এটি একটি Sponsored টিউন। এই Sponsored টিউনটির নিবেদন করছে 'Onnorokom Electronics'
Sponsored টিউন by Techtunes tAds | টেকটিউনস এ বিজ্ঞাপন দিতে ক্লিক করুন এখানে
এতক্ষণে রোবেকুবের দিকে অরণীর নজর পড়ে। ‘কি ব্যাপার, রোবেকুব? খেলা শেষ?’, অরণী হেসে জিজ্ঞেস করে। রোবেকুব আস্তে আস্তে মাথা নাড়ে। একটু চুপ থেকে তারপর আবার বলে, ‘অরণী, আমরা একটা এসি কিনে ফেললে কেমন হয়?’
এসি? এসি দিয়ে কি করবে তুমি?’, অরণী অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করে। এই যে তুমি ফ্যানের নিচে বসেও এভাবে ঘামছ! কাউকে এভাবে ঘামতে দেখলে কেমন লাগে?, রোবেকুব বলে।
অরণীকে এভাবে গরমে ঘামতে দেখে রোবেকুবের কষ্ট লাগছে- এটা টের পেয়ে অরণী হো হো করে হেসে ফেলে। ‘আরে ধুর! এসি’র দাম জান! এত টাকা পাব কোথায়? আর এইটুকু গরমে আমার সমস্যা হয় না।’, অরণী বলে। ‘না, কষ্ট হয় না!’, রোবেকুব ব্যাঙ্গ করার মত করে বলে। ‘এইজন্যেই তো এভাবে ঘামছো দর দর করে!’
অরণী আর রোবেকুব দু’জনেই এক মুহূর্ত চুপ করে থাকে। তারপর অরণী হঠাৎ করেই জিজ্ঞেস করে, ‘আচ্ছা রোবেকুব, এসি বলতে এয়ার কুলার বোঝাচ্ছ নাকি এয়ার কন্ডিশনার?’
রোবেকুব প্রথমে অরণীর কথাটা একটু বোঝার চেষ্টা করে। তারপর একটু আমতা আমতা করে বলে, ‘দু’টোর মাঝে কোন তফাৎ আছে নাকি?’ ‘উঁহু। দু’টো এক না। এদের মাঝে বিশাল ফারাক আছে।’, অরণী বলে। ‘কী ফারাক?’, রোবেকুব আস্তে আস্তে বলে। ওকে একটু চিন্তিত দেখায়।
‘কী ফারাক, সেটা তুমি খুঁজে বের করবে। এটা তোমার হোম টাস্ক। আপাতত এসো, আমরা একটা এয়ার কুলার বানাবার চেষ্টা করি।’, অরণী বলে। ‘এয়ার কুলার বানাবে! মানে?’, রোবেকুব অরণীর কথা শুনে যেন আকাশ থেকে পড়ে। ‘এসো, চেষ্টা করি। তুমি পারলে একটা বড় প্লাস্টিকের বক্স নিয়ে এসো।’, অরণী বলে। রোবেকুব একটুক্ষণ অরণীর চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে। তারপর ঘর থেকে বের হয়ে প্লাস্টিকের বক্স খুঁজতে চলে যায়।
রোবেকুব একটুক্ষণ পর একটা আইসক্রিমের বক্স হাতে নিয়ে। এসে ও দেখে, কোত্থেকে জানি অরণী একটা ছোট্ট ফ্যান খুঁজে বার করেছে। ‘অরণী, এত ছোট ফ্যান দিয়ে কী হবে?’ ‘এটা আমিই বানিয়েছিলাম। একটা মোটর ছিল আমার কাছে, আমি শুধু এই ৬ ইঞ্চি ডায়ামিটারের এই পাখাটা কিনে লাগিয়ে দিয়েছি। এটা দিয়েই এখন আমরা এয়ার কুলার বানাব। তুমি প্ল্যাস্টিকের বক্স খুঁজে পেয়েছ?‘
‘হ্যাঁ, এনেছি।’, রোবেকুব ওর হাতের আইসক্রিমের বক্সটা দেয়ায়।
‘ধুর বোকা! এত ছোট বক্স দিয়ে হবে না। আরও বড় বক্স লাগবে।’, অরণী মুচকি হেসে বলে।
‘কিন্তু এর চাইতে বড় বক্সতো আর নেই, অরণী।¸ রোবেকুব বলে।
‘উম্ম... আচ্ছা, ঠিক আছে। সমস্যা নেই। তুমি তাহলে ভালো দেখে কয়েকটা পলিথিন নিয়ে এসো। বক্স আমরাই বানিয়ে নেব।’, অরণী বলে।
রোবেকুব এক দৌড়ে পলিথিন আনতে চলে যায়। অরণীর সাথে থেকে থেকে এই পিচ্চি রোবটটার মাথায়ও নতুন সবসময় ‘নতুন কিছু’ করে ফেলার ভূত ঢুকে গেছে। সেই ভূতটা এবার মনে হয় আবার জেগে উঠল।
পলিথিন নিয়ে ঘরে ঢুকতেই রোবেকুব দেখে অরণী ওর খাটের নিচ থেকে কয়েকটা মোটা ককশিট টেনে বের করছে। রোবেকুবকে দেখে অরণী বলে, ‘এই দেখ, কতগুলো ককশিট পেয়ে গেছি। এতেই বক্সের কাজ চালিয়ে নেয়া যাবে।’
‘ককশিট দিয়ে কি করবে তুমি, অরণী?’, রোবেকুব জিজ্ঞেস করে।
‘এগুলো কেটে জোরা দিয়ে বক্স বানাবো। তারপর ভেতরে পলিথিন বিছিয়ে দিয়ে প্লাস্টিকের বক্সের কাজ চালাবো।’, অরণী বলে।
‘বাহ! ভালো বুদ্ধি তো!’, রোবেকুব মাথা নেড়ে বলে।
অরণী মুচকি হেসে মাথা নাড়ে। তারপর বলে, ‘এসো কাজ শুরু করে দিই।’
অরণী ওর টেবিল থেকে একটা এন্টিকাটার আর স্কেল তুলে নেয়। তারপর ককশিটগুলো মাটিতে রেখে স্কেল দিয়ে মেপে সাবধানে ওগুলো কেটে ফেলতে থাকে ও। কাটা শেষ হয়ে গেলে সেগুলো আঠা দিয়ে জুড়ে দিয়ে সুন্দর একটা ঢাকনা ওয়ালা আয়তাকার বক্স বানিয়ে ফেলে ওরা।
বক্স দেখে রোবেকুব খুবই খুশী হয়ে যায়। আনন্দে ও ছোট একটা লাফই দিয়ে ফেলে! ‘আচ্ছা, রোবেকুব। এখন এর ভেতর আমরা পলিথিন লাগিয়ে দেব ভালো করে। তাহলেই এই বক্স দিয়ে আমরা আমাদের এয়ার কুলার বানিয়ে ফেলতে পারব।’
‘শুধু এটা দিয়েই হয়ে যাবে?’, রোবেকুব জিজ্ঞেস করে।
‘না। আরেকটু কাজ বাকী আছে। আমরা এখন এই বাক্সটার ঢাকনায় দু’টো ছিদ্র করব। একটা ছিদ্র করব যাতে এর উপর আমার ছোট ফ্যানটা আস্তে করে বসিয়ে দেয়া যায়। আরেকটা ছিদ্র করব তার চাইতে একটু ছোট।’, অরণী বলে।
‘ছিদ্র করে কী হবে, অরণী?’, রোবেকুব জিজ্ঞেস করে।
‘করলেই দেখবে।’, অরণী বলে। ‘এসো, বসে না থেকে কাজ করি।’
অরণী মাথার ঘাম মুছে আবারও কাজ শুরু করে। ও প্রথমে ককশিটের বক্সের ঢাকনাটা আলাদা করে নেয়। তারপর ছোট ফ্যানটা নিয়ে তার পাখার সাথে মোটামুটি হিসেব করে একটা মাপ নেয়। এরপর এন্টিকাটার দিয়ে খুব সাবধানে সেই মাপমত গোল করে ককশিটটা কেটে ফেলে ও। এরপর এই ছিদ্রটা থেকে একটু দূরে আরেকটা ছোট গর্ত করে ও। তারপর ও আঠা আর সূতা দিয়ে ফ্যানটা ছিদ্রটার ঠিক ওপরে এমনভাবে লাগিয়ে দেয়, যাতে ফ্যানটা ছাড়লে তার বাতাস কেবল ঢাকনার ভেতর দিয়ে বক্সেই ঢোকে। একটা কাগজ রোল করে সেটা একটু বাঁকিয়ে পাশের ছোট ছিদ্রটাতেও লাগিয়ে দেয় ও। এরপর পুরো ঢাকনাটা আরেকবার ভালোভাবে দেখে নিয়ে রোবেকুবের দিকে তাকিয়ে ও একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলে, ‘হয়ে গেছে!’
অরণীর কথা শুনেই রোবেকুব একটা চিৎকার দিয়ে ওঠে, ‘ইয়াহু!’ চিৎকার দিয়েই ও আবার চুপ হয়ে যায়। এক মুহূর্ত চুপ থেকে বলে, ‘কিন্তু অরণী, ঠাণ্ডা তো লাগছে না! এই এয়ার কুলার কি কাজ করছে না?’
‘আরে এয়ার কুলার তো চালুই করি নি! কাজ করবে কেমন করে?’, অরণী হেসে বলে।
‘আহা! তাহলে বসে আছ কেন? এয়ার কুলারটা ছাড়!’, রোবেকুব বলে।
‘একটা জিনিস বাকী রয়ে গেছে।’, অরণী বলে। ‘রোবেকুব, ফ্রিজ থেকে বরফ নিয়ে এসো তো। যতগুলো পার, বরফ আন।’
‘বরফ?’, রোবেকুব ওর চোখের সেন্সর নাচিয়ে জিজ্ঞেস করে।
‘আহা! আনই না!’, অরণী বলে। কথা না বাড়িয়ে রোবেকুব বরফ আনতে চলে যায়।
রোবেকুব ফ্রিজ থেকে মোটামুটি বেশ অনেকগুলো ছোট ছোট বরফের টুকরা নিয়ে আসে। অরণী সেগুলো বাক্সটার মাঝে রেখে দেয়। তারপর ঢাকনাটা সাবধানে বক্সের উপর রেখে দেয় ও। খেয়াল রাখে, যাতে কোন দিক দিয়ে বক্সটার উপরের দিক খালি থেকে না যায়। তারপর ও ফ্যানের টু-পিন প্লাগটা ঘরের সুইচ বোর্ডের সকেটের মাঝে ঢুকিয়ে দেয়। রোবেকুবের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে ও বলে, ‘রোবেকুব, তুমি কি আমাদের এই ঘরে বানানো এয়ার কুলারের কাজ দেখতে চাও?’
‘অবশ্যই! আমি এক্ষুনি দেখতে চাই!’, রোবেকুব প্রায় চেঁচিয়ে বলে ওঠে।
অরণী মুখে এক চিলতে হাসি নিয়ে সকেটের সুইচটা অন করে। সাথে সাথেই ফ্যানটা ঘুরতে শুরু করে। এক মুহূর্ত যেতে না যেতেই দেখা যায়, রোল করা কাগজটার মাঝ দিয়ে ঠাণ্ডা হাওয়া আসছে।
রোবেকুব আর অরণীর একবার চোখাচোখি হয়। ওরা দু’জনেই আবার বাক্সটার ভেতর থেকে আসা ঠাণ্ডা হওয়ার দিকে নজর দেয়।
এভাবে বেশ খানিকটাক্ষণ যাবার পর ওরা দু’জনেই খেয়াল করে, ঘরের ভেতরটা আসলেই বেশ ঠাণ্ডা হয়ে গেছে, আগের মত ভ্যাপসা গরম আর নেই!
‘অরণী, আমরা কি তাহলে সত্যি সত্যি এয়ার কুলার বানিয়ে ফেলেছি?’, রোবেকুবের গলায় একটা অবিশ্বাসের ছায়া।
‘হ্যাঁ, রোবেকুব। আমরা সত্যি সত্যি একটা এয়ার কুলার বানিয়ে ফেলেছি।’, অরণী বলে।
রোবেকুব বেশ খানিকটা সময় চুপ থাকে। তারপর বলে, ‘আচ্ছা অরণী, বরফ শেষ হয়ে গেলেই এই এয়ার কুলার থেমে যাবে?’
‘উম্ম... বরফ শেষ হয়ে গেলেও বেশ খানিকটা সময় এটা ঠান্ডা হাওয়া দেবে। আর তারপর আবার দরকার হলে নতুন করে বরফ দিতে হবে। তবে আমরা ককশিট ব্যবহার করে এটা বানিয়েছি। ককশিট তাপ কুপরিবাহী, তাই বরফ অন্তত প্লাস্টিকের বাক্সের চাইতে বেশী সময় থাকবে এর ভেতর। আর একবার ঘর ঠাণ্ডা হয়ে গেলে, বেশ অনেকটা সময় ঘরের আবহাওয়া ঠাণ্ডা থাকবে।‘
রোবেকুব আবারও বেশ খানিকটা সময় চুপ করে থাকে। ও খুব মনোযোগ দিয়ে রোল করা কাগজটার ভেতর দিয়ে আসা ঠাণ্ডা বাতাসটার দিকে খেয়াল করতে থাকে।
‘রোবেকুব এক কাজ কর, এইভাবে তুমি আরেকটা কুলার বানিয়ে ফেল। তারপর সেটার বিস্তারিত লিখে, ছবি তুলে পাঠিয়ে দাও “অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স” টিমের ঠিকানায় (সামাদ প্লাজা (৩য় তলা) প্লট- ২২, রোড– ১, ব্লক– খ, সেকশন– ৬, মিরপুর– ১২১৬, মিরপুর গোলচত্ত্বর সংলগ্ন)। ওরা হয়ত আরো কিছু ব্যাপারে তোমাকে সাহায্য করতে পারবে। ওদের ঠিকানা তো তোমার কাছে আছেই।’, অরণী বলে।
‘এই এয়ার কুলারের ব্যাপারে ওরা সাহায্য করতে পারবে?’, রোবেকুব জিজ্ঞেস করে।
‘পাঠিয়েই দেখ না! সাহায্য না করতে পারার তো কারণ দেখি না!’, অরণী বলে।
‘আচ্ছা, ঠিক আছে। আমি এটা নিয়ে তাহলে একটু পড়াশোন করি, আরেকটা এয়ার কুলার বানাই। তারপর ওদের লিখে পাঠাবো।’ আর এটা করতে গিয়ে কোন সমস্যায় পরলে ০১৯২৭৪৪৩৮৪১ এই নম্বরে ফোন করে জেনেও নিতে পার!
রোবেকুব এখন আর সবকিছু অরণীকে জিজ্ঞেস করে না, নিজে নিজেই শেখার চেষ্টা করে। কোন কিছু নিজে চেষ্টা করে শেখার চাইতে কার্যকর শিক্ষা আরে নেই। রোবেকুবের এই চেষ্টাটাই অরণীর সবচাইতে ভালো লাগে। অরণী একটু হেসে রোবেকুবে মাথায় আদর করে হালকা চাপর দিয়ে দেয়।
যোগাযোগঃ
এটি একটি Sponsored টিউন। এই Sponsored টিউনটির নিবেদন করছে 'Onnorokom Electronics'
Sponsored টিউন by Techtunes tAds | টেকটিউনস এ বিজ্ঞাপন দিতে ক্লিক করুন এখানে
আমি অন্যরকম বিজ্ঞানবাক্স। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 8 বছর 1 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 62 টি টিউন ও 4 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 3 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 0 টিউনারকে ফলো করি।
এই এয়ার কুলার চালাইলে এ রুমের হিউমিডিটি কি রকম ,কত পারসেন্ট থাকে ?