মহাকাশ বিজ্ঞানের সাথে সম্পর্কযুক্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা

Level 7
২য় বর্ষ, বগুড়া আজিজুল হক কলেজ, গাইবান্ধা

হ্যালো টিউন পাঠক বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সবাই ভালোই আছেন। আজ আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি মহাকাশ বিজ্ঞানের সাথে সম্পর্কযুক্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা নিয়ে চমৎকার একটি টিউন। আশাকরি আপনাদের ভালো লাগবে। সকলের সুস্থতা কামণা করে শুরু করছি আজকের টিউন।

বিশাল গ্রহের সন্ধান লাভঃ

মহাকাশ বিজ্ঞানীদের মতে, ২০১৩ সালে চিলির লাস ক্যাম্পানাস অবজারভেটরিতে ম্যাজেনাল টেলিস্কোপ ব্যবহার করে ৩৩৬ আলোকবর্ষ দূরে প্লানেট নাইট এর মত একটি গ্রহের সন্ধান পাওয়া যায়। যখন গ্রহটি আবিষ্কার হয়েছিল তখন গবেষকরা এর কক্ষপথ নির্ধারণ করতে পারেনি। তবে হাবল স্পেস টেলিস্কোপ নামক এক টেলিস্কোপ অনেক বছর পরে এ গ্রহের গতিবিধির সঠিক পরিমাপ করতে পেরেছিল। বিজ্ঞানীরা এই প্রথমবারের মতো নক্ষত্র থেকে খুব দুরে বিশাল গ্রহের চলাচল পরিমাপ করতে সক্ষম হলেন।

এ গ্রহের কোনো সুস্পষ্ট নাম না দেওয়া হলেও এ গ্রহকে বলা হয় H 106906 b। বিজ্ঞানীরা বলেন এ গ্রহটি নাকি আমাদের সবচেয়ে বড় গ্রহ বৃহস্পতি নামক গ্রহের চেয়েও একাদশ গুন বড। তাহলে আপনারা কি বুঝতে পারছেন গ্রহটি আসলে কত বড়। এই গ্রহটির নাকি তারার জুটির চারপাশে একটি কক্ষপথ পূর্ণ করতে ১৫ হাজার বছর সময় লাগে। আমরা নিশ্চই জানি যে পৃথিবীর চেয়ে প্রায় ৯ গুণ বড় গ্রহ হল প্লানেট নাইন। সূর্যকে কেন্দ্র করে একবার ঘুরে আসতে ২০ হাজার বছর সময় নেয় এই গ্রহটি। ক্যালিফোর্নিয়ার ইনস্টেকটিউনসউট অব টেকনোলজির বিজ্ঞানীরা প্রথম এর সম্পর্কে জানতে পারেন বলে দাবি করে।

বৃহস্পতি ও শনি গ্রহের মধ্যে মহা সংযোগঃ

সৌরজগতের সবচেয়ে বড় দুই গ্রহ হচ্ছে বৃহস্পতি ও শনি। ২০২০ সালের ২১ ডিসেম্বর গ্রহ দুটি চলে এসেছিল একে অপরের খুব কাছাকাছি।

বিশাল আকারের দুই গ্রহকে পৃথিবী থেকে কাছাকাছি দেখালেও ঐ সময়ে গ্রহ দুটির মধ্যে দূরত্ব ছিল ৭৩.৫ কোটি কিলোমিটার। ৩৯৭ বছর পর ঘটে এ মহাজাগতিক ঘটনা। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার তথ্য অনুযায়ী, সপ্তদশ শতকে সর্বশেষ ঘটেছিল এ ধরনের ঘটনা। বিখ্যাত বিজ্ঞানী গ্যালিলিও গ্যালিলি তখন বেচে ছিলেন।

গ্যালিলিওর টেলিস্কোপ আবিষ্কারের ১৩ বছর পরের ঘটনা ছিল সেটি। ১৬২৩ সালে বৃহস্পতি ও শনি এভাবে কাছাকাছি চলে এসেছিল। অবশ্য সত্যি কথা বলতে সূর্যের কাছাকাছি থাকায় তখন ঘটনাটি দেখা প্রায় অসম্ভব ছিল। ধারণা করা হয় গ্রহ দুটির সবচেয়ে কাছাকাছি আসার দৃশ্যমান ঘটনা ছিল ৪ মার্চ ১২২৬। জ্যোতির্বিদ্যার ভাষায় বৃহস্পতি ও শনি গ্রহের এমন কাছাকাছি চলে আসা Great Conjunction বা মহাসংযোগ নামে পরিচিত। শনি ও বৃহস্পতি গ্রহের মধ্যে পরবর্তী মহাসংযোগ করতে পারে ১৫ মার্চ ২০৮০ সালে। তবে সূর্যের বিরম্বনায় এই মহাসংযোগ দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা কম। সেক্ষেত্রে ২০২০ সালের ২১ এ ডিসেম্বর এর মতো ঘটনা আবার দেখা যেতে পারে ২৪১৪ সালে।

জাপান আনল গ্রহাণুর মাটিঃ

মহাকাশ গবেষণার ইতিহাসে প্রথমবারের মতো কোন গ্রহাণু থেকে বড় পরিমাণে মাটি ও পাথর সংগ্রহ করে তা পৃথিবীতে নিয়ে আসতে সক্ষম হয় জাপান।

দেশটির জাতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা JAXA' র মহাকাশযান Hayabusa 2 এ নমুনা নিয়ে আসে।

মঙ্গলার আর বৃহস্পতির মাঝে থাকা গ্রহাণুপুঞ্জের সদস্য প্রায় এক কিলোমিটার চওড়া হীরার টুকরা মতো দেখতে গ্রহাণু রিউগু থেকে এ নমুনা আনা হয়। ২০২০ সালের ৬ ই ডিসেম্বর রিউগু থেকে নিয়ে আসা নমুনাসহ অস্ট্রেলিয়া উমেরার মরুভুমিতে অবতরণ করে হায়াবুসা 2 এর তিন ক্যাপসুল। ২০২০ সালের ১৪ ই ডিসেম্বর জাপানের বিজ্ঞানীরা তিনটি ক্যাপসুল এর মধ্য থেকে একটি ক্যাপসুল খুলে তার ভেতর গ্রহাণুটির কালো পাথর ও মাটি পান। কোন গ্রহাণু থেকে পৃথিবীতে মাটি অানার ঘটনা এটাই প্রথম। ২০১৪ সালের ৩ ই ডিসেম্বর উৎক্ষেপণ করা হয় Hayabusa 2। চার বছরের যাত্রা শেষে ২৭ জুন ২০১৮ তে রিউগুতে নামে মহাকাশযানটি। এরপর দেড় বছর অভিযান চালিয়ে ১২ ই নভেম্বর ২০১৯ সালে গ্রহাণু থেকে ফিরতি যাত্রা শুরু করেন নভোযানটি। গ্রহাণু থেকে নমুনা পৃথিবীতে আনার ক্ষেত্রে জাপানই প্রথম এবং এখন পর্যন্ত অদ্বিতীয়। এবার এর আগে ২০১০ সালে তারা প্রথম নমুনা নিয়ে এসেছিল ইতোকাওয়া নামের গ্রহাণু থেকে। চাঁদের থেকে পাঁচগুণ দূরে থাকা ঐ গ্রহাণু থেকে Hayabusa অভিযানে দেড় হাজার ধূলিকণা তুলে আনে JAXA। ইতোকাওয়া ও রিগুউ গ্রহাণু সহ এ পর্যন্ত মোট তিনটি গ্রহাণু থেকে নমুনা সংগ্রহ করতে পেরেছে মানুষ। অন্য গ্রহটি হল বেণু। ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর পৃথিবী থেকে ৩৪ কোটি কিলোমিটার দূরের বেনু গ্রহাণু পৃষ্ঠ থেকে ৬০ গ্রামের মতো নমুনা সংগ্রহ করেছে মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার নভোযান OSIRIS REx।

২০২১ সালের মার্চ মাসে পৃথিবীর উদ্দেশ্যে নভোযানটি ফিরতি যাত্রা শুরু করবে। এটি পৃথিবীতে পৌঁছাবে সেপ্টেম্বর ২০২৩ সালে।

লুকানো সুপার প্লানেট এর সন্ধানঃ

এই প্রথমে রেডিও টেলিস্কোপ ব্যবহার করে জ্যোতির্বিদরা আবিষ্কার করেন একটি শীতল বাদামি বামন গ্রহ যা পরিচিতি লাভ করে সুপার প্লানেট নামে।

এই আবিষ্কৃত বাদামি বামন গ্রহ টিকে BDR J1750+3809 শ্রেনিভুক্ত করা হয় এবং নামকরণ করা হয় Elegast। সাধারণত খুব বড় মাপের গ্রহগুলোকে সুপার প্লানেট বা বামন গ্রহ বলা হয় যাদের ভর সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহ বৃহস্পতির চেয়ে ১৫-৭৫ গুণ বেশি। সৌরজগতের গ্রহ গুলোর মত এগুলোর ও গ্যাসীয় বায়ুমণ্ডল রয়েছে বলে জানা যায়। তারকা জগৎ এ এগুলো ব্যর্থ নক্ষত্র হিসেবে পরিচিত।

ছায়াপথের নতুন মানচিত্রঃ

পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার মরুভূমিতে মার্চিসন মানমন্দির স্থাপিত অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় বিজ্ঞান সংস্থা CSIRO এর বেতার টেলিস্কোপ এর নাম ASKAP (Australian Square Kilometer array Pathfinder)। টেলিস্কোপ টি ব্যবহার করে লাখ লাখ নতুন ছায়াপথের মানচিত্র তৈরি করেন দেশটির বিজ্ঞানীরা। তারা জানান নতুন মানচিত্র ৩০ লক্ষাধিক ছায়াপথ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

এর মধ্যে ১০ লাখ ছায়াপথ নতুন, যা আগে অনাবিষ্কৃত ছিল। ১ ডিসেম্বর ২০২০ অস্ট্রোনোমিক্যাল সোসাইটি অব অস্ট্রেলিয়া জার্নালে এ গবেষণার প্রাথমিক ফলাফল প্রকাশিত হয়।

উল্কা বৃষ্টিঃ

উল্কা বৃষ্টির সৃষ্টি সাধারণত মহাকাশের বিভিন্ন ধূমকেতুর ধ্বংসাবশেষ থেকে।

২০২০ সালের ১৩-১৪ ই ডিসেম্বর আকাশে দেখা যায় উল্কা বৃষ্টি। সব ধরনের উল্কা বৃষ্টির রাজা ছিল এই উল্কাবৃষ্টেকটিউনস। বিশ্বের যেকোন জায়গা থেকে দেখতে পাওয়া গেছে এ উল্কা বৃষ্টেকটিউনস। বিজ্ঞানীরা এ উল্কাবৃষ্টির একটি নাম ও দিয়েছেন তা হলো জেমিনিডস। উল্কা বৃষ্টেকটিউনস যখন হয় তখন ৩২০০- ফিটন নামে একটি গ্রহাণুর ছেড়ে যাওয়া ধূলিকণার আস্তরের মধ্যে দিয়ে পৃথিবী যায়। বর্তমান যুগে সর্বপ্রথম সবচেয়ে বিরাট উল্কাবৃষ্টি হয় ১৮৩৩ সালের দিকে এবং ইহা লিওনিড নামে পরিচিতি লাভ করেছিল। এতে প্রায় ঘন্টায় এক হাজারেরও বেশি উলকা পৃথিবীতে এসে পড়েছিল।

চাঁদে চীনের মহাকাশ যানঃ

২০২০ সালের ২৩ এ নভেম্বর চাঁদের উদ্দেশ্যে রওনা দেয় চীনের পঞ্চম চন্দ্রযান চন্দ্রযান Change-5। চন্দ্রযানটি চাঁদের নির্ধারিত কক্ষপথে প্রবেশ করে ২৮শে নভেম্বর ২০২০ সালে। Change-5 চন্দ্রযানে দুটি অংশ ছিল একটি হলো ল্যান্ডার-অ্যাসেন্ডার অংশ যার ল্যান্ডার হলো চাঁদের বুকে অবতারনের জন্য এবং অ্যাসেন্ডার হলো চাদের বুক থেকে উড্ডয়নের পর অরবিটাল এর সাথে মিলিত হবার জন্য। আরেকটি হলো অরবিটার-রিটার্নার অংশ যার অরবিটার হলো চাঁদকে প্রদক্ষিণ অব্যাহত রাখার জন্য এবং রিটার্নার হলো চাঁদের মাটি ও পাথর নিয়ে পৃথিবীপৃষ্ঠে অবতারণের জন্য। এ দুটি অংশ বিচ্ছিন্ন হয়ে ল্যান্ডার-অ্যাসেন্ডার অংশটি চাঁদের বুকে অবতরণ করে ১ লা ডিসেম্বর ২০২০ ও চাঁদের নমুনা সংগ্রহের কাজ শুরু করে। পরবর্তী দুই দিনে ল্যান্ডার-অ্যাসেন্ডার অংশের রোবট চাঁদের বুকে ড্রিল করে প্রায় ৬ ফুট নিচ থেকে ও চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে এবং চাঁদের বুকে চীনের পতাকা স্থাপন করে। চাঁদের মনস রামকার নামের আগ্নেয় সমভূমির Oceanus Procellarum বা ঝড়ের সমুদ্র নামের এলাকা থেকে নুড়ি ও পাথর সংগ্রহ করে চন্দ্রযানটি। তারপর ২০২০ সালের তিসরা ডিসেম্বর চাঁদের নমুনাসহ অ্যাসেন্ডার অংশটি উড্ডয়ন করে ও চাঁদের পুর্বর্নির্ধারিত কক্ষপথে প্রবেশ করে। এরপর ২০২০ সালের ৬ই ডিসেম্বর অ্যাসেন্ডার অংশটি অরবিটার-রিটার্নার অংশের সাথে সংযুক্ত হয় ও চন্দ্র মৃত্তিকা সমৃদ্ধ কন্টেইনারটি রিটার্নারে স্থানান্তর করে। অরবিটার-রিটার্নার অংশটি ১৩ ই ডিসেম্বর ২০২০ সময়কালে প্রবেশ করে চাঁদ-পৃথিবীর কক্ষপথে। ১৭ ই ডিসেম্বর ২০২০ রিটার্নার বিচ্ছিন্ন হয় অরবিটার থেকে চীনের ইনার মঙ্গলিয়ার সিচিওয়াং বান্নার নামক স্থানে প্যারাসুট এর সাহায্যে অবতরণ করে। জটিল মিশন সফল ভাবে সম্পন্ন করে Change-5 চন্দ্রযানেট রিটার্নার নামক ক্যাপসুলটি চাঁদের ১৭৩১ গ্রাম পাথর ও মাটি নিয়ে আসে পৃথিবীতে। আনুমানিক চল্লিশ বছর পর পৃথিবীর একমাত্র উপগ্রহ চাঁদ থেকে আবারো চন্দ্র মৃত্তিকা আসে পৃথিবীর বুকে। চাঁদের নমুনা সংগ্রহকারী হিসেবে তৃতীয় অবস্থানে রইল চীন। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাপেলো প্রজেক্ট এর আওতায় নভোচারীদের মাধ্যমে চাঁদ থেকে ৩৮০ কিলোগ্রাম মাটি ও পাথর পৃথিবীতে নিয়ে আসা হয়েছিল। আর তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন মানববিহীন যানের মাধ্যমে তিন বারে চাঁদ থেকে মোট 300 গ্রাম মাটি ও পাথর পৃথিবীতে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছিল। ২০২০ সালের তিসরা ডিসেম্বর চাঁদের নুড়ি ও মাটি নিয়ে চন্দ্রপৃষ্ঠ ছাড়ার আগে চন্দ্রযান Change-5 বায়ুহীন চাঁদের পৃষ্ঠের উপর স্থাপন করে ২ মিটার চওড়া ও ৯০ সেন্টিমিটার লম্বা চীনের পাঁচ তারকা যুক্ত লাল পতাকা। বিশ্বের দ্বিতীয় পতাকা হিসেবে চাঁদের বুকে স্থাপিত হয় চীনের পতাকা। এর পুর্বে ১৯৬৯ সালে চাঁদের বুকে প্রথম স্থাপিত হয় যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা। ১৯৭২ সাল পর্যন্ত দেশটির মোট পাঁচটি পতাকা চন্দ্রপৃষ্ঠে স্থাপন করা হয়।

কৃষ্ণগহ্বরের আরো কাছে পৃথিবীঃ

সৌর জগতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য পৃথিবী। আর সূর্য্যসহ তারপরিবারের সবাই ভেসে বেড়াচ্ছে Milkyway বা আকাশগঙ্গা নামক একটি ছায়াপথে।

এই ছায়াপথের ঠিক মাঝখানে রয়েছে বিশাল এক কৃষ্ণগহ্বর যার নাম দেওয়া হয়েছে Sagiffarius A। বিশ্বজুড়ে মহাকাশ বিজ্ঞানীদের সংগঠন ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়ন (IAU) ১৯৮৫ সাল থেকে বলে আসছে, আকাশগঙ্গার কেন্দ্রে কৃষ্ণগহ্বর Sagiffarius A থেকে পৃথিবীর দূরত্ব ২৭৭০০ আলোকবর্ষ। কিন্তু জাপানের মহাকাশ প্রকল্প ভিএলবিআই এক্সপ্লোরেশন অব রেডিও অ্যাস্ট্রমেট্রের (VERA) বিজ্ঞানীদের এক গবেষণা অনুযায়ী পৃথিবী ঐ কৃষ্ণগহ্বর এর আরো কাছে। নতুন গবেষণায় দাবি করা হয়, Sagiffarius A থেকে পৃথিবীর দূরত্ব আসলে ২৫৮০০ আলোকবর্ষ। অন্যদিকে আকাশগঙ্গার কেন্দ্রে চারপাশে ঘিরে পৃথিবীর গতি এতদিন জানা ছিল প্রতি সেকেন্ডে ২২০ কিলোমিটার। কিন্তু নতুন গবেষণায় দাবি করা হয় পৃথিবীর এ গতি আসলে প্রতি সেকেন্ডে ২২৭ কিলোমিটার।

পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণঃ

২০২০ সালের ১৪ ই ডিসেম্বর হয় বছরের শেষ সূর্যগ্রহণ। সূর্যকে পুরোপুরি ঢেকে দেয় চাঁদ, তৈরি হয় আগুনের আংটি বা Ring of Fire।

তবে বাংলাদেশ থেকে এ গ্রহণ দেখা যায়নি। দক্ষিণ পশ্চিম আফ্রিকার কিছু অংশ, যুক্তরাষ্ট্রের দক্ষিণ অংশ, প্রশান্ত মহাসাগরের দক্ষিণাংশ এবং মেক্সিকোর কিছু অংশ থেকে গ্রহণ দেখা যায়। সুর্যগ্রহণটি শুরু হয় জর্জ টাউন থেকে উত্তর-পশ্চিম দিকে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরে এবং অবসান ঘটে সেন্ট হেলেনা, অ্যাসেনসিও দ্বীপ এবং ত্রিস্তান দ্য কুনহা থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরের উপরে। ২০২০ এর ২১ এ জুন প্রথম সূর্য হয়। তবে সেটি পুনর্গ্রাস সুর্য্যগ্রহণ হয়নি। বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ হয়। বলয় গ্রাসের সময় চাঁদ সুর্যকে পুরোপুরি ঢাকতে পারে না। এ সময় সূর্যের চারদিকে একটি বলয় বা চুরির মত দেখা যায়। তাই কে বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ বলে।

টিউন বোঝার সুবিধার্থে কিছু শব্দের অর্থ বা পরিষ্কার ধারনাঃ

ছায়াপথ- ছায়াপথ হচ্ছে মহাকর্ষীয় বল দ্বারা আবদ্ধ একটি অতি বৃহত্তর সুশৃঙ্খল ব্যবস্থা যা সুর্য্য, তারা,  আন্তনাক্ষত্রিক গ্যাস ও ধুলিকণা, প্লাজমা এবং প্রচুর পরিমাণে অদৃশ্য বস্তু দিয়ে গঠিত।

উল্কা- রাতের আকাশে নক্ষত্রের মতো দেখতে এক ধরনের উজ্জ্বল বস্তু পৃথিবীর দিকে আসতে দেখা যায় কোন কোন সময়। এ উজ্জ্বল বস্তুকেই উল্কা বলে।

গ্রহানু- অ্যাস্টেরয়েড বা গ্রহানু হচ্ছে তারাকে কেন্দ্র করে আবর্তন কারী এবং সাধারণত পাথর দ্বারা গঠিত এক ধরনের বস্তু।

গ্রহানুপুঞ্জ- অসংখ্য গ্রহানুর সমাবেশকে গ্রহানু পুঞ্জ বলে।

কৃষ্ণগহ্বর- কৃষ্ণগহ্বর মহাবিশ্বের এমন একটি রহস্যময় বস্তু যা খুব ঘন সন্নিবিষ্ট এবং অতি অল্প জায়গায় এর ভর এতটাই বেশি যে এর মহাকর্ষীয় বল কোন কিছুকেই তার ভিতর থেকে বের হতে দেয় না এমনকি তড়িৎচুম্বকীয় বিকিরণ বা আলোকেও নয়।

তো বন্ধুরা এই ছিল আজকের টিউন। আপনি যদি এই টিউন থেকে নতুন কিছু জেনে আনন্দ পেয়ে থাকেন তাহলে জোসস দিয়ে আমাকে উৎসাহ দিবেন। আর কোন মন্তব্য থাকলে অবশ্যই টিউমেন্ট করে আমাকে জানাবেন। দেখা হচ্ছে আবার পরবর্তী নতুন কোন টিউনে। সে পর্যন্ত সুস্থ থাকুন, হাসি খুশি জীবনযাপন করুন।

Level 7

আমি মো তানজিন প্রধান। ২য় বর্ষ, বগুড়া আজিজুল হক কলেজ, গাইবান্ধা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 91 টি টিউন ও 65 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 24 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 4 টিউনারকে ফলো করি।

কখনো কখনো হারিয়ে যাই চিন্তার আসরে, কখনোবা ভালোবাসি শিখতে, কখনোবা ভালোবাসি শিখাতে, হয়তো চিন্তাগুলো একদিন হারিয়ে যাবে ব্যাস্ততার ভীরে। তারপর ব্যাস্ততার ঘোর নিয়েই একদিন চলে যাব কবরে।


টিউনস


আরও টিউনস


টিউনারের আরও টিউনস


টিউমেন্টস