আজকে প্রযুক্তি কতোদ্রুত সামনের দিকে এগোচ্ছে এই ব্যাপারে বিশেষ করে বর্ণনা করার আর কিছু নেই। আমাদের প্রযুক্তিতে ক্রমবর্ধমান স্পীড দেখে মাঝে মাঝে মনে হয়, আমরা অলরেডি ফিউচারে বাস করছি। এই ব্লগে আমি পূর্বে অনেক টাইপের ফিউচার টেক নিয়ে আলোচনা করেছি, এর মধ্যে অনেক ফিউচার টেক বর্তমানে আমাদের কাছে লাইভ টেক কিন্তু আরো কিছু উন্নতি করার প্রয়োজন আছে। চিন্তা করে দেখুন আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স আর মেশিন লার্নিং এর কথা! বছর খানেক আগে এগুলো শুধু বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মজাদার আর অকল্পনীয় আর্টিকেল হিসেবে শোভা বাড়িয়েছে। কিন্তু আজকে দেখুন, ধীরেধীরে প্রত্যেকটি বিষয়ে এই মেশিন লার্নিং আর আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রবেশ করে নিচ্ছে—ফোনে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করা হচ্ছে, ক্যামেরাতে ব্যবহার করা হচ্ছে, এমনকি ওয়েবসাইট গুলোতেও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করা হচ্ছে!
চিন্তা করে দেখুন ১৯৮০ সালের কথা, যখন পকেটে একটি ছোট সেলফোন, যেটা কল আর ম্যাসেজ রিসিভ করতে পারে, এমনটা হওয়া কোন সায়েন্স ফিকশন থেকে কম কিছু ছিল না। কিন্তু তারপরে চিন্তা করে দেখুন মাত্র দশ বছর পরে, ১৯৯০ সালের কথা, যখন সেলফোন ব্যবহার করে ওয়েব ব্রাউজ করা আরম্ভ হয়ে গিয়েছিলো। কিন্তু আজকের স্মার্টফোন গুলো কি করতে পারে?—সুপার ফাস্ট ইন্টারনেট ব্রাউজ করতে পারে, যেকোনো টাইপের অ্যাপ্লিকেশন রান করাতে পারে, আপনি গেমিং করতে পারেন, দিন দিন স্মার্টফোন ক্যামেরা গুলো আরো এবং আরো উন্নতি প্রাপ্ত হচ্ছে, স্মার্টফোনের সাথে যুক্ত হয়েছে ডিজিটাল অ্যাসিস্ট্যান্ট যেটা ভয়েস কম্যান্ড নিয়ে কাজ করতে পারে, চিন্তা করে দেখেছেন, আপনি আপনার ফোনের সাথে কথা বলতে পাড়ছেন, যেটা কিনা শুধু মাত্র একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইজ!
তো এই অবস্থায়, খুব ভাবতে ইচ্ছা করছে, ঠিক ভবিষ্যৎ স্মার্টফোন গুলো কেমন হতে পারে! দশ, বিশ, বা পঞ্চাশ বছর পরের স্মার্টফোন গুলোতে আমরা কি ধরনের পরিবর্তন লক্ষ্য করতে পারবো? হতে পারে এই আর্টিকেলে বর্ণিত অনেক ফিউচার স্মার্টফোন ফিচার একেবারেই শুনতে পাগলের মতো লাগতে পারে, কিন্তু এগুলো শুধু মাত্র আমার কল্পনা। এবং হ্যাঁ, অবশ্যই আপনার ক্রেজি আইডিয়া গুলোও আমরা জানতে চাই! তাই অবশ্যই নিচে টিউমেন্ট করে আপনার আইডিয়া গুলো সকলের সাথে শেয়ার করুন!
আমার মতে ভবিষ্যৎ স্মার্টফোন গুলোকে আর ফোনই বলা হবে না। স্মার্টফোন গুলোতে এতো শক্তিশালী ফিচার চলে আশাকরি অদূরভবিষ্যতে সমস্ত কিছু কম্পিউটার নির্ভরশীল হয়ে পড়বে, ইন্টারনেট অফ থিংস ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়বে, স্মার্ট হোমের সবকিছু ইন্টারনেট দ্বারা কানেক্টেড থাকবে। শুধু আপনার স্মার্টফোন নয়, বাড়ির টিভি, ফ্রিজ, এসি, কতিপয় সেন্সর, স্মার্ট ওয়াসিং মেশিন, এমনকি দরজা পর্যন্ত ইন্টারনেটের সাথে যুক্ত থাকবে। আর আপনার ফোন হবে এগুলোর কন্ট্রোলিং ইন্টারফেস। কয়েক বছর পরে হয়তো আপনার চোখের সামনে কোন ফিজিক্যাল কম্পিউটার দেখতে পাবেন না, কিন্তু সমস্ত কিছু অবশ্যই কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত হবে। আর আপনার ফোনকে গেটওয়ে হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন, যেটা সমস্ত কিছু নিয়ন্ত্রন করবে।
ভবিষ্যৎ স্মার্টফোন কেমন হবে, সেটা দুইভাবে ভাবা সম্ভব। প্রথমত, যদি প্রযুক্তির অসাধারণ উন্নতি লাভ করে, তাহলে স্মার্টফোন কোন ফিজিক্যাল ফোনই থাকবে না! আপনাকে ফোন করার জন্য কিছুই টাচ করতে হবে না, বা সেখানে কিছু দেখার জন্য কোন ডিসপ্লে থাকবে না, আর অবশ্যই শোনার জন্য কোন স্পীকারও থাকবে না। সমস্ত ফোন আর ব্রেইনে সরাসরি ইন্সটল থাকবে। আপনি আমার ব্রেইন কম্পিউটার ইন্টারফেস নিয়ে লেখা আর্টিকেলটি পড়ে থাকলে অবশ্যই জানবেন, আমি কি সম্পর্কে কথা বলছি। যেহেতু এখানে আমরা ২০৫০ সালের কথা বলছি, সেহেতু ব্রেইন কম্পিউটার ইন্টারফেস টেকনোলজি ততোদিনে নিশ্চয় আমাদের মাঝে লাইভ হয়ে যাবে।
চিন্তা করে দেখুন, আপনার মস্তিষ্কের মধ্যে জাস্ট একটি চিপ ফিট করানো থাকতে পারে। অথবা আপনাকে জাস্ট ছোট্ট একটি হেডসেট প্রদান করতে হবে, যেটা আপনার মস্তিষ্ক থেকে সিগন্যাল গ্রহন করে কাজ করবে এবং উল্টা মস্তিষ্কে সিগন্যাল সেন্ড করবে। আপনি যদি কাওকে কল করতে চান, জাস্ট সেটার সম্পর্কে ভাবতে হবে, সিস্টেম থেকে স্বয়ংক্রিয় কল চলে যাবে এবং কলিং সাউন্ড কোন স্পীকারের মাধ্যমে আপনার কানে নয়, বরং মস্তিষ্কের মধ্যে সরাসরি সিগন্যাল সেন্ড করে আপনি তা শুনতে পাবেন। ভিডিও দেখার জন্য বা ভিডিও চ্যাট করার জন্য কোন স্ক্রীনের প্রয়োজন পড়বে না, লাইভ ভিডিও ফুটেজ সরাসরি আপনার মস্তিষ্কে সিগন্যাল সেন্ড করার মাধ্যমে আপনি তা দেখতে সক্ষম হবেন। এই চিন্তা গুলো আমার কল্পনা হলেও, এগুলো কিন্তু মোটেও অযৌক্তিক নয়! আপনি আমার মাইন্ড আপলোডিং নিয়ে বিস্তারিত আর্টিকেলটি পড়ে থাকলে জানবেন, অলরেডি আমাদের কাছে এমন টেক মজুদ রয়েছে, যার মাধ্যমে মানুষের সমস্ত ব্রেইন ডাটা কম্পিউটারে আপলোড করা সম্ভব এবং কম্পিউটার থেকে আমার সেই ডাটা গুলো ব্রেইনে ডাউনলোড করানোও সম্ভব। অর্থাৎ ডিজিটাল ডাটা এবং মানুষের ব্রেইনকে একত্রে মিলিয়ে কিভাবে কাজ করতে হয়, তার প্রযুক্তি আমাদের কাছে রয়েছে।
মাইন্ড আপলোডিং বা অমরত্ব প্রযুক্তিকে বিজ্ঞানীরা দাবী করেছে, এটা ২০৪৫ সালের মধ্যে ব্যস্তব রুপ প্রদান করা সম্ভব হবে। যেহেতু এখানে আমরা কথা বলছি ২০৫০ সালের স্মার্টফোন নিয়ে, অবশ্যই স্মার্টফোনকে ভবিষ্যতে মানুষের মস্তিষ্কের সাথে সরাসরি কাজ করানোর জন্য উপযোগী করে তোলা সম্ভব হবে। যেকোনো ডিজিটাল ডাটা কনভার্ট করে সরাসরি হয়তো আপনার মস্তিষ্কেই সেভ করা হবে। স্মার্টফোন অ্যাপ্লিকেশন গুলো সরাসরি মস্তিষ্ক থেকে রান করানো সম্ভব হবে, আপনি সরাসরি ব্রেইন থেকে অ্যাপ্লিকেশন নিয়ন্ত্রন এবং ব্রেইন গেমিং করতে পারবেন।
আপনি নিশ্চয় ভাবছেন কিভাবে সরাসরি মস্তিষ্কে ভিডিও সিগন্যাল সেন্ড করা সম্ভব! দেখুন, টেকনিক্যালি এটা সম্ভব, কেনোনা আমাদের মস্তিস্কই এই স্টাইলে কাজ করে। যখন আপনি চোখে কোন কিছু দেখেন, সেই দেখার উপর ভিত্তি করে চোখ থেকে মস্তিষ্কে একটি বিশেষ সিগন্যাল সেন্ড হয়, আর এই সিগন্যালের হুবহু সিগন্যাল তৈরি করা এবং মস্তিষ্কে সেন্ড করা সম্ভব। এর মাধ্যমে ক্যামেরা থেকে সিগন্যাল তৈরি করে মস্তিষ্কে সেন্ড করে অন্ধদের দৃষ্টিশক্তি প্রদান করা সম্ভব। যখন আপনি কোনকিছু দেখেন, আপনার চোখ সেখানে সামান্যই ভূমিকা পালন করে, বেশিরভাগ ভূমিকা থাকে আপনার মস্তিষ্কের। তো কেন কোন চিপ থেকে ভিডিও সিগন্যাল তৈরি করে আপনার মস্তিষ্কে সেন্ড করে সেই ভিডিওকে আপনার মস্তিষ্কে দেখানো যাবে না? অবশ্যই বুঝতে পাড়ছেন, এটা কতোটা সম্ভাব্য বিষয় হতে পারে।
এখানে প্রশ্ন শুধু স্মার্টফোন আর ভিডিও, কলিং, বা কমিউনিকেশনের নয়। যদি এমন স্মার্টফোন তৈরি করা সম্ভব হয়, যেটি ব্রেইনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হবে, তাহলে অবশ্যই প্রত্যেকটি জিনিষ মস্তিস্ক ব্যবহার করে নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হবে। আপনার ঘরের মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ফ্রিজ, টিভি, ফ্যান, লাইট, আপনার কার, জিপিইএস ন্যাভিগেশন —সমস্তকিছু আপনার কল্পনার এবং অকল্পনীয়, প্রায় সবকিছুকে জাস্ট মস্তিকের সাহায্যে কম্যান্ড দিয়েই কাজ করানো যাবে।
যদি আমাদের উন্নতি এতোটা চরমে পৌছাতে না পারে, যদি স্মার্টফোন গুলো তখনো কোন ফিজিক্যাল ডিভাইজই হয়ে থাকে, তাহলে কল্পনাটা খুববেশি কঠিন কিছু হবে না। তবে এর মানে এও নয়, অসাধারণ কিছু দেখতে পাবো না! আজকের স্মার্টফোন গুলো কোনদিকে এগোচ্ছে তার দিকে লক্ষ্য করতে গেলে সামনের স্মার্টফোন গুলোতে একটি জিনিষ অবশ্যই ট্রেন্ড হতে চলেছে, তা হলো “জিরো ব্যাজেল ফোন“। আজকের ফোন গুলোতে অবশ্যই খেয়াল করে দেখেছেন আগের তুলনায় অনেক কম ব্যাজেল রাখা হচ্ছে। এলজি জি৬ বা স্যামসাং গালাক্সি এস ৮ ফোনের ব্যাজেল একেবারেই কম, কিন্তু সম্পূর্ণ ব্যাজেল মুক্ত নয়। তবে অবশ্যই কয়েক বছরের মধ্যে আমরা জিরো ব্যাজেল ফোন দেখতে সক্ষম হবো, হয়তো সামনের দিকে স্ক্রীন ছাড়া আর কিছুই অপ্রয়োজনীয়ভাবে জায়গা দখল করবে না।
সামনের স্মার্টফোন গুলোতে সবচাইতে উল্লেখ্যযোগ্য পার্থক্য আসতে চলেছে, আর সেটা হচ্ছে ব্যাটারি লাইফ। হ্যাঁ, আজকের ফোন গুলো অনেক উন্নত কিন্তু ব্যাটারি লাইফ এতোটাও উন্নত নয়। এমন হলে কেমন হবে, যদি পুরো সপ্তাহ বা পুরো মাস ব্যাটারি ব্যাকআপ দেয় বিনা চার্জ করে! আবার চার্জ করার সময় হয়তো ২-৫ সেকেন্ড প্রয়োজনীয় হতে পারে। এখন আমাদের কাছে ফাস্ট চার্জিং টেকনোলজি রয়েছে, কিন্তু সামনের দশ থেকে বিশ বছরে হয়তো সুপার ক্যাপাসিটারস্মার্টফোনে যুক্ত হয়ে যাবে ফলে ৫ সেকেন্ডের বেশি সময় লাগবে না স্মার্টফোনকে চার্জ করতে। আজকের ব্যাটারি টেকনোলজি ব্যবহার করে ৭ দিন বা ৩০ দিন একটানা চার্জ ধরে রাখা সম্ভব নয়, কিন্তু সামনে আশা করা যায় সম্পূর্ণ নতুন ব্যাটারি টেকনোলজি আমাদের সামনে চলে আসবে।
সাথে আমার যতোদূর মনে হয়, হেডফোন জ্যাক যেরকমভাবে ফোন থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে, ভবিষ্যতে ফোন থেকে পাওয়ার জ্যাক বা চার্জিং পোর্টও সরিয়ে ফেলা হবে। হয়তো ওয়্যারলেস চার্জিং এতো উন্নতি প্রাপ্ত হবে, আরো অনেকবেশি রেঞ্জের মধ্যে ফোন চার্জিং করা সম্ভব হবে। হয়তো আপনি ঘরে ঢোকার সাথে সাথেই ফোনের চার্জিং শুরু হয়ে যাবে। আবার এমন ইলেকট্রনিক আবিষ্কার করাও হয়তো সম্ভব হতে পারে, যেটা চলতে বিদ্যুতের দরকারই নেই!
যদি কথা বলি ভবিষ্যৎ ফোনের স্ক্রীন টেকনোলজি নিয়ে তো অবশ্যই নতুন কোন প্রযুক্তি আসতে চলেছে যেটা অসাধারণ ডিসপ্লে কোয়ালিটি দিতে সক্ষম হবে। আজ থেকে দশ বা বিশ বছর পরে নয়, অবশ্যই কয়েক বছরের মধ্যেই প্রত্যেকটি ফোনে ওলেড স্ক্রীন ব্যবহার হওয়াটা একটি স্ট্যান্ডার্ড হিসেবে দাঁড়াবে। স্ক্রীনে প্রচণ্ড হাই রিফ্রেশ রেট থাকবে, হতে পারে ১০০০ হার্জ। আর হাই রিফ্রেশ রেট অর্জন করার জন্য অবশ্যই ওলেড স্ক্রীন প্রয়োজন পড়বে, কেনোনা ওলেড হাই রিফ্রেশ রেট অর্জন করার জন্য বিশেষভাবে প্রস্তুত!
সাথে ফোন গুলোর সাথে মোড়ানো ডিসপ্লে ফিচার থাকতে পারে। স্বাভাবিক ভাবে হয়তো ফোনটির ডিসপ্লে কয়েকটি পার্টে ফোল্ড করা থাকবে, এতে আপনি এই অবস্থাতেই সাধারণ ইউজ করতে পারবেন। কিন্তু যখন বড় স্ক্রীন প্রয়োজনীয় হবে, জাস্ট ফোল্ড গুলো সরিয়ে স্ক্রীনকে বড় করে নিতে পারবেন। আর বড় স্ক্রীনের কতো সুবিধা থাকতে পারে সেগুলো নিশ্চয় বর্ণনা করার প্রয়োজন নেই, এক্সট্রা সুবিধা হিসেবে ফোনটিকে আবার মুরিয়ে পকেটে নিয়ে নিতে পারবেন।
সাথে হয়তো আজকের মতো স্ক্রীন থাকবেই না ফিউচার ফোন গুলোতে। হতে পারে ফোনের মেন্যু সরাসরি হাওয়াতে ভেসে বেড় হবে। হ্যাঁ, আমি রিয়াল হলোগ্রাফিক স্ক্রীনের কথা বলছি, যেখানে স্ক্রীন থেকে যেকোনো কিছু হলোগ্রাম হয়ে বেড় হয়ে আসবে। হতে পারে ফোনের সাথে আলাদা কোন ডিভাইজ থাকবে যেটা ছাদে সেট করা থাকতে পারে, এতে আপনি হলোগ্রাফিক ভার্সনে কারো সাথে ভিডিও কল করতে পারবেন। সে ব্যক্তিটি জাস্ট আপনার ফোনের স্ক্রীন থেকে বেড় হয়ে আসবে, এবং আপনার কাছে সমস্ত কিছু ব্যাস্তব মনে হবে। সাথে ডিসপ্লে এমন কোন ম্যাটেরিয়াল দ্বারা তৈরি করা হতে পারে, যেটাতে দাগ ফেলা বা ডিসপ্লে ভাঙ্গা অসম্ভব হয়ে যাবে।
অবশ্যই ফিউচার ফোন গুলোতে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বিস্তরভাবে ব্যবহার হতে আরম্ভ করবে। আপনার ফোনের নিজে থেকেই ধারণা থাকবে সে একটি ফোন, এবং সময়ের সাথে সাথে এবং আপনার ব্যবহারের সাথে ফোনটি কিভাবে আপনাকে আরো বেটার এক্সপেরিয়েন্স প্রদান করবে, সেটা আয়ত্ত করে নেবে। আপনি কখন ঘুম থেকে উঠেন, আপনি কখন অফিসের জন্য বেড় হোন, আজ কি কারণে আপনার লেট হয়েছে সবকিছু ফোন আপনাকে আলার্ট করে দেবে, আপনাকে হয়তো ম্যানুয়ালি কিছুই করার প্রয়োজন পড়বে না। সাথে যেকোনো কথা আপনার সাথে সাথে ফোনও শুনে রাখবে এবং সেই অনুসারে কাজ করবে। এখন ধরুন আপনাকে মা ফোন করে বলল, বাসা ফিরার সময় অবশ্যই অমুক বাজার করে নিয়ে আশাকরিয়ে দেবে।
পার্সোনাল ডিজিটাল অ্যাসিস্ট্যান্ট মোটেও কোন রবোটিক মনে হবে না। সে যথেষ্ট বুদ্ধিমান হবে এবং প্রচণ্ড বুদ্ধির সাথে আপনার প্রত্যেকটি টাস্ক হান্ডেল করবে। ভবিষ্যৎ স্মার্টফোন এ হয়তো এমন কোন সেন্সর লাগানো থাকবে যেটা আমার স্বাস্থ্য নিয়মিত স্ক্যান করবে। যদি হঠাৎ করে কোন সাস্থের সমস্যা দেখা দেয়, আপনার ডিজিটাল অ্যাসিস্ট্যান্ট সরাসরি হসপিটালে ফোন করে দেবে আর জিপিএস লোকেশন পাঠিয়ে দেবে। হতে পারে সেসময়ে সেলফ ড্রাইভিং কারের ব্যাপক জনপ্রিয়তা বেড়ে যাবে, আর স্বয়ংক্রিয় অ্যাম্বুলেন্স আপনাকে নিতে চলে আসবে, এখানে মানুষের কোন প্রয়োজনই পড়বে না। তো এভাবে স্মার্টফোনের বদৌলতে লাখো মানুষের জীবন বেঁচে যাবে।
ডুয়াল সিম কার্ড ব্যবহার করা এবং এটি স্মার্টফোনের বর্তমানে একটি স্ট্যান্ডার্ড ফিচার, এতে একটি ফোনে দুইটি নাম্বার ব্যবহার করার সুবিধা পাওয়া যায়। কিন্তু আমার মনে হয়, অদূর ভবিষ্যতে একটি সিম কার্ড একসাথে একাধিক নাম্বার ধারণ করার ক্ষমতা অর্জন করবে। আপনি যেকোনো সময় সিমের নাম্বার হয়তো পরিবর্তন করতে পারবেন বা সেল অপারেটর পরিবর্তন করতে পারবেন কোন প্রকারের ফিজিক্যাল সিম কার্ড পরিবর্তন না করে। আবার এমনটাও হতে পারে ফোনে আর সিম কার্ডের প্রয়োজনই থাকবে না। হয়তো সেল সিগন্যাল ফোনে এমনিতেই রিসিভ হবে আপনাকে জাস্ট কোন অপারেটর ব্যবহার করবেন সেটা মেন্যু থেকে সিলেক্ট করতে হবে এবং ঐ অপারেটরের ইউজার নেম আর পাসওয়ার্ড প্রবেশ করিয়ে অপারেটর থেকে সকল সুযোগ সুবিধা গুলো ভোগ করতে পারবেন। যখন ইচ্ছা জাস্ট ইউজার নেম পরিবর্তন করুন, অপারেটর এবং সেল নাম্বারও পরিবর্তন হয়ে যাবে।
অবশ্যই ফিউচার সেল নেটওয়ার্কে গিগাবিট ইন্টারনেট দেখতে পাওয়া যাবে। যদিও আজকের লেটেস্ট ৪জি টেকনোলজি কয়েক মেগাবিট পর্যন্ত স্পীড দিতে সক্ষম, কিন্তু সেটা অনেক ব্রডব্যান্ড থেকে অনেক কম স্পীড! অবশ্যই সেল অপারেটর’রা তাদের নেটওয়ার্ক প্রযুক্তিতে অস্বাভাবিক উন্নতি নিয়ে আসবে, হয়তো ৫জি বা ৬জি টেকনোলজি বেড় করার মাধ্যমে গিগাবিট ইন্টারনেট নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। আর কয়েক বছরের মধ্যে ফোনে যে টেরাবাইট স্টোরেজ দেখতে পাওয়া যাবে, সেটা আমি বিনা কল্পনা করেই বলে দিতে পারি।
২০৫০ সালের মধ্যে হ্যাকিং আর ক্র্যাকিং কোন লেভেল অর্জন করবে বুঝতে পাড়ছেন তো? তাহলে চিন্তা করে দেখুন, সিকিউরিটিকে কতোটা এগিয়ে রাখতে হবে। আজকের দিনে আমাদের কাছে লেটেস্ট সিকিউরিটি টেকনোলজি হিসেবে রয়েছে ফেস আইডি, দেখা যাক, এটা ব্যবহার করার পরে সত্যিই কতোটা সিকিউরিটি প্রদান করতে সক্ষম হয়। পাশাপাশি ফিঙ্গার প্রিন্ট বা টাচ আইডি অবশ্যই অনেক ভালো সিকিউরিটি ব্যবস্থা! কিন্তু এর চেয়েও আরো সিকিউর কিছুর কথা কল্পনা করা যাক। চিন্তা করা যাক ব্রেইন প্রিন্ট সিকিউরিটির কথা, যেখানে আপনার শরীরে সিকিউরিটির জন্য হতে পারে কোন চিপ প্ল্যান্ট করতে হতে পারে। চিন্তা করে দেখুন, ব্রেইন প্রিন্ট টেকনোলজির মাধ্যমে জাস্ট ফোন আনলক করার কথা মাথায় এনে আপনি ফোন আনলক করতে পারবেন। আপনাকে কেউ ফোর্স করতে পারবে না, যদি এই সিস্টেম চেক করে আপনার মস্তিষ্কে উত্তেজনা হচ্ছে আপনাকে ভয় দেখানো হচ্ছে, কখনোই আপনার ফোন আনলক হবে না। আর এই রকম সিকিউরিটি বাবস্থা এজন্যই কল্পনা করতে পারছি, কেনোনা এটা বর্তমানে আমাদের মাঝে লাইভ রয়েছে। আপনি আমার ব্রেইন প্রিন্ট আর্টিকেলটি পড়লেই বিস্তারিত জানতে পারবেন।
আবার বায়োমেট্রিক চিপ ইমপ্ল্যান্টের কথা চিন্তা করুন, মনে করুন আপনার শরীরের মধ্যে বা হাতের মধ্যে কোন চিপ ইঞ্জেক্ট করে দেওয়া হলো, যেটা অনেকটা সিকিউরিটি কী’র মতো কাজ করবে। আপনাকে কোন পাসওয়ার্ড প্রবেশ করানোর দরকার পড়বে না, জাস্ট ফোনটি ঐ চিপের নির্দিষ্ট রেঞ্জে আসতেই ফোন আনলক হয়ে যাবে। ফিঙ্গার প্রিন্টকে আপনি পরিবর্তন করতে পারবেন না, কিন্তু ইলেকট্রনিক চিপের নাম্বার সহজেই পরিবর্তন করা সম্ভব।
তো এই ছিল আমার কিছু ক্রেজি কল্পনা যেগুলোর অনুসারে আমার মতে হতে পারে ভবিষ্যৎ স্মার্টফোন গুলো থেকে আমরা এগুলো দেখতে পেতে পারি। মাথার মধ্যে আরো কিছু কল্পনা রয়েছে, কিন্তু সেগুলো বিস্তারিত বর্ণনা করতে গেলে আরো দুই হাজার ওয়ার্ড শেষ হয়ে যাবে। এক আলাদা আর্টিকেলে আরেকদিন সবকিছু পাবলিশ করে দেবো। আমি জানি, এখানে অনেক কিছু শুনতে একদমই পাগলের মতো মনে হবে, কিন্তু আমি একটি লাইনও বিনা যুক্তি বা বিনা সম্ভবনায় লিপিবদ্ধ করিনি, এগুলো শুধু মাত্র আমার কল্পনার উপর নির্ভরশীল নয়, বরং যদি প্রযুক্তিতে সঠিকভাবে উন্নতি আনা সম্ভব হয়, এই আর্টিকেলের প্রত্যেকটি বাক্য সত্য করা সম্ভব হবে।
তো ফিউচার স্মার্টফোন নিয়ে আপনার কি মন্তব্য রয়েছে? দেখিয়ে দিন আপনি কতোটা ক্রেজি চিন্তা ভাবনা করতে পারেন, নিচের টিউমেন্ট সেকশন খোলা রয়েছে! আশা করছি সেখানে আলোচনা করে অনেক মজা পাওয়া যাবে!
আর্টিকেল ক্রেডিটঃ TecHubs
ইমেজ ক্রেডিটঃ Shutterstock.Com
[অনুমতি ছাড়া কপি, পেস্ট, রিমিক্স, এডিট, রি-পাবলিশ, প্রিন্টিং নিষেধ!]
আমি তাহমিদ বোরহান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 10 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 177 টি টিউন ও 680 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 43 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 1 টিউনারকে ফলো করি।
আমি তাহমিদ বোরহান। টেক নিয়ে সারাদিন পড়ে থাকতে ভালোবাসি। টেকটিউন্স সহ নিজের কিছু টেক ব্লগ লিখি। TecHubs ব্লগ এবং TecHubs TV ইউটিউব চ্যানেল হলো আমার প্যাশন, তাই এখানে কিছু অসাধারণ করারই চেষ্টা করি!