আসসালামুয়ালাইকুম টেকটিউনসবাসী। আশাকরি সকলে ভালো আছেন। আপনারা কি জানেন, মহাকাশ আর মহাবিশ্ব আসলে দুইটা ভিন্ন বিষয়? মহাকাশ আর মহাবিশ্বকে অনেকেই এক বিষয় মনে করেন। অনেকেই বলেন, পৃথিবীসহ এই মহাজগতের সবকিছুই হলো মহাবিশ্ব। আবার অনেকেই বলেন, মহাজগতের সবকিছুই হলো মহাকাশ। কেউ আবার এটা মনে করেন যে, পৃথিবীর বাইরের সবকিছু হলো মহাকাশ, আর পৃথিবীসহ এই মহাজগৎ হলো মহাবিশ্ব। আসলে কোনটা সঠিক? চাঁদ কি মহাকাশের অন্তর্ভুক্ত, নাকি মহাবিশ্বের অন্তর্ভুক্ত?
আজকে আমি আপনাদের সামনে মহাবিশ্ব আর মহাকাশের বিষয়টা তুলে ধরব। সম্পূর্ণ টিউনটা পড়লে আপনারা নিজেরাই বুঝতে পারবেন যে, মহাবিশ্ব আর মহাকাশ কি এক নাকি ভিন্ন?
প্রথমে আসি মহাবিশ্ব কী জিনিস, তা নিয়ে। এই মহাজগতে যা কিছু আছে তার সবটুকুই নিয়ে মহাবিশ্ব গঠিত। তো কী কী আছে এই মহাবিশ্বে? গ্রহ, উপগ্রহ, নক্ষত্র, উল্কাপিণ্ড, গ্রহাণু, সৌরজগত, গ্যালাক্সি ইত্যাদি হলো পদার্থ। এগুলো থাকলেই আমরা সহজে তাকে মহাবিশ্ব বলতে পারি। আবার যদি বলা হয়, আমরা যেগুলো দেখতে পাচ্ছি না, সেগুলোও কি মহাবিশ্বের অন্তর্ভুক্ত? এক্ষেত্রে উত্তর হ্যাঁ হবে। কেননা, আমরা এই মহাবিশ্ব সম্পর্কে যা জানি, তা খুব সামান্য। এই মহাবিশ্ব আসলে অনেক বড়। তার ক্ষুদ্র একটা জ্ঞান আমরা কেবল জানতে পেরেছি।
তো এই যে মহাবিশ্ব, এটি কি ওইসব পদার্থ দিয়েই গঠিত? না। এই মহাবিশ্বের মধ্যে যে শক্তি বিদ্যমান রয়েছে, তাও কিন্তু মহাবিশ্বের অন্তর্ভুক্ত। আপনারা এটা জেনে অনেকেই অবাক হবেন যে, মহাবিশ্ব শুরুর সৃষ্টিলগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত শক্তির পরিমাণ বৃদ্ধি বা হ্রাস কোনোটাই পায় নি। মহাবিশ্ব সৃষ্টির শুরুতে যত শক্তি ছিল, এখনো ততটুকুই আছে, আর ভবিষ্যতেও ততটুকুই থাকবে। এই শক্তির ব্যাপার নিয়ে আমি পরের কোনো টিউনে আলোচনা করব ইনশাল্লাহ। এছাড়া তমোশক্তি নামে একপ্রকার অন্ধকার শক্তি বা গুপ্ত শক্তি বিদ্যমান রয়েছে, যা মহাবিশ্বের প্রসারণে বা বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে বলে অনুমান করা হয়। এটিও মহাবিশ্বের অন্তর্ভুক্ত।
তো পদার্থ আর শক্তি নিয়েই মহাবিশ্ব গঠিত। এটা আমরা জানতে পারলাম।
এবার আসি মহাকাশ সম্পর্কে। মহাকাশ হলো ফাঁকা স্থান। কিন্তু কোথাকার ফাঁকা স্থান? এই পৃথিবীর ফাঁকা স্থান, নাকি এই মহাজগতের ফাঁকা স্থান? আসলে এই মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তু যে স্থানে বিরাজ করছে, তা হলো শূন্যস্থান বা মহাশূন্য। যাকে মহাকাশ বলা হয়। তো এই মহাকাশ পৃথিবীর কত উচ্চতা থেকে শুরু, তা বলা মুশকিল। তবে প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী সমুদ্র সমতল থেকে ১০০ কিমি বা ৬২ মাইল উচ্চতা থেকে মহাকাশের শুরু। তবে এটা পরিপূর্ণভাবে সত্য নয়। এ সম্পর্কে উইকিপিডিয়াতে সার্চ দিলে আপনারা বিস্তারিত জানতে পারবেন।
অনেকেই এখন মনে করবেন যে মহাকাশ মানে শুধু ফাঁকা স্থানকেই বুঝানো হচ্ছে। আসলে এই মহাকাশে স্বল্প ঘনত্বের অনেক পদার্থই রয়েছে। এদের মধ্যে বেশিরভাগই হচ্ছে হাইড্রোজেন ও হিলিয়ামের প্লাজমা। এছাড়া তড়িৎ চুম্বকীয় বিকিরণ, মহাজাগতিক ধূলিকণা, কিংবা নিউট্রিনো নামক কণার সমন্বয়েও এই মহাকাশ গঠিত।
আমরা উপরের আলোচনা থেকে মহাকাশ আর মহাবিশ্ব সম্পর্কে জানতে পেরেছি। আমরা নিশ্চিতভাবে তাই এটা বলতে পারতেছি যে, বিশ্বব্রহ্মাণ্ড শুরুর লগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত যতসব সৃষ্টি হয়েছে, তার সবটুকু মিলে মহাবিশ্ব গঠিত। অর্থাৎ, এই যে মহাকাশ রয়েছে, তাও কিন্তু এই মহাবিশ্বের অন্তর্ভুক্ত।
আসলে এই মহাবিশ্ব অনেক বড়। এই মহাবিশ্বের বেশিরভাগ জায়গায়ই ফাঁকা, যাকে মহাকাশ বলা হচ্ছে। আর এই মহাকাশের মধ্যে যেখানে পদার্থসমূহ অনেক ঘনীভূত অবস্থায় থাকে, সেখানেই গঠিত হয় গ্যালাক্সি, সৌরজগৎ ইত্যাদি।
সুতরাং, আমরা বুঝতে পারলাম যে, এই মহাকাশ আর মহাবিশ্ব এক নয়, ভিন্ন। মহাকাশ আসলে মহাবিশ্বের একটি অংশ মাত্র।
তো আপনাদের আজকের টিউনটি কেমন লাগলো তা টিউমেন্ট করে জানিয়ে দিন। আর এরকম নিত্য নতুন টিউন পেতে আমাকে ফলো করুন।
ধন্যবাদ সকলকে।
আমি মো মিরাজ ইসলাম। ১ম বর্ষ, ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজ, ঠাকুরগাঁও। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 2 বছর 3 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 26 টি টিউন ও 25 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 5 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 7 টিউনারকে ফলো করি।
আমি মোঃ মিরাজ ইসলাম। আমি আর্টিকেল লিখতে ও পড়তে ভালোবাসি। এছাড়া ইউটিউবে ভিডিও কন্টেন্ট তৈরিও করি। আমি টেকটিউনসে টিউন লিখে আয় করার জন্য একাউন্ট ক্রিয়েট করেছি। ধন্যবাদ।