আলো আমার আলোঃ বাতির ইতিহাস এবং এলইডি বাতি

এটি একটি Sponsored টিউন। এই Sponsored টিউনটির নিবেদন করছে 'Onnorokom Electronics'
Sponsored টিউন by Techtunes tAds | টেকটিউনস এ বিজ্ঞাপন দিতে ক্লিক করুন এখানে

“আলো আমার আলো ওগো, আলোয় ভুবন ভরা...

আলো নয়ন ধোয়া আমার, আলো হৃদয়-হরা...”

না, রবীন্দ্রসংগীত গাইতে আসিনি এখানে, তবে হৃদয়-হরা আলোর ইতিহাসই বয়ান করতে চাই। উজ্জ্বল সূর্যালোকে যখন পৃথিবী হাসে, এলইডি বাতির স্পর্শে তখন হেসে ওঠে গৃহের আঁধার ঘুঁজি। বৈদ্যুতিক বাতির ইতিহাসে এলইডি’র ব্যবহারই সর্বশেষ এবং সর্বাপেক্ষা উন্নত আবিষ্কার।

বৈদ্যুতিক বাতির ইতিহাসটাও আসলে আজ-কালকের নয়, তা প্রায় ১৫০ বছরেরও বেশি সময়ের। হ্যাঁ, ১৫০ বছরেরও বেশি সময় আগে বিজ্ঞানীরা একটা দারুণ আইডিয়া নিয়ে কাজ করা শুরু করলেন, সেটা হল- বৈদ্যুতিক শক্তিকে আলোক শক্তিতে রূপান্তরের আইডিয়া। অন্য অনেক আবিষ্কারের মতো এর কোন একক আবিষ্কারক নেই। বিভিন্ন বিজ্ঞানীর নতুন নতুন গবেষণা, পরীক্ষা ও পরিশ্রমের ফলে এর ক্রমাগত মানোন্নয়ন ঘটেছে।

ইনক্যান্ডেসেন্ট লাইট

প্রথম ইনক্যান্ডেসেন্ট লাইট আবিষ্কার করেন টমাস আলভা এডিসন ১৮৭৯ সালে, যদিও ১৯৩৫ সালে প্রথম স্থির বৈদ্যুতিক বাতি উদ্ভাবিত হয়েছিল। প্রথম দিকের ঐ বাল্বগুলো খুবই অল্প সময় টিকত, উৎপাদনে যেমন প্রচুর খরচ হত, তেমনি বিদ্যুৎও ক্ষয় হত বেশি। এডিসন এবং তার টীম তাই ফিলামেন্টকে উন্নত করার দিকে জোর দিলেন বাল্বের দীর্ঘস্থায়ীত্বের জন্য।

১৮৭৯ সালে এডিসন ১৪ ঘন্টা স্থায়ী হওয়ার মতো একটা বাল্ব আবিষ্কার করলেন, আর তারপর ১২০০ ঘন্টার। ১৮৭৯ সালে টমাস আলভা এডিসনের আবিষ্কৃত এই ইনক্যানডেসেন্ট বাল্ব-এর বাণিজ্যিকীকরণ শুরু হয় ১৮৮০ সালে। পরবর্তী দশ বছর এডিসনের এই বাল্বই স্ট্যান্ডার্ড বাল্ব হয়ে রইল। এডিসন যখন পুরো লাইটিং সিস্টেম নিয়েই কাজ করছিলেন, অন্যান্যরাও ফিলামেন্ট নিয়ে অল্প-স্বল্প কাজ করছিলেন। ইনক্যানডেসেন্ট বাল্বের জগতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এলো ১৯০৪ সালে, ইউরোপিয়ান বিজ্ঞানীদের দিয়ে। তারা আবিষ্কার করলেন টাংস্টেন ফিলামেন্ট বাল্ব। এই বাল্বগুলো আগের কার্বন ফিলামেন্ট বাল্বের চেয়ে অনেক বেশি স্থায়ী হল আর আলোও হল অনেক উজ্জ্বল। এর পরের ৪০ বছর আরও অনেক গবেষণা হল। বিজ্ঞানীরা কম খরচে এবং কম বিদ্যুতে দীর্ঘস্থায়ী বাল্ব তৈরির চেষ্টা করছিলেন, তারই ফলশ্রুতিতে পাওয়া গিয়েছিল ফ্লুরোসেন্ট লাইট।

ফ্লুরোসেন্ট বাল্ব

১৮৯০ সালে এডিসন এবং নিকোলা টেসলা দু’জনেই ফ্লুরোসেন্ট বাল্ব নিয়ে বিস্তর গবেষণা করেন, কিন্তু কোনভাবেই সেগুলোকে বাণিজ্যিক উৎপাদনের আওতায় আনা যায়নি তখন। ১৯২০ সালের শেষের দিকে বা ১৯৩০ সালের শুরুর দিকে ইউরোপিয়ান গবেষকরা ফসফরাসের প্রলেপে নিয়ন টিউব নিয়ে পরীক্ষা করতে শুরু করলেন। এভাবে ফ্লুরোসেন্ট লাইটের গবেষণা আরও ত্বরান্বিত হল। ১৯৩৯ সালে আমেরিকান লাইটিং কোম্পানিগুলো ফ্লুরোসেন্ট বাল্বগুলো New York World’s Fair-এ নিয়ে গেল এবং ১৯৫১ সালে এসে অনেক বেশি পরিমাণে ফ্লুরোসেন্ট লাইটের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হল। কিন্তু বিদ্যুৎ শক্তির সীমাবদ্ধতা রয়েই গেল বলে গবেষকদের আরও ভাবতে হল; যার ফলশ্রুতিতে ১৯৭৬ সালে এলো CFL বা compact fluorescent light। এগুলো আগের বাল্বগুলোর তুলনায় দশ গুণ বেশি স্থায়ী হল। কিন্তু গবেষণা চলতেই থাকলো আরও উন্নত বাল্ব উপহার দেয়ার লক্ষ্যে।

গবেষকরা Light Emitting Diode (LED)

LED’ ব্যবহার করে বৈদ্যুতিক বাতি উৎপাদনের চেষ্টা করলেন। ততোদিনে এই এলইডি টেকনোলজিরও উন্নতি হতে শুরু করেছে। যা হোক, একসময় গবেষকদের পরিশ্রম সার্থক হল। যদিও এলইডি লাইটের সঠিক জন্ম সময় বলা কষ্টকর, তবে বেশিরভাগ পেটেন্টগুলো হয় ২০০০ সালের দিকে, আর উৎপাদন শুরু হয় সম্ভবত ২০০৮ সালের দিকে। তখনকার এলইডি বাল্বগুলো ছিল ২৫-৪০watt পর্যন্ত। ২০০৯ সালে প্রথম ৬০ ওয়াটের এলইডি লাইট বাজারে আনে Philips Lighting North America কোম্পানি। এলইডি বাল্বই বাল্বের জগতে সর্বশ্রেষ্ঠ, কেননা- এরা প্রায় ৮০ ভাগ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী আর আগের বাল্বগুলোর চেয়ে ২৫ গুণ বেশি স্থায়ী, আলোও দারুণ ঝলমলে।

 

২০১২ সাল পর্যন্ত এলইডি বাল্বের ম্যানুফ্যাকচারিং-এ চীনই করেছে একচেটিয়া ব্যবসা, পরবর্তীতে ফিনল্যান্ডসহ অন্যান্য দেশেও শুরু হয়। গবেষণা কিন্তু এখনো থেমে নেই। ধারণা করা হয়, ভবিষ্যতের পৃথিবী হবে এলইডি বাতির পৃথিবী।

এটি একটি Sponsored টিউন। এই Sponsored টিউনটির নিবেদন করছে 'Onnorokom Electronics'
Sponsored টিউন by Techtunes tAds | টেকটিউনস এ বিজ্ঞাপন দিতে ক্লিক করুন এখানে

Level 0

আমি অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 8 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 62 টি টিউন ও 4 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 3 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস