আশাকরি আল্লাহর রহমতে আপনাদের দিন ভালোই যাচ্ছে। আজকে আপনাদের জন্য নিয়ে এসেছি ভিন্নধর্মী একটা টিউন।
আমাদের জীবনে Security বা Privacy অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। কোন সিস্টেমে প্রবেশ অধিকার নিয়ন্ত্রণে আমরা সাধারণত পিন, পাসওয়ার্ডের ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু এটির চেয়েও নির্ভরশীল আরেকটি পদ্ধতি আছে। এটি হচ্ছে বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি। নিচে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
বায়োমেট্রিক্স হচ্ছে এমন একটি প্রযুক্তি যা আচরণগত বৈশিষ্ট্য এবং দেহের গঠনের উপর ভিত্তি করে কোন ব্যক্তিকে এককভাবে শনাক্ত করতে পারে।
কোন সিস্টেমে প্রবেশ নিয়ন্ত্রণে এবং ব্যক্তি সনাক্তকরণে বায়োমেট্রিক্স ব্যবহৃত হয়। এই পদ্ধতির মাধ্যমে, বায়োমেট্রিক্স ডিভাইসগুলো ব্যবহারকারীদের কোন সিস্টেম, প্রোগ্রাম বা কক্ষ ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে থাকে।
এই পদ্ধতির মাধ্যমে ভালো মানুষের ভিড় থেকে সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আলাদা করা যায়। ঠিক তেমনি আবার সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ভেতর থেকে নির্দোষ ব্যক্তিকে সনাক্তকরণ করা যায়।
সর্ব প্রথম বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি ব্যবহার করেন স্যার উইলিয়াম হার্সে। তিনি তার অধীনস্থ কর্মচারীদের সনাক্তকরণের জন্য চুক্তিনামার উল্টোপিঠে হাতের ছাপ নিতেন। ১৮৭০ সালে আলফনস বারটিল্লন নামক একজন পুলিশ অফিসার অপরাধী সনাক্তকরণের কাজে হাতের ছাপ এবং দেহের বিভিন্ন মাপ ব্যবহার করতেন।
ব্যক্তি সনাক্তকরণ এবং ব্যক্তির সত্যাসত্য নির্ধারণই বায়োমেট্রিক্সের কাজ।
গতানুগতিক সনাক্তকরণ পদ্ধতিতে লাইসেন্স, পাসপোর্ট বা আইডি কার্ড ব্যবহৃত হয়। জ্ঞানভিত্তিক সনাক্তকরণ পদ্ধতিতে ইউজারনেম, পাসওয়ার্ড বা পিন নাম্বার মনে রাখতে হয়। কিন্তু বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিতে ব্যক্তির কোন অদ্বিতীয় বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে সনাক্তকরণ করা হয়। এটি গতানুগতিক এবং জ্ঞানভিত্তিক পদ্ধতির চেয়ে বেশি গ্রহণযোগ্য।
দেহের গঠন এবং আচরণগত বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি বিভিন্ন রকম হতে পারে।
সৃষ্টিকর্তা প্রতিটি মানুষের আঙ্গুলের ছাপে ভিন্নতা দিয়েছে।
ফিঙ্গারপ্রিন্ট রিডার হচ্ছে বহুল ব্যবহৃত একটি ডিভাইস যা মানুষের আঙ্গুলের ছাপ ইনপুট হিসেবে গ্রহণ করে এবং তা পূর্ব থেকে সংরক্ষিত আঙ্গুলের ছাপের সাথে মিলিয়ে পরীক্ষা করে।
এই পদ্ধতির সুবিধা-
এই পদ্ধতির অসুবিধা-
বিভিন্ন মানুষের হাতের আকৃতির জ্যামিতিক গঠনে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়।
হ্যান্ড জিওমিট্রি পদ্ধতিতে বায়োমেট্রিক ডিভাইস গুলো মানুষের হাতের আকৃতির জ্যামিতিক গঠনের মাধ্যমে ব্যক্তি সনাক্তকরণ করে।
সুবিধা-
অসুবিধা-
একজন মানুষের চোখের আইরিসের প্যাটার্ন অন্য কোন মানুষের চোখের আইরিসের প্যাটার্ন এর সাথে মিলে না।
তাই ব্যক্তি শনাক্তকরণের চোখের আইরিস আদর্শ অঙ্গ।
এ পদ্ধতিতে মাথা ও চোখেকে স্থির করে একটি ক্যামেরা সম্পন্ন ডিভাইসের দিকে তাকাতে হয়।
সুবিধা-
অসুবিধা-
সৃষ্টিকর্তা বিভিন্ন মানুষকে বিভিন্ন গঠনের মুখমন্ডল দিয়েছেন।
ফেইস রিকগনিশন হচ্ছে এক ধরনের কম্পিউটার প্রোগ্রাম যার সাহায্যে মানুষের মুখমণ্ডল এর গঠন প্রকৃতি পরীক্ষা করে ব্যক্তি শনাক্তকরণ করা হয়।
সুবিধা-
অসুবিধা-
প্রত্যেক মানুষের ডিএনএ আলাদা আলাদা। সহোদর যমজ ব্যতীত।
কোন মানুষের কোষ থেকে ডিএনএ আরোহণ করার পর কতিপয় পর্যায়ক্রমিক পদ্ধতি অনুসরণ করে মানুষেকে সনাক্তকরণ করা হয়।
রক্ত, চুল, শুক্ররস এছাড়াও একবার দুবার পরা জামা কাপড় থেকেও DNA সংগ্রহ করা যায়।
কঙ্কাল থেকেও ডিএনএ সংগ্রহ করা যায়।
সুবিধা-
অসুবিধা-
DNA ফিঙ্গারপ্রিন্ট এর কিছু ব্যবহার -
বিভিন্ন মানুষের ভয়েসের মধ্যে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। একে অদ্বিতীয় বলা হয় কারণ একজন মানুষের ভয়েসের সাথে আর একজনের ভয়েস মেলে না।
ভয়েস রিকগনিশন পদ্ধতিতে একজন ব্যবহারকারীর কণ্ঠস্বরকে ডেটাবেজে সংরক্ষিত করে ঐ ভয়েস ডেটা ফাইল এর সাথে ব্যবহারকারীর ভয়েসের তুলনা করা হয়।
সুবিধা-
অসুবিধা -
বিভিন্ন মানুষের হাতের দস্তখত বা স্বাক্ষর বিভিন্ন রকম।
এক্ষেত্রে স্বাক্ষরের আকার, ধরন, প্যাটার্ন, লেখার গতি, সময় এবং কলমের চাপকে ব্যবহার করে ব্যবহারকারী স্বাক্ষর সনাক্ত করা হয়।
একটি স্বাক্ষর এর সকল প্যারামিটার ডুব্লিকেট করা অসম্ভব।
সুবিধা -
অসুবিধা-
পরিশেষে একটি কথাই বলব যে, বায়োমেট্রিক পদ্ধতি এবং বায়োমেট্রিক ডিভাইস গুলো আমাদের জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই এ সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান অর্জন করা জরুরী।
তো বন্ধুরা এই ছিলো আজকের টিউন। ভালো লাগলে জোসস দিতে ভুলবেন না। টিউন সম্পর্কে কোন মন্তব্য থাকলে টিউমেন্ট এ আমাকে জানবেন। এ পর্যন্ত আমার সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
আমি মো তানজিন প্রধান। ২য় বর্ষ, বগুড়া আজিজুল হক কলেজ, গাইবান্ধা। বিশ্বের সর্ববৃহৎ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সৌশল নেটওয়ার্ক - টেকটিউনস এ আমি 4 বছর যাবৎ যুক্ত আছি। টেকটিউনস আমি এ পর্যন্ত 91 টি টিউন ও 65 টি টিউমেন্ট করেছি। টেকটিউনসে আমার 24 ফলোয়ার আছে এবং আমি টেকটিউনসে 4 টিউনারকে ফলো করি।
কখনো কখনো হারিয়ে যাই চিন্তার আসরে, কখনোবা ভালোবাসি শিখতে, কখনোবা ভালোবাসি শিখাতে, হয়তো চিন্তাগুলো একদিন হারিয়ে যাবে ব্যাস্ততার ভীরে। তারপর ব্যাস্ততার ঘোর নিয়েই একদিন চলে যাব কবরে।