বর্তমান সময় সূর্যের তাপ যেভাবে বাড়ছে তা ভবিষ্যতে আসতে যাওয়া সূর্যের তাপের কাছে কিছুই নয়। বিজ্ঞানীদের মতে কয়েক মিলিয়ন বছরের সময়ের মধ্যে এলোমেলো স্বর্গীয় ঘটনাগুলী বাস্তব জগতের রুপ নেবে যেমন : কিয়ামত। কারণ কয়েক মিলিয়ন বছরের মধ্যে সূর্য এতটাই বড় হয়ে যাবে যে তা পৃথিবী সহ বাকি সকল গ্রহকে গ্রাস করবে।
বিজ্ঞানীরা গত বুধবার এ পর্যবেক্ষণের সময় প্রথমবারের মতো দেখলেন যে একটি নক্ষত্র একটি গ্রহকে সম্পুর্ণ গ্রাস করে ফেলেছে। আর তারা বলছেন এটাই হচ্ছে পৃথিবীর প্রত্যাশিত ভাগ্যের পূর্বরূপ। এর কারণ পৃথিবী এবং অন্য সকল গ্রহ গুলো সূর্যের মতো একটি বিশাল আকৃতির নক্ষত্রের কাছে বাস করছে। আর সূর্য সময়ের সাথে নিজের আকার প্রসারিত করছে। যার প্রভাব আমরা বর্তমান কালেই উপলব্ধি করছি। এখন আপনাদের মথায় কিছু প্রশ্ন আছে যে -
এর নিদিষ্ট সময় বা দিন কাল বলা সম্ভব নয়। কিন্তু বিজ্ঞানীদের মতে পাঁচ বিলিয়ন বছরের মধ্যে এ ঘটনা বাস্তবে রুপ নেবে। এই সময়কাল হয়তো সূর্যের বয়স উপর অনুমান করে বের করা হয়েছে। সূর্য এর বয়স বলতে নক্ষত্রের (সূর্য) জন্ম থেকে মৃত্যু কালিন সময়কে বুঝানো হয়। প্রকৃতির নিয়ম অনুসারে সকল বস্তুর যেমন শুরু আছে তেমনি এর শেষও আছে। নক্ষত্রের ক্ষেত্রেও এই কথা সত্য। আমাদের মহাবিশ্বেও এমন অনেক মৃত নক্ষত্র আছে।
মৃত নক্ষত্র আবার কি? মৃত নক্ষত্র - " বিজ্ঞানের ভাষায়, সকল নক্ষত্রের একটি কেন্দ্র থাকে যাকে নক্ষত্রের কোরও বলা হয়ে থাকে। এই কেন্দ্র বা কোরের জ্বালানি যখন শেষ হয়ে যায় তখন তল কেন্দ্রের দিকে ধসে পড়ে। এভাবেই নক্ষত্রের মৃত্যু হয়"। সহজ ভাষায় নক্ষত্রের শক্তিক্ষয়ের ফলে এর জ্বালানি যখন শেষ হয়ে যায়, তখন একে মৃত নক্ষত্র বলা।
শক্তিক্ষয়ের ফলে নক্ষত্র রক্তলাল বর্ণ ধারণ করবে এবং গ্রহগুলোকে নিজের মধ্যে গ্রাস করবে। হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণা থেকে প্রকাশিত তথ্য অনুসারে সৌরজগতের বাইরে এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত হাজার হাজার গ্রহের বেশিরভাগই শেষ পর্যন্ত এই পরিণতি হয়।
আনুমানিক ৫ বিলিয়ন বছর এ সূর্য সুপারনোভা বিস্ফোরণের (নক্ষত্রের মৃত্যুর আগে বিশাল বিক্রমে বিস্ফোরণ হয়, এই বিস্ফোরণকে বলা হয় সুপারনোভা) কারণে মৃত নক্ষত্রে পরিণতন হবে। এ সময় সূর্যটি প্রসারিত হতে থাকবে এবং উজ্জ্বলতা প্রায় ১০০ গুন বৃদ্ধি পাবে। সূর্যের রং রক্ত লাল বর্ণের হবে।
আমাদের সৌরজগতের শক্তির প্রধান উৎস সূর্য ও একদিন সেটাও মরে যাবে এবং সেই সাথে সৌরজগতের ইতি ঘটবে। কিন্তু তা প্রত্যক্ষ করার সুযোগ পাবে না মানবজাতি কারণ, তার আগেই পৃথিবীতে প্রাণ বেচে থাকার পরিবেশ শেষ হয়ে যাবে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলেন এই সময় প্লানেটারি নেবুলা বা নীহারিকায় তে পরিণত হবে। সহজ ভাষায় নক্ষত্রের একটি " লাল দানবে" পরিণত হবে।
এই প্রশ্নের উত্তর হয়ত আমাকে আর দেওয়ার প্রয়োজন নেই। আপনারা উপরের কথা গুলো থেকেই হয়ত এই প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছেন। তারপরেও আমি কিছুটা ব্যাখ্যা করে বলছি। একটি বিশেষ বিষয় হচ্ছে সূর্য তার পূর্ণরুপে পা রাখার পূর্বেই পৃথিবী তার প্রাণ হারাবে। এর কারণ সূর্য পূর্ণরুপে যাওয়ার প্রায় কয়েকশো বছর আগেই সূর্যের উজ্জ্বলতা বর্তমান সময় থেকে ১০০ গুণ বৃদ্ধি পাবে। এর পরই সূর্য আমাদের গ্রহ গুলোকে গ্রাস করবে এবং এর পরই সৌরজগতের হতি পর্ব।
এটা নির্দিষ্ট যে ঐ সময় নাগাদ কেউই পৃথিবীতে টিকে থাকতে পারবে না। মানবজাতি যদি অন্য কোথাও তাদের স্থান খূজে না নেয় তাহলে মানবজাতির সমাপ্তি ঘটবে। এটি বলা সহজ কিন্তু করাটা প্রায় অসম্ভব। কারণ এখানে মানবজাতিকে এক দেশ থেকে অন্য দেশে নিয়ে যাওয়ার কথা বলা হচ্ছে না। এখানে এক গ্রহ থেকে অন্য গ্রহে যওয়ার কথা বলা হচ্ছে।
এই মহাবিশ্বে আরো অসংখ্য গ্রহ আছে। কিন্তু এই সব গ্রহ গুলো বাস যোগ্য নয়। অনেক গুলো আবার মৃত গ্রহ। এর থেকেও বড় কথা ঐ গ্রহ গুলো কোন সৌরজগতের নেই।
আমার মতে সব কিছুর যেমন একটি সমাপ্তি আছে ঠিক তেমনি আমাদের এই সুন্দর পৃথিবীর একদিন সমাপ্তি হবে। আর এটা মেনে নেওয়া ছাড়া আমাদের আর কোন উপায় নেই।
আমি মাহিম বিন নূরে এলাহি। প্রথম পর্বের ছাত্র, ইনস্টিটিউট অফ মেরিন টেকনোলজি, সিরাজগঞ্জ। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 1 বছর 6 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 4 টি টিউন ও 7 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 0 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 3 টিউনারকে ফলো করি।