এখন আমি সেই অভিনব প্রতারণার কৌশল আপনাদের বলছি । যে অভিনব কায়দার শিকার আমার অফিসের একজন উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ নিজেই । সর্বোপরি আপনারা সবাই জেনে থাকবেন বস এর উপর ও বস আছে । আর হেড অফিস থেকে কেউ যখন সেরকম কোন উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের পরিচয় দেয় তখন তাকে কিছু তথ্য দিতেই হয় । আজ দুপুরের ঘটনা । আমি আর আমার বস মিলে ডিসি অফিসে মিটিংয়ে গিয়েছিলাম । মিটিং এর ঠিক আগ মুহুর্তে একটি ফোন আসলো স্যার এর কাছ থেকে । পরিচয় দিলো হেড অফিসের উর্দ্ধতন কোন কর্মকর্তা । ওনাকে বলা হলো সারা বাংলাদেশের সব অফিসের কর্মকর্তাদের মোবাইল নাম্বার নিয়ে কাজ চলছে । আপনার আর কোন পারসোনাল নাম্বার থাকলে দিন । স্যার দিয়ে দিলেন । তারা আবার বললো আপনি যে সেটটি ব্যবহার করছেন সেখানে নাম্বার দিয়ে একটা কোড ডায়াল করতে । সব অফিসে ফোন দিয়ে একাজটা তারা করছেন পর্যায়ক্রমে । স্যারও বিশ্বাস করে সে কোডটি নাম্বারসহ ডায়াল করলেন । অতপর আমি আর স্যার মিটিংয়ে যাচ্ছিলাম । পথিমধ্যে স্যার এর মোবাইলে আর কোন কল আসছে না । এরমধ্যে চক্রটি শুরু করে দিল তাদের নাটক । সে অফিসের সকল জোনাল অফিস এবং বাসায় ফোন দিয়ে বললো স্যার একসিডেন্ট করেছেন । আমি হাসপাতাল থেকে বলছি । সিরিয়িাস অবস্থা । স্যারকে বাচানো দরকার । অনেক রক্ত লাগবে । সাথে টাকাও লাগবে । স্যারের পরিবারকে ফোন দিয়ে ইমিডিয়েট টাকা দিতে পারবে সেরকম আরেকজনের নাম্বারও নিয়ে নিল তারা । সেসময়ে আমার স্যার মিটিংয়ে বসে গেছে । সকল অফিসে ছড়িয়ে গেছে স্যার একসিডেন্ট করেছে । আর এ কথার সত্যতা জানারও সুযোগ পাচ্ছে না স্যার এর মোবাইল ওই ডায়ালেই ডাইভার্ট হয়ে গেছে প্রতারক চক্রের নাম্বারে । অতপর কিছু ক্ষণ পর অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তাগণ আমাকে ফোন দেয়া শুরু করলেন । জানতে চাইলেন, স্যার এর কি হয়েছ । আমি বললাম স্যারতো আমার সাথে মিটিংংয়ে । মিটিংয়ে থাকায় বেশী কথাও বলা হয়নি । অতপর আমার কাছে বারবার ফোন আসছে এবং এক পর্যা য়ে মিটিংয়েই স্যারকে ফোন দেয়ার জন্য বলা হলো । এ সময়ে সারা অফিসে এবং বিভিন্ন জায়গায় যা রটে গেছে তা জানানো হল । স্যারতো অস্থির হয়ে গেলেন । তাড়াতাড়ি ওই নাম্বারে স্যার ফোন দিলেন । আর নাম্বার বন্ধ পেলেন । তখনই বুঝতে পেলেন সব ভুয়া । আমার নাম্বার থেকে বিভিন্ন জায়গায় ফোন দিলেন । বাসায় ফোন দিয়ে দেখলেন তারা অলরেডী ১০০০০ টাকা বিকাশ করে দিয়েছে । স্যার এর শ্যালক এরমধ্যেই ৫০০০ টাকা বিকাশ করে দিয়েছেন । মাত্র ১ ঘন্টার মধ্যে কত কিছু ঘটে গেল । আমি মিটিংয়ে স্যারকে ফোন ধরিয়ে না দিলে ততক্ষণে ওই নাম্বারে বিকাশ যেতেই থাকতো । আমি পরক্ষণেই স্যার এর মোবাইল নিয়ে সব ডাইভার্ট কেনসেল করে দিলাম । অতপর শত শত ফোন এবার সরাসরি আসা শুরু হলো । আমিও অস্থির শুনতে শুনতে স্যার একসিডেন্ট হয়েছেন । কিন্তু স্যার আমার সাথেই সুস্থ আছেন এবং মিটিংয়ে । প্রতারণার কাছে স্যার হার মানলেন যদিও, এ যাত্রায় এ চক্র সফল । কিন্তু আর কোনভাবে কাউকে যেন এরকম বিসর্জন দিতে না হয় । অফিসে যারা চাকুরী করেন, কিংবা ব্যাবসা বাণিজ্য করেন সবসময় সতর্ক থাকবেন । আপনার কোন বন্ধুর পরিচয়ে তারা বলতে পারে আপনার কোন স্বজন একসিডেন্ট করেছে । হাসপাতালে সিরিয়াস অবস্থা । রক্ত লাগবে এবং টাকা লাগবে, এ নাম্বারে জরুরী বিকাশ করুন । দয়া করে আগে যাচাই করুন । অস্থির না হয়ে যাচাই করুন সে আসলেই আপনার পরিচিত কিনা । আর কোনরকম ভূয়া পরিচয়ে কোনরকম কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে কিনা । সবাই সাবধানে থাকবেন । স্যার ওই নাম্বারগুলো থানায় জমা দিয়েছেন । এ ব্যাপারে থানায় জিডি করা হয়েছে এবং কাস্টমার কেয়ারে অভিযোগ করা হয়েছে ।
মাত্র ৩০-৪৫ মিনিটের মধ্যেই প্রতারক চক্র সফল ।
যে নাম্বার থেকে ফোন দিয়েছিলো।..
০১৭১৭৮৬৫৮৪১
০১৭৫২৩৭৬২৪৩
যে নাম্বারে বিকাশ করতে বলা হয়েছিলো...
০১৯১৮৭৭৮৭২৬
সবাইকে অত্যন্ত সতর্ক থাকার জন্য বিনীত অনুরোধ করছি ।
সবাই ভালো থাকবেন ।
& My Facebook
আমি ওবায়েদ উল্লাহ আইমান। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 12 বছর 5 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 107 টি টিউন ও 350 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 4 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
Computer Science & Engineering www.facebook.com/aimanbd
thanks a lot brother for warning