এসইও কি?
SEO মানে Search Engine Optimization। বর্তমান বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষ তার প্রয়োজনীয় তথ্য খুঁজে পেতে গুগলে সার্চ করে। গুগল তখন তার সার্চ রেজাল্ট পেজে অনেকগুলো সাইটের ফলাফল প্রদর্শন করে। কোনটি প্রথমে কোন ওয়েবসাইটের নাম হয়ত প্রদর্শন করে ২নং পেজে। যেটি প্রথমে দেখা যাচ্ছে সেটি প্রথমে দেখাচ্ছে কারন সেটিকে এসইও করা হয়েছে। কোন ওয়েবসাইটকে সার্চের প্রথমে প্রদর্শন করার জন্য যে প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হয়, সেটিকে এসইও বলে। যখন আপনার ওয়েবসাইট সার্চের প্রথমে থাকবে তখন ওয়েবসাইটের ভিজিটর বৃদ্ধি পায়। আর ভিজিটর বৃদ্ধি হলে ইনকামও বৃদ্ধি পায়। ধরুন, আপনি এসইও শিখবেন, সেজন্য ভালো ব্লগ খুজছেন। তাহলে হয়ত আপনি গুগলে লিখবেন এস ই ও বাংলা টিউটোরিয়াল। তখন সার্চের প্রথমে দেখবেন আমাদের ক্যারিয়ার সোর্স ব্লগ সাইটের নাম। আর এটি দেখে হয়ত আমাদের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে কেউ প্রবেশ করল, এরপর এখান থেকে তথ্য পেয়ে পছন্দ হলে এখানে থেকে শেখা শুরু করে দিলো। এটি হল এসইওর ফযিলত।
এই সব সাইটে আপনি একটি শব্দ সার্চ বক্সে লিখে সার্চ বাটনে ক্লিক করলে, কয়েক সেকেন্ড এর মধ্য অনেক ওয়েবসাইটের লিংক চলে আসে, যেসব লিংকে গেলে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল পাওয়া যায়।
সার্চ ইঞ্জিন কিভাবে কাজ করে :সার্চ ইঞ্জিনগুলো তৈরি হয়েছে, মানুষের তথ্য থুজে পাওয়ার জন্য। সেজন্য কোন কিছু সার্চ দিলে যাতে সবচাইতে সেরা তথ্য খুঁজে পাওয়া যায় সেজন্য সার্চইঞ্জিন সাইটগুলো কিছু পোগ্রাম তৈরি করে রাখে। যেটি সকল সাইটগুলোর মধ্যে কিছু বিষয় তুলনা করে সেরা সাইটগুলোকে সার্চের সামনে নিয়ে আসে। সেরা সাইট নির্বাচন করার জন্য তারা দেখে ওয়েবসাইটটির মানসম্মত কিনা, ওয়েবসাইটের তথ্য সকলের জন্য প্রয়োজনীয় কিনা, ওয়েভসাইটটি কেমন জনপ্রিয়। এগুলোসহ আরও কিছু বিষয় নিয়ে ফলাফল প্রদর্শন করে।
সার্চ ইঞ্জিন মার্কেটিং ক্ষেত্রে কেন এত গুরুত্বপূর্ণ :
ওয়েবসাইট তৈরি হয় কোম্পানীর পণ্যের প্রসারের জন্য। যতবেশি মানুষ আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিট করবে, ততমানুষ আপনার পণ্য সম্পর্কে কিংবা সার্ভিস সম্পর্কে ধারণা পাবে। সার্চ ইঞ্জিন কোন একটি ওয়েভ সাইটে ভিজিটরের প্রধান উৎস। শতকরা ৮০% ভিজিটর সার্চ ইঞ্জিন মাধ্যমে কোন ওয়েব সাইটে আসে। ভবিষ্যতে এটি আরও বাড়বে। বিভিন্ন কারণে সার্চ ইঞ্জিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ক) যেকোন ওয়েবসাইটের বেশীর ভাগ ভিজিটর সার্চ ইঞ্জিনে থেকে আসে। প্রতি মাসে প্রায় বিলিয়ন বিলিয়ন সার্চ হয়। United States এ এক জরিপে দেখা গেছে প্রতি মাসে কমপক্ষে ১০ বিলিয়ন সার্চ হয়। (সূএ : com score.2008)
গ) অনেকে জানেনা তাদের প্রয়োজনীয় কোন তথ্য কোথায় পাওয়া যাবে। সে জন্য তারা সার্চ ইঞ্জিনগুলোতে সে বিষয় লিখে সার্চ করে। তখন প্রয়োজনীয় সাইটের লিস্ট তাদের কাছে চলে আসে।
ঘ) বিনামুল্যে যেকোন তথ্য খুঁজে পাওয়া যায়, সেজন্য সবাই এটি ব্যবহার করে।
ঙ) সকল তথ্যে বিশাল ভান্ডার হচ্ছে সার্চ ইঞ্জিন। সেজন্য দিনে দিনে এটির উপর সবার নির্ভরশীলতা দিনে দিনে বাড়ছে।
চ) যেহেতু তথ্য খুঁজে পেতে সবাই সার্চইঞ্জিনের সাহায্য নিয়ে থাকে, সেজন্য সকল কোম্পানী তাদের পণ্যের প্রচারের জন্য সনাতনী পদ্ধতি ছেড়ে দিয়ে সার্চ ইঞ্জিনের সার্চের প্রথমে তাদের কোম্পানীর ওয়েবসাইটকে রাখতে চায়।
জ) মার্কেটিংয়ের সনাতনী সকল পদ্ধতিগুলো ব্যয়বহুল এবং বর্তমানযুগে কম কাযকরী। অন্যদিকে SEO তে খরচ কম কিন্তু আগের পদ্ধতির চাইতে কমপক্ষে ৬০ভাগ বেশি কাযকরী।
ক্যারিয়ার হিসাবে SEO :
বাংলাদেশে যারা আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ইনকাম করে তাদের বেশিরভাগ এসইও এর মাধ্যমে আয় করে। কারন বাংলাদেশে দক্ষ জনশক্তি কম। সাধারণত যাদের কম্পিউটার সম্পর্কে সাধারন ধারনা আছে, ইংরেজীতে মোটামুটি পারদর্শী, ওয়েবসাইট ভিজিট করতে স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন তারা অতি সহজে এসইও এর কাজে পারদর্শী হতে পারেন। কোন প্রোগ্রামিং ভাষা জানার তেমন দরকার নাই বিধায় এই কাজ অতি সহজে রপ্ত করে দ্রুত কাজ শুরু করা যায় বলে বিশ্বব্যাপী এই কাজে নিয়োজিত আছেন লক্ষ লক্ষ মানুষ।
১)বিভিন্ন মার্কেটপ্লেসগুলোতে (odesk.com, freelancer.com ইত্যাদি)ভিজিট করলে দেখা যায়, এসইওর কাজ সবচাইতে বেশি।
২) নিজের একটি ব্লগ সাইটখুলে সেটিকে এসইও করে গুগলের প্রথমদিকে আনতে পারলে যদি ভিজিটর বৃদ্ধি পায় তাহলে অ্যাডসেন্স কিংবা এ ধরনের আরও অনেক বিজ্ঞাপণী সার্ভিসের মাধ্যমে ভাল আয় করা যায়। এপদ্ধতিতে সাধারণত মাসে ১০০ ডলার থেকে ১০০০ডলারের মত আয় করা যায়।
৩) অ্যাফিলিয়েশন্সের আয়ের জন্য প্রধান শর্ত হচ্ছে আপনার ওয়েবসাইটের প্রচুর পরিমানে টার্গেটেড ভিজিটর। আর ভিজিটর আনতে হলে এসইও করতেই হবে। আউটসোর্সিংয়ের এ কাজের মাধ্যমে মাসে আয় করা যায় সাধারণত ৩০০ -২০০০ ডলার।
৪) এসইওর মাধ্যমে আপনার ওয়েবসাইট গুগলের প্রথমে আনতে পারলে এবং ভিজিটর প্রচুর পরিমানে ওয়েবসাইটে আসলে বিভিন্ন লোকাল কোম্পানীর বিজ্ঞাপণ আপনার ওয়েভসাইটে ব্যবহার করে মাসে ৩০০০০ টাকা থেকে ৫লাখ টাকাও আয় করতে পারবেন। যেমন টেকটিউনসে কোন প্রকার অ্যাডসেন্স ব্যবহার করা হয়না। এখানের আয় সম্পূর্ণ লোকাল বিজ্ঞাপণ।
৫) এসইও শিখার আরও গুরুত্বপূর্ণ দিক হচ্ছে, এসইও কোর্স একটি কিন্তু আয় করা সেক্টর অনেকগুলো। যেমনঃ ফোরাম টিউনিং কিংবা ব্লগ টিউমেন্টিং কিংবা কিংবা সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং কেংবা পুরো এসইও করে আয় করা যায়।
৬) প্রতিদিন মাত্র ২-৩ ঘন্টা সময় দিয়ে এসইও করা যায়। সেজন্য অন্য চাকুরী পাশাপাশি এটি শিখে আয় করা সম্ভব।
কিভাবে শিখবেন এসইও?
আপনার ইংরেজি পড়া এবং বুঝার স্কিল যদি মোটামুটি লেবেলের ভালো হয় তবে আপনি গুগলকে ইউজ করে ভালো মানের কিছু ব্লগ থেকে এসইও’র অনেক অনেক কিছু শিখতে পারেন। আর নেট স্পিড ভালো হলে ইউটিউব থেকে বিভিন্ন ভিডিও সার্চ করে দেখতে পারেন। বাংলাতেও প্রচুর এসইও গাইডলাইন আছে।
অনেকে অনলাইন থেকে শিখতে গিয়ে ধৈয্য হারিয়ে ফেলেন। যারা এভাবে শিখতে অভ্যস্ত না তারা ট্রেনিং সেন্টারগুলোতে ভর্তি হয়ে ৮০০০ টাকা থেকে ১৫০০০ টাকা খরচ করে পুরো ব্যাপারটি অভিজ্ঞ কারও কাছ থেকে শিখে নিতে পারেন। আমাদের দেশে ইতিমধ্যে এ সম্পর্কিত অনেকগুলো ভালমানের ট্রেনিং সেন্টার গড়ে উঠেছে।
কি কি শিখতে হবে?
এসইও দুইপ্রকার। অনপেজ এসইও এবং অফপেজ এসইও। এ দুটির সকল বিষয় আপনাকে খুব ভালভাবে জানা থাকতে হবে। এসইওর কাজ শুরুর আগে যা যা শিখতে হবে, সেগুলো হলো: কিওয়ার্ড রিসার্চ, বিভিন্ন এইচটিএমএল ট্যাগের ব্যবহার, কনটেন্ট অপটিমাইজেশন, ফোরাম টিউনিং, ব্লগ টিউমেন্টিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, ডাইরেক্টরী সাবমিশন, গেস্ট ব্লগিং, প্রেসরিলিজ সহ আরও অনেক কিছু।
আমি ইমরান হোসেন। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 6 বছর 8 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 12 টি টিউন ও 6 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 2 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 8 টিউনারকে ফলো করি।