলির ব্যাখ্যা এখনো পাওয়া যায়নি.
পরবর্তীকালে জীববিজ্ঞানী ঘটনাটির আরেকটি উত্তেজনাপূর্ণ তথ্য প্রদান করেন. তাদের মতে সেখানে এক বৃহদাকার Megalodon এই স্টিল এবং কেবল গুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছিল.
Megalodon হচ্ছে হাঙ্গর দের মধ্যে একটি বিলুপ্ত প্রজাতির প্রাণী.ধারণা করা হয় 2.6 মিলিয়ন বছর আগে এরাই সমুদ্রের রাজা ছিল.যেটি গ্রেট হোয়াইট শার্ক এর মত দেখতে ছিল.এর ওজন ছিল 50 টন এবং 22 মিটার লম্বা. ধারণা করা হয় যে এই ভয়ঙ্কর প্রজাতি প্রায় পাঁচ লক্ষ বছর আগে বিলুপ্ত হয়ে গেছে.
কিন্তু পরবর্তীতে এটি কে সংশোধন করা হয়. Megalodon পৃথিবী ছেড়ে এখনো যায়নি, এই মারিয়ানা ট্রেঞ্চের গভীরে তাদের বাসস্থান.
বিজ্ঞানীরা এক বৃহদাকার দাঁতের সন্ধান খুঁজে পায়, আর এই দাঁত থেকে অনুমান করা হয় এটিই প্রাচীন জন্তু Megalodon এর দাঁত.
তার কিছুদিন পর Japanese dry cargo জাহাজটি মারিয়ানা ট্রেঞ্চ এর উপর দিয়ে পার হচ্ছিল, হঠাৎই তারা দেখতে পায় প্রচন্ড জোরে সমুদ্রের ঢেউ ফলে জাহাজটি অনবরত পানিতে জাম্প করতে থাকে. কিন্তু সেই সময় পানির পৃষ্ঠতলে কাছাকাছি প্রাকৃতিক কোন দুর্যোগ হচ্ছিল না.
এবং হঠাৎই তারা দেখতে পায় একটি বৃহৎ আকৃতির দানব তাদের জাহাজের নিচ দিয়ে চলে যায়.চিন্তা করুন কিরকম ভয়ংকর পরিস্থিতিতে সেসব নাবিক গুলো পড়ে ছিল.
সাম্প্রতিক সময়ে বিজ্ঞানীদের তাদের এক আবিষ্কারে দেখা যায়. এই নতুন এক ধরনের জেলিফিশ কে, , যেটি দেখতে এলিয়েনদের মত দেখায়. যার ছিল লম্বা flexible অঙ্গ, লাল এবং হলুদ রং দ্বারা সজ্জিত. বিজ্ঞানীরা তাদেরকে ভিডিও আকারে ক্যাপচার করে.আর এসব কিছুই খুঁজে পাওয়া যায় মারিয়ানা ট্রেঞ্চ এর 3, 700 মিটার গভীরে।
আমি জামিউর রহমান জিসান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 6 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 22 টি টিউন ও 6 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।