বোকা যন্ত্রকে বুদ্ধিমান বানানোর কৌশল – Artificial Intelligence

Level 3
১ম বর্ষ, ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজ, ঠাকুরগাঁও

আসসালামুয়ালাইকুম টেকটিউনবাসী। আশাকরি সকলে ভালো আছেন। আজকে আপনাদের সামনে আমি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে হাজির হয়েছি। এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা শব্দটির সাথে অনেকেই পরিচিত আছেন। আবার অনেকেই আছেন, যাদের কাছে এই শব্দটি একেবারই নতুন। আপনারা এ বিষয়ে জানেন কি না, তা আমার প্রশ্ন নয়। আমি সকলের জন্যই আজকের এই বিষয়টি খোলাসা করার চেষ্টা করবো। তো চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক।

১. বুদ্ধি জিনিসটা আসলে কী?

বুদ্ধি জিনিসটা আসলে কী

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে জানার আগে আমাদের জানতে হবে বুদ্ধি কী জিনিস! অনেকেই বলবেন বুদ্ধি সম্পর্কে তো সকলেই জানি। হ্যাঁ, মানলাম সকলেই জানি। তবে এর সংজ্ঞাটা হয়তো অনেকেই জানি না। তাই সকলের জানার জন্য বুদ্ধি নিয়ে প্রথমে আলোচনা করতে ববে। কোনো কিছুর জ্ঞান আরোহণ করে তা বাহ্যিকভাবে প্রয়োগ করার ক্ষমতাকে বুদ্ধি বলে। মানুষের বুদ্ধি আছে। কারণ মানুষ প্রকৃতি থেকে জ্ঞান আরোহণ করে তা বাহ্যিকভাবে প্রয়োগ করতে পারে। কোনো সমস্যা উদ্ভুত হলে মানুষ তার বুদ্ধি দিয়ে সেই সমস্যার আলোকে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। প্রয়োজনে তা সমাধানও করতে পারে। সাধারণ প্রোগ্রামগুলোর কোনো বুদ্ধি নেই। কারণ, এগুলো কোনো জ্ঞান আহরণ করতে পারে না।

২. কম্পিউটারের কি নিজস্ব বুদ্ধি আছে?

কম্পিউটারের কি নিজস্ব বুদ্ধি আছে

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কে জানার আগে আমাদেরকে আগে জানতে হবে কম্পিউটারের নিজস্ব বুদ্ধি আছে কি না, তা সম্পর্কে। আসলে আপনারা প্রায় সকলেই কমবেশি জানেন যে, কম্পিউটারের নিজস্ব বুদ্ধি বলে কিছুই নেই। যারা জানেন না, তারা এখন বলবেন, তাহলে কম্পিউটার এত বড় বড় কাজ কী করে মুহূর্তের মধ্যেই করে ফেলছে? উত্তরটা খুবই সহজ। যারা কম্পিউটার তৈরি করে, তারা এই কম্পিউটারের মধ্যে কাজ করার প্রোগ্রাম সেট করে দেয়। এটা জেনে রাখা ভালো যে, সেট করা উক্ত প্রোগ্রামগুলোর বাইরে কম্পিউটার একটা কাজও করতে পারে না। এটি তার মধ্যে থাকা সংরক্ষিত তথ্যই ব্যবহারকারীকে আউটপুট হিসেবে দিতে পারে। কোনো সমস্যার আলোকে নিজ থেকে সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজ করতে পারে না। ফলে কম্পিউটারে কোনো সমস্যা দেখা দিলে ব্যবহারকারী কিংবা প্রোগ্রামারকেই উক্ত সমস্যার সমাধান করতে হয়। তাহলে বুঝে নিন, কম্পিউটার কত বড় বোকা!

৩. কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কী?

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কী

আমরা একটু আগেই জানলাম যে, কম্পিউটার নিজে থেকে কোনো সমস্যার সমাধান দিতে পারে না বা সেই সমস্যার আলোকে সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। বর্তমানে এই বোকা কম্পিউটারকে চালাক বানানোর কাজ চলতেছে। অর্থাৎ, কম্পিউটারও যাতে কোনো সমস্যা দেখা দিলে নিজ থেকে সে সমস্যার আলোকে সিদ্ধান্ত দিতে পারে, তার জন্য এই বোকা কম্পিউটারের মধ্যে অনেক সমস্যার সমাধান ঢুকিয়ে দেওয়ার কাজ করা হচ্ছে। আর এই ব্যবস্থাকেই বলা হচ্ছে Artificial Intelligence বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। একে আরেকভাবে সংজ্ঞায়িত করা যায়। মানুষের চিন্তা ভাবনাগুলোকে কৃত্রিম উপায়ে কম্পিউটারের মধ্যে রূপ দেওয়ার যে ব্যবস্থা রয়েছে তাকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বলে।

৪. কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জনক কে?

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জনক কে

এই যুগান্তকারী ব্যবস্থার জনক হলেন প্রতিভাবান কম্পিউটার বিজ্ঞানী অ্যালান মেথিসন টুরিং। তাঁর জন্ম ১৯১২ সালের ২৩শে জুন। লন্ডন শহরে তাঁর জন্ম। তিনি তাঁর করা টুরিং টেস্টের জন্য ইতিহাসে এখনো স্মরণীয় হয়ে আছেন। ১৯৫০ সালে তিনি এই টুরিং টেস্ট নামক যুগান্তকারী পরীক্ষাটি প্রকাশ করেন। এই টুরিং টেস্ট হলো এমন এক ধরনের পরীক্ষা, যার মাধ্যমে কোনো যন্ত্রের চিন্তা করার ক্ষমতা আছে কি-না তা জানা যায়। তাঁর এই টুরিং টেস্ট পরীক্ষার মাধ্যমে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার দুয়ার খুলে গেছে। তবে দুঃখের বিষয় এই যে, ধারণা করা হয় ১৯৫৪ সালে ৮ই জুন তিনি আত্মহত্যা করে মারা যান।

টুরিং এই বিষয়ের জনক হলেও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স শব্দটি সর্বপ্রথম ব্যবহার করেন যুক্তরাষ্ট্রের এমআইটি এর John McCarthy। ১৯৫৬ সালে তিনি এই শব্দটি সর্বপ্রথম উল্লেখ করেন।

৫. কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উদাহরণ কোনগুলো?

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উদাহরণ কোনগুলো

এটা আসলে আপনারা সকলেই কমবেশি জানেন। গুগলের সার্চ নামক প্রোগ্রামটা, মানে গুগল সার্চ ইঞ্জিনটা একটা বুদ্ধিমান প্রোগ্রাম। কেননা, আপনারা কিছু সার্চ দিলে এটি সহজেই তা বের করে দিতে পারে। এক্ষেত্রে প্রোগ্রামটি আপনাদের আগের সার্চ হিস্টোরি, বয়স কিংবা লোকেশনের তথ্য আহরণ করে তা বাহ্যিকভাবে তথা আউটপুট দিতে সক্ষম। অর্থাৎ, তথ্য আহরণ করে তা প্রয়োগ করার ক্ষমতা আছে এই প্রোগ্রামটির। তাই এটি একটি বুদ্ধিমান প্রোগ্রাম।

আপনাদের জানামতে আর কোন কোন প্রোগ্রাম বুদ্ধিমান?
আপনাদের জানামতে এমন কোনো কি ডিভাইস আছে, যা বুদ্ধিমান?
টিউমেন্ট করে জানিয়ে দিন।

টিউনটি কেমন লাগলো, তা টিউমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না যেন। ভালো লাগলে জোস দিন। আর এরকম নিত্য নতুন টিউন পেতে উপরের টিউনার প্রোফাইলটি ফলো করে টেকটিউনসের সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ সকলকে।

Level 3

আমি মো মিরাজ ইসলাম। ১ম বর্ষ, ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজ, ঠাকুরগাঁও। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 2 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 26 টি টিউন ও 25 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 5 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 7 টিউনারকে ফলো করি।

আমি মোঃ মিরাজ ইসলাম। আমি আর্টিকেল লিখতে ও পড়তে ভালোবাসি। এছাড়া ইউটিউবে ভিডিও কন্টেন্ট তৈরিও করি। আমি টেকটিউনসে টিউন লিখে আয় করার জন্য একাউন্ট ক্রিয়েট করেছি। ধন্যবাদ।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস