ধরেন আপনার সামনে কেউ পানিতে ডুবে গেছে। আপনার প্রথম কাজ কী হবে? নিশ্চয়ই তাকে উদ্ধার করে ডাঙ্গায় নিয়ে আসা। তো আপনি তাকে পানি থেকে তুলে ডাঙ্গায় নিয়ে আসলেন। কিন্তু দেখলেন তার শ্বাসপ্রশ্বাস চলছে না। আপনি কি তাকে মৃত বলে হাল ছেড়ে দিবেন? না, এটা করা ঠিক হবে না। তার শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, সে শ্বাস নিতে পারছে না। তাই যে করেই হোক তার শ্বাস প্রথমে ফেরত আনতে হবে। এর জন্য আপনার করণীয় কি?
আজকে তাই আমি শ্বাসপ্রশ্বাস বন্ধ হয়ে গেলে আমাদের কী করণীয়, তা নিয়ে আলোচনা করতে চলে এসেছি। তো চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক।
শ্বাসক্রিয়া বিভিন্নভাবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। যেমনঃ অক্সিজেনের অভাব হলে আমরা শ্বাস নিতে পারি না। ফলে আমাদের শ্বাসক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। বিষাক্ত কোনো কিছু শরীরে প্রবেশ করলেও আমরা বিষক্রিয়ার ফলে শ্বাস নিতে পারি না। আবার অনেক সময় এমন আকস্মিক ঘটনা ঘটে, যার কারণে, শ্বাসক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। যেমনঃ বৈদ্যুতিক শক লাগা, পানিতে ডোবা ইত্যাদি। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে ঘাড়ে বা মাথায় ইনজুরির ফলেও শ্বাসক্রিয়া বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
তো এই শ্বাসক্রিয়া বন্ধ হয়ে গেলেই মনে করি লোকটি মনে হয় মরে গেছে। এটা মনে করা ঠিক না। হতে পারে তার শ্বাসক্রিয়া বন্ধ হয়ে গেছে। আমাদের সাহায্য আবার সেই শ্বাসক্রিয়া চালু করতে পারে। কিন্তু, কী করে? চলুন জেনে আসি।
প্রথমে আপনাকে দেখতে হবে রোগীর সাথে কেউ আছে কিনা। কেউ থাকলে দ্রুত তাকে ডাক্তার বা অ্যাম্বুলেন্স ডাকার অনুরোধ করতে হবে। সে যতক্ষণে ডাক্তার বা অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে না আসছে, ততক্ষন কি আপনি চুপ করে বসে থাকবেন? না, আপনাকে রোগীর শ্বাস ফেরানোর প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে হবে।
এর জন্য প্রথমেই আপনাকে রোগীর জিহ্বা সামনের দিকে টানতে হবে। অনেকেই বলতে পারেন, এটা আবার কেন করব? কারণ, অনেক সময় রোগীর মুখে, তালুতে বা গলায় কিছু আটকে থাকে, যার কারণে রোগী শ্বাস নিতে পারে না। অনেক সময় মিউকাসও আটকে থাকতে পারে। তাই জিহ্বা টেনে দেখতে হবে এসব কিছু আটকে আছে কি না? যদি আটকে থাকে, তবে রোগীকে আস্তে উপুড় করে আঙ্গুল দিয়ে তা বের করতে হবে।
এটা করেই কি আপনার দায়িত্ব শেষ? না, আরও কিছু দায়িত্ব আছে। আপনি রোগীকে শক্ত কিছুর উপর শুইয়ে দিবেন। যেমন ধরেন খাট, টেবিল ইত্যাদি। হাতের নাগালের মধ্যে এসব কিছু না থাকলে, মাটিতেই শুইয়ে দিবেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে, রোগীর নাক যেন সোজা আকাশের দিকে থাকে।
এবার আপনাকে রোগীর মুখ যতখানি খোলা যায়, ততখানি খুলতে হবে। কিন্তু কেন? কারণ, মুখ হা করা থাকলে শ্বাসনালিতে সহজেই বাতাস ঢুকে শ্বাসক্রিয়া চালু হয়ে যেতে পারে।
ধরুন, এতেও কাজ হলো না। আপনি কি হাল ছেড়ে দিবেন? না, আপনাকে হাল ছাড়লে চলবে না। আপনাকে এবার মুখে মুখ লাগিয়ে শ্বাসক্রিয়া চালু করাতে হবে। কিন্তু, এটা করবেন কি করে? আসুন, জেনে নিই।
এই কাজটি শুরু করার আগে একটা গভীর শ্বাস নিবেন। তারপর যা করতে হবে, তার মধ্যে ২টা ভিন্নতা রয়েছে। একটা শিশুদের ক্ষেত্রে, আরেকটা বয়স্কদের ক্ষেত্রে।
এসবকিছু করার সময় যদি রোগীর হৃৎস্পন্দন থেমে যায়, তবে আপনি কী করবেন?
এটাও ২ভাবে করতে হবে।
এই কাজগুলো করার সময় অবশ্যই ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। একবার মুখে মুখ লাগিয়ে শ্বাস দেওয়ার পরপরই আবার ৫বার বুকে মালিশ করতে হবে।
যদি এতে রোগীর শ্বাসক্রিয়া চালু হয়ে যায়, বা বুক উঠানামা করা শুরু করে, তবে আপনি আপনার কাজ থামিয়ে দিবেন।
আর যদি শ্বাসক্রিয়া চালু না হয়, তবে যতক্ষণ না ডাক্তার বা অ্যাম্বুলেন্স আসছে। ততক্ষণ আপনি আপনার কাজ চালিয়ে যেতে থাকবেন।
আশাকরি, সকলে বিষয়টা ভালো করে বুঝতে পেরেছেন।
ধন্যবাদ সকলকে।
আমি মো মিরাজ ইসলাম। ১ম বর্ষ, ঠাকুরগাঁও সরকারি কলেজ, ঠাকুরগাঁও। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 2 বছর 2 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 26 টি টিউন ও 25 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 5 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 7 টিউনারকে ফলো করি।
আমি মোঃ মিরাজ ইসলাম। আমি আর্টিকেল লিখতে ও পড়তে ভালোবাসি। এছাড়া ইউটিউবে ভিডিও কন্টেন্ট তৈরিও করি। আমি টেকটিউনসে টিউন লিখে আয় করার জন্য একাউন্ট ক্রিয়েট করেছি। ধন্যবাদ।