আশাকরি আল্লাহ তায়ালা আপনাদের সুস্থ রেখেছেন। আমরা দৈনন্দিন জীবনে নানা চিকিৎসায় পরীক্ষার সম্মুখীন হই। আজ আপনাদের সাথে এইরকম কয়েকটি চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে সামান্য কথা বলবো। চলুন মুল কথায় যাওয়া যাক।
ECG শব্দের পূর্ণরুপ হলো ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম (Electrocardiogram)। এটি একটি রোগ নির্ণয় পদ্ধতি যার সাহায্যে নিয়মিতভাবে কোন ব্যক্তির হৃৎপিন্ডের বৈদ্যুতিক এবং পেশিজনিত কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করা যায়।
ইসিজি এর সাহায্যে আমরা হৃদপিন্ডের স্পন্দন এর হার এবং ছন্দময়তা পরিমাপ করতে পারি। এটি হৃদপিন্ডের মধ্যে রক্ত প্রবাহের পরোক্ষ প্রমাণ দেয়।
শরীরের বিভিন্ন স্থানে স্থাপিত তড়িৎদ্বার বা ইলেকট্রোডসমুহ হৃদযন্ত্রের বিভিন্ন দিক থেকে আগত বৈদ্যুতিক সংকেতগুলোকে সনাাক্ত করে। হৃৎপিণ্ডের একটি সম্পূর্ণ ছবি পাওয়ার জন্য দশটি ইলেকট্রোড ব্যবহার করা হয়। ফলে বারোটি বৈদ্যুতিক সংকেতকে সনাক্ত করা যায়। প্রত্যেকটি হাতে এবং পায়ে একটি করে মোট চারটি এবং বাকি ছয়টি ইলেকট্রোড হৃদপিণ্ডের প্রাচীর বরাবর স্থাপন করা হয়।
সুস্থ মানুষের জন্য প্রত্যেক ইলেকট্রোড থেকে প্রাপ্ত তড়িৎ সংকেতের একটি স্বাভাবিক নকশা থাকে। যদি কোন ব্যক্তির হৃদযন্ত্রের কোন ধরনের অস্বাভাবিক অবস্থা লক্ষ করা হয় তখন ইলেকট্রোডসমূহ থেকে প্রাপ্ত নকশা স্বাভাবিক নকশা থেকে ভিন্নতর হবে।
সাধারণ কোন রোগের বাহ্যিক লক্ষণ যেমন-বুক ধড়ফড়ানি, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, বুকে ব্যথা ইত্যাদির কারণ নির্ণয় করার জন্য ইসিজি পরীক্ষা করা হয়।
এছাড়া নিয়মিত পরীক্ষায় অংশ হিসেবে অপারেশনের পূর্বে ইসিজি করা হয়।
এন্ডোসকোপি বলতে সাধারণভাবে কোনো কিছুর ভিতরে দেখাকে বোঝায়।
কিন্তু এন্ডোসকোপি বলতে আমরা বুঝি চিকিৎসাজনিত কারণে বা প্রয়োজনে দেহের অভ্যন্তরীণ অঙ্গ বাইরে থেকে পর্যবেক্ষন করা।
এন্ডোসকোপি যন্ত্রে দুটি নল থাকে, এদের একটির মধ্য দিয়ে বাইরে থেকে রোগীর শরীরের নির্দিষ্ট অঙ্গে আলো প্ররণ করা হয়। আলোক তন্তু ভেতরের দেয়ালে আলোর পূর্ণ অভ্যন্তরীণ প্রতিফলনের মাধ্যমে উজ্জ্বল আলো রোগীর দেহ গহব্বরে প্রবেশ করে।
এই আলো রোগাক্রান্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত অঙ্গকে আলোকিত করে। দ্বিতীয় আলোক তন্তু নলের ভিতর দিয়ে আলোর প্রতিফলিত অংশ একইভাবে ফিরে আসে। প্রতিফলিত আলো অভিনেত্র লেন্সের মাধ্যমে চিকিৎসকের চোখে প্রবেশ করে। ফলে চিকিৎসক সহজেই বুঝতে পারে পরীক্ষনীয় অঙ্গের অভ্যন্তরে কি ঘটছে।
ইংরেজি এর Exercise Tolerence Test এর সংক্ষিপ্ত রুপ হলো ETT।
উত্তেজিত হৃদযন্ত্রের একটি পরীক্ষা হলো ইটিটি।
এ পদ্ধতির মাধ্যমে ব্যায়াম বা অনুশীলন চলাকালীন হৃদপিন্ডের বৈদ্যুতিক সক্রিয়তা বা কার্যকলাপ পরীক্ষার মাধ্যমে রেকর্ড করা হয়।
এটি আসলে অনুশীলনরত অবস্থায় রোগীর ইসিজি পরীক্ষা।
করোনারি আর্টারি রোগের রোগ নিরূপণের জন্য এ পরীক্ষাটা খুবই উপকারী। এ পরীক্ষার সময় হৃদযন্ত্রের উপর অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করা হয়। পরীক্ষাটির মাধ্যমে হৃদপিণ্ডের করোনারি ধমনীতে সৃষ্ট আংশিক অবরুদ্ধ অবস্থা সনাক্ত করা যায়।
পরীক্ষার সময় রোগীকে একটি স্থির বাই সাইকেল চালাতে বলা হয় অথবা একটি ট্রেডমিল যন্ত্রে অনবরত হাঁটার নির্দেশনা দেওয়া হয়। অনুশীলন চলা অবস্থায় চিকিৎসক রোগীর ইসিজি রেকর্ড করেন।
এনজিওগ্রাফি হলো এমন একটি প্রতিবিম্ব তৈরির পরীক্ষা যেখানে শরীরের রক্তনালিকা সমূহ দেখার জন্য এক্স-রে ব্যবহার করা হয়।
এই পরীক্ষার মাধ্যমে রক্তবাহী শিরা বা ধমনি গুলো সরু, ব্লক বা প্রসারিত হয়েছে কিনা তা নির্ণয় করা যায়। রক্তনালীতে ব্লক এবং ররক্তনালি সরু এবং অপ্রসস্ত হলে শরীরের রক্তের স্বাভাবিক প্রবাহ বিঘ্নিত হয়।
এই পদ্ধতি সম্পন্ন করার সময় চিকিৎসক রোগীর দেহে একটি তরল পদার্থ একটি সরু এবং নমনীয় নলের মধ্য দিয়ে প্রবেশ করিয়ে দেন।
নলটিকে ক্যাথেটার এবং তরল পদার্থটিকে ডাই বলে। এই ডাই ব্যবহার এর ফলে রক্তনালী গুলো এক্সরের সাহায্যে দৃশ্যমান হয়।
এই টিউনটির ১ম পর্ব দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
তো বন্ধুরা এই ছিলো আজকের টিউন। ভালো লাগলে জোসস দিতে ভুলবেন না। মন্তব্য থাকলে টিউমেন্ট এ আমাকে জানবেন। ইনশাআল্লাহ শীঘ্রই নিয়ে আসব আপনাদের জন্য পরবর্তী টিউন। এতক্ষন সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
আমি মো তানজিন প্রধান। ২য় বর্ষ, বগুড়া আজিজুল হক কলেজ, গাইবান্ধা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 3 বছর 11 মাস যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 91 টি টিউন ও 65 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 24 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 4 টিউনারকে ফলো করি।
কখনো কখনো হারিয়ে যাই চিন্তার আসরে, কখনোবা ভালোবাসি শিখতে, কখনোবা ভালোবাসি শিখাতে, হয়তো চিন্তাগুলো একদিন হারিয়ে যাবে ব্যাস্ততার ভীরে। তারপর ব্যাস্ততার ঘোর নিয়েই একদিন চলে যাব কবরে।